"ধারাবাহিক নামাজ শিক্ষা"--৪

লিখেছেন লিখেছেন সান বাংলা ২৪ জুন, ২০১৪, ১২:৪৬:১১ দুপুর

সহী হাদিছ অনুসারে নামাজের ওয়াক্ত :

১/ ফজর- পাখি ডাকা ভোরে কিছুটা আঁধার থাকতেই অর্থাৎ সকালের আভা ছড়িয়ে পড়ার আগেই এই নামাজ আদায় করে নেয়া ভাল। তবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রয়োজনে সূর্যের উদীয়মান প্রথম অংশ পূর্ব দিগন্তরেখা অতিক্রম করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে। সূর্যোদয়ের সময় নামাজ পড়া নিষেধ। ফজরের নামাজ মোট চার রাকাত। প্রথমে দুই রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা এবং অতঃপর দুই রাকাত ফরজ।

২/ যোহর- মধ্যাহ্নে সূর্য তার সর্বোচ্চ স্থান থেকে কিছুটা হেলে পড়ার পর পরই নামাজ আদায় করে নেয়া ভাল। তবে সূর্যকিরণ যখন বেশ উত্তপ্ত থাকে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে একটু দেরিতে অর্থাৎ সূর্যের তেজ কিছুটা কমে এলে নামাজ আদায় করে নেয়ার অবকাশ রয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে আছরের সময় হওয়া পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে। যোহরের নামাজ মোট দশ রাকাত। প্রথমে চার রাকাত সুন্নত, তারপর চার রাকাত ফরজ এবং সব শেষে দুই রাকাত সুন্নত। যদি কোন কারণে ফরজের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত আদায় করতে না পারে, তাহলে ফরজের পরে আদায় করে নিবে।

৩/ আছর- জহুরের নামাজের পর অর্থাৎ মধ্যাহ্ন পেরিয়ে সূর্য যখন পশ্চিম দিগন্ত রেখা থেকে বেশ কিছুটা উপরে অবস্থান করে এবং সূর্যের উজ্জ্বলতা/তেজ বিরাজমান থাকে, সেই সময় থেকে সূর্যের সোনালী/তামাটে বর্ণ মিটে গিয়ে রক্তিম বর্ণ ধারণ করার পূর্বেই নামাজ আদায় করে নেয়া ভাল। সে সময় সূর্য দিগন্ত রেখা থেকে এতটা উপরে থাকা উচিত যে, জানালা গলে ঘরের মাঝে ছড়িয়ে পড়া সূর্যকিরণ মিটে গিয়ে যেন ছায়া ঘনিয়ে না আসে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে প্রয়োজনে সূর্যের অস্তগামী প্রথম অংশ দিগন্তরেখা অতিক্রম করার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে। সূর্যাস্তের সময় নামাজ পড়া নিষেধ। আসরের নামাজ মোট আট রাকাত। প্রথমে চার রাকাত সুন্নতে জা\'য়েদা (অনাবশ্যক) এবং অতঃপর চার রাকাত ফরজ।

৪/ মাগরিব- সূর্য সম্পূর্ণরূপে অস্ত যাবার পর কিছু সময়ের মধ্যেই নামাজ আদায় করে নেয়া ভাল। তবে সূর্যাস্তের পর হতে যতক্ষণ পর্যন্ত নিক্ষিপ্ত কোন তীরের পতিত হবার স্থান দৃষ্টিগোচর হয় অর্থাৎ গোঁধুলির রেশ বিরাজমান থাকা (পশ্চিম দিগন্তের লাল আভা অদৃশ্য হয়ে রাতের অন্ধকার ঘনিয়ে না আসা) পর্যন্ত নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে। মাগরিবের নামাজ মোট পাঁচ রাকাত। প্রথমে তিন রাকাত ফরজ এবং অতঃপর দুই রাকাত সুন্নত।

৫/ ইশা- গোধুলী পেরিয়ে রাতের অন্ধকার ঘনিয়ে আসার পর হতে এই নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং রাতের এক তৃতীয়াংশ সময় থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত যে কোন সময়ে নামাজ আদায় করে নেয়া যেতে পারে। ইশার নামাজ মোট দশ রাকাত। প্রথমে চার রাকাত সুন্নতে জা\'য়েদা (অনাবশ্যক), চার রাকাত ফরজ এবং সবশেষে দুই রাকাত সুন্নত। এছাড়াও তিন রাকাত বিতরের ওয়াজিব নামাজ ইশার দুই রাকাত সুন্নত নামাজের পরেই আদায় করে নেওয়া যায়। ফজর, জহুর, আছর ও মাগরিবের নামাজ বেশি দেরি না করে ওয়াক্ত হয়ে যাবার কিছু সময়ের মধ্যেই আদায় করে নেয়া উত্তম। কোন কারনে সময় সম্পর্কে বেখেয়াল হয়ে গেলে বা ঘুমিয়ে থাকলে বা কোন বিশেষ কারনে কোন নির্দিষ্ট নামাজের ওয়াক্ত/সময় পেরিয়ে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা আদায় করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই নামাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে অর্থাৎ যে ওয়াক্তের নামাজ মিস হয়েছে তা আগে আদায় কোরে নিতে হবে। যেমন সূর্যাস্তের আগে আছরের নামাজ আদায় করা সম্ভব না হলে সূর্যাস্তের পর আগে আছরের নামাজ এবং তারপর মাগরিবের নামাজ আদায় করতে হবে। তবে এরজন্য মহান আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। সফরে থাকলে মাগরিব একটু দেরিতে পড়ে তার পরপরই ইশার নামাজ আদায় করে নেয়ার অবকাশ রয়েছে। আবার সূর্য ঢলে পড়ার আগে সফরে বের হলে জুহুর একটু দেরিতে পড়ে একসাথে আছরের নামাজ আদায় করে নেয়া যায়।

বিষয়: বিবিধ

১৪৯৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

238299
২৪ জুন ২০১৪ দুপুর ০১:১৯
সন্ধাতারা লিখেছেন : It is an important post for everybody. Jajakalla khairan.
238363
২৪ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:২৮
হতভাগা লিখেছেন : ভাল হচ্ছে , চালিয়ে যান ।

ফজরের নামাজই বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে কাযা হয় ।

আবার শোনা যায় যে , সুর্যোদয়ের পর প্রথম ২৩ মিনিট কোন নামাজ পড়া নিষিদ্ধ ।

এক্ষেত্রে কি করনীয় ?

ফজরের দুই রাকাত সুন্নতই কি কেবল সুন্নতে মুয়াক্কাদা ? বাকি ওয়াক্তের সুন্নত গুলো ?
238368
২৪ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:২৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
সুন্নাত নামাজ পড়া উচিত তবে তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা ঠিক নয়।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File