’’শহীদি মিছিল’’
লিখেছেন লিখেছেন ওমর শরীফ ২৮ জুলাই, ২০১৩, ০৬:৪২:৫০ সন্ধ্যা
মাগো,তুমি আর কেঁদোনা; এবার আমায় মিছিলে যেতে দাও
শহীদি মিছিল আমায় বারবার ডাকছে
বাঁধার সকল প্রাচীর ভেঙ্গে ঐতো মিছিল আসছে!
আমাকে যেতে হবে মা,আমাকে যেতে দাও
শুনতে পাচ্ছো একিসের ধ্বনি?
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে ঝড় তুলছে।
''নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার''
এতো বাতিলের বিরুদ্ধে বাতিলকে উৎখাত করার ধ্বনি
ত্যাজদীপ্ত ঈমান নিয়ে ছুটে আসছে বীর মুজাহীদের দল।
মাথায় কপিন বেঁধে একে একে সমবেত আজ বদরের প্রান্তরে
ওদের কেউ কেউ আবার চলে যাচ্ছে সবুজ পাখিদের নীড়ে।
কি নির্ভিক সাহস ওদের দেখলে চমকিত হতে তুমি!
ওরা বাতিলের সামনে মাথা নুয়াতে জানেনা
ওরা বুক পেতে দেয় নির্ভয়ে; মৃত্যুকে ওরা পরোয়া করেনা।
তাদেরই ভাই হয়ে আমি কি করে ঘরে থাকি বল মা!
আজ আমার ভাইদের ওরা নির্মমভাবে শহীদ করছে
ওদের তাজা প্রানগুলো একএক করে সব
লুটিয়ে পড়ছে ধুলোমাখা রাজপথে।
এ নির্মম নির্যাতন আর যে সহ্য হয়না!
ওরা আমাদের শাস্যত ইসলাম; আমাদের প্রানের নবীকে নিয়ে কটুক্তি করে
ওরা ভাবে অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা হুতুম পেঁচাটির মত
আমরাও ঘাপটিমেরে ঘরে বসে থাকবো।
অথচ ওরা জানেনা আমাদের শরীরে যে রক্ত টগবগ করছে
এ রক্ত বদর আর অহুদের কথা বলে; কথা বলে
উহুদের প্রান্তরে নিজেকে ক্ষত,বিক্ষত করে
রাসূলকে নিরাপত্তা দিয়ে যাওয়া সে তালহার কথা।
আমরাতো তাদেরই উত্তরসূরী; তবে কি করে চুপ থাকি বলো মা!
সময় এসেছে নাস্তিক নমরুদদের দূর্গে আরেকটি শক্ত আঘাত হানবার
ওদের দূঃসাহসের দেয়াল ভেঙ্গে গুড়ে চুরমার করবার।
আমাদের দোয়া করো মা, এ লড়াইয়ে আমরা যেনো বিজয়ী লাভ করতে পারি।
চেয়ে দেখ ঐ-যে দূরে তাজা টগবগে চেহারার যুবকটির দিকে
সে আজ আর একা নয়; আজ জন্ম নিয়েছে লাখো কোটি তালহার আদর্শ।
ওরা আমাদের প্রানের প্রিয় নেতাদের জেলে বন্দী করে রেখেছে।
অন্যায়ভাবে তাদের উপর চালাচ্ছে যুলুম আর নির্যাতন।
ওরা বারবার ভুলে যায় নীলনদ আর ফেরাউনের কথা।
এবার আমরা শক্তভাবে ওদেরকে বুঝিয়ে দিতে চাই
যেখানে ফেরাউনদের সৃষ্টি হয়; সেখানে মূসার উওরসূরীরাও বারবার জন্ম নেয়।
বেরিয়ে পড়েছে আজ শহীদি কাফেলা; নীড়ে ফিরে যাচ্ছে সবুজ পাখির ঝাঁক।
ঐ নীড়ে তোমার ছেলেও যে যেতে চায়; যেতে দাও মা!
হয়তো আর ফিরবোনা;যদি না ফিরি
তবে এ দেখাই শেষ দেখা মনে করো
হ্যাঁ,আবার দেখা হবে;প্রানখুলে আবার বলবো অনেক কথা
সেদিন আর তোমার অবাধ্য হবোনা;
আমার জন্য তোমাকে আর কাঁদতেও হবেনা।
কেননা সেদিন আর কোন জালিম থাকবেনা;
থাকবেনা কোন যুলুম আর নির্যাতন
আজ ওরা আমাদের ঘরে থাকতে দেয়না
হায়েনার হিংস্র দন্তগুলো আমাদের রক্ত খুঁজে বেড়ায়
আমাদের নিষ্পাপ দেহগুলো ওরা ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে চায়
হায়েন আর শকুনের মতো।
যদি শহীদ হয়ে আমার লাশটি ফিরে আসে তোমার কোলে
তবে মাথায় একটু হাত বুলিয়ে ভেবে নিও তোমার ছেলে ঘুমিয়ে গেছে।
আমার রক্তমাখা সাদা জামাটি তোমার কাছে যত্নকরে রেখে দিও
পরকালে আমার রবকে সেটি দেখিয়ে বলবো
"হে আমার মালিক' এই রক্তমাখা লাল জামাটি ছাড়া
আমি তোমার জন্য আর কিছুই আনতে পারলাম না।
তোমার দ্বীনের খেদমতে এতোটুকুই সৌভাগ্য মিলেছে আমার
শুধু এর বিনিময়ে তুমি আমাকে জান্নাত দান করো।
কথা দিলাম, সেই জান্নাতে আমি তোমাকে সাথে করে নিয়ে যাব।
খবরদার! আমার রক্তমাখা লাশটি দেখে একফোটাও কাঁদবেনা তুমি
শহীদদের মায়েদের যে কাঁদতে নেই!
ঘুম ভাঙ্গলেই আবার ওপারে দেখা হবে তোমার সাথে
সেদিন নাহয় আজ দুপুরের খাবারটা আদর করে খাইয়ে দিও।
বিষয়: বিবিধ
১৬৩২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চমৎকার লেখনী, আমাদের ছেড়ে না যাওয়ার দরখাস্ত। টুডে বাসীর জন্য আপনাদের বড় প্রয়োজন। আশা করি সাথে থাকবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন