শুধুই শূন্যতা
লিখেছেন লিখেছেন ডক্টর সালেহ মতীন ০৯ নভেম্বর, ২০১৭, ০৪:০৭:৪০ বিকাল
পৃথিবীর তাবৎ মমতাময়ী মায়ের অনাবিল স্নেহমাখা আঁচলে আমার মুখ লুকাতে ইচ্ছে করে। উষ্ণ সোহাগমিশ্রিত মাতৃস্নেহের ছায়াসমুদ্রে কতদিন অবগাহন করিনা- তা ভাবতেই তৃষ্ণার্ত হৃদয়টা শূন্যতায় ছেয়ে যায়। আমি তখন সীমাহীন বিষণ্ণতায় মুষড়ে পড়ি।
‘মা’ আসলেই এক অনুপম ও অবিশ্বাস্য সত্ত্বা, এক অসীম সাহসের প্রতিকৃতি, এক অনাবিল শান্তি পরশের জান্নাতী ছায়া যা কোনভাবেই তুলনার পাল্লায় মাপা যায় না। সন্তান পিতা/মাতা হয়ে গেছে কিংবা তার চেয়েও বেশি- দাদা/দাদী, নানা/নানী, চুল পেকে গেছে- তাতে কী ? মায়ের কাছে সন্তানের এ বয়স বৃদ্ধি নিতান্তই মূল্যহীন। চোখের আড়ালে থাকলেও যার মননের তারে সযত্নে বেজে উঠে সন্তানের সুখ-দুঃখের সুর। দূরে থাকা এমন সন্তানের কথা ভেবে রাতে ক‘বার মায়ের ঘুম ভাঙে আমরা কেউ কি ভেবে দেখেছি ? চর্মচক্ষু বাহ্যত মুদে আসে কিন্তু মাতৃস্নেহের চোখের সাধ্যি নেই তা কোনকালেই কেউ বন্ধ করতে পারে।
কোন এক কবি তার মায়ের হারিয়ে যাওয়া নোলক খুঁজেছিলেন এখানে সেখানে- আর আমি ‘মা’ নামক অফুরন্ত মমতার এই বিন্যস্ত ভাণ্ডার খুঁজে ফিরি এ মেরু থেকে ও মেরু, আকাশে-বাতাসে, অন্তরীক্ষে অথচ শূন্য হাতে অবশেষে ফিরে আসি অসহায় আপন ঘরের অরণ্য আঙিনায়।
শাড়ির আঁচল দিয়ে মাথার ধুলো মুছে দেয়ার স্নেহময়ী মায়ের সেই অনন্য অভ্যাস আমাকে অনুভবে এখনো স্পর্শ করে। তখন কল্পনায় মাথাটা নুঁয়ে দিয়ে স্নেহের বদলে উদাত্ত কাতরতায় কিছু শূন্যতা বহন করি। জননী হস্তের মায়াবী পরশ তখন মরিচীকার রূপ ধারণ করে আমার অশ্রু ঝরাতে বেপরোয়া হয়ে উঠে। উহ ! পৃথিবী ! আর কিছুই না, তুমি আমার মাকে ফিরিয়ে দাও। আমার নিমগ্ন চেতনার আহত দেয়ালে শুধুই মায়ের স্নিগ্ধ ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি, প্লিজ আমার মাকে ফিরিয়ে দাও। অনিঃশেষ বেদনার দূর্গ থেকে এ অসহায়ের আর্তনাদ, কিছুই না, আমার মাকে ফিরিয়ে দাও।
বিষয়: বিবিধ
১১২২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন