তওবার উপকার
লিখেছেন লিখেছেন মদীনার আলো ২৯ জুলাই, ২০১৩, ০৩:৫৪:২৫ দুপুর
হযরত আবু সাঈদ ইবনে মালিক ইবনে সিনান আল খুদরী (রা) বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পূর্বেকার যুগে এক ব্যক্তি নিরানব্বইটি লোক হত্যা করে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম আলেমের সন্ধানে বের হলো। তাকে একজন সংসারত্যাগী খ্রীস্টান দরবেশের কথা জানিয়ে দেয়া হলো। সে ঐ দরবেশের কাছে গিয়ে বলল আমি নিরানব্বইটি লোক হত্যা করেছি। এখন আমার জন্য তওবার কোন সুযোগ আছে কি? দরবেশ বললঃ ‘নেই’। তখন লোকটি দরবেশকেও হত্যা করে একশত সংখ্যা পূর্ণ করল। এরপর আবার সে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম আলেমের সন্ধান জানতে চাইলে তাকে একজন আলেমের সন্ধান জানিয়ে দেয়া হলো। লোকটি তার কাছে গিয়ে বললঃ সে একশো লোককে খুন করেছে। এখন তার জন্য তওবার কোন সুযোগ আছে কি? আলেম বললেনঃ ‘হ্যাঁ, তওবার সুযোগ আছে। তওবা কবুলিয়তের পথে কে প্রতিবন্ধক হতে পারে? তুমি অমুক স্থানে চলে যাও। সেখানে কিছু লোক আল্লাহর বন্দেগীতে লিপ্ত রয়েছে। তুমিও তাদের সঙ্গে আল্লাহর বন্দেগীতে লিপ্ত হও এবং তোমার নিজ দেশে কখনও ফিরে যেওনা। কেননা, সেটা খুব খারাপ জায়গা।’ লোকটি নির্দেশিত স্থানের দিকে চলতে লাগলো। অর্ধেক পথ চলার পর তার মৃত্যুর সময় এসে পড়লো। এবার তাকে নিয়ে রহমত ও আযাবের ফেরেশতাদের মধ্যে বিতর্ক দেখা দিল। রহমতের ফেরেশতাদের বক্তব্য ছিল, এ লোকটি তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে এসেছে। পক্ষান্তরে আযাবের ফেরেশতারা বলতে লাগলো লোকটি তো কখনো কোন পুণ্যের কাজ করেনি। এমন সময় বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য মানুষের রূপ ধারণ করে একজন ফেরেশতা তাদের সামনে উপস্থিত হলো। তখন সবাই তাকে সালিশ হিসেবে মেনে নিল। সালিশরূপী ফেরেশতা বললঃ তোমরা উভয় দিকের জায়গা মেপে নাও। যে দিকটি যার কাছাকাছি হবে, সে দিকটি তারই বলে গণ্য হবে। সুতরাং জায়গা পরিমাপের পর যেদিকের উদ্দেশ্যে সে আসছিলো, তাকে সে দিকটির কাছাকাছি পাওয়া গেল। এর ভিত্তিতে রহমতের ফেরেশতারা লোকটির প্রাণ কেড়ে নিল। (বুখারী ও মুসলিম)
সহীহ বুখারীর অপর একটি বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ ওই লোকটি সৎ লোকদের বসতির দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়েছিল। এই কারণে তাকে ওই লোকদেরই অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বুখারীর অপর একটি বর্ণনায় আছে, আল্লাহ তা’য়ালা একদিকের বসতিকে দুরে সরে যেতে এবং অপরদিকের বসতিকে কাছাকাছি হতে বলে উভয়ের মধ্যবর্তী জমি মাপতে ফেরেশতাদের আদেশ দিলেন। ফলে লোকেরা তাকে সৎ লোকদের জমির দিকে এক বিঘত পরিমান বেশি অগ্রবর্তী দেখতে পেল এবং তাকে মার্জনা করে দেয়া হলো। অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, লোকটি নিজের বুকের ওপর ভর করে হামাগুড়ি দিয়ে অসৎ লোকদের জমি থেকে দূরে সরে গেল
রিয়াযুস স্বলিহীন বই ১ :: হাদিস ২০
বিষয়: বিবিধ
১৪১৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন