বই আনন্দ, আলো ও সমৃদ্ধির প্রতীক

লিখেছেন লিখেছেন ডক্টর সালেহ মতীন ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৬:৫৫:১৮ সন্ধ্যা



বই। বই শুধু দু’অক্ষরের সমন্বয়ে গঠিত একটি ক্ষুদ্র ও শুষ্ক নামই নয়, বই ব্যক্তির আনন্দানুভূতি প্রকৃষ্টরূপে জাগ্রত করার, সমাজকে সমহিমায় আলোকিত করার এবং দেশকে সমৃদ্ধ করার উন্নত ও অতি চমৎকার আধুনিক হাতিয়ার। বই-ই পারে উপরোল্লেখিত ত্রি বিষয়ে সমন্বিত সমীকরণের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সাফল্যে নিরব বিপ্লব সাধন করতে। আমরা বিশ্বাস করি আর না করি বইয়ের প্রতিটি হরফ অস্ত্রের চেয়েও অধিক ধারালো, বইয়ের বাক্য ক্ষেত্রভেদে রাসায়নিক দ্রব্য কিংবা ইনজেকশনের চেয়েও অধিক কার্যকর। বই জগৎ ও জীবনের বিচিত্র মাধূর্য এবং অপূর্ব সৌন্দর্যের উৎকৃষ্ট স্বরূপ আমাদের মাঝে অকপটে বিতরণ করে। তাই বইকে আমরা বলতে পারি নি:স্বার্থ জ্ঞান, অনাবিল আনন্দ, আলো আর সীমাহীন সমৃদ্ধির অনুপম প্রতিমূর্তি। বইয়ের আবেদন ও উপযোগিতা চিরন্তন। অক্ষয়কীর্তির মতো বইয়ের সর্বগ্রাহ্য কার্যকারিতা সর্বদা বিদ্যমান।

ব্যক্তি আনন্দ দানে বই : জ্ঞান পিপাসু ব্যক্তিমাত্রই জ্ঞানের অসম্পূর্ণতায় সাংঘাতিক অতৃপ্তি বোধ করেন। এই অতৃপ্তি নিরসন তথা জ্ঞান ভাণ্ডার পুষ্ট করতে বই একটি অতি কার্যকরী এবং এক প্রকার অবিকল্প মাধ্যম। বই-ই দিতে পারে একজন ব্যক্তির রকমারী জিজ্ঞাসার ঈপ্সিত জবাব, দিতে পারে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অসীম ও অদ্ভুত রহস্যের সন্ধান। এ প্রাপ্তির সাফল্য ব্যতীত মানবচিত্তকে আর কোন জিনিস এত অধিক আনন্দ দিতে সক্ষম হয় না। এ তো গেল নিরন্তর জ্ঞান পিপাসুদের কথা। অন্যান্য ক্ষেত্রেও বই নির্দোষ আনন্দদানে অতিমাত্রায় সক্রিয় ও যত্নবান। কর্মকান্ত মুহূর্তের অবসাদ, কিষ্ট পীড়িত চিত্তের আর্তনাদ দূর করে পাঠকের মুখে যথার্থই হাসির রেখা ফোটাতে পারে বই। মানুষের বিচিত্র এবং রকমারী মনের বিমর্ষ বেদনাগুলো নিরবে ম্লান করে দিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই আনন্দ স্রোত বইয়ে দিতে পারে বই। বইকে বলা হয় অনন্ত যৌবন সঙ্গী। বিখ্যাত মনীষী মার্ক টোয়াইনকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার আনন্দের উৎস কি ? তিনি স্বত:র্স্ফূত জবাব দিয়েছিলেন ‘বই’। কার্যত বই বাস্তব বিষ্ময়ের সত্য ও রহস্যের অভাবিতপূর্ণ পরিচয় করিয়ে দিয়ে পাঠকের মনকে কখন যে খুশিতে আন্দোলিত করে তোলে পাঠক নিজেও হয়ত এ ব্যাপারে বেখবর।

সংসার জগত বড় বিচিত্র এবং এখানে মানুষের কাজের অন্ত নেই। বিশেষত দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বিশ্বের জন্য নিজের কর্তব্যবোধ থেকে নতুন নতুন কাজ খুঁজে নিতে সর্বদা তৎপর থাকেন। কাজের পথে আসে নানা বাঁধা-বিঘ্নতা, হতাশা, আলস্য ও অবসাদ। একজন দায়িত্বসচেতন ব্যক্তি গ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে সেসব সমস্যা দূর করে নতুন প্রেরণা ও বিপুল উৎসাহ লাভ করতে সম হন। সভ্য জগতের সর্বত্রই মানুষ আজ বই পড়ার নেশায় মগ্ন। বইকে তারা সবচেয়ে উপকারী, নি:স্বার্থ ও মূল্যবান সহচর ভাবছে। অন্তত: বিশ্বাস ভঙ্গের কোন আশংকা বইয়ের ক্ষেত্রে নেই। বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও উন্নত সভ্যতার সাথে মানসিক সংযোগ বিধানে সম হচ্ছে। অসুস্থ ও বিকৃত মূল্যবোধ মানুষকে অমনুষ্যত্বের যত গভীরে নিমজ্জিত করে সেখান থেকে তাকে উদ্ধারের ক্ষেত্রে বই নামক দীপ্তিশালিনী তেজস্বী ও অব্যর্থ ভূমিকা পালনে সচেষ্ট। মানব মনের বিভিন্ন দু:খ দূরীকরণে বইয়ের অব্যাহত পৃষ্ঠপোষকতা উল্লেখযোগ্য। এহেন দৃষ্টিকোণ থেকে বিরাজিত বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বই-ই ব্যক্তি আনন্দ দানের অন্যতম নির্ভরযোগ্য উৎস বলে মনে করি।



সমাজকে আলো দানে বই : জ্ঞানের অভাবজনিত অন্ধকার জীবনের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর ও বড় অন্ধকার। এ কারণে ইসলামে বলা হয়েছে, ‘আল ইলমু নূরুন’-অর্থাৎ জ্ঞানই আলো। যে সমাজ মূর্খতার গভীরে নিমজ্জিত সে সমাজ গভীর অন্ধকারাচ্ছন্ন। এ ধরণের সমাজে অসুস্থ চিন্তা-ভাবনার মহড়া চলে। সেখানে ভাল-মন্দ, ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যা নিতান্তই অন্ধকারে ডুবন্ত অবস্থায় বিরাজ করে। অথচ সমাজের এই কুৎসিত রূপটা আমরা কেউই দেখতে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নই। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় জ্ঞানার্জন। এ কথা এক বিন্দুও অসত্য নয় যে, বই-ই হচ্ছে জ্ঞানার্জন ও তা প্রসারের শ্রেষ্ঠতম অবলম্বন। সমাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি, অতীত ঐতিহ্য, সামাজিক অবস্থান, উজ্জীবিত মূল্যবোধ, ধর্মীয় অনুশাসনের ধারাবাহিকতা, আভিজাত্য ইত্যাদি দেখিয়ে দিয়ে বই-ই সমাজের আলোকবর্তিকার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে থাকে। বইয়ের অদৃশ্য আলোক রশ্মির প্রভাবে পৃথিবীর সমুদয় সভ্য ও উন্নত জাতিই অন্ধকার থেকে সত্যিকার অর্থে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। আমরা একটু ল্য করলেই দেখতে পাই যে, সুবিধাবাদী জটিল ধারণা থেকে বইয়ের সাহায্যেই মানুষ পুরোদস্তর নিষ্কৃতি পেয়েছে। অন্য আর কোন বস্তুগত সংস্পর্শ মানুষকে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা দানে সম নয়। প্রথিতযশা লেখক ডা: লুৎফর রহমান বলেছিলেন, ‘যে সমাজের মানুষ বইকে ঘৃণা করে, তারা আলোর মুখ দেখবেনা কখনো।’ বইয়ের পাতায় পাতায় শৃঙ্খলিত বিদ্যারূপ জ্ঞানের অলোকবর্তিকা তার সোনালী রশ্মি বিকিরণের মাধ্যমে সমাজের অন্ধকার তাড়িয়েই ক্ষান্ত হয়। আমাদের এ সমাজের গভীরে প্রকাশ্যে কিংবা অপ্রকাশ্যে অনেক কিছুই বাসা বেঁধে আছে। সে সবের অবস্থান একেবারেই নড়বড়ে নয়। একটা কঠিন ও মারাত্মক ব্যাধি এ সমাজটাকে প্রতিনিয়ত খাচ্ছে কুরে কুরে। আমরা অনেকেই এ সব ভেবে দেখি না। এ সব ব্যাধি সমূলে বিনাশ করে সমাজকে সমূহ আলোর সন্ধান দিতে পারে একমাত্র বই। সুষ্ঠু-সুন্দর ও সুস্থ মূল্যবোধে বিশ্বাসী একটি সুশীল সমাজ গঠনে লাইব্রেরী স্থাপনের শক্ত প্রয়োজনীয়তা আমরা সকলেই অনুভব করি। বস্তুত: এটাকে মানুষের শব্দহীন আলাপনের এক মহাপবিত্র তীর্থ বললে বোধ করি অত্যুক্তি হবেনা। আলোকিত সমাজ গঠনের জন্য বই অপরিহার্য পূর্বশর্ত। প্রাত:স্মরণীয় শত শত মনীষীর চমৎকার চিন্তা সম্পদ, শাস্ত্রানুশীলণ এখানে অক্ষরের শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকে। এ সব মহাজ্ঞানী মনীষীরাই সমাজে আলো ছড়িয়ে নিজেদেরেকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন। সমাজের উদ্ভট অসারতা দূর করে তেজস্বী যোদ্ধার ভূমিকায় বিরতিহীনভাবে লড়ে গেছেন তারা। তাদের কান্তিহীন পথচলা, সীমাহীন আত্মবিশ্বাস ও ত্যাগের মানসিকতার কারণে সমাজ, দেশ ও বিশ্বকে তারা দিয়ে গেছেন অনেক কিছু। আজকের অধূনা সমাজেও তাদের কর্মনীতি, পদ্ধতি, সুপারিশ, জীবনাচার প্রভৃতি আলোর নতুন জাগরণের দুয়ার আমাদের সামনে খুলে দিতে পারে। এই জাগরণের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম নি:সন্দেহে বই। বই ব্যতীত সেসব আলোর বার্তা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে কে পৌঁছাবে ?

দেশকে সমৃদ্ধি দানে বই : জাতির সামাজিক কর্তব্যবোধ নিষ্ঠা ও দায়িত্ব সচেতনতার উপর দেশের সার্বিক সমৃদ্ধি, কাক্সিত শান্তি ও অগ্রগতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেহেতু একটি দেশের অন্যতম মৌলিক উপাদান নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী সেহেতু তাদের শিক্ষা-দীক্ষা এবং দেশের প্রতি ধারাবাহিক কর্তব্যবোধই চিহ্নিত হয় জাতীয় সমৃদ্ধির চাবিকাঠি হিসেবে। বিশ্ব ব্যাংকের এক বিশ্লেষণে দেখানো হয়েছে যে, শিক্ষা আর সমৃদ্ধির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। অর্থাৎ দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একে অপরের সম্পূরক বা পরিপূরক। সুতরাং সমৃদ্ধশালী ও শান্তিময় একটি দেশ গঠনের জন্য অপরিহার্য পূর্বশর্ত হলো সুশিতি জাতি গঠন। সুশিক্ষাই জাতিকে চরম উদাসীনতা থেকে মুক্ত করে বিবেকের বিচারে যথার্থ আত্মনিরীক্ষণে সাহায্য করে। শিক্ষাকে বাইরে রেখে দেশের সমৃদ্ধি, অগ্রগতির চিন্তা নিতান্তই দু:স্বপ্ন বৈ আর কিছু নয়।

একটি আনন্দ বহুল আশার কথা হলো আমাদের দেশে জাতীয় শিক্ষা ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার সরকারীভাবে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সুশিক্ষিত সুন্দর জাতি গঠনের এ চালু উদ্যোগকে বাঞ্ছিত লক্ষে পৌঁছাতে হলে বইয়ের প্রকাশ ও প্রচার বৃদ্ধি নিশ্চিত করা জরুরী। একখানা সুন্দর বই দেশের অতি মূল্যবান সম্পদ এবং সভ্য জাতির চিত্তবিনোদন ও সংযমের অন্যতম প্রধান উপায়। বিদ্যালয়ের দেয়াল ঘেরা সীমাবদ্ধ অঙ্গনের বাইরেও বহুমূখী জ্ঞান বিলিয়ে দিয়ে বই দেশের প্রভূত সমৃদ্ধি সাধন করে। বই জাতীয় সংস্কৃতির ধারাকে সুচারুরূপে প্রসারিত করে। সাহিত্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, বাণিজ্য, ধর্ম প্রভৃতি বিষয়ে জীবন্ত ও বাস্তবোচিত ধারণা দিয়ে বই দেশকে জ্ঞানমূখী, শিক্ষানুরাগী, সমৃদ্ধশালী ও সত্যিকার অর্থে প্রগতিশীল করে তোলে। বই নির্ভীকচিত্তে সব সময় দেশকে সমৃদ্ধির পরামর্শই দিয়ে থাকে। কারো সাথে কোন কালে তার শত্রুতা নেই, দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সাথে তার নিবিড় মিতালী। এমন এক নি:স্বার্থ শিক্ষাদাতা ব্যতীত দেশের সার্বিক সমৃদ্ধির মূল মন্ত্রক আর কাকেই বা নির্বাচন করা যায় ! একটু চিন্তা করলেই আমাদের বুঝতে সহজ হয় যে, বই কারো নিকট থেকে কোনরূপ প্রতিদান আশা করে না। নিরলসভাবে সে ব্যক্তি, সমাজ ও দেশকে অভিযাচিত সম্মুখের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অব্যাহতভাবে সুপরামর্শ দিয়ে থাকে।

বিশ্বে যে সব জাতি আজ ঈর্ষণীয় সমৃদ্ধশালী, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে শীর্ষে আমরা অনুসন্ধান করে জানতে পারি সে সব জাতির আসল মিতালী সর্বাগ্রে বইয়ের সাথে। অর্থাৎ সে জাতি শিক্ষিত। শিক্ষার সংস্পর্শ ব্যাতিরেকে উন্নত জাতিগোষ্ঠী হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার আর কোন মহৌষধ কিংবা যাদু-মন্ত্র নেই। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা জাতির সার্বিক উজ্জীবনী শক্তির নির্ভরযোগ্য উৎস। বইয়ের সাথে জাতির অভিনিবিষ্ট সম্পর্ক দেশের উন্নয়ন তেজস্বিতা ও গতিশীলতাকে ত্বরান্বিত করে। অতএব সহজেই অনুমেয় যে, শিক্ষিত জাতি গঠন তথা দেশের কাঙ্ক্ষিত সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি অর্জনে বইয়ের গুরুত্বকে অস্বীকার করা কিংবা ছোট করে দেখার কোন উপায় নেই।

উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি , বই ব্যক্তিকে আনন্দ, সমাজকে আলো আর দেশকে দেয় সমৃদ্ধি এ কথা এক শুদ্ধতম মহাসত্য। এ কারণে আনন্দিত ব্যক্তিত্বের চমৎকার বিকাশ ঘটিয়ে সমাজকে প্রকৃত অর্থে আলোকিত করার ক্ষেত্রে বেশি বেশি বই কেনা ও পড়া দরকার। এর বাইরের বিকল্প কোন চিন্তা সাফল্যের সন্ধান কিভাবে দিতে পারে তা নিয়ে সংশয়ের যথেষ্ট অবকাশ আছে। বইয়ের ভাণ্ডার ঘরে ঘরে গড়ে তোলার জন্য উপযুক্ত আন্দোলন হওয়া জরুরী। অবশ্য দেশে এ রকম ছোট-খাট আন্দোলনের কথা আমরা শুনতে পাই তবে সেটাকে আরো ব্যাপক এবং বেগবান করা এখন সময়ের দাবী। এ পন্থায়ই দেশকে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া খুবই সম্ভব এবং সহজ বলে আমি বিশ্বাস করি। এ বিশ্বাসের ভিত্তিতে সুশীল ব্যক্তি গঠন, উন্নত সমাজ সংস্কার ও জাতীয় অগ্রগতিতে বইকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে সম্ভব সব রকম সহযোগিতা করা আমাদের সকলের কর্তব্য।

[জাতীয় বইমেলা ’৯৬ উপলক্ষে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার প্রাপ্ত]

বিষয়: বিবিধ

২৮০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File