আমি যে কারনে বিজেপি নেতার দাবীর পক্ষে
লিখেছেন লিখেছেন লালসালু ২২ এপ্রিল, ২০১৪, ০৮:৫১:২৯ রাত
যে কারনে আমি বিজেপি নেতার দাবীর প্রতিবাদ করছি না!
বিজেপি নেতা স্বামী দাবী করেছেন খুলনা থেকে সিলেটে একটা সরলরেখা টেনে তা ভারতের হাতের তুলে দিতে। না দিলে প্রয়োজনে যুদ্ধ করবে।
এ বিষয়ে মিডিয়ারা নীরব। নীরব না হয়ে উপায় নেই কারন বাংলাদেশের ভারতপন্থী সরকারের আস্থাভাজন না হলে চ্যানেল ওয়ান, ইনকিলাব, বিএসবি নিউজ, দিগন্ত টিভির ভাগ্যবরন করতে হবে। কে চায় তার চাকরিটা হারাতে? তার চেয়ে বরং নীরব থাকা ভাল। নিজে বাঁচলে দেশের নাম। শাহবাগপন্থী দেশপ্রেমিকরা চুপ। তাদেরও চুপ থাকার কারন আছে কারন এটা স্পষ্ট যে তারা ভারতপন্থী। আওয়ামীলীগের বড় অংশ চুপ থাকবে কারন তারা বাম নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া ছাড়া আর কোন মিডিয়ার খবর দেখে না অর্থাৎ বিজেপি নেতার বক্তব্য তাদের ক্যান পর্যন্ত পৌঁছে নাই জীবনে পৌঁছাবেও না। শুধু ফেইসবুক, ব্লগে কিছু চিল্লাচিল্লি হচ্ছে। বিএনপি জামাতের সমর্থকরা পোষ্ট স্টেটাস দিচ্ছে। চরম ভারতবিদ্বেষী হওয়া সত্বেও আমি এখন পর্যন্ত এটা নিয়ে কোন স্টেটাস দেই নাই। এখন দিচ্ছি।
প্রথমে আমি বলে নেই আমি ঐ বিজেপি নেতার বক্তব্যের পক্ষে তবে একটু এডিট করতে চাই। ঐ নেতার দাবী হল খুলনা থেকে সিলেট পর্যন্ত একটা সরলরেখা টেনে তা ভারতের সাথে যোগ করতে হবে। না হলে যুদ্ধ করতে হবে।
১) আমি যা এডিট করতে চাই তা হল বিজেপি নেতা দেশের অর্ধেক চেয়েছেন, আমি পুরোটা দেয়ার পক্ষে। শুধু শুধু রেখা টানাটানি কেন?
২) ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে প্রতি বছর অনেক মানুষ মারা যায়। যেহেতু তখন একই দেশ হবে তাই বিএসএফ এদেশের মানুষকে আর গুলি করবে না, মানুষও মরবে না। সীমানা থাকবে না, কাঁটাতার থাকবে না, ফেলানীরাও ঝুলবে না।
৩) বাংলাদেশীদের অন্যতম প্রিয় খাবার হল গরুর মাংস। সীমানা পাড়ি দিয়ে প্রতি বছর অনেক গরু চোরাই পথে বাংলাদেশে আসে, তাতে খরচ অনেক পড়ে যায়। এসব গরু যদি তখন একই দেশের এক রাজ্য থেকে বঙ্গরাজ্যে আসে তখন চোরাই পথে আসবে না। গরুর মাংসের দামও কমবে। আই লাভ গরুর মাংস।
৪) ভারতে ট্রেন একটি জনপ্রিয় যানবাহন। আমি অনেকের মুখে ভারতের ট্রেন সার্ভিসের প্রশংসা শুনেছি। যদি একই দেশ হয়ে যায় তখন এই চান্সে বাংলাদেশের ট্রেনও ‘কিছুটা মানুষ’ হবে।
৫) প্রতি বছর অনেক টাকা খরচ করে বাংলাদেশের মানুষ ভারতে চিকিৎসা করতে যায়। এর মধ্যে আমার চাচীও ব্রেন টিউমারের অপারেশন ভারতে গিয়ে করিয়েছেন। চাচা হুজুর মানুষ, চাচীও বোরখা পরেন। এ জন্য পাসপোর্ট পেতে অনেক অসুবিধা হয়েছিল। এক দেশ হলে তখন আর পাসপোর্ট লাগবে না। ভারত থেকে বিশ্বের অনেক দেশে ভিসা ছাড়া যাওয়া যায়, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যায় মাত্র দশ বারোটি দেশে। এই সুবিধা তখন আমরাও পাব।
৬) বাংলাদেশের নেতাদের আমি সবসময় ঘৃণা করি। এখন যারা প্রতাপশালী জাতীয় নেতা তখন তারা হবেন স্থানীয় নেতা! এই দৃশ্য দেখে আমার আনন্দে ঘুম চলে আসবে।
৭) ভারতে যখনই কোন রেল দুর্ঘটনা ঘটে তখনি ভারতের রেইলমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। এটা ভারতীয়দের ঐতিহ্য। এই সংস্কৃতি তখন বঙ্গরাজ্যেও চালু হবে।
৮) সিনেমা হলে গিয়ে যাদের ভারতীয় সিনেমা দেখার খুব শখ তাদের সকল শখ পূর্ণ হবে। এখনো ভারতীয় সিনেমা চলে তবে ‘কিছু কিছু বাজে’ লোক এতে বাধা দেয়ায় পুরো দমে ভারতীয় সিনেমা চলছে না।
৯) সানি লিওনের ভক্ত বিশেষ করে কালের কন্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন খুশি হবে।
১০) সবচেয়ে বেশি খুশি হব ‘জাতির পিতা’ ইস্যু নিয়ে। এই ইস্যুটা তখন ধামাচাপা পড়বে। কারন ভারতের নিজস্ব জাতীর পিতা রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীর পিতার নাম ওরা ইচ্ছা করেই ইতিহাস থেকে মুছে যাবে।
১১) স্বাধীনতার ঘোষক নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন করবে না। প্রশ্ন করলে তাকে ‘গুন্ডে’ সিনেমা দেখতে বলা হবে।
১২) এখন যারা প্রবল প্রতাপশালী পুলিশ অফিসার, সচিব তাদের কারো বেইল থাকবে না। বেনজির আহমেদের স্থলে আসবে ওমুক সিং কিংবা তমুক ভট্টাচার্য অথবা লাল পান্ডে!
১৩) সবচেয়ে বেশি খুশি হবে ডাইলখোরেরা! ডাইল ফ্রী!!!
১৪) এদেশ থেকে দাদাবাবুদের জন্য ইলিশ কষ্ট করে ধরতে হবে না। দাদাবাবুরাই তখন নৌকা নিয়ে এসে ইলিশ মাছ ধরবে। এদেশের লোকেরা তখন ইলিশ ধরতে পারবে না। বঙ্গরাজ্যের লোকজন চাষের পাঙ্গাস মাছ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তখন এদেশের (বঙ্গরাজ্যের) আঞ্চলিক জাতীয় মাছ হবে ‘চাষের পাঙ্গাস’।
১৫) এখন যারা ভারত বিরোধীতার কথা বলে তারা আর এই ইস্যু নিয়ে কথা বলবে না কারন নিজ দেশের বিরুদ্ধে কে কথা বলবে? এই সব লোকজন তখন নতুন নতুন ইস্যু খুজে পাবে।
১৬) বিরোধী দলের বিভিন্ন আন্দোলনে বর্ডার গার্ড গুলি করে নেতা কর্মীদের হত্যা করেছে। এক দেশ হলে বর্ডার গার্ডের আর প্রয়োজন হবে না।
১৭) নাচ,গান করার জন্য কোন পাসপোট দরকার হবে না এমনি এমনি আসতে পারবে আর আমাদের ছেলে মেয়েরা দিন যে হারে হিন্দী ভাষা রপ্ত করছে তাতে এক রাজ্য হলেও সমস্যা হবে।
১৮) জাতীয় পতাকা জাতীয় সংগীত নিয়ে কেউ রেকর্ড গড়তে চাইবে না ভারতীয়রা এসব ফালতু কাজের পক্ষে নয়। তাই দেশের অনেক টাকা বাঁচবে।
১৯) জাতীয় সংগীত নিয়ে ইদানিং ছাগুরা দাবী করছে এটা বদলাতে হবে। ছাগুদের সেই মনেত বাসনা পূরণ হবে। নতুন জাতীয় সংগীত হহবে "পোন্দে মাতরম"!
২০) আমাদের মা বোনেরা যারা ভারতীয় সিরিয়াল নিয়মিত দেখে তারা তখন আরী নতুন নতুন চ্যানেল দেখতে পাবেন।
২১) যারা হিন্দীতে স্টেটাস দেন, হিন্দীতে কথা বলেন তাদের সরকারী সুবিধা বেড়ে যাবে।
২২) আইপিএল এ বাংলাদেশী দল খেলতে পারবে।
২৩) ভারতের ক্রিকেট একাদশে সাকিব, তামিম 'এক্সট্রা প্লেয়ার' হিসেবে খেলতে পারবে।
২৪) জাবির জসীমুদ্দিন মানিক তার যোগ্য অনুসারী পাবে। বংগ রাজ্যের রাজধানী ঢাকার বাসে ধর্ষণ হবে। ধর্ষণ তখন একটি শিল্পের পরিণত হবে। তখন অনেকের নাম হবে "শিল্পাচার্য ধর্ষক আবেদীন"।
২৫) ১৫ই আগষ্ট নিয়ে বিতর্ক হবে না। শোক দিবস নিয়ে ছাত্রলীগ চাঁদাবাজি করতে পারবে না। কারন ১৫ই আগষ্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস। একই দিনে কেউ শোক পালন করতে পারবে না।
২৬) ভারত নিয়ে দেশের ডান পন্থী বুদ্ধিজীবীরা টেনশনে হারটের অসুখ বাধিয়ে ফেলেছেন। তাদের টেনশন দূর হবে। দেশ কিছু সুস্থ বুদ্ধিজীবী পাবে।
২৭) পদ্মা সেতু নিয়ে দূরনীতি হবে না। কারন ভারতে দূরণিতিবাজ রাজনীতিবিদদের স্থান নেই। এদের দল থেকে বের করে দেয়া হয়। ভারত নিজ স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনে নিজ টাকায় পদ্মা সেতু করে দিবে।
২৮) তিস্তা নিয়েও আর আন্দোলন করতে হবে না কারন মমতা তখন হবেন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী! ভোটের জন্য তিনি তখন "পানি ছেড়ে দিবেন"। এটাকে কেউ ১৮+ ভাববেন না।
২৯) যারা জাতির নাতিকে পছন্দ করেন না তাদের জন্য সুখবর! ভারতের জাতির নাতি হল রাহুল গান্ধী!
বিষয়: বিবিধ
১৩৫১ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন