‘অধ্যাপক গোলাম আযম’(একটি জীবন একটি ইতিহাস)

লিখেছেন লিখেছেন ওমর শরীফ ২৬ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:৩০:২০ রাত



বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ। এমন একটি ব-দ্বীপ যার শরীরে বয়ে চলে শত,শত নদী। নদী পাড় ভাঙে,ভাঙে গ্রামের পর গ্রাম;যেন ভাঙা-গড়াই এর নিত্য খেলা। ঋতুর খেলাও ঠিক তেমনই আসতে না আসতেই পরিবর্তন হয়। স্থিরতা নেই আবহাওয়ারও। এর সাথে পাল্লা দিয়ে আসে ঝড়-টর্নেডো,ছিন্ন-ভিন্ন করে দেয় আবাসস্থল। এ দেশে এভাবেই চলে প্রকৃতির তা-বলীলা। এর সাথে সংগ্রাম করেই মানুষ বেঁচে থাকে।

এ দেশে প্রকৃতি যেমন পরিবর্তন হয় প্রতিনিয়ত তেমনই মানুষের মন ও বিশ্বাসের প্রতিনিয়ত পরিবর্তন ঘটে। কোনো বিশ্বাসেই আমরা বেশি দিন স্থির থাকতে পারি না। দুঃখ-বেদনাই যেন আমাদের নিত্য সঙ্গী। সীমাহীন দুঃখ-ব্যথাও ভুলে যাই সময়ের পরিক্রমায়। এরই সুযোগ নেয় শাসকরা। প্রতারণা আর বিমাতাসুলভ আচরণে বিষিয়ে দেয় আমাদের জীবন। রক্ষক হওয়ার ওয়াদা দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে জোর উদ্যোমে চালায় ভক্ষকের কাজ। পাকিস্তানি শাসকদের বর্বরতা,আর নীতিহীন আচরণের বিরুদ্ধে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। কিন্তু,স্বাধীনতার পরপরই যাদের হাতে আমরা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ শাসনের ক্ষমতা দেই তারাই আবার শোষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় ,হত্যা করে গণতন্ত্র। যারা পাকবাহিনীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়েছিল;তাদের হাতেই হতে থাকে অনবরত মানুষের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত। জনগণ তাদেরও ছুঁড়ে ফেলে দেয় ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে।

জাতির এই ভাঙা-গড়া ও বিশ্বাস-অবিশ্বাসের খেলার মধ্যেও যে গুটিকয়েক ব্যক্তি আদর্শের উপর অনঢ়-অটুট বিশ্বাস রেখে নিজের জীবন পার করে দিয়েছেন তাদের অন্যতম হলেন অধ্যাপক গোলাম আযম । ইসলামের জন্য তিনি নিজের জীবন উৎর্সগ করে গেছেন। আপোস করেন নি অন্যায়ের সাথে। যিনি মনে প্রানে বিশ্বাস করতেন যে,আল্লাহকে ছাড়া আর অন্য কাউকেই ভয় করার কোন অনুমতিই নেই। সেই মানুষটি সম্পর্কে কিংবা তার জীবনের নানা দিক নিয়ে বিচার বিশ্লেষন করার যোগ্যতা আমার নেই ;আমি পারবোনা উনার জীবনের যেই ব্যাপকতা সেই ব্যাপকতা আমার ভাষায় ফুটিয়ে তুলতে। তাই সেই সাহসটুকুও আমি দেখাতে চাইনা। তাই বলে ইতিহাস কখনো থেমে থাকেনা। ইতিহাসের উপর আবার নতুন করে ইতিহাস লেখা হয়।

যে ইতিহাস লেখা হয়ে গেছে তার মৃত্যুর পর কুটি মানুষের হৃদয়ে। তাদের চিন্তা-চেতনায় তাদের অফুরন্ত ভালোবাসায়। তাইতো সকল বাঁধা আর নির্যাতনের ভয়কে উপেক্ষা করে ছুটে এসেছেন শেষ বারের মত প্রিয় নেতাকে আরেকটি বার দেখার জন্য।তার জানাযায় উপস্থিত হয়েছেন তার আদর্শে উজ্জীবিত কিশোর,যুবক বৃদ্ধ সকল শ্রেনীর লাখো লাখো মানুষ। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছে তার গায়েবান জানাযা। শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় বিদায় দিয়েছেন সবুজ পাখির ঠিকানায়। গুটি কয়েক মানুষ যারা উনাকে অপচন্দ করতেন কিংবা তাদের রুচিহীন গালি গালাজের জবাবে তিনি বলতেন, ‘কারো কোন গালিতে আমার ব্যাথা লাগেনা কিংবা কারো প্রশংসায় ও আমি আনন্দিত হইনা; আমি কেবল ভাবি ,আমার রব আমাকে নিয়ে কি ভাবছেন এবং আমি আমার রব,কে খুশি করার জন্য কি করতে পেরেছি। কখনো তিনি ক্ষমতার লোভে ছল-ছাতুরীর আশ্রয় গ্রহণ করেন নি। তিনি আজীবন নীড়হারা এই জাতিকে দিতে চেয়েছেন নীড়ের সন্ধান;আর এজন্যই ইসলামের পথে ডেকে গেলেন মানুষকে আজীবন। তিনি আমাদের প্রেরণার মধ্যমণি। যুগ থেকে যুগান্তরে হৃদয়ের ভালোবাসায় সিক্ত এক কিংবদন্তি হয়ে বেঁচে আছেন,এবং বেঁচে থাকবেন তিনি।

বিষয়: বিবিধ

১৩০৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

278619
২৭ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৩৮
ফখরুল লিখেছেন : বাংলাদেশের ইসলামী আন্দলনের এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।
আল্লাহ উনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। Praying Praying Praying Praying Praying Praying Praying
২৭ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:২৭
222489
ওমর শরীফ লিখেছেন : আমিনPraying

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File