স্লো পয়জনিং ২

লিখেছেন লিখেছেন লালসালু ২৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০২:০২:২৮ দুপুর

স্লো পয়জনিং-২

“আঙ্কেল আমি আপনার মেয়ের সাথে কক্সবাজারে বেড়াতে যেতে চাই!!!”

এই কথা কোন মেয়ের বাবাকে বললে নির্ঘাত চড় থাপ্পড় খেতে হবে। ইভ টিজিং এর মামলায় গ্রেফতার হতে পারি। কথাটা নিচের মত করে যদি বলি-

“ভাই তোমার বোনের সাথে কক্সবাজার যেতে চাই”

যাকে বলব সে হাতের কাছে যা পাবে তা নিয়েই আমার উপরে………….

ব্যপারটা কী দাঁড়াচ্ছে? বিয়ের সম্পর্ক ছাড়া কোন ছেলে মেয়ে দূরে কোথাও বাবা মায়ের জ্ঞাতসারে এক সাথে বেড়াতে যেতে পারে না। কিন্তু বাংলা চলচিত্রের এক বিখ্যাত সিনেমায় দেখানো হয়েছে বাবা তার মেয়েকে, ভাই তার বোনকে ছেলে বন্ধুর সাথে অচেনা এক দ্বীপে পাঠিয়েছে! কী সেই বিখ্যাত সিনেমা আর সেই দ্বীপের নাম কী?

আমার প্রিয় লেখক হুমায়ন আহমেদের লেখা ও পরিচালিত ‘দারুচিনি দ্বীপের দেশে’ সেই বিখ্যাত সিনেমা। সিনেমা বের হবার আগে থেকেই বইটি আমার পড়া। হলে গিয়ে সিনেমাটিও দেখেছি। সিনেমার কাহিনী হল- বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কিছু তরুণ তরুণী যাদের সম্পর্ক ‘ক্লাস মেট’ তারা দারুচিনি দ্বীপ নামের এক দ্বীপে বেড়াতে যাবে। সেই বেড়াতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সেই সিনেমার কাহিনী। শুভ্র নামের এক কোটিপতির ছেলে যার চোখ প্রায় অন্ধ তাকে বাবা মা যেতে দিচ্ছে না শুধু মাত্র ‘চোখের সমস্যার’ কারনে। এক ছেলে যেতে পারছে না টাকার অভাবে। এক মেয়ের (যে শুভ্রকে ভালবাসে কিন্তু বলতে পারছে না) সে যেতে পারছে না কারন তার বিয়ে। মোট কথা প্রায় সবারই কোন না কোন সমস্যা আছে তাই যাওয়াটা অনিশ্চিত। সেই অনিশ্চিত যাত্রা নিশ্চিত করার জন্য যে চেষ্টা গল্পের প্রাত্র প্রাত্রীরা করেছে তাতেই সিনেমা শেষ। সিনেমার শেষ দৃশ্যে দেখা যায় তারা ঠিকই ট্রেন ধরতে পেরেছে। অর্থাৎ তাদের টার্গেট পূরণ হয়েছে। অনেকের পরিবার থেকে সেই দারুচিনি দ্বীপে যেতে বাঁধা এসেছে কিন্তু সেটা হয় অর্থনৈতিক কারনে হয় স্বাস্থ্য গত কারনে অথবা বিবাহের কারনে। কিন্তু দামড়া (তরুণ-তরুণী) কিছু ছেলে মেয়ে এক সাথে কয়েক দিন বাইরে এক সাথে থাকবে এই কারনে কোন পরিবার থেকে বাঁধা আসে নি। সেটাকে ‘খুব স্বাভাবিক’ ভাবে মেনে নেয়া হয়েছে। ভাব দেখে মনে হল তরুণ তরুনী যাদের মধ্যে সম্পর্ক শুধু ‘ক্লাস মেট’ তারা ইচ্ছা করলেই দুই এক দিনের জন্য এক সাথে কোথাও ঘুরতে যেতে পারে।

এবার আসুন, আপনি যদি কোন মেয়েকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যান আপনার বাবা মা কি এলাউ করবে?

কোন আপুরা যদি তাদের ছেলে ক্লাস মেটের সাথে কয়েকদিনের জন্য কোথাও ঘুরতে যান বাসায় কি এলাউ করবে?

আমি এক কথায় উত্তর দিতে পারি- কোন ক্রমেই এলাউ করবে না। অথচ সেই ‘অস্বাভাবিক’ জিনিসটাই সিনেমাতে ‘স্বাভাবিক’ করে দেখানো হয়েছে। এখন প্রশ্ন করতে পারেন সিনেমা সিনেমাই, এর থেকে শেখার কী আছে?

আমি উত্তর দিব- সিনেমা আজ যা দেখায় পনের বিশ বছর পরে সেটাই স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। বিশ বছর আগে বাংলা সিনেমায় মেয়েরা টাইট জামা কাপড় পড়ত যা ঐ সময়ে চিন্তাও করা যেত না। আজ কাল মেয়েরা খুব স্বাভাবিক ভাবেই টাইট ফিটিং জামা কাপড় পড়ছে। এটাকে স্লো পয়জনিং না বলে কী বলবে

বিষয়: বিবিধ

১২৪৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

277387
২৩ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৪৩
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ অশিক্ষিত তাই সিনেমা বা মিডিয়ায় যা দেখানো হয় তাই সাধাসিধে মনে বিশ্বাস করে ফেলে।
277393
২৩ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৫০
মামুন লিখেছেন : লেখাটি খুব ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইলো।
277416
২৩ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:২৫
আফরা লিখেছেন : খুব সুন্দর লিখেছেন তো ! ধন্যবাদ
277470
২৩ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৩
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
333427
০৩ আগস্ট ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩১
আমিন লস্কর লিখেছেন : আবারো আপনার সাথে একমত।সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File