শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে সকল ইসলামী শক্তি সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় সুসংহত-ইসলামী নেতৃবৃন্দ
লিখেছেন লিখেছেন এম এম নুর হোসাইন মিয়াজী ২৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:৩৫:৫৭ দুপুর
স্টাফ রিপোর্টার : দেশ ও ঈমান রক্ষার চলমান আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টার অন্ত নেই। নাস্তিক-মুরতাদ পক্ষ নানা কৌশলে তৌহিদী জনতার সুদৃঢ় ঐক্য এবং ঈমান রক্ষার সীসাঢালা প্রাচীরে ফাটল ধরানোর জন্য নানামুখী কূটকৌশল অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিছু মিডিয়া বৈরি প্রচারের মাধ্যমে তৌহিদী জনতার ঐতিহাসিক মহাজাগরণকে খাটো করে দেখাবার চেষ্টারও ত্রুটি করছে না। দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের বিশাল সব সমাবেশের ছবি ও সংবাদ অনেক মিডিয়া কৌশলে চেপে যাচ্ছে। কেউ কেউ খুব সীমিতভাবে প্রকাশ করছে।
কিন্তু লক্ষ্যণীয়ভাবে কোন দ্বিমত, অনৈক্য বা ভুল বোঝাবুঝির আভাস পাওয়া মাত্রই তাতে রং চড়িয়ে বড় করে তুলে ধরছে। ঐতিহাসিক গনজাগরণ ও দেশব্যাপী মহাসমাবেশ গুলো তাদের চোখে না পড়লেও কিংবা এসব ভেতরের পাতা সিঙ্গেল কলামেও স্থান না পেলেও কোন দ্বিমত বা ভুলবোঝাবুঝি তাদের চোখ এড়াচ্ছে না। নাই বিষয়কে সূত্র বানিয়ে কিংবা তিলকে তাল করে এক শ্রেণীর পত্রিকা চলমান গণজাগরণকে খাটো করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এসব করে বাংলাদেশের তৌহিদী জনতাকে ঈমানী আন্দোলন থেকে দূরে সরানো যাবে না। ইনকিলাব প্রতিনিধির সাথে আলোচনার সময় দেশের বিশিষ্ট ওলামা-মাশায়েখ ও ইসলামী নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
কিছু চিহ্নিত পত্র-পত্রিকার নেতিবাচক সংবাদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজতের কেন্দ্রীয় আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেবের প্রেস সচিব মাওলানা মনির আহমদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা লোকমান বলেন, ইসলামী আন্দোলনের সাথে হেফাজতের কোন দূরত্ব বা নীতিগত ভুলবোঝাবুঝি কখনই ছিল না। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে দু’টি সংগঠনের কোন দ্বিমত হলেও তা মূল আন্দোলনকে প্রভাবিত করবে না। বড়দের হস্তক্ষেপে ছোটখাটো সমস্যা নিমেষেই দূর হয়ে যায়। এসব নিয়ে নিউজ করা মিডিয়ার পক্ষে শোভনীয় নয়। অন্তত: যারা ইতিবাচক সংবাদ ছাপান না, তারা কেন নেতিবাচক বা মনগড়া সংবাদের ব্যাপারে এত উৎসাহ দেখান, সেটাও সকলকে বুঝতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল, আমরা নিরসন করেছি। কাগজপত্র জব্দ করে একজনকে বহিস্কার করা হয়েছে। সংগঠনের সকল পর্যায়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে আমাদের মহান মুরব্বী আল্লামা শাহ আহমদ শফী (দা.বা.) কিংবা হেফাজত সম্পর্কে কেউ কোন বিরূপ মন্তব্য, লেখা বা আচরণ করতে পারবে না। করলে সংগঠন থেকে চলে যেতে হবে। হুজুর আমার ওস্তাদ এবং পীর। তার নেতৃত্বে আমরা চলমান আন্দোলনকে লক্ষ্যে পৌঁছে ছাড়ব ইন শা’ আল্লাহ। কোন সমস্যা হলে, হুজুর আমাদের যে নির্দেশ দেবেন তাই আমরা হাসিমুখে মাথা পেতে নেব। যারা বিরোধ তৈরি করে এবং তা প্রচার করে আল্লাহর কাছে তাদের সুমতি চাই। ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষক সম্পাদক মুফতি হেয়াতুল্লাহ বলেন, বিরোধ নেই। কেউ যদি বিরোধ তৈরি বা লালন করে তার বিরুদ্ধে উভয় সংগঠনের মুরব্বীরা রয়েছেন। সংশোধনের ব্যবস্থা করবেন। মিডিয়া কেন এসবের পেছনে লেগেছে তা তৌহিদী জনতাকে বুঝতে হবে। অসংখ্য ব্যক্তি, দল, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান আল্লামা আহমদ শফীর আহ্বানে এক পতাকার তলে। দেশের তৌহিদী জনতা এখন বৃত্তের ঐক্যের শামিয়ানার নিচে উদ্দীপিত প্রেরণায় সমবেত। এ মুহূর্তে অনৈক্য সহ্য করা হবে না। ছোটখাটো স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে সবাইকে সীসাঢালা প্রাচীরের মত নাস্তিক-মুরতাদদের রুখে দাঁড়াতে হবে। বাংলার মাটিতে শত্রুর মোকাবেলা শক্ত ঘাঁটি বানাতে হবে।
রাজধানীর মসজিদে গাউসল আজম ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কমপ্লেক্সের মাননীয় খতীব হযরতুল আল্লামা মাওলানা রুহুল আমীন খান বলেন, ইসলামী অঙ্গনে স্মরণকালের বৃহত্তর ঐক্য এখন সময়ের দাবি। দেশ ও ঈমান রক্ষার সংগ্রামে বিভেদ মানেই ইসলামী আন্দোলনের পিঠে ছুরিঘাত। নেতৃবৃন্দকে এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নিয়ে এগুতে হবে। কোন বিরোধ বা এখতেলাফ আশ্রয় দেয়া যাবে না। শত্রুর কৌশল ও অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকতে হবে। ছোটখাটো বিরোধ এখন ভুলে গিয়ে বড় লক্ষ্য হাসিলে দৃঢ় ঐক্য ও গভীর সংহতি গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এর অন্যথা তৌহিদী জনতা কিছুতেই মেনে নেবে না। আমার পর্যবেক্ষণ মত, শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে সকল ইসলামী শক্তি এখন সীসাঢালা প্রাচীরের মত সুসংহত।
আমরা ঢাকাবাসীর মহাসচিব আলহাজ জামাল নাসের চৌধুরী বলেন, হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন ঈমানী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। মুসলমানদের ঈমানের ওপর যখন আঘাত আসে তখনই হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন ময়দানে নামছে। নাস্তিক্যবাদী শক্তি ও বাম রাজনীতিবিদরা এই ঈমান রক্ষার আন্দোলনকে সহ্য করছে না। তারা অত্যন্ত কৌশলে ঈমান রক্ষার আন্দোলনকারীদের মাঝে ফাটল ধরাতে চায়।
তিনি বলেন, এব্যাপারে ক্ষুদ্র স্বার্থ পরিহার করে ঈমান রক্ষার আন্দোলনকে বিজয়ের দ্বার-প্রান্তে এগিয়ে নিতে সকলের মাঝে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
মজলিসে দাওয়াতুস সুন্নাহ বাংলাদেশ-এর আমির মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী ইনকিলাবকে বলেন, ঈমান রক্ষার আন্দোলনে হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন যখন তৌহিদী জনতাকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ তখন ইসলামবিদ্বেষী শক্তি ঈমানী আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে নানাভাবে চক্রান্ত করছে। তারা ঈমান রক্ষার আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে মতিঝিলে নারী-কর্মীদের জড়ো করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, নারীদের অধিকার রক্ষার নামে রাজপথে নামিয়ে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার আন্দোলনকে নস্যাৎ করা যাবে না।
http://www.dailyinqilab.com/details_news.php?id=104508&&+page_id=+5
বিষয়: বিবিধ
১২১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন