¤¤¤¤¤¤ইতিহাসে মে মাসঃ ১ ও ৫ দু'টি কালো রাত¤¤¤¤¤¤
লিখেছেন লিখেছেন এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী ০৫ মে, ২০১৪, ০৭:৪২:২৫ সন্ধ্যা
আগামি শতাব্দিতে যখন একবিংশ শতাব্দীর ইতিহাস আলোচনায় আসবে অমনি ইতিহাসের ডায়েরিতে ভেসে উঠবে আজকের পর্যন্ত দুটি কালো রাতের স্মৃতি। একবিংশ শতাব্দীর দুটি আলোচিত কালো রাত হল ১ ও ৫ ই মে।ঈমান রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে এই দুদিনে ঢাকার রাজপথ রক্তস্নাত হল,অকাতরে শহীদ হল অনেক আল্লাহর সৈনিক।
১ লা মে এর প্রেক্ষাপট
====
দিনটি ছিল ১লা মে ২০১১ ঈসায়ী।ঢাকার মুক্তাঙ্গনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর শ্রমিক সমাবেশ চলছিল।পরদিন অর্থাৎ ২ ও ৩রা মে পুর্ব ঘোষিত গণ অবস্থানের কথা ছিল।ফতোয়া বিরোধি রায় ও জাতীয় শিক্ষানীতি ও ইসলাম বিরোধি নারী নীতির প্রতিবাদে এই গণ অবস্থানের আহবান করেছেন আমিরুল মুজাহিদীন সৈয়দ মুফতী রেজাউল করিম,পীর সাহেব চরমোনাই দাঃ বাঃ।
১লা মে সন্ধ্যায় শ্রমিক সমাবেশ শেষে পরদিন গণ অবস্থানের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন আইএবি এর নেতা কর্মীরা।মাগরিবের নামাজের পর সবাই জিকিররত অবস্থায়। এমন সময় আওয়ামী জালিম শাহীর অনুগত পুলিশবাহিনী ও সরকারি দলের সন্ত্রাসি সংগঠন ছাত্রলীগ যৌথভাবে হামলে পড়ে জিকিররত খোদাপ্রেমিকদের উপর।সব লাইট এর বৈদ্যুতিক কানেকশান খুলে ফেলা হয়।অন্ধকারে নেমে আসে অত্যাচারের ষ্টিমরোলার।রাতের আধারে হতবম্ব নেতা-কর্মিরা এদিক সেদিক ছুটা-ছুটি করছিল।অনেকে পালিয়েও রক্ষা পায়নি আওয়ামি সন্ত্রাসিদের হাত থেকে।প্রেসক্লাব ও দৈনিক বাংলা মোড়ে আটকে ফেলা হল অনেককে।মুক্তাঙ্গন হল রক্তে রন্জিত।ওদের হিংস্র আক্রমন থেকে বাচতে পারেন নি পীর সাহেব চরমোনাইর বড় ভাই আইএবি এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপ্যাল মুসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানি সাহেব সহ অনেক জাতীয় নেতা।মাদানি সাহেবকে আঘাত করে একটি পা ভেংগে দেয়া হয়।আহত নেতাকর্মিরা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলেও সেখান থেকে অনেকের ঠিকানা হয় কারাগারে।অনেকের নামে হল মিথ্যা মামলা।ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই কালো রাত।ওই রাতের মুজাহিদদের সাথে ছিলাম আমি অধমও।আহত হয়েছি স্বয়ং নিজে,রক্তাক্ত হয়েছি, গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছি।স্বচক্ষে দেখেছি জালিমদের জুলুমের স্টিমরোলার।
সারাদেশ থেকে লাখ লাখ তাওহীদি জনতা জাহাজে ,স্টিমারে,গাড়ীতে স্রোতের বেগে ছুটে আসছিল ঢাকার উদ্দেশ্য।কারন ছিলো আল্লাহ ও তারঁ রাসূল সা. এর দুশমনদের অপকর্মের বিরুদ্ধে গণ অবস্হান সফল করা।
কিন্তু জালিম শাহীর পেটুয়া বাহিনী সারাদেশে আটকে দেয় এই মর্দে মুজাহিদদের কে।
আমিরের নির্দেশপেলে সারাদেশে একটি রণক্ষেত্র তৈরি করে ফেলতে লাখো তাওহীদি জনতা ।কিন্তু না!আমিরের নির্দেশ ছিল না।বিচক্ষন আমিরের নির্দেশ ছিল শান্তিপূণ্য কর্মসূচি পালন করবো আমরা।
একটি সফল বিপ্লবের জন্য কেীশল এবং সবরের সাথে অগ্রসর হতে হবে।তৈরি করতে হবে মাঠ-ময়দান-জনতা এবং ঈমানি কুয়্যাত।একটি বিপ্লব যেন অংকুরে বিনস্ট হয়ে না যায় সেদিকে অবশ্যই সতর্ক থেকে অগ্রসর হতে হবে।
আর সেই সফল বিপ্লবের স্বপ্ন বুকে নিয়ে আমরা অপেক্ষা করছি সেই সেনালী দিনের আশায়.............
৫ ই মে'র প্রেক্ষাপট
====
২০১৩ এর ৫ ই মে।নাস্তিকদের ফাসী সহ তেরো দফা দাবির পক্ষে সারা দেশ ছিল উত্তাল।সেদিন বৃদ্ধদের মাঝেও জেগে উঠেছিল যৌবনের বিদ্রোহ চেতনা।সারাদেশ থেকে ঢাকা মুখি ঈমানদারদের সমুদ্রসম স্রোত।উদ্দেশ নাস্তিকদের পৃষ্টপোষক সরকারের বিরোধ্যে ঢাকা অবরোধ।গুরুত্বপুর্ণ প্রবেশমুকগুলো ছিল তৌহিদী জনতার দখলে।ঢাকা সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন।কিন্তু সইতে পারলনা ফেরআউন প্রেত্বত্বারা।লেলিয়ে দিল পুলিশ আর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসিদের।খর রৌদ্রের রাজপথ পিপাসা মিটাতে লাগল তৌহিদী জনতার রক্ত পান করে।শাপল চত্বরে এক এক করে আসতে লাগল শহিদানদের নিথর দেহ।বিকেলে অনুমতি মিলল শাপলায় সমাবেশ করার।কিন্তু সময় বেধে দেয়া হয়েছিল সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত।সমাবেশ চল ছিল কিন্তু সমাবেশ সমাপ্তি ঘোষনা করতে যেকোন কারনে আসতে সুযোগ হলনা হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফি দাঃ বাঃ এর।লালবাগ থেকে হুজুর বের হয়েও আবার ঢুকে পড়তে হয়েছিল কাদের ইশারায়।
মাগরিবের পর সবাই অপেক্ষমান মুহতারাম আমিরের জন্য।সময় যত ঘনিয়ে আসছে তত ঢাকা কেন্দ্রীক নেতাদের লাপাত্তা টের করা যাচ্ছে।রাত ঠিক দশটা স্টেইজ এ কায়েদে মিল্লাত আল্লামা বাবুনগরী ছাড়া আর কেই নেই।সরকারকে হুমকিদাতা একজন নেতাতো নাজানি কার ইশারায় ইমিগ্রেশন ওকে করে লন্ডনে পাড়ি জমিয়ে দিয়েছেন।রাত য্খন ২টা ঢাকা শহরের সবগুলো বাতি নিভিয়ে দেয়া হল।মিডিয়াকর্মীদের সরিয়ে দেয়া হল পল্টন এলাকা থেকে।একটি টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া হল।সাথে সাথে নেমে আসল ভয়াবহহ নির্যাতন।পল্টন,গুলিস্তান,বাংলামোড়,সচিবালয় এলাকাজুড়ে রক্তের গংঙ্গা হয়ে গিয়েছিল।শহিদ হল শত শত ভাই।আটক হয়েছিলেন বাবুনগরীসহ শত শত আলেম ওলামা সহ তৌহিদী জনতা।
আজ সময় এসেছে ঘুরে দাড়াবার,সংশয় সন্দেহ আর মুনাফেকদের জালকে ছিন্ন করে সামনে এগিয়ে যাবার। নব চেতনা নিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাবে এটিই জাতির প্রত্যাশা।
উভয় ঘটনায় শরিক হওয়ার সেীভাগ্য হয়েছে আমার।আাল্লাহর শুকরিয়া।
বিষয়: বিবিধ
১০৮৭ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাহলে বলেন এই হেফাজত দিয়ে জাতির কি কল্যাণটা হবে।
বাকি হেফাজাতেরযে পদ্ধতিগত ভূল আছে তাতে কোন সন্দেহ নাই।
তাই যেন হয়। সেই দোয়া রইলো
মন্তব্য করতে লগইন করুন