ইসলামী ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ (পর্ব-৫)
লিখেছেন লিখেছেন ডক্টর সালেহ মতীন ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১০:১৫:৪৩ সকাল
[পূর্ব প্রকাশিতের পর]
ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে সারা দুনিয়া এখন ভাবছে। এ ব্যাপারে আমার কিছু রচনা সম্মানিত ব্লগার ও পাঠক ভাই-বোনদের উদ্দেশে শেয়ার করতে চাই। প্রকাশিত বিষয়ে সমালোচনা, পরামর্শ, সংশোধন সাদরে গৃহীত হবে। বিষয়টি নিতান্তই বেরসিক বিষয়বস্তুর তালিকায় পড়ে, সুতরাং ইহা যদি কারো বিরক্তি উৎপাদন করে তবে আগে ভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
পর্ব-৫
১৯৫৫ সালে আরেক ইসলামী চিন্তাবিদ মোহাম্মদ উজায়ের তার ÒAn Outline of Interestless Banking” শীর্ষক প্রবন্ধে ইসলামী ব্যাংকের কর্মপদ্ধতিতে মুদারাবা মূলনীতি সংযুক্ত করার কথা বলেন।মোহাম্মদ উজায়েরের প্রবন্ধ ইসলামী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পথে এক ধাপ অগ্রগতি সাধন করে। বিশ্ববাসী নতুন করে একটি কল্যাণমুখী ব্যাংকিং ধারার পদধ্বনি শুনতে থাকে। অনাগত সে ব্যাংকের উপস্থিতি পশ্চিমা বিশ্বে সুদনির্ভর ব্যাংকসমূহের অবকাঠামো ও নীতিমালা জনগণের জন্য কতটা কল্যাণকর ও নিরাপত্তামূলক তা নিয়ে নতুন ভাবনার উদয় হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলামী ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংকিং এর চলমান আন্দোলন পঞ্চাশের দশকে আরো গতিশীল হয়ে ওঠে। মুসলিম উম্মাহ্র চিন্তা-চেতনায় সুদের কুফল এমনভাবে প্রোথিত হয় যে, তাঁরা একটি সুদমুক্ত ব্যাংকব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। এ সময়ে বেশ কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্র স্বাধীনতা অর্জন করে। এসব রাষ্ট্রে মুসলিমগণের নিজস্ব আদর্শ ও ঐতিহ্যের আলোকে অর্থনীতি, ব্যাংকিং তথা গোটা সমাজব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর দাবি তীব্র হতে থাকে। পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকিং বিষয়ে গবেষণাও ব্যাপকতা পায়। ইসলামী চিন্তাবিদগণের গবেষণা ও চিন্তা-ভাবনার ফসলস্বরূপ বেশ কিছু বই-পুস্তক, প্রবন্ধ ইত্যাদি প্রকাশিত হয়।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক ছিল কেবল দার্শনিক ও চিন্তাবিদগণের গবেষণা ও রচনার বিষয়। এ সময় ইসলামী অর্থনীতি ও ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা বিষয়ে গবেষণা ও অধ্যয়ন প্রচুর মাত্রায় চলতে থাকে। একবিংশ শতাব্দী এবং পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইসলামী ব্যাংক জয়ী হতে পারবে কিনা, আসন্ন সম্ভাব্য সমস্যাসমূহ মোকাবিলা করে জনগণের সত্যিকার কল্যাণে আসবে কিনা এ সব নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ইসলামী চিন্তাবিদগণ নিরলস গবেষণা চালিয়ে যান।
ত্রিশের দশকে ইসলামী অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা পুনর্গঠনে চিন্তার রাজ্যে আলোড়ন তোলেন আল্লামা ইকবাল ও মাওলানা মওদূদীর মতো বেশ ক’জন বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব। চল্লিশের দশকে সে চিন্তার বাস্তবায়ন চেষ্টা অধিকতর সুসংহত হয়।
পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভের পর কায়েদে আযম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ ১৯৪৮ সালের ১ জুলাই স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একটি গবেষণা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে ইসলামিক ফাইন্যান্সিয়াল পদ্ধতিসমূহ অনুসরণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রের জন্য গৃহীত ‘আদর্শিক মূলনীতি’ সংক্রান্ত প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট ও সুষ্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয় যে, দেশের অর্থব্যবস্থা ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শের ভিত্তিতে পুনর্গঠন করা হবে। ষাটের দশক ছিল ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বাস্তব পরীক্ষা-নিরীক্ষাকাল এবং তৎপরবর্তী সত্তরের দশক ছিল তা বাস্তবায়নের দশক। এ দশকে ইসলামী চিন্তাবিদগণের চিন্তা-গবেষণা এবং উদ্যোক্তাগণের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ও সাহসী পদক্ষেপের ফলে বিশ্বমানবতার কাছে ইসলামী অর্থনৈতিক কল্যাণের বার্তা পৌঁছানো শুরু হয়। ১৯৬১ সালে মিশরে ইসলামী গবেষণার সর্বোচ্চ কেন্দ্ররূপে ‘কলেজ অব ইসলামিক রিসার্চ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৪ সালের ৭ মার্চ কলেজের প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৪০টিরও বেশি মুসলিম দেশের শতাধিক ইসলামী বিশেষজ্ঞ যোগ দেন।তাঁরা প্রচলিত ব্যাংকব্যবস্থার বিকল্পরূপে ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতি গড়ে তোলার উপায় নিয়ে অলোচনা করেন। সম্মেলনে ব্যাংকিং কার্যক্রমের কয়েকটি ইসলামী পদ্ধতি অনুমোদন করা হয় এবং আরো কয়েকটি পদ্ধতি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য গ্রহণ করা হয়।
১৯৬২ সালে ইসলামী নীতিমালার আলোকে মালয়েশিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়, `Pilgrims Savings Corporation’. বস্তুত হজ্জে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় সমাবেশ করে হজ্জব্রত পালনে আগ্রহী ব্যক্তিগণের সুবিধার্থে ব্যাংকের আদলে সুদমুক্ত নীতিতে এ সংস্থা গঠিত হয়। ১৯৬৯ সালে পার্লামেন্টের আইনের মাধ্যমে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় `Lembaga Tabung Haji(LTH)’ এবং এটি তখন একটি বিশেষায়িত ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। সরকারি পর্যায়ে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার এটি ছিল প্রথম উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠানটি এখনো সুনামের সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মালয়েশিয়ার ইসলামী ব্যাংকিং এর ইতিহাসে এ ব্যাংকটিকে পথিকৃৎ এবং বিশ্ব ইসলামী ব্যাংকিং এর জন্য একধাপ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৯৬৮ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. নেজাতুল্লাহ সিদ্দিকী মুদারাবা নীতির ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংকিং এর দ্বি-স্তর বিশিষ্ট নমুনা(Model) উপস্থাপন করেন। ইসলামী ব্যাংক যাতে আরো বিজ্ঞানসম্মত ও কল্যাণকর উপায়ে জনগণের নির্বিঘ্ন উপকার সাধন করতে পারে সে জন্যই তিনি এ নমুনা উপহার দিয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে এম. মোহাইমিন আধুনিক পদ্ধতিতে ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে একটি বিস্তৃত অবকাঠামোগত ধারণা উপস্থাপন করেন। এ সবই ইসলামী ব্যাংকিং এর চলার পথে গুরুত্বপূর্ণ পাথেয় হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ইসলামী চিন্তাবিদগণের চিন্তা ও গবেষণার ফসল বিশ্ববাসী বর্তমানে ভোগ করছে। ইসলামী ব্যাংকের কল্যাণমুখী বার্তা মানব সভ্যতাকে নতুন করে আর্থ-সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার সুসংবাদ দিচ্ছে।
[চলবে.........][পূর্ব প্রকাশিতের পর]
ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে সারা দুনিয়া এখন ভাবছে। এ ব্যাপারে আমার কিছু রচনা সম্মানিত ব্লগার ও পাঠক ভাই-বোনদের উদ্দেশে শেয়ার করতে চাই। প্রকাশিত বিষয়ে সমালোচনা, পরামর্শ, সংশোধন সাদরে গৃহীত হবে। বিষয়টি নিতান্তই বেরসিক বিষয়বস্তুর তালিকায় পড়ে, সুতরাং ইহা যদি কারো বিরক্তি উৎপাদন করে তবে আগে ভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
পর্ব-৫
১৯৫৫ সালে আরেক ইসলামী চিন্তাবিদ মোহাম্মদ উজায়ের তার ÒAn Outline of Interestless Banking” শীর্ষক প্রবন্ধে ইসলামী ব্যাংকের কর্মপদ্ধতিতে মুদারাবা মূলনীতি সংযুক্ত করার কথা বলেন।মোহাম্মদ উজায়েরের প্রবন্ধ ইসলামী ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের পথে এক ধাপ অগ্রগতি সাধন করে। বিশ্ববাসী নতুন করে একটি কল্যাণমুখী ব্যাংকিং ধারার পদধ্বনি শুনতে থাকে। অনাগত সে ব্যাংকের উপস্থিতি পশ্চিমা বিশ্বে সুদনির্ভর ব্যাংকসমূহের অবকাঠামো ও নীতিমালা জনগণের জন্য কতটা কল্যাণকর ও নিরাপত্তামূলক তা নিয়ে নতুন ভাবনার উদয় হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলামী ব্যাংক
ইসলামী ব্যাংকিং এর চলমান আন্দোলন পঞ্চাশের দশকে আরো গতিশীল হয়ে ওঠে। মুসলিম উম্মাহ্র চিন্তা-চেতনায় সুদের কুফল এমনভাবে প্রোথিত হয় যে, তাঁরা একটি সুদমুক্ত ব্যাংকব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন। এ সময়ে বেশ কয়েকটি মুসলিম রাষ্ট্র স্বাধীনতা অর্জন করে। এসব রাষ্ট্রে মুসলিমগণের নিজস্ব আদর্শ ও ঐতিহ্যের আলোকে অর্থনীতি, ব্যাংকিং তথা গোটা সমাজব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর দাবি তীব্র হতে থাকে। পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংকিং বিষয়ে গবেষণাও ব্যাপকতা পায়। ইসলামী চিন্তাবিদগণের গবেষণা ও চিন্তা-ভাবনার ফসলস্বরূপ বেশ কিছু বই-পুস্তক, প্রবন্ধ ইত্যাদি প্রকাশিত হয়।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক ছিল কেবল দার্শনিক ও চিন্তাবিদগণের গবেষণা ও রচনার বিষয়। এ সময় ইসলামী অর্থনীতি ও ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা বিষয়ে গবেষণা ও অধ্যয়ন প্রচুর মাত্রায় চলতে থাকে। একবিংশ শতাব্দী এবং পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইসলামী ব্যাংক জয়ী হতে পারবে কিনা, আসন্ন সম্ভাব্য সমস্যাসমূহ মোকাবিলা করে জনগণের সত্যিকার কল্যাণে আসবে কিনা এ সব নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ইসলামী চিন্তাবিদগণ নিরলস গবেষণা চালিয়ে যান।
ত্রিশের দশকে ইসলামী অর্থনীতি ও সমাজব্যবস্থা পুনর্গঠনে চিন্তার রাজ্যে আলোড়ন তোলেন আল্লামা ইকবাল ও মাওলানা মওদূদীর মতো বেশ ক’জন বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব। চল্লিশের দশকে সে চিন্তার বাস্তবায়ন চেষ্টা অধিকতর সুসংহত হয়।
পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভের পর কায়েদে আযম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ্ ১৯৪৮ সালের ১ জুলাই স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের উদ্বোধনী আনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একটি গবেষণা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে ইসলামিক ফাইন্যান্সিয়াল পদ্ধতিসমূহ অনুসরণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রের জন্য গৃহীত ‘আদর্শিক মূলনীতি’ সংক্রান্ত প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট ও সুষ্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয় যে, দেশের অর্থব্যবস্থা ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শের ভিত্তিতে পুনর্গঠন করা হবে। ষাটের দশক ছিল ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বাস্তব পরীক্ষা-নিরীক্ষাকাল এবং তৎপরবর্তী সত্তরের দশক ছিল তা বাস্তবায়নের দশক। এ দশকে ইসলামী চিন্তাবিদগণের চিন্তা-গবেষণা এবং উদ্যোক্তাগণের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ও সাহসী পদক্ষেপের ফলে বিশ্বমানবতার কাছে ইসলামী অর্থনৈতিক কল্যাণের বার্তা পৌঁছানো শুরু হয়। ১৯৬১ সালে মিশরে ইসলামী গবেষণার সর্বোচ্চ কেন্দ্ররূপে ‘কলেজ অব ইসলামিক রিসার্চ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৪ সালের ৭ মার্চ কলেজের প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৪০টিরও বেশি মুসলিম দেশের শতাধিক ইসলামী বিশেষজ্ঞ যোগ দেন।তাঁরা প্রচলিত ব্যাংকব্যবস্থার বিকল্পরূপে ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতি গড়ে তোলার উপায় নিয়ে অলোচনা করেন। সম্মেলনে ব্যাংকিং কার্যক্রমের কয়েকটি ইসলামী পদ্ধতি অনুমোদন করা হয় এবং আরো কয়েকটি পদ্ধতি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য গ্রহণ করা হয়।
১৯৬২ সালে ইসলামী নীতিমালার আলোকে মালয়েশিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হয়, `Pilgrims Savings Corporation’. বস্তুত হজ্জে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় সমাবেশ করে হজ্জব্রত পালনে আগ্রহী ব্যক্তিগণের সুবিধার্থে ব্যাংকের আদলে সুদমুক্ত নীতিতে এ সংস্থা গঠিত হয়। ১৯৬৯ সালে পার্লামেন্টের আইনের মাধ্যমে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় `Lembaga Tabung Haji(LTH)’ এবং এটি তখন একটি বিশেষায়িত ইসলামী ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। সরকারি পর্যায়ে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার এটি ছিল প্রথম উদ্যোগ। প্রতিষ্ঠানটি এখনো সুনামের সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মালয়েশিয়ার ইসলামী ব্যাংকিং এর ইতিহাসে এ ব্যাংকটিকে পথিকৃৎ এবং বিশ্ব ইসলামী ব্যাংকিং এর জন্য একধাপ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৯৬৮ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. নেজাতুল্লাহ সিদ্দিকী মুদারাবা নীতির ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংকিং এর দ্বি-স্তর বিশিষ্ট নমুনা(Model) উপস্থাপন করেন। ইসলামী ব্যাংক যাতে আরো বিজ্ঞানসম্মত ও কল্যাণকর উপায়ে জনগণের নির্বিঘ্ন উপকার সাধন করতে পারে সে জন্যই তিনি এ নমুনা উপহার দিয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে এম. মোহাইমিন আধুনিক পদ্ধতিতে ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে একটি বিস্তৃত অবকাঠামোগত ধারণা উপস্থাপন করেন। এ সবই ইসলামী ব্যাংকিং এর চলার পথে গুরুত্বপূর্ণ পাথেয় হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ইসলামী চিন্তাবিদগণের চিন্তা ও গবেষণার ফসল বিশ্ববাসী বর্তমানে ভোগ করছে। ইসলামী ব্যাংকের কল্যাণমুখী বার্তা মানব সভ্যতাকে নতুন করে আর্থ-সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার সুসংবাদ দিচ্ছে।
[চলবে.........]
বিষয়: বিবিধ
১৯০২ বার পঠিত, ৩৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
১।`Pilgrims Savings Corporation
২।১৯৬৮ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. নেজাতুল্লাহ সিদ্দিকী মুদারাবা নীতির ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংকিং এর দ্বি-স্তর বিশিষ্ট নমুনা(Model) উপস্থাপন করেন।
৩।১৯৮২ সালে এম. মোহাইমিন আধুনিক পদ্ধতিতে ইসলামী ব্যাংকব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে একটি বিস্তৃত অবকাঠামোগত ধারণা উপস্থাপন করেন।
এক্ষেত্রে তারা ট্রেড করবে, ট্রাকটা কিনে একটা বিক্রয়মূল্য এবং পেমেন্ট-শিডিউল নির্ধারণ করে একটা কন্ট্রাক্ট করবে এবং বিক্রয়মূল্য পরিশোধ না করতে পারলে কি কি ব্যবস্থা নেয়া হবে তার কন্ডিশন দিতে পারে। যেহেতু এটা একটা বিক্রয়-চুক্তি হবে সেক্ষেত্রে বিক্রয়মূল্য পুরোটাই তারা রিকভার করার অধিকার রাখে এবং মাফও করে দিতে পারে – সেটা তাদের ইচ্ছা।
তুমি অন্তত এ বিষয়ে সহীহ ইসলামী বিদ্যায় জ্ঞান দাও, জেনেই থাকলে – আবার যৌনদাসীর অ্যাডজাষ্টমেন্ট দিয়ো না!
ভুল কোথায় প্রমাণ করো।
এখানে দুইটা মেইন কাজ হয় –
১) তারা ধার নেয় মানুষের কাছ থেকে সেটা দিয়ে নিজেরা ব্যবসা করার জন্য এবং সে ব্যবসার লাভ থেকে ধার যার কাছ থেকে নিছে তার লাভের অংশ নির্ধারণ করে দিবে। যদি তারা আমানত/ডিপোজিট গ্রহণ করতো – তা সংরক্ষণ আবশ্যক এবং তা ব্যবহার করতে পারবেনা সংরক্ষণ ব্যতীত। এখানে তারা আমানত না নিয়ে যদি ধার নেয় তবে ব্যবসা করতেই পারে – তবে সে ব্যবসায় তাদের ডাইরেক্ট ইনভলবমেণ্ট থাকতে হবে।
২)একইভাবে তাদের নিজেদেরও টাকা আছে, সেটা তারা আরেকজনকে নিয়ে অংশীদারী ব্যবসা করতে পারে এবং সে ব্যবসায় যে লাভ হবে তার অংশ নির্ধারণ করে নিতে পারে।
তো দেখা যাচ্ছে যে -
ক) কারও আমানতের কোন ব্যবহার করা যাবে না।
খ) ধার নিয়ে ব্যবসা করা যাবে।
গ) অংশীদারীভিত্তিতে নিজের টাকা ব্যবসায় খাটানো যাবে।
এখানে মনে হয় (খ) আর (গ) এর কারবার হয়। এতে কোন সমস্যা আছে বলে মনে হয়?
এজন্য আমার মনে হয় যখনই ব্যবহারের জন্য কিছু নেয়া হবে সেটাই ধার বা কর্জ হবে – এ ধরণের বুঝে আমার কোন ভুল থাকলে বলবেন।
ইসলামী ব্যাংকগুলোর ষ্টেটমেন্টে অহরহ দেখা যায় ডিপোজিট/আমানত আছে, অনেক আগে থেকেই।
অর্থনীতি ও ব্যাংকিং ব্যাপারে অনেক কিছুই জানা হল।
অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন