শহর থেকে দূরে এক নিসর্গ সবুজের সন্ধানে
লিখেছেন লিখেছেন ডক্টর সালেহ মতীন ২৮ মার্চ, ২০১৮, ০২:১৩:৪৮ দুপুর
কোকিল, ময়না, দোয়েল, ঘুঘুসহ হাজারো পাখির মধুর ও মুখরিত কলতানে এখানে সকালটা ঘোমটা খোলে। হালকা কূয়াশায় প্রভাতের অবগুণ্ঠনের চাদর ধীরে ধীরে এখানে সরে যেতে থাকে। সূর্যটা তখনো ধরাধামে পাখা মেলেনি কিন্তু দায়িত্বশীল পাখিরা অগ্রবর্তী সেনাদল হিসাবে খুব সকালেই জনপদকে জাগিয়ে দিতে কিচির-মিচির কলকাকলিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ওদের কোন স্বার্থপরতা নেই, আলস্য নেই, নেই প্রতিহিংসাপরায়ণ কার্পণ্য, পরোয়া নেই- ডেকেই চলেছে।
এক অসাধারণ নৈসর্গিক পরিবেশ ঘেরা একাডেমির কথা বলছি। ঐতিহাসিক স্থাপনাসমৃদ্ধ লালমাই উপত্যকার কথা বলছি। আমি কুমিল্লার কোটবাড়িতে অবস্থিত ১৬০ একর জায়গাবিশিষ্ট বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (BARD) ক্যাম্পাসের কথা বলছি। এখানে দুপুর গড়িয়ে গেলেই ধূসর গোধূলীর মায়াময় হাতছনি চোখে পড়বে। আর ক্যাম্পাসের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমানা ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা বৃক্ষ চাদরে আবৃত নাতি উচ্চ নীলাচল নীহারিকা পাহাড়ের আড়ালে সূর্যটা চলে গেলেই সন্ধ্যার খানিক আগেই প্রকৃতি এখানে সন্ধ্যার পসরা সাজিয়ে বসে। তখন ঘন ছায়াগুলো পতনের রাস্তা ধরে মিলে যায় যেন অসীমের উপকূলে।সন্ধ্যার পাখি, পোকা-মাকড়ও তখন ডাক শুরু করে দেয়।
আপনি আনমনে হেঁটেই চলেছেন ক্লান্তিহীন, ছোট্ট ছিমছাম রাস্তার দু’পাশে উল্লসিত পোকাদের জেগে থাকার বার্তা আপনাকে খানিকটা ভীত খানিকটা রোমান্টিক করে তুলতে পারে। এ এক অনিন্দ্যসুন্দর লোকালয়। এ যেন প্রকৃতির অন্তহীন স্বপ্নমাখা অসাধারণ আশ্রয়ের স্নিগ্ধ আঁচল বিছানো। যেন এক অনন্য দায়িত্ববোধের একাডেমি।
প্রকৃতির ভালোবাসা কত নির্মল, কত নিবিড়, কত অবারিত ও কত স্নিগ্ধ হতে পারে তা এখানে সহজেই অনুমান করা যায়। ছায়াবীথির প্রাণস্পর্শী শীতলতা এখানে সতত আলিঙ্গন করে। লালমাই পাহাড়ের ছোট ছোট টিলার পরতে পরতে এখানে প্রকৃতি যেন প্রগাঢ় ভ্রাতৃত্বের মোহনায় মিলিত হয়েছে।
আমি ভাবছি- পাখিরা পৃথিবীতে বাঁচতে চায়, আমরাই তাদের আবাসস্থল অবিবেচক হস্তে ধ্বংস করছি প্রতিনিয়ত। ওরাও অভিমান করে বিপন্ন পাখ-পাখালির তালিকায় নিজেদের নাম লেখাচ্ছে।
আসুন না, আমরা বাড়ির আশপাশে, যেখান সেখানে ব্যাপকভাবে গাছ লাগাই, গড়ে তুলি পাখিদের অভয়ারণ্য। দেখবেন ওরা আবার ফিরে আসবে, গাইবে প্রভাতী গান, গাইবে জাগরনের গান। আবার তাদের নির্মল কল-কাকলিতে ভরে উঠবে প্রতিটি সকাল।
বিষয়: বিবিধ
১০৪৩ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পাশে ময়নামতি যাদুঘর ও শালবন বিহার গিয়েছিলাম। গিয়েছিলাম ব্লু ওয়াটার পার্কেও। তবে আমার বার্ডের ঠিক উল্টো দিকে ময়নামতি ক্যান্টণম্যাণ্ট বাজারেই বেশ ঘুরা হয়েছে। খাওয়া দাওয়া আর কেনাকাটা ভালই হয়েছে সেখানে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন