গায়েবানা জানাযা পড়া কি শরীয়ত সম্মত?
লিখেছেন লিখেছেন মদীনার আলো ২৬ অক্টোবর, ২০১৪, ০৯:৩৪:৩৪ সকাল
প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম।
শ্রদ্ধেয় মুফতি সাহেব,
ইদানিং “গায়েবানা জানাযা” নিয়ে বেশ তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে । কেউ বলতেছে জায়েয, আবার কেউ বলতেছে এই জানাযা জায়েয নেই ।
তাই
প্রশ্নটির উত্তর সময় করে জানালে চলমান পরিস্থিতিতে আমরা অনেকেই উপকৃত হবো এবং তর্ক-বিতর্কেরও অবসান হবে আশা করি। আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সহায় হোন ।
প্রশ্নকর্তা- মুহাম্মদ রাজু
নোয়াখালী ।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
গায়েবানা জানাযা বিষয়ে ফক্বীহদের মতামত
ইমাম আযম আবু হানীফা (রাহ.) ও তার অনুগামী সকল ইমাম এবং ইমাম মালেক (রাহ.)এর মতে- গায়েবানা জানাযা জায়েয নেই। চাই দাফনের আগে হোক বা পরে। মাইয়্যিত শহরের ভিতরে থাক বা বাইরে। (মাবসূতে সারাখসী- ২/৬৭, দারুল কুতুবিল ইলমিয়া, বৈরুত, মানহুল জালীল- ১/৩৭৬ পৃষ্ঠা)।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রাহ.) থেকে জায়েয হওয়ার একটি উক্তি থাকলেও স্বীয় শাগরিদ ইবনে আবী মুসা তাঁর থেকে নাজায়েয হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। হাম্বলী মাযহাবের প্রসিদ্ধ ফিক্বাহ্বিদ আল্লামা ইবনে কুদামা (রাহ.) এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, অর্থাৎ- “ইমাম মালেক (রাহ.) ও ইমাম আবু হানীফা (রাহ.) উভয়ে বলেন, গায়েবানা জানাযা জায়েয নেই। ইমাম আহমদ (রাহ.) থেকে ইবনে আবী মুসা উক্ত ইমামদ্বয়ের অনুরূপ (নাজায়েয হওয়ার) একটি উক্তি বর্ণনা করেছেন।” (আলমুগনী, ইবনে কুদামা (রাহ.)- ২/৩৮৬ পৃষ্ঠা)।
ইমাম শাফেয়ী (রাহ.) ও ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রাহ.)এর মতে মাইয়্যিত ভিন্ন শহরে থাকলে গায়েবানা জানাযা জায়েয। কিন্তু শহরের ভিতরে থাকার মাইয়্যেতের গায়েবানা জানাযা জায়েজ নয়। মাইয়্যেতকে উপস্থিত করতে হবে। (আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু- ১/৫০৪, মাকতাবাতুল হক্কানিয়্যাহ, পাকিস্তান, আল মাজমু- ৫/২৫৩)।
আল্লামা ইবনু আবদিল বার (রাহ.) গায়েবানা জানাযা নাজায়েয হওয়ার উক্তিকে জমহুর ফুক্বাহা তথা সংখ্যাগরিষ্ঠ উলামায়ে কেরামের মতামত বলে অভিহিত করেছেন। যেমনটি উল্লেখ করেছেন বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার শাইখুল হাদীস মাওলানা যাকারিয়া (রাহ.)। তিনি বলেন, “হানাফী ও মালেকী ওলামাগণ বলেন, গায়েবানা জানাযা শরীআত সম্মত নয়। ইবনু আবদিল বার (রাহ.) এ উক্তিকে অধিকাংশ ওলামাদের মত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।” (লামিউদ দারারী- ৪/৪৩২ পৃষ্ঠা)।
বিশুদ্ধতম মত
অনুপস্থিত ব্যক্তির জানাজা বা গায়েবানা জানাযা বলতে কোন শব্দ কুরআন, হাদীসের কোথাও নেই। এর কোন প্রমাণ না কুরআনে আছে, না হাদীসে আছে। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীগণ, তাবে তাবেয়ীগণ থেকে এ শব্দের কোন জানাযার প্রমাণ পাওয়া যায় না।
তাই গায়েবানা জানাযা পড়া জায়েজ নেই। এটি বিদআত।
রাসূল সাঃ ও খুলাফায়ে রাশেদীন কোন দিন কারো গায়েবানা জানাযা আদায় করেননি
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুম রহঃ বলেন, মুসলমানদের মাঝে অনেক এমন ব্যক্তি ইন্তেকাল করেছেন যারা রাসূল সাঃ থেকে দূরে তথা গায়েব ছিলেন। কিন্তু নবীজী সাঃ কারোরই গায়েবানা জানাযা পড়েননি। {যাদুল মাআদ-১/৫১৯}
এমনিভাবে হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাঃ এর আমলে কত কারী সাহাবীকে মুসাইলামায়ে কাজ্জাব শহীদ করেছে। আরো কত সাহাবী জিহাদের ময়দানে শহীদ হয়েছেন কিন্তু হযরত আবু বকর রাঃ এবং অন্যান্য সাহাবীগণ কেউই গায়েবানা জানাযা আদায় করেননি।
হযরত উমর রাঃ এর আমলে কত জিহাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কত হাজার হাজার সাহাবা জিহাদের ময়দানে মদীনা থেকে বহু দূরে শহীদ হয়েছেন। কিন্তু কোন একজনেরও গায়েবানা জানাযা হযরত উমর রাঃ আমলে অনুষ্ঠিত হয়েছে মর্মে কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না।
পারবে না হযরত উসমান রাঃ ও হযরত আলী রাঃ এর আমলের কোন উদাহরণ পেশ করতে। অথচ হযরত উসমান রাঃ ও হযরত আলী রাঃ আমলেও কত হাজার হাজার সাহাবা ও তাবেয়ীগণ শহীদ হয়েছেন। কিন্তু কোন সাহাবীই গায়েবানা জানাযার ইলান করেছেন বা নিজে গায়েবানা জানাযার নামায পড়েছেন মর্মে কোন প্রমাণ না হাদীস থেকে পেশ করতে পারবে, না ইতিহাস থেকে পেশ করতে পারবে।
গায়েবানা জানাযা জায়েয প্রবক্তাদের দলীল ও তার খন্ডনঃ
দলীল
বুখারী শরীফে হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) সূত্রে একটি বর্ণনায় রয়েছে, “মহানবী (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে বাদশাহ নাজাশীর মৃত্যু সংবাদ দিলেন। অতঃপর জানাযার জন্য অগ্রসর হলেন। সাহাবায়ে কেরাম তাঁর পিছনে কাতার বন্দী হয়ে দাঁড়ালে নবীজী (সা.) চারটি তাকবীর বললেন।” (বুখারী শরীফ, দিল্লী- ১/ ১৬৭ পৃষ্ঠা)।
একই বর্ণনা সহীহ ইবনে হিব্বানে (১/১৬৭) হযরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে ।
আর নাজাশী যেহেতু মদীনায় উপস্থিত ছিল না, অথচ রাসূল সাঃ তাদের নাজাশীর জানাযা নামায পড়িয়েছেন, তাই বুঝা গেল যে, গায়েবানা জানাযা পড়া জায়েজ। রাসূল সাঃ থেকেই গায়েবানা জানাযা পড়ার প্রমাণ রয়েছে।
উত্তর
১ম জবাব
প্রথমে আমরা দেখে নেই উক্ত হাদীসটি কোন রাবী বর্ণনা করেছেন? উক্ত হাদীসের বর্ণনাকারীগণ নাজাশীর জানাযা সংশ্লিষ্ট হাদীস থেকে গায়েবানা জানাযা জায়েজ হবার দলীল হিসেবেই বুঝেছেন না ভিন্ন কিছু?
উক্ত হাদীসের প্রসিদ্ধতম রাবী রয়েছেন তিনজন। যথা-
১- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ।
২- হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ।
৩- হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাঃ।
বাদশা নাজাশী ইন্তেকাল করেছেন নবম হিজরীর রজব মাসে। {হাশিয়ায়ে মুয়াত্তা মালিক-২০৮}
আর হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ ইন্তেকাল করেছেন ৫৯ হিজরীতে। অর্থাৎ উক্ত ঘটনার পর হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ প্রায় ৫০ বছর জীবিত ছিলেন। হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ ইন্তেকাল করেছেন ৭৯ হিজরীতে ইন্তেকাল করেছেন। সেই হিসেবে তিনি উক্ত ঘটনার পর ৭০ বছর জীবিত ছিলেন। আর হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাঃ উক্ত ঘটনার পর জীবিত ছিলেন প্রায় ৪৩ বছর।
কিন্তু হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ এ ৫০ বছরের মাঝে, হযরত জাবের রাঃ পুরো ৭০ বছরের মাঝে এবং হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাঃ তার জীবনের এই ৪৩ বছরের মাঝে কোনদিন কারো গায়েবানা জানাযা পড়েছেন, কিংবা গায়েবানা জানাযা পড়তে বলেছেন কেউ প্রমাণ দেখাতে পারবে?
এত দীর্ঘ বেঁচে থাকার পরও উক্ত ঘটনা থেকে এসকল সাহাবাগণ যদি গায়েবানা জানাযা জায়েজের প্রমাণই বুঝে থাকতেন, তাহলে তাদের জমানায় ইন্তেকাল হওয়া অসংখ্য সাহাবীদের গায়েবানা জানাযা তাদের পড়ার কথা। কিন্তু একজনের গায়েবানা জানাযা পড়ানোর কোন প্রমাণ না কোন হাদীস গ্রন্থে আছে না কোন ইতিহাস গ্রন্থে পাওয়া যায়। যা পরিস্কার প্রমাণ করছে যে, উক্ত ঘটনা দ্বারা কোন সাহাবী গায়েবানা জানাযা জায়েজ বুঝেননি। বরং বিষয় ছিল ভিন্ন। আসলে কি হয়েছিল তখন? আমরা যদি উক্ত ঘটনার বর্ণনা সম্বলিত সকল হাদীসকে সামনে রাখি, তাহলে আমাদের কাছে উক্ত বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
২য় জবাব
নাজাশীর ঘটনা সম্বলিত হাদীসমূহ
১
হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাঃ বলেন- وَمَا نَحْسِبُ الْجِنَازَةَ إِلَّا مَوْضُوعَةً بَيْنَ يَدَيْهِতথা আমরা জানাযার ব্যাপারে এটাই অনুধাবন করছিলাম যে, তা আমাদের সামনে রাখা আছে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২০০০৫}
২
হযরত ইমরান বিন হুসাইন রাঃ বলেন- وَهُمْ لَا يَظُنُّونَ إِلَّا أَنَّ جَنَازَتَهُ بَيْنَ يديهতথা “সাহাবায়ে কেরামের বিশ্বাস এটাই ছিল যে, জানাযা হুযূর (সা.)এর সামনে উপস্থিত। {সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩১০২}
৩
এছাড়া উক্ত বর্ণনাটি হযরত আবান (রাহ.) সূত্রে হযরত ইমরান ইবনে হাছীন থেকে বর্ণিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে যে, “যখন নবীজী (সা.)এর পিছনে জানাযা পড়েছি, তখন নাজাশীর লাশকে আমাদের সামনে উপস্থিত দেখতে পেয়েছি।” (উমদাতুল কারী শরহুল বুখারী- ৭/৩৩, মাকতাবায়ে তাওফীকিয়া, মিসর; ফাতহুল বারী- ৩/২৪৩ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ)।
৪
আবু আওয়ানাতে এ শব্দ এসেছে যে, نحن لا نرى ان الجنازة قدمناতথা আমরা দেখছিলাম যে, আমাদের সামনে জানাযা রাখা।
উপরোক্ত সকল বর্ণনার দিকে তাকালে পরিস্কার হয়ে যাবে, নাজাশীর জানাযা বর্ণনাকারী সাহাবীগণ কেন উক্ত ঘটনা দ্বারা গায়েবানা জায়েজের দলীল মনে করেননি। নাজাশীর জানাযার বর্ণনা করলেও জীবনে কোনদিন নিজে গায়েবানা জানাযা পড়েননি। কারণ তারা পরিস্কার বুঝেছিলেন নাজাশীর জানাযার নামাযটি গায়েবানা জানাযা নয়। বরং উপস্থিত ব্যক্তির জানাযা। রাসূল সাঃ এর মুজেযা স্বরূপ নাজাশীকে নবীজী সাঃ এর সামনে উপস্থিত করে দেয়া হয়েছিল। আর সেই জানাযা সামনে নিয়ে নবীজী সাঃ জানাযা পড়িয়েছেন। আর সামনে নিয়ে জানাযা পড়ার নাম উপস্থিত ব্যক্তির জানাযা গায়েবানা জানাযা নয়। সাহাবাগণ এ ভেদ জানার কারণে কোন সাহাবী জীবনে কোনদিন গায়েবানা জানাজা পড়েননি। কিংবা গায়েবানা জানাযা পড়ার দাবিও করেননি, কিংবা গায়েবানা জানাযার পক্ষে উক্ত হাদীসের দলীলও পেশ করেননি। কারণ তারা জানতেন আসলে উক্ত ঘটনাটি একটি মুজেজা। যাতে নাজাশী গায়েব ছিল না, আল্লাহর কুদরতে নবীজী সাঃ এর মুজেজা স্বরূপ উপস্থিত ছিল।
দূরের বস্তু উপস্থিত হয়ে যাওয়ার মুজেজার প্রমাণ কি?
আল্লাহ তাআলার জন্য কোন কিছুই অসম্ভব নয়। নবীদের মুজেজা আর ওলীদের কারামত সত্য। এটাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের আকিদা। রাসূল সাঃ থেকে আল্লাহ তাআলা অনেক মুজেজা প্রকাশিত করেছেন। এর মাঝে এটাও ছিল যে, মাঝে মাঝে দূরের বস্তুকে কাছে করে দিতেন। এসব করায় রাসূল সাঃ এর নিজের কোন ক্ষমতা ছিল না। পুরোটাই আল্লাহ প্রদত্ব।
বেশ কিছু মুজেজাপূর্ণ ঘটনায় দূরের বস্তু কাছে দেখেছেন রাসূল সাঃ। যেমন-
১
রাসূল সাঃ মদীনায় ছিলেন। তুমুল যুদ্ধ চলছিল তখন মুতা প্রান্তরে। সাহাবাগণ জীবন বাজি রেখে দ্বীনের জন্য লড়াই করে যাচ্ছিলেন। মদীনায় বসে শত শত মাইল দূরের মুতা প্রান্তরের বর্ণনা রাসূল সাঃ দিচ্ছিলেন। বলতেছিলেন, “জায়েদ ঝান্ডা নিয়েছে এবং শহীদ হয়ে গেছে। তারপর ঝান্ডা জাফর নিয়েছে সেও শহীদ হয়ে গেছে। তারপর ঝান্ডা আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা নিয়েছে সেও শহীদ হয়ে গেছে।” এ পর্যায়ে রাসূল সাঃ কেঁদে দিলেন। বলতে লাগলেন-“এবার ঝান্ডা খালিদ বিন ওয়ালিদ নিয়েছে আর বিজয়ী হয়ে গেছে।”। {সহীহ বুখারী-১/১৬৭}
২
মক্কায় অবস্থান করা অবস্থায় হাজার মাইল দূরের বাইতুল মাকদিসের পূর্ণ হালাত দেখে দেখে কাফেরদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন। {বুখারী-১/৫৪৮}
হাবশা, মুতা আর বাইতুল মাকদিসতো দূনিয়ার স্থান। আমাদের নবীতো মদীনায় বসে থেকে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখেছেন। {বুখারী-১/৭৭,১০৩,১২৬,১৪৪,১৬৪}
৩য় জবাব
এ ঘটনা রাসূল সাঃ এর সাথে বৈশিষ্টমন্ডিত। যদি রাসূল সাঃ এর সাথে বৈশিষ্টমন্ডিত না হতো, তাহলে রাসূল সাঃ পরবর্তীতে অন্যান্য সাহাবীদের গায়েবানা জানাযা পড়তেন। খুলাফায়ে রাশেদীন ও অন্যান্য সাহাবাগণও পড়তেন। অথচ কারো থেকেই গায়েবানা জানাযা পড়ার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। মালেকী মাযহাবের ইমাম আল্লামা ইল্লিশ রহঃ লিখেছেনঃ “মদীনায় নাজাশীর গায়েবানা জানাযা পড়ার বিষয়টি রাসূলের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ছিল। কেননা, উম্মত রাসূলের জানাযা আদায় করার প্রতি অধিক আগ্রহী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর গায়েবানা জানাযা আদায় করেনি। এবং নাজাশীর লাশকে অলৌকিকভাবে রাসূলের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। ফলে রাসূল (সা.) নাজাশীর লাশ সামনে দেখেই তার জানাযা পড়েছেন। যেমন, মাইয়্যিত ইমামের সামনে থাকা অবস্থায় ইমাম মাইয়িতকে দেখতে পায়, কিন্তু অনেক মুক্তাদী দেখতে পায় না। আর এ ক্ষেত্রে নামায সহীহ হওয়ার ব্যাপারে কোন মতানৈক্য নেই।” (মানহুল জালীল- ১/৩১৬-৩১৭)।
৪র্থ জবাব
শায়েখ জাকারিয়া রহঃ লিখেনঃ, “আমার নিকট সঠিক এটাই মনে হয় যে, ইমাম বুখারী (রাহ.) এ মাসআলাটিতে হানাফী ও মালেকী মতকে সমর্থন করেছেন এবং “আল-জানাযাতু আলাস সুফূফ” তথা ‘জানাযাতে কাতারবন্দী হওয়া’ শিরোনাম স্থাপন করে ইঙ্গিত করেছেন যে, নাজাশীর জানাযা দৃশ্যমান ছিল; গায়েব ছিল না। আর এটাই উক্ত মাযহাবদ্বয়ের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যা (যা আলোচ্য বিষয়কে সমর্থন করে)। তাইতো হাদীস থাকা সত্ত্বেও তিনি “আল-গায়েবু আলাস সফূফ” তথা ‘অনুপস্থিত ব্যক্তির জানাযা’ অধ্যায় স্থাপন করেননি। তাছাড়া বুখারী শরীফে শিরোনাম স্থাপনের নীতিমালার ৬৫ নম্বরে উল্লেখ রয়েছে, কোন মাসআলা ইমাম বুখারী (রাহ.)এর মতামতের পরিপন্থী হলে শিরোনাম হিসেবে উল্লেখ করেন না”। (হাশীয়া লামিউদ দারারী শরহুল বুখারী- ২/১২২, মাকতাবাতুল আশরাফিয়া দিল্লী)।
সুতরাং বুঝা গেল যে, ইমাম বুখারী রহঃ নিজেই উক্ত হাদীসকে গায়েবানা জানাযা জায়েজের দলীল মনে করেননি।
একটি হাস্যকর দলীল ও জবাব
অনেক ভাই গায়েবানা জানাযাকে জায়েজ প্রমাণ করার জন্য একটি হাস্যকর দলীল পেশ করে থাকেন। তারা বলে থাকেন, গায়েবানা জানাযা পড়া যে, জায়েজ এর পরিস্কার দলীল হল, জানাযার নামাযে যে দুআ পড়া হয়, তাতে বলা হয়, “শাহিদিনা ওয়া গায়িবিনা” তথা উপস্থিত ও অনুপস্থিত উভয় ব্যক্তির জন্যই দুআ করা হয়ে থাকে। আর জানাযা নামায যেহেতু দুআ। আর তাতে উপস্থিত ও অনুপস্থিত উভয় ব্যক্তির জন্যই মাগফিরাতের কথা এসেছে, তাই বুঝা যাচ্ছে অনুপস্থিত ব্যক্তির জানাযাও জায়েজ আছে। অর্থাৎ গায়েবানা জানাযা বৈধ।
জবাব
আসলে এ দলীলটি খুবই হাস্যকর দলীল। যদি গায়িবিনা তথা অনুপস্থিত ব্যক্তির মাগফিরাতের কথা উল্লেখ থাকায় গায়েবানা জানাযা জায়েজ হয়ে যায়, তাহলেতো একই যুক্তিতেই জীবিত ব্যক্তির জানাযা পড়া জায়েজ হয়ে যাবে। কারণ জানাযার নামাযের দুআয় পড়া হয়, আল্লাহুম্মাগফিরলী হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা” তথা হে আল্লাহ! তুমি আমাদের জীবিত ও মৃতদের মাফ করে দাও।
লক্ষ্য করুন, মাফ চাওয়া হয় প্রথমে জীবিতদের ব্যাপারে। তারপর বলা হয় “ওয়া শাহিদিনা ও গায়িবিনা”।
যদি “গায়িবিনা” শব্দ থাকায় অনুপস্থিত ব্যক্তির জানাযা পড়া জায়েজ হয়ে যায়, তাহলে “হাইয়্যিানা” শব্দ থাকায় জীবিত ব্যক্তির জানাযা কেন জায়েজ হবে না?
আসলে এ দলীলটি খুবই হাস্যকর ও বোকামীসূলভ।
যাইহোক, উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা আশা করি এ বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেছে যে, গায়েবানা জানাযা পড়ার কোন দলীল কুরআন ও হাদীস এবং সাহাবাগণের আমল দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাই একাজটি সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য। আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব রূসুম রেওয়াজ থেকে মুক্ত হয়ে সঠিকভাবে দ্বীন পালন করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
বিষয়: বিবিধ
২৪৬০ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গায়েবানা জানাজা বর্তমানে রাজনৈতিক পরিমন্ডলে ফ্যাশন হয়ে গেছে যেন।
স্বার্থ হাসিলে এটা নাজায়েজ জেনেও এর ব্যবহার বেড়েই চলেছে আজ-কাল।
আল্লাহ আমাদের কে বেদাতী সকল কাজ থেকে বিরত থাকার তৌফিক দিন, আমিন।
প্রয়োজনীয় সুন্দর উপকারী উপস্হাপনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহু খাইরান।
الحمد لله
ثبت في الصحيحين أن النبي صلى الله عليه وسلم خرج إلى أصحابه يوم مات النجاشي ملك الحبشة رحمه الله ، فنعاه لهم ، وصفهم وصلى عليه صلاة الجنازة .
فهذا الحديث دليل على مشروعية الصلاة على الغائب ، إلا أن بعض العلماء كالحنفية والمالكية قالوا : إن هذا خاص بالرسول صلى الله عليه وسلم فلا تشرع صلاة الغائب لغيره .
وقد رد جمهور العلماء ذلك بأن الخصوصية لا تثبت إلا بدليل صحيح ، والأصل : أن الأمة مأمورة بالاقتداء بالنبي صلى الله عليه وسلم والتأسي به .
وقد اختلف العلماء القائلون بمشروعية الصلاة على الغائب ، هل تشرع الصلاة على كل غائب أم لا ؟ وكلهم يستدل بصلاة النبي صلى عليه وسلم على النجاشي .
فذهب الشافعية والحنابلة إلى أنه تشرع الصلاة على كل غائب عن البلد ، ولو صُلِّي عليه في المكان الذي مات فيه .
والقول الثاني : أنه تشرع الصلاة على الغائب إذا كان له نفع للمسلمين ، كعالم أو مجاهد أو غني نفع الناس بماله ونحو ذلك .
وهذا القول رواية عن الإمام أحمد ، واختارها الشيخ السعدي وبه أفتت اللجنة الدائمة .
والقول الثالث : أنها تشرع الصلاة على الغائب بشرط ألا يكون قد صُلِّي عليه في المكان الذي مات فيه ، فإن صُلِّي عليه فلا تشرع صلاة الغائب عليه .
وهذا القول رواية أخرى عن الإمام أحمد ، واختارها شيخ الإسلام ابن تيمية وتلميذه ابن القيم ، ومال إليها من المتأخرين : الشيخ ابن عثيمين .
وهذه أقوال بعض العلماء في هذه المسألة :
قال الخرشي (مالكي) (2/142) : " وصلاته عليه الصلاة والسلام على النجاشي من خصوصياته " انتهى .
ونحوه في " بدائع الصنائع " للكاسائي ( حنفي ) ( 1/ 312) .
وقال النووي رحمه الله في "المجموع" (5/211) : " مذهبنا جواز الصلاة على الغائب عن البلد ، ومنعها أبو حنيفة . دليلنا حديث النجاشي وهو صحيح لا مطعن فيه وليس لهم عنه جواب صحيح " انتهى بتصرف .
وقد قيَّد الشافعية جواز الصلاة على الغائب بقيد حسن وهو أن يكون المصلِّي على الميت من أهل الصلاة عليه يوم مات .
قال زكريا الأنصاري رحمه الله في "أسنى المطالب" (1/322) : " وإنما تجوز الصلاة على الغائب عن البلد لمن كان من أهل فرض الصلاة عليه يوم موته " انتهى بتصرف يسير .
قال الشيخ ابن عثيمين رحمه الله : " إلا أن بعض العلماء قَيَّده بقيد حسن قال : بشرط أن يكون هذا المدفون مات في زمن يكون فيه هذا المصلي أهلا للصلاة .
مثال ذلك : رجل مات قبل عشرين سنة ، فخرج إنسان وصلى عليه وله ثلاثون سنة فيصح ؛ لأنه عندما مات كان للمصلي عشر سنوات ، فهو من أهل الصلاة على الميت .
مثال آخر : رجل مات قبل ثلاثين سنة ، فخرج إنسان وله عشرون سنة ليصلي عليه فلا يصح ؛ لأن المصلي كان معدوما عندما مات الرجل ، فليس من أهل الصلاة عليه .
ومن ثمَّ لا يشرع لنا نحن أن نصلي على قبر النبي صلى الله عليه وسلم ، وما علمنا أن أحدا من الناس قال : إنه يشرع أن يصلي الإنسان على قبر النبي صلى الله عليه وسلم ، أو على قبور الصحابة ، لكن يقف ويدعو " انتهى من "الشرح الممتع".
وقال ابن قدامة رحمه الله في "المغني" (2/195) : " وتجوز الصلاة على الغائب في بلد آخر بالنية فيستقبل القبلة , ويصلي عليه كصلاته على حاضر , وسواء كان الميت في جهة القبلة أو لم يكن , وسواء كان بين البلدين مسافة القصر أو لم يكن . وبهذا قال الشافعي " انتهى .
وقال المرداوي في "الإنصاف" (2/533) : " ( ويصلي على الغائب بالنية ) هذا المذهب مطلقا ( يعني سواء صُلِّي عليه أم لا ، وسواء كان له نفع عام للمسلمين أم لا ) , وعليه جماهير الأصحاب وقطع به كثير منهم , وعنه [أي عن الإمام أحمد] : لا تجوز الصلاة عليه .
وقيل : يُصَلَّى عليه إن لم يكن صُلِّي عليه , وإلا فلا ، اختاره الشيخ تقي الدين , وابن عبد القوي " انتهى .
وقال الشيخ البسام رحمه الله في "نيل المآرب" (1/324) :
" اختلف العلماء في الصلاة على الغائب ، فذهب أبو حنيفة ومالك وأتباعهما إلى أنها لا تشرع ، وجوابهم عن قصة النجاشي والصلاة عليه أن هذه من خصوصيات النبي صلى الله عليه وسلم .
وذهب الشافعي وأحمد وأتباعهما إلى أنها مشروعة ، وقد ثبتت بحديثين صحيحين ، والخصوصية تحتاج إلى دليل ، وليس هناك دليل عليها ، وتوسط شيخ الإسلام فقال : إن كان الغائب لم يُصَلَّ عليه مثل النجاشي ، صُلِّيَ عليه ، وإن كان قد صُلِّيَ عليه ، فقد سقط فرض الكفاية عن المسلمين.
وهذا القول رواية صحيحة عن الإمام أحمد ، صححه ابن القيم في الهَدْي ، لأنه توفي زمن النبي صلى الله عليه وسلم أناس من أصحابه غائبين ، ولم يثبت أنه صلى على أحد منهم صلاة الغائب.
ونقل شيخ الإسلام عن الإمام أحمد أنه قال : إذا مات رجل صالح صلي عليه ، واحتج بقصة النجاشي.
ورجح هذا التفصيل شيخنا عبد الرحمن السعدي يرحمه الله تعالى ، وعليه العمل في نجد ، فإنهم يصلون على من له فضل ، وسابقة على المسلمين ، ويتركون من عداه ، والصلاة هنا مستحبة " انتهى .
وقَالَ الْخَطَّابِيِّ : " لا يُصَلَّى عَلَى الْغَائِبِ إلا إذَا وَقَعَ مَوْتُهُ بِأَرْضٍ لَيْسَ فِيهَا مَنْ يُصَلِّي عَلَيْهِ , وَاسْتَحْسَنَهُ الرُّويَانِيُّ من الشافعية , وَتَرْجَمَ بِذَلِكَ أَبُو دَاوُد فِي "السُّنَنِ" فَقَالَ : بَابُ الصَّلاةِ عَلَى الْمُسْلِمِ يَلِيهِ أَهْلُ الشِّرْكِ فِي بَلَدٍ آخَرَ . قَالَ الْحَافِظُ : وَهَذَا مُحْتَمَلٌ " انتهى من "فتح الباري" .
وسئلت "اللجنة الدائمة" (8/418) : أيجوز أن نصلي صلاة الجنازة على الميت الغائب كما فعله النبي صلى الله عليه وسلم مع حبيبه النجاشي ، أو ذلك خاص به ؟
فأجابت : " تجوز صلاة الجنازة على الميت الغائب لفعل النبي صلى الله عليه وسلم ، وليس ذلك خاصاً به ، فإن أصحابه رضي الله عنهم صلوا معه على النجاشي ، ولأن الأصل عدم الخصوصية ، لكن ينبغي أن يكون ذلك خاصاً بمن له شأن في الإسلام ، لا في حق كل أحد " انتهى .
وسئل الشيخ ابن عثيمين رحمه الله : ثبت عن الرسول صلى الله عليه وسلم أنه صلى على النجاشي صلاة الغائب ، وسبب ذلك أنه ما كان هناك أحد من المسلمين يصلي عليه ، وواقع المسلمين الآن يموتون جماعة وبالتأكيد لم يصل عليهم كما هو حاصل في وقتنا الحاضر يعني أتأكد أنه ما يصلى عليهم ؟
فأجاب فضيلته بقوله : " إذا تأكدت أنه لم يصل عليهم فصل عليهم ، لأن الصلاة فرض كفاية . لكن ربما أهله صلوا عليه ، لأن الصلاة على الميت تكون بواحد ، على كل حال إذا تأكدت أن شخصا ما لم يصل عليه فعليك أن تصلي عليه لأنها فرض كفاية ولابد منها " انتهى من "مجموع فتاوى الشيخ ابن عثيمين" (17/ 149).
وقد تبين مما سبق أن الصلاة على الغائب مشروعة ، لما ثبت من صلاة النبي صلى الله عليه وسلم وأصحابه على النجاشي ، وأنه لم يقم دليل على أن ذلك خاص به صلى الله عليه وسلم .
لكن أعدل الأقوال في هذه المسألة قولان :
الأول : أنه لا يصلى إلا على من لم يُصل عليه .
والثاني : أنه يُصلَّى على من له منفعة للمسلمين ، كعالم نفع الناس بعلمه ، وتاجر نفع الناس بماله ، ومجاهد نفع الناس بجهاده ، وما أشبه ذلك .
والله أعلم
وفاة أمير الجماعة الاسلامية السابق في السجن، والإمام القرضاوي سيصلي صلاة الغائب عليه:
انتقل الى رحمة الله تعالى البروفسيور غلام أعظم أمير الجماعة الاسلامية السابق في بنغلادش (93عاما) داخل السجن حيث زج به قبل سنين، ثم حكم عليه بالسجن 90 عاماً بتهم باطلة بارتكاب جرائم ضد الانسانية عام 1971
وقد دعا الاتحاد العالمي لعلماء المسلمين لإقامة صلاة الغائب على الشيخ غلام أعظم ، كما سيؤم المصلين في صلاة الغائب بمسجد السيدة عائشة بالدوحة بقطر اليوم عقب صلاة الجمعة فضيلة الإمام يوسف القرضاوي رئيس الاتحاد
إنا لله وإنا إليه راجعون
حكم إجازة صلاة الغائب
السؤال الثاني: كثير ما يحصل أنه يكون أخ مقيم في هذه البلد لعمل أو لدراسة ويتوفى أحد أهل أسرته في بلده الأصلي فيصلى عليه هناك ويغسل ويدفن يعني كأي متوفى ولكن يصلون هو.. نحن في.. أهل في المسجد يعتقدون.. يعني.. قالوا إن يجوز أن نصلي عليه صلاة الغائب مع.. مع وجود صلاة الميت حاضر في.. في البلاد، فهل هذا جائز؟
أحمد الشيخ: واضح السؤال الأول فضيلة الشيخ أخ.. لو هل أنت معنا يا أخ أحمد العزيري؟
أحمد العزيري: أي نعم، أي نعم.
أحمد الشيخ شرط التسمية يعني السؤال الأول.
د. يوسف القرضاوي: تسمية الـ..
أحمد الشيخ: الشخص
د. يوسف القرضاوي: الشخص الوكيل يعني …
أحمد الشيخ: أه.
د. يوسف القرضاوي: يعني يقول دي هذه يعني أضحية فلان، يعني، هذا أه مطلوب يعني يذكر اسمه لهذا الشخص يعني..
أحمد العزيري: فضيلة الشيخ..
أحمد الشيخ: انتظر قليلاً.
د. يوسف القرضاوي: وحتى لو لم يذكر إن شاء الله، الله سبحانه وتعالى يعلم يعني المهم أن يدفع المال ويقول لهم هذا.. فهو الأصل أنه يذكر الأسماء، والشخص اللي بيذبح يقول عن فلان وفلان وفلان أو فلان، وقد يقول والله عن أصحاب هذه الأموال، يعني افرض إن فيه ألف شخص مش هيقدر يذكر هذه الألف أو الخمسمائة أو نحو ذلك، فالله أعلم وهو بيجزي الناس بنياتهم وبأعمالهم "إن الله لا ينظر صوركم ولكن ينظر إلى قلوبكم".
أما السؤال الثاني بالنسبة صلاة الغائب فهذا أجازها عدد من الفقهاء ولأن النبي -صلى الله عليه وسلم- صلى على النجاشي، النجاشي ملك الحبشة الذي أسلم في عهد النبي صلى الله عليه وسلم ودخل في الإسلام ومات على الإسلام، وبلغ النبي -عليه الصلاة والسلام- نبأ وفاته فصلى عليه هو والصحابة.
بعض الفقهاء قال صلى الله عليه لأنه ربما لم يصلي عليه أحدًا هناك، وبعضهم قال لا حتى يعني هذا لم.. لم يوجد نص على هذا الشرط، فأجازوا الصلاة على الغائب ولذلك نحن نصلي أحياناً على بعض العلماء المسلمين حينما توفى الشيخ الغزالي -رحمه الله- صلينا عليه صلاة الغائب، الشيخ صلاح أبو إسماعيل، الشيخ جاد الحق، يعني كثير من هؤلاء العلماء الذين لقوا ربهم صلينا عليه صلاة الغائب، والكثير من الناس صلى عليه أيضًا في بلده وفي المكان الذي توفي فيه فلا حرج، لأن صلاة الجنازة هي أيه؟ هي دعاء أهم شيء في صلاة الجنازة تكبير ودعاء فأنت تدعو لهذا الميت فلا نحرم المسلمين أن يدعوا لموتاهم حيثما كانوا هذا أمر مطلوب ولا جناح على من فعله إن شاء الله.
মন্তব্য করতে লগইন করুন