“আমিও আজ হ্যামেলিনের বংশীবাদক”
লিখেছেন লিখেছেন ওমর শরীফ ১০ নভেম্বর, ২০১৪, ০৯:৩২:১৫ রাত
না পাওয়র দারুন বিষে নীল রং ধারন করা এই হৃদয়টাকে এই নগরীর ব্যস্ততম সড়কের বিলবোর্ডে ঝুলিয়ে দিতে চাই। মানুষ সব অবাক হয়ে দেখবে! কোনো এক যুবকের ভালবাসাপূর্ণ হৃদয় কিছু সংখ্যাক দাঁড় কাক ঠুকরে ঠুকরে খেয়ে নিচ্ছে। এ অসহ্য বিক্রিয়ার প্রচন্ড তাপে সপ্ত দিবস বিছানায় পড়ে থেকে ভাজা ভাজা হলাম। হৃদয়ে টেকসই হল যন্ত্রনার নীল বর্ণ । যারা কষ্টে পাশে দাঁড়াবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ভঙ্গ করেছে সেই প্রতিশ্রুতি নদীর কূল ভাঙ্গার মত। ফিরিয়ে দিয়েছে হৃদয় হীনের মত। কাকের ঠোটে হৃদয়ের রক্তাক্ত লাল দেখে তারা হয়তো খুব মজা পাবেন। চারদিকে চলছে আজ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের নানান খেলার আয়োজন। প্রয়োজন শুধু উপযুক্ত কৌশলের; অন্যর বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার মত সাজিয়ে-গোছিয়ে বলতে পারার কৌশল আয়ত্ত্ব করতে পারলেই ব্যস,। ‘দেয়া যায় ব্যাগ ভরা প্রতিশ্রুতির বুলি।নীছ থেকে উপর পর্যন্ত এই খেলায় কেউই যেনো হারতে রাজী নয়। কেউ প্রতিশ্রুতি দেয় দশ‘টাকা সের চাল খাওয়াব; আবার কেঊ বলে না… আমরা চালের সাথে ডালও খাওয়াব। সবাই একে একে ভঙ্গ করে তাদের প্রতিশ্রুতি। কেউ কথা দিয়ে কথা রাখেনা। আবার কিছু বলতে গেলেও চেপে ধরে গলায়; এত কিছুর মাঝেও ভেবে ছিলাম তুমি হবে আলাদা। কিন্তু না তুমি কেনো আর বাদ যাবে? তাই শেষ পর্যন্ত তুমিও……!!!
হৃদয়টা আজ তাই বিষে বিষে নীল রুপ ধারন করেছে। মনে কি নেই ? মেয়রের কি প্রতিশ্রুতি ছিলো হ্যামেলিনের বিচিত্র পোশাকধারী বংশীবাদকের কাছে। সেই মেয়রের মত করে তুমিও আজ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে। অথচ তুমিই তো বলেছিলে, ”আমার কথা দুই হলে পূবের বেলা পশ্চিমে যাবে”। শক্ত মেঝের উপর কাঁচ ফেলে দিলে সে-তো ভাঙ্গবেই। তাইতো তোমাকে স্পর্শ করার। তোমার চোঁখে চোঁখ রেখে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার। তোমার ঐ সুগন্ধি ভরা চুলের গন্ধ শোকার। তোমার হাতটা ধরে জ্যোস্নারাতে আকাশের বুকে তাকিয়ে থাকার। বিকেলের গোধূলী রঙের ব্যথীত কষ্টগুলো তোমাকে বলার। তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার। তোমাকে নিয়ে ভালোবাসার কবিতা লেখার। তোমার অজানা কথাগুলো জানতে চেয়ে তোমাকে বিরক্ত করার। এভাবে তোমার উপর সমস্ত অধীকার নিয়ে পথ চলার। সেই অধীকারটুকু তুমি এত সহজেই নিজ হাতে ভেঙ্গে টুকরো করে দিলে। এখন আর সেই অধীকারে হাত বাড়ানোর সাহসটুকু দেখাবার সাহস আমার হয়না।
তবে মাঝে মাঝে এ কালের হ্যামেলিনের বংশীবাদক হতে ইচ্ছে করে । যে বাঁশিতে জাদুকরী সুর তুলে ঘুরে বেড়াই শহরের অলিগলির পথে। সে সুরে ছুটে আসবে সব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারীর দল। তাদের নিয়ে চলে যাব শহরের পাশে পুতিগন্ধময় বুড়ীগঙ্গার তীরে । সেখানে ভিন্ন আরেক সুরে বাঁশি বাজাতেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী মানুষ নামক সব ইঁদুর গুলো একে একে নদীর পানিতে ঝাঁপ দিয়ে মারা যাবে। শহর হবে ইঁদুরমুক্ত। যেখানে সবাই কথা দিয়ে কথা রাখবে। কেউ কারো স্বার্থের জন্য কখনো প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে না।
প্রতিনিয়ত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের আঘাতে জর্জরিত হৃদয় নিয়ে তবুও আমি স্বপ্ন দেখী সেই সু‘দিনের। তাইতো এখন আর নির্ঘুম রাত কাটাই না। কখনো কখনো গভীর রাতে হঠ্যাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলে ভালোই লাগে। দেখতে পাই, এখনওতো হৃদয় জানালার গরাদ বেয়ে মধ্যরাতের সাদা ধবধবে জোৎনার আলো গড়িয়ে পড়ে বিছানায়। প্রতিশ্রুতির অপেক্ষা খুঁজে বেড়ায় নিশুতি অন্ধকারে জোঁনাকি পোকা। হৃদয়ের জানালায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে; তুমি আমার চেতনার একরাশ লাল কৃষ্ণচুড়া। তোমার জন্য এখনো প্রতিক্ষায় সোনালী সকাল আমার পয়মন্ত বিকেল হয়ে জ্যোস্না মাখা রাত হয়ে যায়। এভাবেই ভাবনার দার খুলে এলোমেলো সব মনে পড়ে; টুকরো টুকরো সব জোড়া দিলে কিছুই হয়না । আবার হয় যার কোনো ভিত্তি নেই। তারপর গভীর অন্ধকারকে বিদীর্ন করে হাঁরানো প্রতিশ্রুতিগুলো নিয়ে যেন কেউ একজন হেঁসে উঠে। আমি হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকি আমার সেই প্রতিশ্রুতি ফিরে পাবার প্রত্যাশায়………!!!
বিঃদ্র_শুধুই কাল্পনিক চিন্তা থেকে লেখা।
বিষয়: সাহিত্য
১৮২০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সহিত্যরসে টইটুম্বর একটি লেখা উপহার দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জনাব।
মন্তব্য করতে লগইন করুন