“ওরা অন্ধকারের নিশাচর আর আমরা প্রভাতের সূর্য”

লিখেছেন লিখেছেন ওমর শরীফ ২৭ অক্টোবর, ২০১৪, ০২:৪৬:৪৪ দুপুর

অন্ধকারের বুক বিদীর্ন করে একটু আকটু আলোক ছটা দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। আলোকে অপছন্দ করা পেঁচাটি উঁচু গাছের মগডালে পাতার আড়ালে ডাকতে যাচ্ছে তার মুখ। কারন,প্রভাত অতি নিকটে ঘনিয়ে আসছে। পূব আকাশটা লাল রক্তিম রুপ ধারন করে আছে। ইতিমধ্যে,সূর্য এই ধরায় আগমনের বার্তা জানিয়ে দিয়েছে। পৃথিবীকে আলোকিত করার বাসনা নিয়ে এই এখনি,এখনি সূর্য মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। নিমেষেই অদৃশ্য হবে সমস্ত অন্ধকার,আলোয় আলোয় আলোকিত হয়ে যাবে পুরো পৃথিবী। কে আছে তাকে ঠেকাবে?পেঁচাদের কি আর সেই সাধ্য আছে তাকে ঠেকাবার। নেই! সে তো জানে শুধু সূর্যকে অবিশম্পাত আর গালাগালি করতে। আর জানে কিভাবে অন্ধকারে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে হয়। অন্ধকারে তার ভয়ঙ্কর রুপ আর বর বড় চোঁখ দিয়ে চোরের মত স্বীকারের উদ্দেশ্য;প্রতীক্ষায় থাকে অন্ধকার নিশাচর রাতের। রাতভর অপকর্ম করে আর দিন হলে তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। যদি তার কুৎসিত চেহারাটা প্রকাশ হয়ে যায়;সেই ভয়ে মুখ লুকায় নির্জন গর্ত কিংবা গাছের ডালে পাতার আড়ালে।

সত্যে হচ্ছে সূর্যের আলোর মত;তাকে কোন ভাবেই প্রতিহত কিংবা আটকানো যায় না;সে তার সমস্ত আলো নিয়ে জাগবেই। অতীতে যারাই সত্যকে উপেক্ষা করে ;আধারে ঘেরা মিথ্যার রাজ্যে হুতুম পেঁচা সেজেছে। তাদের শেষ পরিনতি হয়েছে অত্যন্ত নাজুক। জুলুমের শেষ পর্যায় পৌছে গিয়েছে বলেই তাদের পতনও নিকটে ঘনিয়ে এসেছিল। যাদের নামটা উচ্চারনেও ছিল আতঙ্কে ভরা বাধা নিষেধ;আজ তারা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ঘৃনিত ভাবে নিক্ষিপ্ত আছে ।

গত ৪৩ বছর ধরে বাংলাদেশে একটা আইডল বিল্ডআপ ছিল। রাজাকার কথাটি শুনলেই অধ্যাপক গোলাম আযম স্যারের মূর্ত প্রতীক ভেসে আসত চোখে। বছরের পর বছর ধরেতো তাঁকে এই দেশের সবচেয়ে খারাপ মানুষ হিসেবে দৃশ্যপটে হাজির করা হয়েছে। কিন্তু কি হয়েছে?এত অপপ্রচার মূহুর্তেই ধূলিস্যাত করে দিয়েছেন গোলাম আযম যার অর্চনা করতেন,সেই মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ। এত অপপ্রচারেও অধ্যাপক গোলাম আযম স্যার চরম ধৌর্যের পরিচয় দিয়েছেন। “ইন্নাল্লাহা মায়াস সবেরীন” নিশ্চয় আল্লাহ ধৌর্যশীলদের সাথে আছেন’। কোরআনের সেই অমীয় বানীকে সত্য করে দেখিছেন রাজাধিরাজ। অবিশ্বাসী শয়তানের অনুসারীরা গোলাম আযম স্যারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েছেন। তিনি চুপ ছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর মানুষ দেখেছে স্যারের জনপ্রিয়তা। তাঁর জনপ্রিয়তা যে এত আকাশ চুম্বি তা কেউ কল্পনায়ও ভাবেনি।

জীবনের শেষ কয়টি বছর মিথ্যা বিচারে উনার উপর যে জুলুম নির্যাতন করা হয়েছে। একজন বৃদ্ধ আল্লাহ ভীরু বান্দার প্রতি ওরা ন্যুনতম সুবিচার ও দেখাতে পারে নি। রুচিহীন মানসিকতায় ভরপুর ওদের শিরা উপশিরা। অবশ্য বিচার ব্যবস্থা নিয়ে বলার কিছু নেই। তাতে আদালত অবমাননা হতে পারে। কিন্তু কি করবো সবকিছু মেনে নিলে যে নিজেকে মানুষ বলে মনে হয়না। অবলা ঐ গাধার মত নিজেকেও গাধা মনে হয়। বিচারের প্রত্যাশায় হাত মেলে রক্তাক্ত হাতে অবিচার নিয়ে ফিরতে হয়। বিচারক বলাতে কেন জানি আমার ঘেন্না লাগে। ছি, ধিক্কার.......এসকল বিচারকদের!

অতীতে অনেক জালীম তার জুলুমের হাতিয়ারে ভর করে মনীব সাজার চেষ্টা করেছিল। কোথায় আজ তারা? এরা কি জানেনা সেই ইতিহাস? কোন ভাবেই কি শিক্ষা নিতে ইচ্ছে করেনা ওদের বিবেক। ঐ বিবেক আর কতো ছড়াবে দূর্গন্ধ। ওরা তাদের জুলুমের হাতিয়ার আর অপপ্রচার দিয়ে একটি মিথ্যাকে সত্যে রুপ দেবার ষড়যন্ত্রে মেতেছিল। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ স্যারের জানাযায় অংশ নিয়ে তাদের সেই মিথ্যাকে মাটির সাথে ধুলিস্যাত করে দিয়েছে।প্রতিটি জেলায়ও অনুষ্ঠিত হয়েছে তাঁর গায়েবানা জানাযাহ। সেখানেও উপড়ে পরেছিল সাধারণ মুসলমানরা। আর ঢাকায় তাঁর যে জানাযাহ হয়েছে সেটাতো বাংলাদেশের এযাবতকালের সর্ববৃহত জানাযাহ।

অধ্যাপক গোলাম আযম স্যারের মৃত্যুর পর মানুষ জেনেছে তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়,বরং পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের কাছে তিনি একজন প্রিয় ইসলামিক পন্ডিত ব্যাক্তি ছিলেন। আর তা দেখে হুতুম পেঁচাদের তো মরে যাবার অবস্থা

ওরা ভুলে গেছে ফেরাউন,নমরুদের কথা;ভুলে গেছে দুনিয়ার তাবৎ জালীম,জুলুমবাজ,সন্ত্রাসী জানোয়ারদের শেষ পরিনতির কথা। ওরা কি জানেনা;'আল্লাহ প্রেমিকদের হৃদয়ে কোন ভয় থাকেনা। রাসূল যাদের জীবনে প্রেরনার উৎস তারা জানে কিভাবে বুক পুলিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। তাই মরনেও তাদের বিন্দুমাত্র নেই ভয়। শহীদি তামান্নায় জীবনকে বিলিয়ে দিতে চায় বলে ওরা বুক পুলিয়ে বরন করতেও জানে সকল নির্যাতন। জুলুম,নির্যাতন ছাড়া জান্নাতের সুবাতাস পেয়েছে কি কেউ? কতজন মুজাহিদ? জুলুম,অত্যাচার,নির্যাতন দিয়ে হয়তো একজন মানুষকে নিঃশ্বেষ করা যায়;কিন্তু একটি আদর্শকে কখনো ধ্বংশ করা যায় না। তেজদীপ্ত ঈমান নিয়ে তবুও তারা এগিয়ে যাবে লক্ষ্যপানে। এখন শুধু অপেক্ষা সেই বিজয়ের। পূব আকাশ লাল রক্তিম রুপ ধারন করে আছে;যেকোন মুহূর্তেই সূর্য তার সমস্ত আলো নিয়ে দেখা দিবে। অপেক্ষা এখন প্রভাতের সূর্যের।

বিষয়: বিবিধ

১৩৯৫ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

278628
২৭ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৫১
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৭ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:০২
222405
ওমর শরীফ লিখেছেন : স্বাগতমGood Luck
278638
২৭ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:০৮
ফখরুল লিখেছেন : অন্ধকার কখনও আলোর কাছে টিকতে পারেনা তেমনি মিথ্যা কখনও সত্যকে চেপে রাখতে পারেনা।
অসাধারন শব্দের বুনন মাশাআল্লাহ অনেক চমৎকার একটি লেখা। ভালোবাসা রেখে গেলাম। Rose Rose Rose Rose Rose
২৭ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৭
222414
ওমর শরীফ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ Rose Rose Rose
278644
২৭ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:৪০
নূর আল আমিন লিখেছেন : সত্যসমাগত মিথ্যা দুরিভুত
২৭ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:৫৪
222472
ওমর শরীফ লিখেছেন : যখন সত্য এসে মিথ্যার সামনে দাঁড়ায় মিথ্যা বিলুপ্ত হয়ে যায় কারন মিথ্যার বৈশিষ্টই হলো এমন যে,একদিন সে বিলুপ্ত হবেই।Good Luck
278687
২৭ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
মামুন লিখেছেন : লেখাটি খুব ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইলো। Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up Rose Rose Rose
২৭ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:৫৫
222473
ওমর শরীফ লিখেছেন : আপনার প্রতিও শুভেচ্ছা রইলো। Rose Rose Rose
278696
২৭ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৯
রিদওয়ান বিন ফয়েজ লিখেছেন : সত্যিই অসাধারন লিখেছেন । অনেক ধন্যবাদ আপনাকে । জাযাকাল্লাহুল খাইর.।।
২৭ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:৫৬
222474
ওমর শরীফ লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদRose Rose Rose Rose Rose Rose Rose Rose

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File