স্লো পয়জনিং -১
লিখেছেন লিখেছেন লালসালু ২২ অক্টোবর, ২০১৪, ০৬:২৫:০২ সন্ধ্যা
স্লো পয়জনিং-১
১- বছর দশেক আগে ‘মার্ডার’ নামে এক হিন্দী হট সিনেমা বের হয়। ভিলেনের অভিনয় করেছিল ইমরান হাশমী, যার সিনেমায় দুই একটা হট সিন থাকেই। তখন মার্ডার সিনেমা অনেক নাম করেছিল। ছবিটি সবাই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেছিল। আমিও লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেছিলাম। সিনেমার কাহিনী হল নায়কের স্ত্রী নায়িকা তার পুরনো প্রেমিক ইমরান হাশমীর সাথে অনেক দিন পরে দেখা হয়, পুরনো প্রেম জেগে ওঠে এবং তারা শারীরিক মিলন শুরু করে। এতে নায়িকা প্রথমে অনুতপ্ত হয়ে উঠলেও পরে নায়িকার কাছে স্বাভাবিক হয়ে যায়। পরের দৃশ্যে দেখা যায় ইমরান হাশমী (নায়িকার সাবেক প্রেমিক) আর নায়িকার স্বামী (নায়ক) পুরনো বন্ধু। কী এক ঘটনায় কীভাবে যেন ইমরান হাশমী খুন হয়। পরে দেখা যায় না খুন হয় নাই। যেহেতু তখন ‘হট সীন’ দেখার উদ্দেশ্যে সিনেমাটি দেখেছিলাম তাই এই কাহিনীর প্রতি মনযোগ ছিল না। টেনে টেনে শুধু হট সীন গুলোই দেখেছিলাম! শেষের দৃশ্যে দেখা যায় নায়ক (স্বামী) জানতে পারে নায়িকা (স্ত্রী) ইমরান হাশমীর সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িত। এটা জেনেও সে তার স্ত্রীকে বুকে টেনে নেয়। তারা আবার সুখে শান্তিতে বাস করতে লাগল।
২- বছর খানেক আগে ‘হেইট স্টোরি’ নামে আরেকটা হিন্দী সিনেমা বের হয়। ‘হেইট স্টোরি’ মূলত ছিল ‘হট স্টোরি’। সিনেমার নায়িকা প্রতিশোধ নিতে একের পর এক পুরুষের সাথে রাত কাটায়। নায়িকার ছেলে বন্ধু (শুধু মাত্র এর সাথেই নায়িকা রাত কাটায় নি) নায়িকার সব কিছু জানার পরেও সিনেমার শেষ সিনে নায়িকাকে ভালবাসার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বেরসিক ডিরেক্টর সিনেমার শেষ সিনে নায়িকাকে মেরে ফেলে।
৩-আরেকটা সিনেমার কথা শুনেছিলাম, নাম মনে নেই, দেখি নি। সেই সিনেমার কাহিনী হল নায়িকা একজনের স্ত্রী। কীভাবে যেন কার সাথে রাতা কাটায়, আকাম করে। নায়িকা অনুতপ্ত হয়, নায়িকার স্বামী পরে মেনে নেয়।
৪-আজ দুপুরে জনপ্রিয় ব্লগার ধীবর ভাইয়ের পোষ্ট থেকে জানতে পারলাম চিত্র পরিচালক রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরবালি’ ছবিতে নায়িকা নিয়মিত দেহ দান করত। নায়ক সব কিছু জানার পরেও নায়িকাকে ভালবাসার অফার করে।
১, ২, ৩ নং উদাহরন হল ভারতের আর ৪ নং উদাহরন হল বাংলাদেশী চলচিত্রের। খেয়াল করে দেখুন চারটি সিনেমা কী মেসেজ দিচ্ছে! আপনার বউ অন্য কোন পুরুষের সাথে রাত যাপন করলে তাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখতে হবে। এটাকে ভুল হিসাবে দেখতে হবে। এভাবে মানুষের মনে একটু একটু করে ‘বিষ’ ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে যাকে বলে ‘স্লো পয়জনিং”। নারীকে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে তুমি যা খুশী তাই করো আর পুরুষকে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে ‘এটাই স্বাভাবিক’!!!
এ বিষয়ে আজ আর কিছু বললাম না। আরেক পোষ্টে জানাব।
বিষয়: সাহিত্য
১৯৯৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক আগ থেকেই সুকৌশলে এসব অনাচার কে স্বাভাবিক ব্যাপার বলে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চলছে।
'স্বামী ছিনতাই' ছবিতেও মান্নার'পরকিয়া'কে সাধারণ ভূল বলে প্রকাশ করা হয়েছে।
একেবারে ঠিক বলেছেন ভাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন