সানি লিওনরা যেভাবে এই দেশে প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে!;
লিখেছেন লিখেছেন লালসালু ১৩ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:৫০:২৯ রাত
যে দেশে সানি লিওনের মর্যাদা নেই সেই দেশে সানি লিওন জন্মাতে পারে না।!
-
-
-
-
-
মূল বাক্যটা ছিল-যে দেশে গুণীর মর্যাদা নেই সেই দেশে গুণী জন্মাতে পারে না। অর্থাৎ যে দেশে যে টাইপের লোকের মর্যাদা থাকে সেই দেশে সেই টাইপের লোক জন্মায়।
এখন আসুন সানি লিওন প্রসঙ্গে। সানি লিওন একজন পর্ণস্টার। এর বাংলা অনেক শব্দ আছে যেমন বেশ্যা, খাঙ্কি, মাগী, ছিনাল ইত্যাদি ইত্যাদি। এরা সাধারন মানুষের কাছে ঘৃণিত। যারা এদেরকে ব্যবহার করে তাদের কাছেও এরা ঘৃণিত। নষ্ট পুরুষ কখনো কোন বেশ্যাকে বিয়ে করে না এমনকি তাদের করা রান্নাও খেতে চায় না। কারো সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চায় না-এই বেশ্যা আমার ‘ওমুক’ লাগে। যতই পর্ণস্টার ডাকুক না কেন সানি লিওন একজন বেশ্যা বই অন্য কিছু নয়। তার কাজ হল সেক্সের বিনিময়ে টাকা রোজগার। সেক্সের বিনিময়ে টাকা রাস্তার হোটেলের বেশ্যারাও কামায় কিন্তু তারা নিজেকে গোপন রাখতে পছন্দ করে। কিন্তু সানি লিওন ও অন্যান্য পর্ণস্টারদের ক্ষেত্রে ব্যপারটা হয়েছে ভিন্ন। মিডিয়া তাদেরকে স্টার হিসেবে পরিচিত করিয়েছে। তারা রাস্তা ঘাটে ওপেন ঘুরছে, ভক্তদের অটোগ্রাফ দিচ্ছে, ফেইসবুকে ফ্যান পেইজ খুলছে, টুইটারে টুইট করছে, বিজ্ঞাপনে মডেল হচ্ছে, সিনেমার নায়িকা হচ্ছে। শুধু নায়িকাই হচ্ছে না অনেক দামী নায়িকা! অন্যান্য নায়িকারা যে পারিশ্রমিক পাচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি পারিশ্রমিক সানি লিওন পাচ্ছে। পাওয়ার কারনও আছে- দর্শক জরীপ! যারা নাটক সিনেমা বানায় তারা দর্শক জরীপও করে। দর্শক জরীপে বের হল সানি লিওনের দর্শক অন্যান্য নায়িকাদের চেয়ে বেশি, তাই বেশি পারিশ্রমিক দিলে ক্ষতি কি? পুরোটাই তো লাভ। মিডিয়ারাই সানি লিওনকে সাধারন সমাজের চোখে ঘৃণিত ‘বেশ্যা’ থেকে ‘স্টার’ এ রুপান্তরিত করেছে।
এখন প্রশ্ন করতে পারেন সানি লিওন তো আগে থেকেই পর্ণ ‘স্টার’ ছিল। নতুন করে ‘স্টার’ কীভাবে হল? সানি লিওন ছিল কানাডা প্রবাসী। সেই দেশের পর্ণ অভিনেতা অভিনেত্রীদের তারকা খেতাব দেয়া যায় কিন্তু আমাদের উপমহাদেশে এদের তারকা খ্যাতি নেই। হিন্দী এক সিনেমার মাধ্যমে সানি লিওনের ‘মূল ধারা’ চলচিত্রে যাত্রা শুরু। যদিও ‘মূল ধারা’ চলচিত্রে সানি লিওনের ভূমিকা ছিল পর্ণস্টারের মতই। এরপর দক্ষিন এশিয়ায় সানি লিওনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়! তাকে বিভিন্ন পার্টি, টক শো, বিজ্ঞাপন, টিভি শো, আইটেম সং এ দেখা যেতে থাকে। এমনকি তাকে বিভিন্ন বিয়ে বাড়ীতেও ভাড়া (!) খাটতে দেখা যায়। বিয়ে বাড়ীতে তার কী কাজ? সানি লইওন যেহেতু অনেক জনপ্রিয় তাই বিয়ে বাড়ীতে সানি লিওনের উপস্থিতি বিয়ে বাড়ীর ঔজ্জল্যকে বাড়িয়ে দেয়। এরপর সানি লিওনকে দিয়ে শুরু হয় ‘ফিতা কাটা’ ব্যবসা’ প্রশ্ন করতে পারেন “এটা আবার কী ব্যবসা?” বিভিন্ন শো-রূম বিশেষ করে জামা-কাপড়, এসি, ফ্রীজ ইত্যাদি বড় ব্র্যান্ডের দোকান গুলো উদ্ভোধন করানো হয় সাধারনত বিখ্যাত কাউকে দিয়ে। যেমন বাংলাদেশের অনেক শো রুম উদ্ভোধন করা হয়েছে ডঃ ইউনুস, ফরহাদ মাজহার, ভারতের খেলোয়ার সৌরভ গাঙ্গুলী, পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম এই টাইপের লোকজন দিয়ে। ঠিক তেমনি ভারতের অনেক শো-রূমের উদ্ভোধন করানো হচ্ছে সানি লিওনকে দিয়ে। এক সানি লিওনের ঈরষনীয় সাফল্য দেখে অনেক সানি লিওনের জন্ম হবে।
এবার আসি মূল কথায়। সানি লিওনরা যে পরিবেশে বড় হয় সেই পরিবেশে বাংলাদেশের জরিনা, সখিনাকে বড় হতে দিলেও তারা বড় হয়ে সানি লিওন হতে চাইবে। এক সময় যে পর্ণস্টারের কথা আমরা শুধু ‘রসময় গুপ্তের’ চটি বই অথবা অমি পিয়ালের ‘যৌবণ জ্বালার’ মাধ্যমে জানতাম এখন আমরা তা পাচ্ছি দেশের প্রতিষ্ঠিত জনপ্রিয় দৈনিক বসুন্ধরা গ্রুপের মুখপাত্র ‘কালের কন্ঠ’ ও ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এ। যে সানি লিওনের ছবি তরুণরা গোপনে দেখতে বিভিন্ন সাইটে সেই সানি লিওনের ছবি দেখা যায় পত্রিকার প্রথম পাতায়।
বাংলাদেশে সানি লিওনকে একটা স্টারের মর্যাদা দেয়ার চেষ্টা চলছে। একে নিয়ে পথে ঘাটে আলোচনা হচ্ছে। বলা যায় না হয়তো যে কোন দিন শুনব সানি লিওন বাংলাদেশের কোন একটি ‘এইডস বিরোধী কনসার্টে’ নাচবে! অর্থাৎ সানি লিওনকে সাধারন মানুষের কাছে ‘চোখ সওয়া’ বানানো হচ্ছে। যারা ‘চোখ সওয়া’ শব্দটি শোনেন নাই তাদের জন্য-অনেক ক্ষন রোদের আলো থেকে অন্ধকারে আসলে হঠাৎ করে কিছুই দেখেন না। কিছুক্ষন এই অন্ধকার পরিবেশে থাকতে থাকতে তিনি অন্ধকারে আবছা আবছা দেখতে পারবেন। এক সময় এই অন্ধকার পরিবেশ ওনার কাছে ‘স্বাভাবিক’ মনে হবে। বাংলাদেশে সানি লিওনকে ‘স্বাভাবিক’ বানানো হচ্ছে। শহরের ক্লাস ফাইভের ছেলেটা যে এখনো সেক্স কী জিনিস তা জানে নআ সেও সানি লিওনের নাম জানে। সানি লিওনকে দিয়ে শুরু এর পরে আসবে সানি লিওনের অন্যান্য সহযোগীরা। যেমন এক সময় বাংলাদেশে যখন সুন্দরী প্রতিযোগীতা শুরু হল তখন হুজুররা, সাধারন মানুষেরা বাঁধা দিয়েছিল কিন্তু এখন সবার ‘চোখ সওয়া’ হয়ে গেছে। হুজুররা এখন আর বাধা দেয় না। প্রতিটি চ্যানেলে এখন বিভিন্ন নামে সুন্দরী প্রতিযোগীতা হয়। যেমন, ইউ গট দ্যা লুক, লাক্স ফটোসুন্দরী, হুমায়ন আহমেদের সিনেমার জন্য নায়িকা বাছাই ইত্যাদি নামে বেনামে সুন্দরী ওরফে সানি লিওনের ‘ছোট ভার্সন’ তৈরির প্রোগ্রাম চলছে।
এবার আসি প্রথম বাক্যে-যে দেশে সানি লিওনের মর্যাদা নেই সেই দেশে সানি লিওন জন্মাতে পারে না।!
বাংলাদেশে এখন সানি লিওন তৈরির ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। এদেরকে বাঁধা না দিলে এক সময় দেখবেন আমাদের ঘরেই জন্ম নিবে পরবর্তী পর্ণস্টার!!! আপনার বোনকে দেখে মানুষ কমেন্ট করবে “মালটা কত খাসা………….
পুনশ্চঃ ইতিমধ্যে বাংলাদেশের এক মেয়ে বিকিনি মডেল হিসেবে খুব নাম করেছে। ফেইসবুকে যারা নিয়মিত পদচারনা করেন তারা ভাল করে ওনার নাম জানেন। এটা হল শুরু মাত্র
বিষয়: বিবিধ
১৪৩৬ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন