কিছু হাদীস........
লিখেছেন লিখেছেন সান বাংলা ২২ আগস্ট, ২০১৫, ১০:৪৯:১৭ সকাল
পছন্দনীয় এ অপছন্দনী স্বপ্ন ।
আবু সা'ঈদ খুদরী [রা:] থেকে বণির্ত । তিনি রাসুলুল্লাহ [সা:]কে বলতে শুনেছেন যে, তোমরা কেউ পছন্দনীয় স্বপ্ন দেখলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে, সুতরাং সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে এবং প্রিয়জনদের কাছে বলে । অপর বণর্নায় আছে সে যেন প্রিয়জন ছাড়া করো কাছে না বলে । আর অপছন্দনীয় স্বপ্ন দেখলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে, সুতরাং সে যেন তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রথর্না করে এবং কারো কাছে না বলে । তাহলে তা তার কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না । [বুখারী-৬৯৮৫]
কর্মের ফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল ।
আমীরুল মু’মিনীন আবূ হাফস উমার বিন খাত্তাব (রা থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন: আমি রাসুলুল্লাহ (সা কে বলতে শুনেছি যে, সকল কাজের পরিণাম নিয়ত অনুযায়ী হবে । প্রত্যেক ব্যক্তি যে নিয়ত নিয়ে কাজ করবে সে তাই পাবে । সুতরাং যার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হয়েছে, তার হিজরত আল্লাহর ও তাঁর রাসুলের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হয়েছে বলেই ধরা হবে । পক্ষান্তরে যার হিজরত দুনিয়া লাভ বা কোন মেয়েকে বিয়ে করার নিয়তে হয়েছে তার হিজরত উক্ত উদ্দেশ্যে হয়েছে বলেই পরিগণিত হবে । [ বুখারী-৬৬৮৯. মুসলিম-১৯০৭ ]
আবু হুরাইরা আবদুর রাহমান বিন শাখর (রা থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা বলেছেন: মহান আল্লাহ তোমাদের শরীর এবং আকৃতির দিকে দেখেন না, বরং তোমাদের অন্তর ও কর্মের দিকে দেখেন । [ মুসলিম-২৫৬৪ ]
মানুষের মৃত্যূর পর তিন ধরণের নেক আমল জারি থাকে ।
আবু হুরাইয়রা [রা:] থেকে বণির্ত । তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ [সা:] বলেছেন- যখন মানূষ মারা যায়, তখন তিনটি বিষয় ছাড়া তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায় । ১. সাদাকা জারিয়া ২. এমন ইলম যা উপকার পাওয়া যায় ৩. নেক সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে । [মুসলিম-১৬৩১]
নামাজে কাতার সোজা করা এবং ফাঁক না রেখে দাঁড়ানো ।
জাবির বিন সামুরা [রা:] থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ [সা:] আমাদের কাছে এসে বলেলেন: ফেরেশতা মন্ডলী যেমন তাদের প্রভুর সামনে কাতারবদ্ধ হয় তোমরা কি তেমন কাতারবদ্ধ হবে না ? আমরা জিজ্ঞাসা করলাম: হে আল্লাহর রাসুল ! ফেরেশতা মন্ডলী তাদের প্রভুর সামনে কিভাবে কাতারবদ্ধ হয় ? তিনি বললেন: তারা আগের কাতারগুলো পূর্ণ করে এবং মাঝখানে ফাঁক না রেখে মিলিতভাবে দাড়ায় । [মুসলিম-৪৩০]
পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হারাম ।
আবু বাকারা নুফা'ই বিন হারেস [রা:] থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন: রাসুলুল্লাহ [সা:] বলেছেন: আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় ও মারাত্মক গুনাহ সম্পর্কে বলব না ? এ কথাটা তিনি তিনবার বললেন । আমরা বললাম অবশ্যই বলুন, হে আল্লাহর রাসুল ! তিনি বললেন : আল্লাহর সাথে শিরক করা । পিতা-মাতার আবাধ্যতা । তিনি হেলান দিয়ে ছিলেন । অত:পর সোজা হয়ে বসে বললেন: সাবধান ! মিথ্যা কথা বলা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া । এ কথাটি তিনি বার বার বলতে ছিলেন, এমনকি আমরা বলতে লাগলাম, আহা যদি তিনি থেমে যেতেন । [বুখারী ও মুসলিম]
জাহান্নামের সবচেয়ে লঘু শাস্তি
وعن النعمان بن بشير رضي الله عنهما ، قَالَ : سَمِعْتُ رَسُول الله صلى الله عليه وسلم، يقول : (( إنَّ أهْوَنَ أهْلِ النَّارِ عَذَاباً يَوْمَ القِيَامَةِ لَرَجُلٌ يوضعُ في أخْمَصِ قَدَمَيْهِ جَمْرَتَانِ يَغْلِي مِنْهُمَا دِمَاغُهُ . مَا يَرَى أنَّ أَحَداً أشَدُّ مِنْهُ عَذَاباً ، وَأنَّهُ لأَهْوَنُهُمْ عَذَاباً )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
নুমান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ কিয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে লঘু শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তির শাস্তি হবে এই যে, তার দুই পায়ের তালুর নিচে আগুনের দু’টি অংগার রাখা হবে এবং তাতে তার মস্তিষ্ক সিদ্ধ হতে থাকবে। সে মনে করবে, তার চাইতে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি আর কেউ হয়নি। অথচ সে-ই জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে হালকা শাস্তিপ্রাপ্ত।
_____________________________
[أخرجه : البخاري 8/144 ( 6562 ) ، ومسلم 1/135 ( 213 ) ( 363 )و( 364 )]
[বুখারী: 8/144 ( ৬৫৬২ ), মুসলিম: 1/135 ( ২১৩ ) ( 363 ) ও ( 364 )]
ফিৎনাগুলো বড়, ছোট ও গ্রীষ্মের হাওয়ার ন্যায় হবেعن حذيفة رضي الله عنه قال قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَعُدُّ الْفِتَنَ مِنْهُنَّ ثَلَاثٌ لَا يَكَدْنَ يَذَرْنَ شَيْئًا وَمِنْهُنَّ فِتَنٌ كَرِيَاحِ الصَّيْفِ مِنْهَا صِغَارٌ وَمِنْهَا كِبَارٌ . [رواه مسلم: رقم الحديث من مكتبة الشاملة (5146)]
হুযাইফা (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিৎনার কথা বলতে গিয়ে বললেন: তিনটি ফিৎনা এমন যা সব কিছুতেই পতিত হবে, এর মধ্যে কিছু আছে যা গ্রীষ্মের হাওয়ার ন্যায় হবে, যার মধ্যে কিছু বড় বড় হবে আবার কিছু ছোট ছোট হবে।
[মুসলিম: কিতাবুল ফিতান ওয়াআশরাতুস্ সায়া, মাকতাবাতুস শামেলাহ্ থেকে হাদীস নং- ৫১৪৬]
বর্তমানের চেয়ে পরবর্তী দিনটি খারাপ হবেعَنْ الزُّبَيْرِ بْنِ عَدِيٍّ قَالَ أَتَيْنَا أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فَشَكَوْنَا إِلَيْهِ مَا نَلْقَى مِنْ الْحَجَّاجِ فَقَالَ اصْبِرُوا فَإِنَّهُ لَا يَأْتِي عَلَيْكُمْ زَمَانٌ إِلَّا الَّذِي بَعْدَهُ شَرٌّ مِنْهُ حَتَّى تَلْقَوْا رَبَّكُمْ سَمِعْتُهُ مِنْ نَبِيِّكُمْ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [رواه البخاري: كبات الفتن, رقم الحديث من الشاملة (6541)]
যুবাইর বিন ‘আদী (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:
আমরা আনাস বিন মালেক (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর নিকট এসে হাজীদের থেকে আমরা যে কষ্ট পাই সে ব্যাপারে আমরা অভিযোগ করলাম। তখন তিনি বললেন: ধৈর্য ধর, তোমাদের সামনে এমন এক সময় আসবে যার বর্তমান দিনের চেয়ে পরবর্তী দিনটি খারাপ হবে, আর এ অবস্থায়ই তোমরা আল্লাহর সাথে মিলিত হবে। আমি এ কথাটি তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট থেকে শুনেছি।
[বুখারী: কিতাবুল ফিতান, বাব লাইয়াতি যামান ইল্লা আল্লাযী বা'দাহু সারুন মিনহু, মাকতাবাতুস শামেলাহ্ থেকে হাদীস নং- 6541]
প্রত্যেককেই নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবেوعن ابن عمر رضي الله عنهما ، قَالَ : سمعت رَسُول الله، يقول: (( كُلُّكُمْ رَاعٍ ، وَكُلُّكُمْ مسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتهِ : الإمَامُ رَاعٍ وَمَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ ، والرَّجُلُ رَاعٍ في أهْلِهِ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ ، وَالمَرْأةُ رَاعِيَةٌ في بيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا ، وَالخَادِمُ رَاعٍ في مَالِ سَيِّدِهِ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ ، فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ [رواه البخاري: 7/41 ( 5200 ) ، ومسلم 6/7 ( 1829 ) ( 20 )].
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: “আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: তোমাদের প্রত্যেকেই রক্ষণাবেক্ষণকারী(বা দায়িত্বশীল) এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পুরুষ তার পরিবার ও সংসারের জন্য দায়িত্বশীল এবং তাকে তার রক্ষণাবেক্ষণ ও দায়িত্বপালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রীলোক তার স্বামীর ঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারিনী এবং তাকে সে সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। খাদেম তার মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তাকে তার সে দায়িত্বপালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। অতএব তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।” [বুখারী: ৭/৪১(৫২০০) ও মুসলিম: ৬/৭(১৮২৯)]
ইচ্ছা-আকাঙ্খাকে ইসলামের অনুগত করাعَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم “لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يَكُونَ هَوَاهُ تَبَعًا لِمَا جِئْتُ بِهِ“.
حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ، رَوَيْنَاهُ فِي كِتَابِ “الْحُجَّةِ” بِإِسْنَادٍ صَحِيحٍ.
আবূ মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূল সাল্লাল্লাহু আল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
তোমাদের মধ্যে কেউই ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না আমি যা এনেছি তার প্রতি তার ইচ্ছা-আকাঙ্খা অনুগত না হয়ে যায়।
[হাদীসটি হাসান। এটাকে আমি কিতাবুল হুজ্জাহ্ থেকে সহীহ্ সনদের সাথে বর্ণনা করেছি।]
দুনিয়াতে অপরিচিত বা ভ্রমণকারী মুসাফিরের মত হয়ে যাও
عَنْ ابْن عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم بِمَنْكِبِي، وَقَالَ: “كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّك غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ”. وَكَانَ ابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يَقُولُ: إذَا أَمْسَيْتَ فَلَا تَنْتَظِرْ الصَّبَاحَ، وَإِذَا أَصْبَحْتَ فَلَا تَنْتَظِرْ الْمَسَاءَ، وَخُذْ مِنْ صِحَّتِك لِمَرَضِك، وَمِنْ حَيَاتِك لِمَوْتِك.
[رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ رقم:6416]
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাঁধ ধরে বললেন:
দুনিয়াতে অপরিচিত অথবা ভ্রমণকারী মুসাফিরের মত হয়ে যাও।
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলতেন, সন্ধ্যা বেলা যখন তোমার সাধ্য হবে, তখন সকালের অপেক্ষা করো না। আর সকাল আসলে সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। অসুস্থতার পূর্বে সূস্থতার মূল্য অনুধাবন কর, আর মৃত্যুর জন্য জীবিত অবস্থায় সংগ্রহ করে নাও।
[বুখারী: ৬৪১৬]
শির্কমুক্ত হয়ে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের প্রতিদানعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْت رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم يَقُولُ: قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: “يَا ابْنَ آدَمَ! إِنَّكَ مَا دَعَوْتنِي وَرَجَوْتنِي غَفَرْتُ لَك عَلَى مَا كَانَ مِنْك وَلَا أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ! لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُك عَنَانَ السَّمَاءِ ثُمَّ اسْتَغْفَرْتنِي غَفَرْتُ لَك، يَا ابْنَ آدَمَ! إنَّك لَوْ أتَيْتنِي بِقُرَابِ الْأَرْضِ خَطَايَا ثُمَّ لَقِيتنِي لَا تُشْرِكُ بِي شَيْئًا لَأَتَيْتُك بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً” .
[رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ ، رقم: 3540، وَقَالَ: حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ].
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন: হে আদম সন্তান! যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি আমাকে ডাকবে এবং আমার কাছে (ক্ষমা) চাইবে, তুমি যা করেছ তা আমি ক্ষমা করে দেব- আর আমি কোন কিছুর পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গোনাহ্ যদি আকাশ সমান হয়ে যায় আর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তাহলে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। হে আদম সন্তান! যদি তুমি পৃথিবী প্রমাণ গোনাহ্ নিয়ে আমার কাছে আস এবং আমার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক না করে দেখা কর, তাহলে আমি সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার সঙ্গে দেখা করবো।
[তিরমিযী (নং-৩৫৪০) এ হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।]
হাশরের ময়দানের ৫টি প্রশ্ন!
عَنْ أَبِي بَرْزَةَ الْأَسْلَمِيِّ قَالَ
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَزُولُ قَدَمَا عَبْدٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ عُمُرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ وَعَنْ عِلْمِهِ فِيمَ فَعَلَ وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَعَنْ جِسْمِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ
[رواه الترمذي: 2417، وقَالَ هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ]
আবূ বারযা নাদলা ইবনে উবায়েদ আসলামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
“কিয়ামতের দিন (হাশরের ময়দানে) বান্দাহ তার স্থানেই দাঁড়িয়ে থাকবে, যে পর্যন্ত না তাকে জিজ্ঞেস করা হবেঃ তার জীবনকাল কিরূপে অতিবাহিত করেছে, তার জ্ঞান কি কাজে লাগিয়েছে, তার সম্পদ কোথা থেকে অর্জন করেছে এবং কিসে খরচ করেছে এবং তার শরীর কিভাবে পুরানো করেছে?”
[ইমাম তিরমিযী এ হাদীস(নং-২৪১৭) বর্ণনা করে বলেন, হাদীস টি হাসান ও সহীহ।]
আল্লাহর নামে ইসলাম গ্রহণ করলে যুদ্ধাবস্থায়ও হত্যা নিষেধ
وعن أَبي معبد المقداد بن الأسْود رضي الله عنه ، قَالَ : قُلْتُ لرسول الله صلى الله عليه وسلم : أرَأيْتَ إنْ لَقِيتُ رَجُلاً مِنَ الكُفَّارِ ، فَاقْتتَلْنَا ، فَضَرَبَ إحْدَى يَدَيَّ بِالسَّيْفِ ، فَقَطَعَها ، ثُمَّ لاذَ مِنِّي بِشَجَرَةٍ ، فَقَالَ : أسْلَمْتُ لِلهِ ، أأقْتُلُهُ يَا رَسُول الله بَعْدَ أنْ قَالَهَا ؟ فَقَالَ : (( لا تَقْتُلهُ )) فَقُلْتُ : يَا رَسُول الله ، قَطَعَ إحْدَى يَدَيَّ ، ثُمَّ قَالَ ذلِكَ بَعْدَ مَا قَطَعَهَا ؟! فَقَالَ : (( لا تَقتُلْهُ ، فإنْ قَتَلْتَهُ فَإنَّهُ بِمَنْزِلَتِكَ قَبْلَ أنْ تَقْتُلَهُ ، وَإنَّكَ بِمَنْزِلَتِهِ قَبْلَ أنْ يَقُولَ كَلِمَتَهُ التي قَالَ )) مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
ومعنى (( أنه بمنـزلتك )) أي : معصوم الدم محكوم بإسلامه . ومعنى (( أنك بمنـزلته )) أي : مباح الدمِ بالقصاص لورثتهِ لا أنه بمنـزلته في الكفر ، والله أعلم .
আবূ মাবাদ মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলামঃ আপনি কি বলেন যদি কোন কাফেরের সাথে আমার মোকাবেলা হয় এবং পারস্পরিক যুদ্ধে সে আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য একটি গাছের আড়ালে আশ্রয় নিয়ে বলে, আমি আল্লাহর জন্য ইসলাম গ্রহণ করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তার ঐ কথা বলার পর আমি কি তাকে হত্যা করব? তিনি বলেনঃ তাকে হত্যা করো না। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! সে তো আমার দুই হাতের একটি কেটেছে, অতঃপর একথা বলেছে। তিনি বলেনঃ তাকে হত্যা করো না। কেননা তুমি যদি তাকে হত্যা করো, তাহলে তুমি তাকে হত্যা করার পূর্বে যে মর্যাদায় ছিলে, সে সেই মর্যাদায় পৌঁছে যাবে; আর যে কলেমা সে পাঠ করেছে, সেই কলেমা পাঠের পূর্বে সে যে স্তরে ছিল; তুমি(তাকে হত্যা করলে) সেই স্তরে নেমে যাবে।
ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন। أنه بمنزلتك কথার অর্থ হলো: ইসলাম গ্রহণ করার কারণে সে ব্যক্তির রক্তপাত হারাম হয়ে গেছে। আর أنه بمنزلته কথার অর্থ হলো: তুমি তাকে হত্যা করার দরুন তার ওয়ারিসদের পক্ষ থেকে কিসাস স্বরূপ তোমার রক্ত প্রবাহিত করা তাদের জন্য বৈধ হয়ে যাবে। কিন্তু তুমি তার মত কাফের হয়ে যাবে না। আল্লাহই ভালো জানেন।
[أخرجه : البخاري 5/109 ( 4019 ) ، ومسلم 1/66 ( 95 ) ( 155 )
বুখারী: ৫/১০৯(৪০১৯), মুসলিম: ১/৬৬(৯৫)(১৫৫)]
রোযাদারকে ইফতার করালে রোযার সমান সওয়াবعن زَيدِ بنِ خالدٍ الجُهَنيِّ قَالَ:
- قَالَ رَسُولُ الله صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: “مَنْ فَطَّرَ صَائِماً كَانَ لَهُ مِثلَ أَجرِهِ غَيرَ أَنَّهُ لا يَنقُصُ من أَجرِ الصَّائِمِ شيئاً”.
رواه الترمذي: 3/171 رقم: 807، قَالَ أَبُو عِيسَى: هَذَا حديثٌ حسنٌ صحيحٌ.
যায়েদ ইবনে খালেদ আলজুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“যে ব্যক্তি রোযাদারকে ইফতার করাবে সে রোযাদারের সমান সওয়াব পাবে এবং রোযাদারের সওয়াবও কোন ক্ষেত্রে কম হবে না।”
[তিরমিযী: ৩/১৭১, নং- ৮০৭, আবূ ঈসা বলেন হাদীসটি হাসান সহীহ্।]
বি:দ্র: নেট থেকে সংগৃহিত!
বিষয়: বিবিধ
১২৯৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন