‘মা’ তোমায় খুব ভালবাসি।
লিখেছেন লিখেছেন ওমর শরীফ ০৯ নভেম্বর, ২০১৪, ০৩:১৯:০০ দুপুর
‘মাগো, মা, ওমা, তোমার স্নেহ,মায়া ভরা যাদুর হাতখানা দিবে! দাওনা একটু মাথায়;কপালে বুলিয়ে নেই। আমি যে জ্বরে পুঁড়ে যাচ্ছি মা! আগে যখন অসুস্থ থাকতাম, তখনতো সারারাত জেগে থেকে বসে থাকতে আমার পাশে। আদর আর স্নেহমাখা হাত বুলিয়ে দিতে আমার মাথায়। আজ সারারাত ধরে চোঁখে কোনো ঘুম নেই, শরীরে শক্তি নেই, আমার অস্থিরতা দেখার জন্য পাশেও কেউ নেই। জান মা! এত্তগুলো ঔষধ খেলাম কিন্তু কিছুই তো হচ্ছেনা মা। তোমার হাতটি কপালে রাখার পর শত ছটপটের মাঝেও দু’চোখ নিভে আসত। তোমার আদর দেখে তোমার অস্থিরতা দেখে খুব সহজেই জ্বর সেরে যেত। এখন মনে হচ্ছে ! যদি আমার কপালে তোমার হাতটা একটু রাখতে তাহলে জ্বর আমাকে এমন ভাবে চেপে ধরার সাহস পেতোনা। ‘মা’,আজ যখন মধ্যরাতে জ্বরে যন্ত্রনায় ছটপট করতে থাকি তখন তোমার কথা ভেবে দু’চোখ জলে ভিজে উঠে। নিরবে চিৎকার দিয়ে উঠি মা, কাউকে বলতে পারিনা। তোমার মত মাথায় হাত বুলাতে এখন আর কেউ এগিয়ে আসেনা; তাই চোখে ঘুমও আসেনা। কষ্টের মাঝেই সারা রাতটা পার হয়ে যায়। খুব সকালেই যে,আবার আমায় কাজে যেতে হবে; নইলে যে আর চাকরিটাও থাকবেনা মা। আগেতো বললেও কপাল থেকে হাতটা সরাতে না। এখন কি হলো! দাওনা, আরে দাওনা মা, তোমার যাদুর হাতখানা কপালে রাখি…মা….মা…..মাগো……ওমা ।
এভাবেই জ্বরের মধ্যে ভেবে ভেবে কাতরাচ্ছি আর আবোল-তাবোল বকছি। ‘মা’ এসে তার যাদুর হাতটা কপালে রাখবে আর আমি সুস্থ হয়ে যাবো। হঠাৎ মনটা কেঁদে উঠলো হয়তো মায়ের হাতের একটখানি আদর,স্নেহ পাওয়ার আশায়। সেই অনুভুতিটুকুন কাউকেই বুঝাতে পারিনি। শুধু মাকে অন্তরের মধ্যে রেখেই ডেকেছি অসংখ্যা বার ‘মা,মা’ বলে। এ হচ্ছে আমার আবেগের কথা আর অন্তরের অনুভুতি কিন্তু মাতো আসবেন না; মায়ের আসার কথাও না। কিন্তু মা’যে সন্তানের কষ্ট সবার আগে টের পায় সেটা বুঝতে পারলাম; যখন সকালে মোবাইলে মায়ের অসংখ্য মিস কল দেখতে পেলাম। মাকে কল করে বললাম মা, তুমি কেমন আছ? আর কেন ফোন করেছো ? মা প্রতি উত্তরে অস্থির স্বরেই বললো, ”তোর কথা আজ বেশী করে মনে পড়ছিল! তাই ভাবলাম ফোন করে খবর নেই, আমার খোকাটা কেমন আছে? মায়ের কথা শুনে কিছু বলার আগে না চাইতেই চোঁখ দু’টো ভিজে উঠলো। কাঁদার ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আমি কাঁদতে পারিনি। মা, কষ্ট পাবে তাই বললাম; মা আমি ভালো আছি। কোনো চিন্তা করোনা।আমার জন্য দোয়া করো।
আমি জানি আমার কষ্টগুলো সবার আগে মা’ই প্রথম শুনতে পায়; বুঝতে পারে। তাইতো কখনো মধ্যরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে ‘মা’ খুঁজতে থাকে আমায়; হয়তো স্বপ্নে দেখেছে;‘আমি তার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছি সে-ই ছোট্ট বেলার মত ছোট্ট শিশুটি হয়ে। আর তখনি মায়ের ক্লান্ত চোঁখ ভিজে উঠে জলে। মনের অজান্তেই আমরাও তা অনুভব করতে পারি ;তাইতো হঠাৎ ‘মা,মা’ বলে ডেকে উঠি। ও মা তুমি আজ কতদূরে তোমাকে একটুখানি দেখার জন্য আজ পাখি হবার বড়ই ইচ্ছে জেগেছে মনে। ”কতদিন শুনিনা মায়ের কথা;দেখিনা মায়ের হাঁসি; কি করে বুঝাই আমি ‘মাকে’ কত্তো ভালোবাসি”।
এই হচ্ছেন মা! এটাই মায়েদের বৈশিষ্ট। ‘মা’য়েরা যাদু জানে! সত্যিই যাদু জানে; তবে সেটা সন্তানের কষ্ট বুঝার যাদু। আদর-স্নেহ মায়া আর মমতার এ যাদু রেডিয়ামের মতই আলো এবং শক্তি ছড়ায় আর সে শক্তি সন্তানের জন্য মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসে। মায়ের হাত সন্তানের কপালে সর্বশ্রেষ্ঠ আশীর্বাদের হাত। মায়ের হাতের এ যাদু স্বয়ন মহান আল্লাহর পক্ষথেকে রহমত স্বরুপ। “আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে করি মোনাজাত; আমার মা’কে দিও তোমার শ্রেষ্ঠ জান্নাত”। নক্ষত্র গুলো যেমনি ভাবে তাদের আলো দিয়ে আকাশটাকে সাজিয়ে রাখে। মায়েরাও তাদের আদর-স্নেহ আর মায়া-মমতার আলো দিয়ে পৃথিবীর জমীনটাকে আলোকিত করে রাখে।
আসুন,আমরা সকলে সেই মাকে ভালোবাসি,আমাদের মধ্যে যাদের মা,এখনো বেঁচে আছেন;খোঁজ কি নিয়েছি সেই মায়ের? কাছে,দূরে কিংবা বহুদূরে কেমন আছেন সেই আদরিনী মা? তবে ওদের মতো করে নয়। যারা বছরের মাত্র একটি দিন এলে বলে মা তুমি কেমন আছ? কেন দিনের পর দিন মাকে বলা হয়না;মা তুমি কেমন আছ?মাগো তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
কেন বছরের মাত্র একটি দিন;মা-দিবস পালন করে মাকে বলতে হবে
মা, তুমি কেমন আছো? তোমাকে ভালোবাসি।
কেন পারিনা জীবনের প্রতিটি দিনই মাকে বলতে ‘মা’ কষ্ট দেই বলে ক্ষমা করো। তোমার জন্য আমার সব ভালবাসা। মা,তোমায় খুব ভালবাসি।
বিষয়: সাহিত্য
৬৪৫০ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মায়ের মত আপন কেহ নাইরে
মায়ের মত আপ্ন কেহ নাই।
মা জননী নাইরে যাহার,
ত্রিভুবনে তাহার কেহ নাই রে।
মায়ের মত আপন কেহ নাই।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
রহমতের বিস্তৃত ছায়া হয়ে 'মা' সন্তানদের কে সমস্ত অকল্যাণ থেকে যে ভাবে আকড়ে রাখতে চান,পৃথিবীর কোন কিছুর সাথেই তার তুলনা হয় না! অথচ আমরা সন্তান রা কত কষ্টই না দেই 'মা'কে!
'জান্নাত কে স্বীয় কদম তলে রাখা' সেই 'মা'দের প্রতি যথাযথ কর্তব্য যেন পালন করতে পারি-আল্লাহর কাছে সেই তৌফিক চাই!!
দেখুন মা বাবা কাকে বলে সন্তান আওয়ামী জাহিল পুলিশদের গুলীর আঘাতে শহিদ হয়েছে বাবা মা জানে তার সন্তান ফিরবে না কিন্তু তার পর বেথা ভরা মন নিয়ে বসে থেকে আল্লাহর কাছে দোয়া করছে হে আল্লাহ তুমি আমার সন্তানকে মাপ করে দিয়ে আজন্নাতুল ফেরদাউস দান করিও আমিন। মা বাবা তোমরা সত্যই আল্লাহর বড় নিয়ামাত
মন্তব্য করতে লগইন করুন