ইসলামী ব্যাংকের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ (পর্ব-১)

লিখেছেন লিখেছেন ডক্টর সালেহ মতীন ২২ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৩:০৩:১৭ দুপুর



ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে সারা দুনিয়া এখন ভাবছে। এ ব্যাপারে আমার কিছু রচনা সম্মানিত ব্লগার ও পাঠক ভাই-বোনদের উদ্দেশে শেয়ার করতে চাই। প্রকাশিত বিষয়ে সমালোচনা, পরামর্শ, সংশোধন সাদরে গৃহীত হবে। বিষয়টি নিতান্তই বেরসিক বিষয়বস্তুর তালিকায় পড়ে, সুতরাং ইহা যদি কারো বিরক্তি উৎপাদন করে তবে আগে ভাগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

পর্ব-১

ইসলামী শারীআহ্ অনুসরণে পৃথিবীতে কোন ব্যাংকিং ব্যবস্থা চলতে পারে এমন ধারণা অস্বীকারকারি লোকের সংখ্যা নেহায়েৎ কম ছিল না। বিশেষত ইসলামকে যারা শুধু ধর্ম হিসেবে বিবেচনা করে তাদের মতামত এ রকম যে, ইসলাম পরম পবিত্র ধর্ম; পবিত্র মসজিদ ঘরেই এটি মর্যাদার সাথে সংরক্ষিত থাকবে, অর্থনীতি, রাজনীতি কিংবা ব্যাংকিং ব্যবস্থার মতো জায়গায় এর না আসাই ভালো। ইসলামী ব্যাংকিং এর অস্তিত্ব নিয়ে অনেকে অজ্ঞতাপ্রসূত প্রশ্নও তুলেছে। প্রকৃতপক্ষে ইসলামী অর্থনীতি ও ব্যাংকিং কোন উপহাসের বিষয় নয়, কল্পনাবিলাস কিংবা স্বপ্নপ্রসূত বিষয় নয় ইসলামী ব্যাংকিং শক্তিশালী অস্তিত্ব সমৃদ্ধ মানবকল্যাণের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ একটি সর্বজনীন নীতি।

সময়ের ব্যবধানে ইসলামী শারী‘আহ্ মোতাবেক পরিচালিত ব্যাংক আজ বাস্তব ও ধ্রুব সত্য। এমনকি বিশ্বের অনেক অমুসলিম দেশেও ইসলামী ব্যাংক দ্রুত বিস্তার লাভ ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। অনেক অমুসলিম দার্শনিক সুশৃঙ্খল ইসলামী জীবনপদ্ধতি ও ইসলামী অর্থনীতির বাস্তবায়নকে আগামী শতাব্দীর মানবসমাজে সামাজিক সুবিচার, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি এবং সর্বোত্তম কল্যাণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে বলে বিশ্লেষণমূলক অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এর একটি অনুকূল কারণ হলো, সাধারণভাবে বলা যায়, যেখানে সনাতন অর্থনীতি ধনাত্মক বক্তব্যের উপর বেশি জোর দেয়, সেখানে ইসলামী অর্থনীতি জোর দেয় আদর্শবাদী বক্তব্যের উপর। এখানে পার্থক্যকারি হিসেবে যে উপাদানটি কাজ করে তা হলো মূল্যবোধ যা ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অন্তর্নিহিত শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করে।

ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ইসলামী চিন্তাধারার সূচনা

আধুনিক ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা অনেকটা পরে হলেও এ ব্যাংকের মৌলিক ভিত্তি ও পদ্ধতিগত বিচারে বাস্তবিক পক্ষে এর উৎপত্তি হয়েছিল প্রায় ১৫০০ বছর আগে হযরত মুহাম্মদ(স.) এর সময়ে। রাসূলুল্লাহ(স.) নিজেই ছিলেন এ পদ্ধতির কৃতি উদ্যোক্তা। ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায়, রাসূলুল্লাহ(স.) নবুয়তের অনেক আগেই তাঁর শৈশব কালে অসাধারণ সত্যবাদিতা ও বিশ্বস্ততার জন্য সকল গোত্রের কাছে গ্রহণযোগ্য ‘আল আমীন’ উপাধি লাভ করেন। একজন সেরা ও দূরদর্শী ব্যবসায়ী হিসেবেও মক্কায় তাঁর পরিচিতি ও সুনাম বিস্তৃতি লাভ করে। রাসূলুল্লাহ(স.) খাদীজা(রা.) নাম্নী মক্কার একজন ধনাঢ্য বিধবা মহিলার সাথে এক ব্যবসায়িক লেনদেনে চুক্তিবদ্ধ হন। বলা বাহুল্য যে, ঐ ব্যবসায়িক লেনদেনই ন্যায়ভিত্তিক ইসলামী অর্থব্যবস্থার সূচক হিসেবে ইতিহাসে প্রমাণ পাওয়া যায়। মুদারাবা নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত ঐ ব্যবসায় হযরত খাদীজা(রা.) ছিলেন ‘সাহিব আল মাল’ এবং রাসূলুল্লাহ(স.) ছিলেন মুদারিব। রাসূলুল্লাহ(স.) এর দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও অসাধারণ সততায় অতি অল্প সময়ের মধ্যেই ব্যবসায়ে প্রচুর মুনাফা অর্র্জিত হয় এবং তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্যের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত ব্যবসার কোন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ বা বাণিজ্যিক অবকাঠামো না থাকলেও নীতি ও পরিচালনার আদল ছিল সম্পূর্ণ আধুনিক ইসলামী ব্যাংকিং এর অনুরূপ। রাসূলুল্লাহ(স.) এর ব্যবসায়িক সাফল্যের চিত্র দেখে সমসাময়িক আরো অনেক সম্পদশালী এ ধরনের অংশীদারি কারবারে আগ্রহের সাথে পুঁজি বিনিয়োগ করে।

[চলবে]





বিষয়: বিবিধ

১৮১৬ বার পঠিত, ৩১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

165786
২২ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:১২
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ভালো লাগলো ভাই।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:২৭
119968
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভাইজান, আসলে পেশাগত কারণে এত হিমসিম খেতে হয় যে, মনের মধ্যে উদিত হওয়া কিছু গুছিয়ে সবাইকে উপহার দিব তার অবকাশ প্রায়ই মিলে না। তাই ভাবলাম সংরক্ষিত বিষয়গুলো তো শেয়ার করা যায় যদি তা বিন্দুমাত্র কারো কোন কাজে আসে। আপনার সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ কামনা করছি।
165794
২২ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:২৩
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নির্বাচন করার জন্য অনেক ধন্যবাদ সালেহ ভাই। আশা করি ইসলামী ব্যংকের ব্যপারে অনেক অজানা কথা জনতে পারবো ইনশাআল্লাহ্।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৬
120020
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : লোকমান ভাই, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার শরীর ভালো আছে তো ?
165805
২২ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৩
ইমরান ভাই লিখেছেন : বিস্তারিত জানতে খুব আগ্রহ লাগছে...
সাথেই আছি.....
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৬
120021
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
165808
২২ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৬
আলোকিত ভোর লিখেছেন : ধন্যবাদ Rose
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৭
120022
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
165821
২২ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৬
পলাশ৭৫ লিখেছেন : ইসলামী ব্যাংক নাকি জামাতি বযাংক Thinking Thinking
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:০৫
119978
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তবে অজ্ঞতাপ্রসূত মন্তব্য করে নিজেকে ছোট না করলেও পারতেন। লেখার মধ্যে কোথাও ইসলামী ব্যাংকের কথা বলা হয়নি, বলা হয়েছে ইসলামী ব্যাংকিং বিষয়ে। সমালোচনার অস্ত্র নিক্ষেপের জন্য তা উপরে উঠিয়ে ধরে রেখেছেন তা বুঝতে পারি, কিন্তু সুযোগ বুঝে তো কোপ মারবেন !
165845
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৭
নাবীল লিখেছেন : ধন্যবাদ। আমাদের সবাইকে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যাবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে।
অনেক আলেম উলামার এই ব্যাংকিং সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে উল্টা পাল্টা বক্তব্য ফতোয়া দিয়ে থাকেন।
তবে সমাজে এদের প্রভাব কম ।
দেখা যাচ্ছে গ্রাম গন্জের আধা শিক্ষিত মানুষের মাঝে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যাবস্থার কদর দিন দিন বাড়ছে।
ইসলামী ব্যাংকিং ব্যাবস্থার অগ্রগতি কামনা করি।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৭
120023
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : ধন্যবাদ উৎসাহিত করার জন্য। আপনার জানার আগ্রহ পরিপূর্ণ হোক দোয়া করি।
165846
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:০২
বুড়া মিয়া লিখেছেন : মুনাফা একটা প্রশ্নবিদ্ধ বিষয় – মূলত মুনাফার কোন অস্তিত্ব কোথাও নাই; তবে আমরা আরেকজনকে যেকোনভাবে ওজনে কম দিয়ে বা শ্রমে ঠকিয়ে নিজেরা লাভবান হতে পারি – তাকেই মুনাফা বলে সবাই বিবেচনা করে; এ ঠকানো বা ওজনে কম দেয়া স্বেচ্ছায়, অনিচ্ছায় অথবা অজ্ঞাতসারে হয় সবসময়। ওজনে কম দেয়া যদি না যায় তবে কিভাবে মুনাফা হবে? আমি ট্রেডার ১০ টাকার ওজনের মাল ১৫ টাকায় বেচলেতো ৫ টাকার ওজনের মাল কম দিলাম ক্রেতাকে এবং সেই ৫ টাকাই আমার মুনাফা, ম্যানুফাকচারিং এর ক্ষেত্রেও একইভাবে হিসাব করা যায় – পরিশ্রমকে কনভার্ট করে। মূল্যকে যদি ওজন ধরি তবে সে ওজনে অবশ্যই কম দিয়েই যেখানে লাভ করতে হয় – এধরনের ওজনের ব্যাপারে ইসলামিক বিধান কি হবে? জানামতে, ক্রয়-বিক্রয় করতে বলা হয়েছে ওজন ঠিক রেখে – ওজন ঠিক রেখে ক্রয়-বিক্রয় করলে সেখানে মুনাফা আসবে কোত্থেকে?

বাদ দিলাম এবার ডাইরেক্ট বিজনেসের মুনাফা – পূর্ব থেকেই হালাল রিটার্ণ অন ইনভেষ্টমেন্ট কিভাবে নিরূপন করে? যেখানে ব্যবসা-ই তার ব্যবসা শেষ করে না একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত – এরকম রিটার্ণতো কখোনোই নিরূপন করা সম্ভব না পূর্ব থেকে, সেখানে আমানতের উপর অথবা বিনিয়োগের উপর কিভাবে লাভ নির্ধারণ হয় পূর্ব থেকেই?
২২ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৬
120019
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য অঅপনাকে সাধুবাদ। আপনার যুক্তিসঙ্গত ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন স্বাভাবিক তবে কোন অবস্থাতেই নিরুত্তর নয়। এ বিষয়ে আপনি ইসলামী অর্থনীতি,ইসলামী ব্যাংকিং, ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যবসা-বাণিজ্য বিষয়ক বই-পত্র পড়তে পারেন। বাজারে এর ধরনের বই-পত্র এখন প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। আর পণ্য ওজনে কম দিয়ে মুনাফার ব্যাপারে বলি যে, অঅপনি এ বিষয়ে বোধ হয় বিভ্রান্তির মধ্যে আছেন। কোন পণ্য কেউ কেজি ১০ টাকায় কিনে কেজি ১১/১২ টাকায় বিক্রির প্রস্তাব করলে যে এই দামে রাজী হবে সে কিনবে- এটা বেচা-কেনা। এটাকে আপনি ওজনে কম দেয়া বলে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন। বিষয়টি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিবেচনার অনুরোধ করছি। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
165880
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৯
বুড়া মিয়া লিখেছেন : মূল্যকে ওজনের পরিমাপক হিসেবে ব্যবহারটা অনেক পুরোনো এটা আমি না – যারা এ ব্যাপারে বিজ্ঞ, তারা বলেছেন অর্থের প্রবর্তনই হয়েছে ওজন হিসেবে ব্যবহারের জন্য এবং এর যথেষ্ট ইতিহাসও রয়েছে। ইংল্যান্ডের কারেন্সী - পাউন্ডের ইতিহাস-ই ওজন, আলাদা কিছু না, এভাবে সব অর্থই ওজন-ই নির্দেশ করে, অন্য কিছু বলে বোঝাটাই বিভ্রান্তি বলে অর্থনীতিবিদরা বলে গেছেন।

আর এটাকে আমি না, বিশ্লেষক প্রায় সব অর্থনীতিবিদই প্রতিষ্ঠিত না শুধু, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বিশ্লেষন করে প্রমাণও করে ছেড়েছেন।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:১১
120068
তৌহিদ মাহমুদ লিখেছেন : মূল্যকে ওজনের পরিমাপক হিসেবে ব্যবহারটা অনেক পুরোনো এটা ঠিক । তবে এটা যুগ যুগ ধরে সমালোচকদের মত যা কখনও গৃহিত হয়নি।
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:২৯
120077
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ঠিক বলেছেন মাহমুদ ভাইয়া; রিয়েলিষ্টিক মত আর ক্যাপিটালিষ্টিক মত সব সময়ই ছিল এবং থাকবেও এবং একদল অন্যদলের সমালোচক।

তবে আর্থিকভাবে মুনাফা মানে যে ওজনে কম দিয়ে প্রতারনা – তা একদল গোপন রাখতে চাইলেও - কোন দলই তা অস্বীকার করতে পারেনি।
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৩
120278
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : ভাইজান, ধন্যবাদ। অাপনার দাবী কিন্তু যৌক্তিক আমি আগেও বলেছি। একটু বিশ্লেষণ করলে আপনার-আমার/আমাদের দুজনের দাবীই সঠিক বলে প্রমাণ করা সম্ভব। এক কেজি পরিমাণ পণ্য ১০ টাকায় কিনে ১১ টাকায় বিক্রি করলে ১ টাকা বিক্রেতার পারিশ্রমিক বা মুনাফা। ওজনে কম দেয়ার বিষয়টি এখানে গ্রহণযোগ্য নয় এ কারণে যে, ওজন এর তো স্টান্ডার্ড আছে! ক্রেতা এক কেজি মেপে বুঝে শুনেই নিবে। তবে আপনার দাবী অনুযায়ী ১১ টাকা কেজি দরের হিসাবে ১০ টাকার বিনিময়ে ক্রেতা যে পরিমাণ পণ্য পাবে তা এক কেজি থেকে একটু কম। তবে এখানে লক্ষ্যণীয় হলো ব্যবসায়ী মিল গেট কিংবা পাইকারী বাজার থেকে যে দামে কিনে কষ্ট করে বহন করে নিয়ে অন্য বাজারে খুচরা বিক্রয়ের জন্য পণ্য হাযির করলো সে একই দামে অর্থাৎ ১০ টাকা কেজি দামে কিনে ১০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করবে কোন স্বার্থে? ইটা কি স্বাভাবিক হিসাব-নিকাশের দাবী ? আর ক্রেতা সাধারণও কি তাই দাবী করে যে, বিক্রেতা যে দামে পণ্য কিনে এনেছে সেই দামেই তার কাছে বিক্রি করতে হবে, নচেত তাকে ওজনে কম দেয়ার দোষে দায়ী করে শাস্তি দেয়া হবে। বিষয়টি একটু গভীর চিন্তা করলেই অনুধাবন করা সম্ভব। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ। ভুল হলে ক্ষমা চাই।
২৯ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৯
123350
বুড়া মিয়া লিখেছেন : স্বাভাবিক হিসাব-নিকাশের দাবী আপনারটা একদম পারফেক্ট – ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে এ দাবী পালন করা হয়, তারা যে মুনাফা করে – তা তাদের পারিশ্রমিকই, সেটা কামাই না করতে পারলে তারা ভাতে মরবে, তাই তাদের লাভ মানেই পারশ্রমিক এতে কোন ভুল নাই।

কিন্তু মাঝারি কিংবা বড় ব্যবসায়ীদের কাছে লাভ কখনই পারিশ্রমিক না! সেটা আরেক প্রকারের সুদ মানি-ক্যাপিটাল এর উপরে। এদের ক্ষেত্রে –

মুনাফা = মোট বিক্রয় – মোট খরচ
মোট খরচ = মাল/সার্ভিসের খরচ + পারিশ্রমিক
পারিশ্রমিক = লেবারের বেতন + মজুরী + মালিক/পরিচালকের সম্মানী।

এখানে দেখেন এদের ক্ষেত্রে লাভ মানে পারিশ্রমিকের উপরে আরেকটা কিছু। এটা তাদের স্বাভাবিক হিসাব-নিকাশের দাবী অনুযায়ী সুদ এর উপরে নির্ভরশীল পুরোপুরি। এ লাভকে তারা বলে রিটার্ণ অন ক্যাপিটাল ইনভেষ্টেড এবং এ রিটার্ণ অবশ্যই সুদ এর চাইতে বেশী হতে হবে।

এ ধরনের মাঝারি ব্যবসায়ীরা দাবী করে তারা হালাল ব্যবসা করে, কিন্তু আদতে তারা সুদখোর। কারণ সুদের চাইতে লাভ বেশী না হলে তারা ব্যাংকে টাকা রেখে সুদ খাবে, আর লাভ সুদের চাইতে বেশী হলে তারা লাভের জন্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করবে – মোট কথা সুদ/লাভ যেখানে বেশী তারা তাদের মানি ঐখানেই ডিপোজিট করবে – এদের নিয়্যতটাই হচ্ছে পারিশ্রমিক তো নিবেই এবং তা ছাড়াও টাকার উপরে বিনাশ্রম লাভ অর্জন।

এধরনের ইচ্ছাকৃত বিনাশ্রম উপার্জনকে কি বলা যায়? - লাভ? নাকি সুদ? – প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় বলা হয় - এধরনের বিনাশ্রম উপার্জনের ইন্সেন্টিভ না থাকলে নাকি ক্যাপিটালিষ্টরা ইনভেষ্টই করবে না!
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৩০
124088
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : আপনার মন্তব্যকে সম্মান করি। ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য। আপনি একটু একটু করে পুঁজিবাদের বিশাল অংশের মধ্যে এগুচ্ছেন। আমি এখন মোটামুটি নিশ্চিত যে, আপনি অর্থনীতি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রিধারী এবং আমি এও নিশ্চিত যে, আপনি সত্য সন্ধানী। আপনার প্রশ্নে উপযুক্ত উত্তর আপনি একটু চেষ্টা করলে(বিভিন্ন প্রকার বই-পত্র পড়লে)পেয়ে যাবেন আশা করি। ধন্যবাদ ভাইয়া। আমি খুব সাধারণ এবং স্বল্প শিক্ষিত একজন মানুষ, আপনার ব্লগে লিখিতভাবে উত্তর দিয়ে পুরোপুরি বুঝানোর যোগ্যতা সম্ভবত আমার নেই। তবে আপনাকে আমি সমীহ করি আপনার যুক্তিগ্রাহ্য প্রশ্নের জন্য। ধন্যবাদ
৩১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৭
124705
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ডিগ্রী আছে একটা – সেরকম ডিগ্রী দিয়ে দেশের অর্থনীতিও চালিয়ে গেছেন একজন; তবে অনেকেই বলে সেটা নাকি অর্থনীতির ডিগ্রী না! যদিও তাদের সেসব বিষয় – মনে হয় আমরা তদের চাইতেও ভালোই বুঝি।

অর্থকষ্ট, দারিদ্র এর কারণ হিসেবে অনেকেই একজন ব্যক্তির অযোগ্যতা প্রমাণ করতে চাইলেও – এসবই মূলত পূজিবাদের/মানি-একুমুলেশনের রিপল-ইফেক্ট। সাধারণ মানুষের দোষ খুব একটা নাই, যদি বলা হয় তারা অযোগ্য বা বোঝে না!
165888
২২ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
মোঃজুলফিকার আলী লিখেছেন : সুন্দর লেখা। পড়ে ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ।
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
120280
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য। গঠনমূলক সমালোচনা করলে ও চিন্তনীয় পরামর্শ দিলে অনেক খুশি হব।
১০
165908
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:০৩
ইক্লিপ্স লিখেছেন : ভালো এগিয়ে যাক ব্যাংক। আমার সব চেয়ে পছন্দের ব্যাংক।
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
120282
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য। গঠনমূলক সমালোচনা করলে ও চিন্তনীয় পরামর্শ দিলে অনেক খুশি হব। আপনার পছন্দকে সমীহ ও প্রশংসা করি।
১১
165912
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:১৩
তৌহিদ মাহমুদ লিখেছেন : সালেহ মতিন ভাই এর লেখাটা সময়োপযোগী এবং বাস্তব সম্মত । অনেক ভালো লাগলো । আশাকরি ধারাবাহিকভাবে লিখে যাবেন। অনেক ধন্যবাদ।
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৭
120283
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : তৌহিদ ভাই, অনেক ধন্যবাদ আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য। গঠনমূলক সমালোচনা করলে ও চিন্তনীয় পরামর্শ দিলে অনেক খুশি হব।
১২
165918
২২ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:২৪
শেখের পোলা লিখেছেন : চলুক, অনেক কিছু জানার আছে৷ ধন্যবাদ৷
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৭
120284
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভাই আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য। গঠনমূলক সমালোচনা করলে ও চিন্তনীয় পরামর্শ দিলে অনেক খুশি হব।
১৩
166175
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:১৫
সাইদ লিখেছেন : অনেক বলে যে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক শুধু নামে মাত্র।ভিতরে ভিতরে অন্য ব্যাংক গুলোর মতো.আশা করি আপনার লেখা থেকে প্রকৃত সত্য জানতে পারব।
২৩ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:০৬
120287
ডক্টর সালেহ মতীন লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য। আপনার কথা ঠিক যে, অনেকে বলেে থাকেন এমন কথা। তবে ঢালাওভাবে এ দাবী সঠিক নয়। অনেকে না জেনে বলেন, আবার অনেকে কিছুটা ভুল বুঝাবুঝির শিকার হয়ে এমন দাবী করেন। সবাইকে আরো পড়াশুনা করার পরামর্শ দিচ্ছি। সাইদ ভাই, অঅমার লেখার গঠনমূলক সমালোচনা করলে ও চিন্তনীয় পরামর্শ দিলে অনেক খুশি হব।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File