পারিবারিক অসঙ্গতি.....!?
লিখেছেন লিখেছেন সান বাংলা ০৮ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:৫৭:৫৯ সন্ধ্যা
আমাদের সমাজে একটি পারিবারিক অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায় সেটা হলো বাবা মা যখন বৃদ্ধ হয়ে যায় তখন সন্তানেরা ঠিক মত বাবা মায়ের খোজ-খবর নেয় না এবং যথেষ্ট সেবা-যত্ন করে না।মাঝে মাঝে মনে হয় এটা এখন একটা কালচারে পরিনত হয়ে গেছে বৃদ্ধ বাবা মার সেবা করলে মনে হয় মান সম্মান যাবে এমন একটা অবস্থা!
কিছু পরিবারে দেখা যায় কিছু কুলাঙ্গার সন্তানেরা স্ত্রীর কথায় বৃদ্ধ বাবা মায়ের খোজ-খবর নিতেই চায় না বা নেয় না এবং না নেয়ার জন্য বাবা মার কিছু দোষ উল্যেখ করে বা দেখায়!যেটা আমার চোখে সবচেয়ে ঘৃনিত একটা ব্যাপার।
কিছু পরিবারে দেখা যায় পরিবারের কিছু সংখ্যক সদস্যদের উপর বৃদ্ধ বাবা মায়ের দায়ীত্বটা অর্পন বাকিরা হাফ ছেড়ে বেঁচে যাওয়ার অভিনয় করে যেটা নাকি আমার কাছে মনে হয় বাবা মাকে করুন অপমান করা হয়।
কিছু পরিবারে দেখা যায় বাবা মায়ের খোজ-খবর বা সেবা-যত্নের বিষয়টা পরিবারের বউদের উপর ছেড়ে দেয়া হয় এটা আমার নিকট মোটেও ভালো মনে হয় না।কারন নিজের বাবা মার সেবা-যত্ন খোজ-খবর নিজে না নিয়ে না করে অন্যকে দিয়ে আদায় করানোর একটা হীন চেষ্টা মনে হয় আমার কাছে।
আর এই ব্যাপারটার কারনে অনেক সময় দেখা যায় অনেক পরিবারের বউদের উপর মানসিক টর্চারের পাশা-পাশি শাররিক টর্চারও করা হয়।এমন মনে হয় যেন পুরুষরা বিয়ে করে নিজের জন্য বউ না কাজের বুয়া নিয়ে এসেছে যেন তার সংসারের সব কাজের পাশা-পাশি তার বাবা-মার দায়ীত্বটাও নিতে হবে সেখানে ভালো বা মন্দের কোন প্রশ্নই তুলতে পাড়বে না।অথচ সে নিজে একবারও বাবার কাছে গিয়ে জানতে চায়না বাবা আজ কি খেয়েছ মা আজ কেমন আছো?
****আমরা নয় মাস দশ দিন বা আরো কম বেশী সময় মায়ের পেটে ছিলাম।আমরা দুনিয়াতে আসার দিন মায়ের কি যে কষ্ট হয়েছিল একমাত্র মা-ই জানেন।আমরা দুনিয়াতে আসার পর থেকে দুই বছর মায়ের দুধ পান করেছি। আমরা অবুঝ ছিলাম বলে যখন তখন বাবা মায়ের কোলে প্রশ্রাব-পায়খানা করে মায়ের কাপড় নষ্ট করেছি। সারারাত কান্নাকাটি করে বাবা মায়ের ঘুম নষ্ট করেছি। মা বাবা আমাদেরকে সারাক্ষন পাহারা দিয়ে রেখেছিলেন। নিজে না খেয়ে আমাদেরকে খাইয়েছেন,নিজের স্বাদ-আহল্লাদ মাটি দিয়ে আমাদেরকে পড়া-লেখা করিয়ে মানুষ করেছেন।
তার পর সন্তান বড় হলে "যে সন্তান তার বাবা মাকে শ্রদ্ধা করে না,উপযুক্ত সম্মান করে না এবং যে সন্তানকে কোন কারনে তার বাবা,মা ভয় করে-
>>>>>>>>>>> তার মত কুলাঙ্গার,দুর্ভাগা মানব আখেরাত এবং পৃথিবিতে আর কেউ নেই"
আপনি যত বড় শিক্ষিতই হোন, যত প্রতিভা-ধরই হোন, আপনার বাবা মা অশিক্ষিত হলেও বাবা মায়ের পায়ের নিচেই আপনার জান্নাত।মনে রাখবেন, বাবা মায়ের সেবা করা জিহাদের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
বাবা মা কে সেবা করার জন্য কারো স্ত্রীর বা কারো স্বামীর বিন্দু মাত্র দায়বদ্ধতা নেই তবে সেবা করলে অনেক সোয়াবের ভাগী হবেন।নিজের বাবা মাকে নিজেই সাধ্য মত সেবা-যত্ন করবেন খোজ-খবর নিবেন কারন এর দায়বদ্ধতা আপনার নিজের।সামান্যতম অবহেলার কারনেও আপনি অনেক বড় পাপীর কাতারে দাঁড়িয়ে যাবেন।
আল্লাহ্ সবাইকে হেদায়াত দান করুন।আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১২৮৬ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বেঁক গুরুত্বপূর্ণ লিখাটির জন্য শুকরিয়া
যাক আরেকজন বিজ্ঞান মনস্ক পাইলাম
এখনকার জমানায় বাবা মায়ের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে গেলে স্ত্রীদের বিরাগ ভাজন হতে হয় ।
স্ত্রীর পক্ষ থেকে বাবা মাকে সেবা দূরে থাক , সে যদি স্বামীকে তার নিজের বাবা মায়ের সেবার ক্ষেত্রে ঝামেলা না পাকায় , কাহিনী যদি না করে - সেটাই ঢেড়।
এরকম শতকরা ৯৯% ভাগ পরিবারেই অনুপস্থিত ।
দোষ খোজার প্রতিযোগিতা হলেই সাবধানতার সাথে কথা বলে সমাধান করতে হবে।
মাতা-পিতার প্রতি সামান্য অবহেলা দ্বীন-দুনিয়া ধ্বংশের জন্য যথেষ্ঠ! কতই না হতভাগা আমরা! রহমতায়িত মহামুল্যবান মাতা-পিতার প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করছি না!
আল্লাহ আমাদের কে হেদায়েত দান করুন!আমিন!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন