প্রসঙ্গ পর্দাঃ মুখ ঢাকা নেকাব কতটা জরুরী?
লিখেছেন লিখেছেন পার্টিশন ৪৭ ০৩ জুন, ২০১৩, ১১:১৯:৪৫ রাত
পুনঃপ্রকাশ (প্রথম প্রকাশঃ ১১ এপ্রিল ২০১১, সন্ধ্যা ০৬:৩৮, বন্ধ হয়ে যাওয়া সোনার বাংলাদেশ ব্লগে)
মুসলিম সমাজ হল ইশ্বরকেন্দ্রিক সমাজ, আর তার মৌলিক একক হল পরিবার। ব্যভিচার খুব সহজেই সমাজ ও পারিবারিক জীবনে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে বলেই তা ঠেকানোর জন্য ইসলামে পর্দাপ্রথার প্রতি কঠোরতা অবলম্বন করা হয়। আর এই পর্দা নিয়ে মুসলমান নারীরা এখন পৃথিবীতে খুব সমস্যায় আছে। ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এমনকি বাংলাদেশের মত মুসলিম দেশেও অনেক প্রতিষ্ঠানে পর্দা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এটি যেকোন পর্দানশিন মহিলার জন্য যে বিব্রতকর, তা বলাই বাহুল্য। এই নিষেধাজ্ঞা কি পুরো পর্দাপ্রথার জন্যই নাকি শুধুমাত্র নেকাবের বিষয়ে? যতদুর জানি নেকাবের উপরেই এই নিষেধাজ্ঞার খড়গ। মুসলিম সহ বিভিন্ন দেশে এই নেকাবের উপর প্রকারান্তরে পর্দানশিন মহিলাদের উপর চলছে খরগ। নেকাব বলতে আমরা বুঝি এক চিলতে পাতলা কাপড় যা দিয়ে মুসলিম মহিলারা মুখ ঢেকে রাখে।
আমার প্রশ্ন হল পর্দা হিসেবে এই মুখ ঢেকে রাখার প্রয়োজনীয়তা কতখানি? মুখ ঢাকা অথবা চোখ ঢাকার ব্যাপারে ইসলামী পণ্ডিতদের মধ্যে ব্যাপক মতভেদ আছে এবং তাদের সবারই নিজ নিজ পক্ষে কোরান হাদিসের রেফান্সের অভাব নাই। কোন ভুল বিষয়ে জ্ঞানী লোকেরা একমত হয়না এবং যখন জ্ঞানী লোকদের মধ্যে মতভেদ থাকে তখন আমাদের মত সাধারণ মানুষের উচিৎ বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগানো। আসুন দেখা যাক কি আছে এই পর্দার হুকুমে। এ লেখাটি নেয়া হয়েছে বহুল প্রচলিত তিনটি তাফসির যথা- তাফসিরে ইবনে কাসির, তাফসিরে মাআরেফুল কোরান ও তাফহিমুল কোরান অবলম্বনে সংশ্লিষ্ট আয়াত সমূহের আলোচনা থেকে।
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (২৪:৩১)
এই আয়াতটি নারীদের পর্দা সম্পর্কে। অশ্লীলতা দৃষ্টি দিয়ে শুরু হয়ে ব্যভিচারে পরিনতি পায়। তাই আয়াতটির শুরুতেই দৃষ্টি ও যৌনাঙ্গের হেফাজতের কথা বলা হয়েছে। কারও যৌনাঙ্গ দেখা এমনিতেই নিষিদ্ধ এবং অন্যান্য অঙ্গের প্রতি কামভাবে দেখা নিষিদ্ধ। কামভাব ব্যতীত দৃষ্টি অবৈধ নয়।
নারীর দৃষ্টি সংযত রাখার ব্যপারে হাদিসগুলো এরকমঃ হযরত উম্মে সালামাহ ও হযরত উম্মে মাইমূনাহ নবী সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বসে থাকা অবস্থায় হযরত ইবনে উম্মে মাকতুম আসলেন। নবী (সাঃ) উভয় স্ত্রীকে বললেন, “তার থেকে পর্দা করো”। স্ত্রীরা বললেনঃ “হে আল্লাহর রসূল, তিনি কি অন্ধ নন? তিনি তো আমাদের দেখতে পাচ্ছেন না, চিনতেও পাচ্ছেন না।” রসুল (সাঃ) বললেনঃ “তোমরা দুজনও কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখতে পাচ্ছো না?” ৭ হিজরী সনে একদল হাবশী পুরুষ মসজিদে নববীর চত্বরে একটি সামরিক খেলার আয়োজন করলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে হযরত আয়েশাকে এ খেলা দেখালেন।
যৌনাঙ্গের হেফাজত সম্পর্কে পুরুষ ও নারীর বিধান প্রায় একই। তাফসীরগুলোর বর্ণনা হচ্ছে অবৈধ যৌন উপভোগ নিষিদ্ধ তো বটেই, অন্যের সামনে অনিবার্য প্রয়োজন ব্যতীত সতর বা লজ্জাস্থান উন্মুক্ত করাও নিষিদ্ধ। পুরুষের সতরের সীমানা সম্পর্কে নবীজি (সাঃ) বলেনঃ “পুরুষের সতর হচ্ছর তার নাভী থেকে হাঁটু পর্যন্ত।” “নিজের স্ত্রী ও ক্রীতদাসী ছাড়া বাকি সবার থেকে নিজের সতরের হেফাজত করো।” “সাবধান, কখনো উলংগ থেকো না, কারণ তোমাদের সাথে এমন সত্তা থাকে যারা কখনো তোমাদের থেকে আলাদা হয় না, তোমরা যখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দাও অথবা স্ত্রীদের কাছে যাও সে সময় ছাড়া, কাজেই তাদের থেকে লজ্জা করো এবং তাদেরকে সম্মান করো।”
নারীর ক্ষেত্রে সতর ও হিজাবের মধ্যে পার্থক্য করা হয়েছে। সতর নারী পুরুষ উভয়ের জন্য ফরজ আর পর্দা কেবল নারীর জন্য ফরজ বলা হয়েছে। বলা হয়েছে পুরুষদের জন্য মেয়েদের সতর হচ্ছে হাত ও মুখ ছাড়া তার সারা শরীর যা কেবলমাত্র স্বামী ছাড়া অন্য কোন পুরুষের সামনে খোলা উচিত নয়। আর মহিলাদের জন্য মহিলাদের সতরের সীমারেখা হচ্ছে পুরুষদের জন্য পুরুষদের সতরের সীমা রেখার মতই, অর্থাৎ নাভী ও হাঁটুর মাঝখানের অংশ যা ঢেকে রাখা ফরয এবং অন্য অংশগুলো ঢাকা ফরয না হলেও বিনা প্রয়োজনে খোলা উচিৎ নয়। মহিলাদের সতরের এরূপ সীমারেখার কোন রেফারেন্স আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যায় দেয়া নাই। আয়াতের পরবর্তী অংশ পড়লে সতর ও হিজাবের এরূপ পার্থক্য বুঝা মুশকিল হয়ে যায়। তবে এটুকু মনে হয় যে, যৌন কাজে ব্যবহৃত অঙ্গ (যৌনাঙ্গ ও নারীর স্তন) এবং এর কাছাকাছি এলাকাকেই সম্ভবত মনিষীরা সতর বলতে চেয়েছেন। আর পর্দার অর্থ আরও ব্যাপক।
এখানে ‘যা সাধারণতঃ প্রকাশমান’ বলতে তাফসিরকারদের মধ্যে মতভেদ আছে এবং এই ক্ষেত্রেই নেকাবের বিতর্কটি চলে আসে। তবে বেশিরভাগের মতে মুখমন্ডল, হাতের কব্জি, গিরা পর্যন্ত পায়ের পাতা এবং অন্য অংশ যা কর্মব্যস্ততার কারনে অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রকাশ পায় এবং চিকিৎসা বা এই জাতীয় শরিয়ত সম্মত কারনে শরীরের প্রয়োজনীয় অংশ প্রকাশ করাকে বৈধ বলা হয়েছে।
বুক ঢেকে রাখা সম্পর্কে বর্ণনাগুলো এরকম। জাহেলী যুগে মহিলারা মাথার পেছনে খোঁপার সাথে ওড়না বেধে দুই প্রান্ত পিঠে ফেলে রাখত। বুকে জামা ছাড়া আর কিছুই থাকতো না এবং সেখানে গলা ও বুকের ওপরের দিকে অংশটি খোলা থাকত ও পরিষ্কার দেখা যেতো। (আজকের যুগে রাজস্থানি নাচের পোষাকে এ সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়)। ওড়না বা এরূপ কাপড় দিয়ে মাথা, কোমর, বুক ইত্যাদি সব ভালোভাবে ঢেকে নেয়াই এ আয়াতের উদ্দেশ্য বলে বলা হয়েছে যাতে করে বুকের অবয়ব বা সৌন্দর্য পুরুষের দৃষ্টিগোচর না হয়। পাতলা বা এমন পোশাক পরা উচিত নয় যার মধ্য দিয়ে নারীর শরীর বা শরীরের কাঠামো প্রকাশ পায়। হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর বোন হযরত আসমা রসূল (সাঃ)-এর সামনে পাত্লা কাপড় পরিহিত অবস্থায় আসলে রসূলুল্লাহু (সাঃ) সঙ্গে সঙ্গেই মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলেনঃ “হে আসমা, কোন মেয়ে বালেগ হওয়ার পর তার মুখ ও হাত ছাড়া শরীরের কোন অংশ দেখানো জায়েয নয়।” নবী (সাঃ)-র কাছে মিসরের তৈরী সূক্ষ্ম কাপড় এলে তিনি তা থেকে একটুকরা দেহ্ইয়াহ কাল্বী (রাঃ) কে দিয়ে বলেন, এখান থেকে কেটে এক খণ্ড দিয়ে তোমার নিজের জামা তৈরী করে নাও এবং এক অংশ দিয়ে তোমার স্ত্রীর দোপাট্টা বানিয়ে দাও, কিন্তু তাকে বলে দিবে এর নিচে যেন আর একটি কাপড় লাগিয়ে নেয়, যাতে শরীরের গঠন ভেতর থেকে দেখা না যায়।
আয়াতের পরবর্তি অংশে যাদের সামনে সৌন্দর্য্য প্রকাশ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে তা বর্ণনা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মারেফুল কোরানের ব্যাখ্যায় স্বামী ছাড়াও উল্লেখিত ব্যতিক্রম পুরুষদের কাছে বুকের সৌন্দর্য্য প্রদর্শনের অনুমতি দেয়া হয়েছে, যে বিষয়টি দুর্বোধ্য।
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُل لِّأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِن جَلَابِيبِهِنَّ ۚ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا [٣٣:٥٩]
হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (৩১: ৫৯)
এই আয়াতের প্রেক্ষাপট হিসেবে বলা হয়েছে যে তৎকালীন মহিলারা প্রতিনিয়ত পুরুষদের লাম্পট্যের শিকার হত, বিশেষ করে মহিলারা রাত্রিকালে প্রাকৃতিক কাজ সারার জন্য যখন বাইরে বের হত। উল্লেখ্য সে সময় দরিদ্র পরিবারের মহিলারা রাতের বেলা ঘরের বাইরে গিয়ে এসব কাজ সারত। লম্পটরা স্বাধীন স্ত্রীলোকদের প্রতি লাম্পট্য প্রকাশ করতে সাহস করতনা। এই আয়াতের উদ্দেশ্য ছিল যাতে মুসলিম-অমুসলিম, দাসী-স্বাধীন স্ত্রীলোকের মধ্যে পার্থক্য করা যায়। এই আয়াতের ব্যাখ্যায়ই নেকাবের প্রসঙ্গটি চলে আসে। কেউ এখানে জিলবাব শব্দের অর্থ ঘোমটা বলেছেন। মুফাসসিরগন মুখমণ্ডল ঢেকে রাখার কথা বললেও তার সপক্ষে রসুলের (সাঃ) কোন বাণী বর্ণনা করেন নাই। মুখমণ্ডল ঢেকে রাখার পক্ষে সবচেয়ে শক্তিশালী দলিল হিসেবে হযরত উবাইদাতুস সালমানীর ব্যাখ্যাই তাফসিরকারগন পেশ করেছেন। তিনি আয়াতে উল্লেখিত জিলবাব বুঝাতে গিয়ে নিজের চাদর দিয়ে এমনভাবে মাথা ও শরীর ঢেকে দেখান যার ফলে পুরো মাথা ও কপাল এবং পুরো চেহারা ঢাকা পড়ে যায়, কেবলমাত্র একটি চোখ খোলা থাকে। অথচ এটি কোন হাদিস নয়। এই হযরত উবাইদাহ নবী (সাঃ)-এর যুগে মুসলমান হলেও তার খিদমতে হাযির হতে পারেননি এবং হযরত উমরের (রা) আমলে তিনি মদীনা আসেন। তিনি ফিকহ ও বিচার সংক্রান্ত বিষয়ে পণ্ডিত ছিলেন বলে বর্ণনা রয়েছে। ইসলাম স্বভাব ধর্ম হলেও এক চোখ দিয়ে চলা স্বাভাবিক হতে পারে কি? চলাফেরায় এক চোখ কি যথেষ্ঠ? আর এই আয়াতটি সুরা নুরে বর্নিত আয়াতের আগে নাজিল হয়েছে। কাজেই পরবর্তি আয়াত দ্বারা পুর্ববর্তি আয়াত হয় রহিত অথবা ব্যাখ্যাইয়িত হিসেবে গ্রহণ করাই যৌক্তিক। তাফসিরগুলোর বর্ণনামতে পর্দার আয়াত নাজিল হওয়ার পর মহিলারা মুখ ঢেকে চলার কথা জানা গেলেও রসুলের (সাঃ) কোন বাণী দ্বারা এটাকে অবশ্য পালনীয় বলা হয়নি।
মুখ হচ্ছে পরিচয়ের প্রথম এবং প্রধান উপায়। এমন অনেক ঘটনা ঘটে যেখানে নেকাবকে ব্যবহার করা হয় অবৈধ বা আপত্তিকর কাজে। স্কুল বা কলেজ পালানো তরুণী নেকাব পড়ে প্রেমিকের সাথে অভিসারে যায়। আমার ছোট বোন বা কন্যার ক্ষেত্রে এরূপ হলে তাকে শাসন করা আমার জন্য কঠিন হয়না কি? দেহপসারিনীরা নেকাব পড়ে যাতায়াত করছে। পুরুষ বা নারী ক্রিমিনালরা ক্রাইম করার পর নেকাবসহ বোরখা পড়ে পুলিশের চোখকে ফাকি দিচ্ছে। এমন অবস্থায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি নেকাবকে আপত্তি জানায় তাহলে তা অন্যায় হবে কি? আপনি সমাজে চলাফেরা করবেন অথচ পরিচয় লুকিয়ে রাখবেন, আপনাকে কেউ চিনতে পারবেনা -এটা কি অন্যায় নয়? বিশেষ করে যে সমাজে বা প্রতিষ্ঠানে মুখ ঢাকা নিষেধ, সেখানে অবশ্যপালনীয় নয় এই রূপ একটি বিষয়কে ইসলামের অপরিহার্য বিষয় হিসেবে তুলে ধরে প্রকৃতপক্ষে ইসলামকে একটি অগ্রহণযোগ্য ধর্ম এবং মুসলিমদেরকে একটি কট্টর বা চরমপন্থি জাতি হিসেবে অমুসলিম ও তথাকথিত প্রগতিবাদীদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। কিছুদিন আগে নেকাবের জন্য এক তরুণী বৃটেনের আদালতে মামলা করে হেরে যান এবং পড়াশুনা বন্ধ করে দেন। এই মামলা করে অমুসলিমদের তিনি ইসলাম সম্পর্কে কি মেসেজ দিয়েছেন? অথচ ইসলামকে বলা হয় স্বভাব ধর্ম, সহজ ধর্ম। মানুষই একে কঠিন করে ফেলে। কোন কট্টরতা ইসলামের গ্রহণযোগ্যতাকে শুধু প্রশ্নবিদ্ধই করেনা, মুসলিমদের জীবন আচরণকেও কঠিন করে তোলে।
অপরপক্ষে, মুখমণ্ডল নারীর সৌন্দর্যের কেন্দ্রবিন্দু হলেও এটি আল্লাহ প্রদত্ত এবং সাজসজ্জা না করা হলে এখানে সংশ্লিষ্ট নারীকে সৌন্দর্য্য প্রকাশের জন্য কতটুকু দায়ী করা যায়? এজন্য তো পুরুষদের প্রতি পর্দার হুকুম রয়েছে। যেমন-
قُل لِّلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। (২৪:৩০)
এখানে পুরুষদের দায়িত্ব এই যে, কোন নারী কর্মস্থলে বা অন্য কোন কারণে ঘরের বাইরে এলে তার দিকে কামভাবে তাকিয়ে না থাকা। এ সম্পর্কে হাদিস হল- নবী (সাঃ) হযরত আলীকে (রাঃ) বলেনঃ এক নজরের পর দ্বিতীয় নজর দিয়ো না। প্রথম নজর তো ক্ষমাপ্রাপ্ত কিন্তু দ্বিতীয় নজরের ক্ষমা নেই। হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ বাজালী জিজ্ঞেস করলেন, হঠাৎ চোখ পড়ে গেলে কি করবো? নবীজি বললেন, চোখ ফিরিয়ে নাও অথবা নামিয়ে নাও। বিদায় হজ্জের সময় নবী (সাঃ)-র চাচাত ভাই ফযল ইবনে আব্বাস ছিলেন একজন উঠতি তরুণ। মাশ্আরে হারাম থেকে ফেরার পথে নবীজি (সাঃ)-র সাথে তাঁর উটের পিঠে বসেছিলেন। পথে মেয়েরা যাচ্ছিল। ফযল তাদেরকে দেখতে লাগলেন। নবীজি তার মুখের ওপর হাত রাখলেন এবং তাকে অন্যদিকে ফিরিয়ে দিলেন। খাস্'আম গোত্রের একজন মহিলা পথে রসূলুল্লাহক (সাঃ) থামিয়ে দিয়ে হজ্জ সম্পর্কে একটি বিধান জিজ্ঞেস করছিলেন। ফযল তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে নবীজি তার মুখ ধরে অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলেন।
যেসব অবস্থায় কোন স্ত্রীলোককে দেখার কোন যথার্থ প্রয়োজন থাকে কেবলমাত্র সেগুলোই দৃষ্টি সংযত করার হুকুমের বাইরে আছে। যেমন নবীজি (সাঃ) বলেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোন মেয়েকে বিয়ে করার ইচ্ছা করে তখন যতদূর সম্ভব তাকে দেখে নিয়ে এ মর্মে নিশ্চিন্ত হওয়া উচিত যে, মেয়েটির মধ্যে এমন কোন গুন আছে যা তাকে বিয়ে করার প্রতি আকৃষ্ট করে।
এর পরও যদি মনে হয় যে মুখ না ঢাকলে পর্দা হবে না, তাহলে ঐ সমস্ত মা বোনদের উচিৎ রাস্তাঘাটে অযথাই জনসাধারণ বা আইনশৃঙ্খলা বিভাগকে বিব্রত বা হেনস্তা না করে ঘরের বাইরে বের না হওয়া। এটাই তাদের জন্য অধিক সম্মানজনক। নিজের ইমানের জজবাকে গোপন রাখাই শ্রেয়, অন্যের সামনে অগ্রহণযোগ্যভাবে প্রকাশ করতে গিয়ে ইসলাম ও মুসলিমকে খাট করা উচিৎ নয়। যেমন আল্লাহপাক বলেনঃ
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاءِ ۚ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَّعْرُوفًا [٣٣:٣٢] وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَىٰ ۖ وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ ۚ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا [٣٣:٣٣]
হে নবী পত্নীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও; যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না যার ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে-মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আনুগত্য করবে। হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে। (৩১:৩২-৩৩)
এটি হচ্ছে সর্বোচ্চ পর্যায়ের পর্দা। এই আয়াতের ব্যাপারে হযরত ইকরামা (রাঃ) ও হযরত ইবনে আব্বাস চ্যালেঞ্জ দিয়েই বলেছেনঃ এই আয়াতটি রসুল (সাঃ)-এর স্ত্রীদের জন্যই বিশেষভাবে অবতীর্ন হয়েছে। এই আয়াত নবীপত্নীদের জন্য নাযিল হলেও মুসলিম নারীদের জন্য অনুসরণিয়। কারণ পরহেজগারি অর্জনের ব্যাপারে মুসলিমরা হুজুর (সাঃ) ও তার পত্নীদেরকে অনুসরণ করবে। রসুল (সাঃ) বলেনঃ “নারী পর্দাবৃত থাকার জিনিস। যখন সে বের হয় শয়তান তার প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখে এবং তখনই সে আল্লাহর রহমতের নিকটতর হয় যখন সে নিজের গৃহে অবস্থান করে।” তবে আয়াতের অর্থদৃষ্টে এই রূপ আদেশ নবীপত্নীদের জন্য অবশ্যপালনীয় হলেও অন্যদের ক্ষেত্রে তা মনে হয় না। কারণ নবীপত্নীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধান অন্য নারীদের থেকে কিছুটা আলাদা ছিল। যেমনঃ
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ مَن يَأْتِ مِنكُنَّ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ يُضَاعَفْ لَهَا الْعَذَابُ ضِعْفَيْنِ ۚ وَكَانَ ذَٰلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا [٣٣:٣٠] وَمَن يَقْنُتْ مِنكُنَّ لِلَّهِ وَرَسُولِهِ وَتَعْمَلْ صَالِحًا نُّؤْتِهَا أَجْرَهَا مَرَّتَيْنِ وَأَعْتَدْنَا لَهَا رِزْقًا كَرِيمًا [٣٣:٣١]
হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ। তোমাদের মধ্যে যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত হবে এবং সৎকর্ম করবে, আমি তাকে দুবার পুরস্কার দেব এবং তার জন্য আমি সম্মান জনক রিযিক প্রস্তুত রেখেছি। (৩১:৩০-৩১)
উপরের আয়াতগুলো নারীর অযথা ঘরের বাইরে আসা, মঞ্চে বা রেডিও-টেলিভিশনে নাচগান করা, রঙ্গরস করা, সিনেমা-নাটকে অভিনয় করে পুরুষের কামভাবকে উত্তেজিত করা, কিংবা ক্লাবে, সামাজিক উৎসবে ও নারী-পুরুষের মিশ্র অনুষ্ঠানে চমকপ্রদ সাজ-সজ্জা করে এসে পুরুষদের সাথে অবাধে মিলেমিশে কথাবার্তা ও ঠাট্টা-তামাসা করার অনুমতি দেয় না। কিন্তু প্রয়োজনীয় পোশাক ও শরিয়ত সম্মত আচার ব্যবহার বজায় রেখে নারীদের কর্মস্থলে ও প্রয়োজন অনুযায়ী ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করেনা। মুখমণ্ডল দেখলেই যে পুরুষের কামোত্তেজনা সৃষ্টি হয়, প্রকৃতপক্ষে পরনারীর উপস্থিতিই তার ভিতরে কামোত্তেজনা সৃষ্টি করে। এটা সংশ্লিষ্ট নারীর দোষ নয়। আর নারীকে বাধ্যতামূলক গৃহবন্দী করলে যেভাবে একটি চরম পুরুষ শাসিত সমাজের জন্ম হয় তা আমরা দেখি বর্তমান সৌদি আরবে যেখানে নারীরা হয় প্রতিপদে নির্যাতিত। এই চরম পুরুষ শাসিত সমাজে কর্মরত বাংলাদেশী নারী গৃহকর্মীদের মুখে যে সমস্ত কাহিনী বেড়িয়ে আসে তাতে বড়ই আফসোস হয় যেন মনে হয় পর্দার কোন দায়িত্বই যেন পুরুষদের নেই। এখানে নারীরা ঘরের বাইরে যথেষ্ট পর্দা করে থাকলেও অবৈধ যৌনাচার বা যৌন নির্যাতন থেমে নেই। নারী গৃহকর্মীদের বেশিরভাগই বাড়ির পুরুষ সদস্যদের দ্বারা নির্যাতিত হয়। গৃহকত্রী অবগত থাকলেও তিনি যেন অসহায়। এ যেন পর্দার সমস্ত দায় দায়িত্ব নারীর উপর চাপিয়ে পুরুষরা পুরুষত্ব প্রমানের চিন্তায় বিভোর। আমরা যেন ইসলাম ও মুসলিমের ঐ সমালোচনাকেই প্রমাণ করতে সাহায্য করছি যেখানে সমালোচকরা বলে, ইসলামে গৃহ হচ্ছে নারীদের জন্য জেলখানা আর পুরুষের জন্য পতিতালয়। আল্লাহ মাফ করুন।
প্রকৃতপক্ষে, পর্দা শুধুমাত্র পোশাক পরিচ্ছদের বিষয় নয়। এটি পোশাক, সাজসজ্জা, আচরণ ও কথা বার্তার সমন্বয়ে এক সামগ্রিক বিধান, যার মাধ্যমে নারী-পুরুষের অবৈধ সম্পর্কের সুযোগ সৃষ্টি না হয়, এবং যেখানে নারী পুরুষ উভয়েরই দায়িত্ব রয়েছে । নবীজি (সাঃ) বলেনঃ মানুষ তার সমগ্র ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে যিনা করে। দেখা হচ্ছে চোখের যিনা, ফুসলানো কন্ঠের যিনা, তৃপ্তির সাথে কথা শোনা কানের যিনা, হাত লাগানো ও অবৈধ উদ্দেশ্য নিয়া চলা হাত ও পায়ের যিনা। ব্যভিচারের এ যাবতীয় ভূমিকা যখন পুরোপুরি পালিত হয় তখন লজ্জাস্থানগুলো তাকে পূর্ণতা দান করে অথবা পূর্ণতা দান থেকে বিরত থাকে। বস্তুতপক্ষে, আল্লাহ নারীদেরকে যে কার্যধারা থেকে বিরত রাখতে চান তা হচ্ছে, অবৈধ যৌনাচার প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে তাদের নিজেদের সৌন্দর্যের প্রদর্শনী এমনভাবে না করা যার ফলে পরপুরুষের কামভাব উত্তেজিত হয়। আর কোন উদ্দেশ্য সাধনেই চরমপন্থা অনুসরণ কাম্য হতে পারেনা। কেননা আল্লাহ মধ্যপন্থা অবলম্বনকারীকে ভালবাসেন।
সোনার বাংলাদেশ ব্লগে ঐ সময় পোষ্টটি সবচেয়ে বেশী পঠিত পোষ্টে কয়েকদিন ধরে স্থান পায়। সে সময় ব্লগাররা যে সমস্ত মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্য করেছেন তা নিম্নরূপঃ
উজরা সানজারাহ্ লিখেছেন : ওপরের নীল হিজাব পরিহিত কে মার্জিত মনে হচ্ছে। আসলে নেকাবের বিপক্ষে আমি।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : মার্জিত পোষাকের সাথে মার্জিত আচরনের নামই পর্দা।
নোমান সাইফুল্লাহ লিখেছেন : আল্লাহ যতটুকু সীমা উল্লেখ করে দিয়েছেন, এর বাইরে ঢাকা আমাদের জন্য ফরজ নয়।
উজরা সানজারাহ্ লিখেছেন : একমত!
দুরন্ত ঈগল লিখেছেন : আমার এক বান্ধবীর কাহিনী মনে পড়ে যাচ্ছে যাকে পরীক্ষার ভাইবা বোর্ডে কথা শুনতে অসুবিধা হওয়ার জন্য স্যার নেকাব খুলতে বলেছিলেন,আর এজন্য তার সেকি রাগ! অথচ তার কিছুদিন পরেই সেই মেয়ে ঠোটে লিপষ্টিক মেখে ,মাথার স্কার্ফ মহাশূন্যে পাঠিয়ে তার বয়ফ্রেণ্ডের সাথে ডেটিং এ যায়। নেকাব ছাড়া পর্দা করে এমন কোন মেয়েকে কোন পুরুষ অসম্মান করেছে তার উদাহরণ পাওয়া সত্যি বিরল।তাই নেকাব পড়া বা না পড়া ঐচ্ছিক বিষয়ই বলে মনে করি তবে পর্দার বাকি ফরজটুকু সকল মুসলিম মহিলারই পালন করা উচিত।
পবিত্র লিখেছেন : আপনি মাওলানা মওদূদী লিখিত "পর্দা" বইটি পড়ুন। ধন্যবাদ।
ইবনে হাসেম লিখেছেন : এ বইটি কি ইংরেজীতে পাওয়া যাবে ওয়েবসাইটে? অনুগ্রহ করে লিংক দিলে উপকৃত হতাম।
হাবীবুল্লাহ আল কাছেম লিখেছেন : জাজাকাল্লাহু খাইরান। আপনি অনেক সুন্দর তথ্যবহুল লেখা লিখেছেন। ধন্যবাদ আপানকে।
রায়হান আর আর লিখেছেন : পৃথিবীতে মেয়েরা স্পেস সার্টেলে চেপে মহাশুন্যে চলে যাছ্ছে, আর আপনে আছেন মিয়া মেয়েদের মূখ ঢাকাঢাকির নিয়ে। মূর্খ বর্বর !
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : আছেন তো মিয়া আপনেরা। আমি তো আপনাদের ভুল ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছি।
হাবীবুল্লাহ আল কাছেম লিখেছেন : মেয়েদের মুখ ডাকাকে যদি আপনি বর্বরতা মনে করেন তাহলে ইভটিজারদের খোরাক হিসেবে খোলা ভাবে ছেড়ে দিন আপনার ফ্যামিলী মেম্বারদের নারী সদস্যদের কে। দেখুন তারা কতটা নিরাপদ বিপর্দাভাবে।
shatkora লিখেছেন : এখানে একটি বিষয় না বললেই নয়। যে নেকাব পরিধান করে, তার কাছে বিষয়টি ততটা সিরিয়াস নয় কারন সে সবই দেখতে পায়। কিন্তু অন্যদের কাছে বিষয়টি বেশ সিরিয়াস কারন মুখ না দেখলে অনেক সময়ে অনেকে বিরক্ত হয়।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : বিরক্ত বা বিব্রত হ্য়।
Eftekhar Amin লিখেছেন : নেকাব এ আপনার কি সমস্যা। কেউ যদি করতে চায় তাহলে বাধা দেওয়াই বা কতটুকু গ্রহনযোগ্য। এটি যেমন অত্যাবশ্যকীয় না। তেমনি কেউ যদি করে তাতে বাধা প্রদান ও গ্রহনযোগ্য না। নেকাব কে আইন করে নিষিদ্ধ করার পেছনে কারনটাই বা কি। যদি মুখ দেখার প্রয়োজন হয় বুঝিয়ে বললেই তো মুখ দেখা যায় তাই বলে এটাকে আইন করে নিষিদ্ধ করা ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী। আর এতো কিছু থাকতে মহিলাদের নেকাবের পেছনে ই বা ছুটার কি দরকার। নেকাব পরে কি কেউ চুরি বা ডাকাতি করছে। নাকি বোমা হামলা করছে যে এটার দিকে চোখ গিয়ে পড়লো। কোন কিছু হলে হাদীস কুরআন দিয়ে আমরা নিজের মতো করে সবকিছু ব্যাখ্যা দেয়া শুরু করি আর ভাবি নিজে যা বুঝেছি তাই ঠিক। এটাও শেষ যামানার একটা আলামত। সবাই আলেম আবার কেউ ই আলেম না। সুযোগ পেলে আমরা আলেম হয়ে যাই।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনার মন্তব্য ও আমার লেখায়ই রয়েছে। তবে সংশয় দেখা দিলেই কুরআন ও হাদীস অনুসরন করতে বলা হয়েছে।
তারাচাঁদ লিখেছেন : আল্লাহ বলেছেন মেয়েদের সৌন্দর্যকে ঢেকে রাখতে । কোন মেয়ে যদি অনিন্দ্য সুন্দরী হয়, তাহলে তার চেহারা ঢেকে রাখতে হবে । কারণ, তার চেহারাটাই অনিন্দ্য সৌন্দর্যের মূল কেন্দ্র ।
আর আমাদের দেশের বর্তমান মহিলা মন্ত্র্রীদের কারো চাহারা ঢাকার প্রয়োজন নেই । কারণ তাদের বয়স বেশি, দ্বিতীয়তঃ মহিলা মন্ত্রীদের কেউ অনিন্দসুন্দরী নন ।
হজরত আয়িশা (রাদি.) কিভাবে পর্দা করতেন, তা আপনি ইগনোর করে গেছেন । যে বিষয় আল্লাহ নিষেধ করেন নাই, সেটাকে আপনি নিষেধ করতে যাবেন না ।
বুলেন লিখেছেন : প্রথমেই, আমি আপনার সাথে একমত। নেকাবটা পর্দার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। তাছাড়া অনেক মহিলাই দেশে বিদেশে আইন প্রয়োগকারীসংস্থার সামনেও নেকাব খুলতে রাজি হয় না। আমার মনে হয় এইটা আসলেই বাড়াবাড়ি। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাজনিত ক্ষেত্রে নেকাব ব্যবহার নিয়ে এইরকম বাড়াবাড়ি করা উচিত না, হোক তা দেশে অথবা বিদেশে।
দ্বিতীয়ত, এই বিষয়টা বাদে অন্য কোনো ক্ষেত্রে যদি কেউ নেকাব ব্যবহার করতে চায়, শরীয়তের কোন বিধানবলে আপনি, আমি বা রাষ্ট্র নারীর সেই অধিকার ক্ষুন্ন করতে পারি? এই ইউরোপে এসেই দেখলাম স্কুলে মেয়েরা হাফ-পেন্ট পরে আসে। প্রতিষ্ঠান এইক্ষেত্রে এই ছাত্রীদের কোনো বাধা দেয় না। তাহলে কেউ যদি নেকাব ব্যবহার করে ক্লাসে বসে, কোন যুক্তিতে প্রতিষ্ঠান তা নিষিদ্ধ করবে? এইটা আসলেই মানবাধিকার লঙ্ঘন।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : আপনি যখন মুখ ঢেকে এসে আমার সাথে কথা বলবেন বা লেনদেন করবেন, তখন আপনিতো ঠিকই আমাকে চিনলেন, কিন্তু আপনিতো আপনাকে চিনতে দিলেন না, পরিচয় গোপন রাখলেন। এটা কি আমার মানবাধিকার লংঘন নয়?
তারাচাঁদ লিখেছেন : এক নারীর চেহারা দেখতে না পারা 'মানবাধিকারের লংঘন'----এমন কথা মানবাধিকারের কোন গ্রন্থে লেখা আছে কী ? লেখা থাকলে দেখতে ইচ্ছে করছে । একজন মুসলিম তার 'জীবন বিধান' বিরোধী কিছু মানতে বাধ্য নন ।
বুলেন লিখেছেন : চেহারা চিনে আপনি কি করবেন? সরকারী আইনসংস্থার লোকজন হইলে আপনার চেনা দরকার, নাইলে চেনার কি দরকার? দুনিয়াজুড়েতো কম নারী চিনলেন না, এখন যারা নেকাব পইরা আছে, তাদের নেকাব খুইলা চেনার আর দরকার? তারা আপনার মত লোকরে চেহারা দেখাইতে চাইলে আপনি বলা লাগবে না, আগে থেইকাই দেখবেন নেকাব খোলা। আর না চাইলে জোর করে কেন বলবেন, "আপা, একটু নেকাবটা খুলেন! একটু আপনারে চিনে লই!"? আপনার কথাটা এইরকমই মনে হইছে। মাইন্ড খাইয়েন না।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : "আপা, একটু নেকাবটা খুলেন! একটু আপনারে চিনে লই!" ... অনুরোধটাই বিব্রতকর।
"দুনিয়াজুড়েতো কম নারী চিনলেন না, ......" একথাটাও সত্য। কারন ডাক্তারি পেশায় এসে কম নারী দেখলাম না। বলতে পারেন সুযোগের অভাবে নয়, বাস্তবিকই সুযোগ পাওয়া সত্বেও সৎ। এটা আমার একটি প্রশান্তি। নেকাব খুলে চেহারা দেখিয়ে আপনি মনে হয় এ প্রশান্তি নষ্ট করতে পারবেন না। আল্লাহ মাফ করুন।
সুমাইয়া জামান লিখেছেন : আপনার পোষ্টে মন্তব্য করার ইচ্ছা ছিলনা, কারণ এ সম্পর্কে মতামত দেবার মত অত বিশেষ যোগ্যতা আমার নেই। কিন্তু হঠাৎ একটি ঘটনা মনে পরে গেল, তাই মন্তব্যটি লিখছি। আশা করি আপনি বিষয়টি সহজভাবে নেবেন। আমি একটি বইয়ে পড়েছিলাম হযরত আয়শা (রাঃ) নাকি, রাসুল ( সঃ) এর কবরের পাশে, হযরত উমর (রাঃ) কে কবর দেবার পর থেকে যথাযথ পর্দা অর্থাৎ মুখ ঢেকে কবর জিয়ারত করতেন। তাঁকে যখন জিজ্ঞাসা করা হল, এরাতো সবাই মৃত! তারপরও আপনার এতটা কঠিন ভাবে পর্দা করার দরকার কি? আর এতদিন তো আপনি এতটা কঠোর পর্দা করতেন না? হযরত আয়শা (রাঃ) উত্তরে বলেছিলেন এতদিন আমি আমার স্বামী আর বাবার কাছে আসতাম, তাই এতটা কঠোর পর্দা করার দরকার হত না। কিন্তু আজ যখন একজন না মেহরাম লোক তাদের পাশে আছেন, তাই আমি নিজেকে খোলামেলা রেখে তাদের সামনে আসা পছন্দ করি না। তিনিতো তার নাতী হজরত ইমাম হাসান ও হোসাইন (রাঃ) এর সামনেও কখনো আসেন নি। তাই আমার মনে হয়, আমাদের আদর্শ তো তাঁরাই। তাই তাঁদের অনুসরণ করাই আমাদের কর্তব্য।অবশ্য আল-কোরআন যেটিকে স্পষ্টভাবে আদেশ করেনি,সেটিকে বাধ্য বলার কোন অধিকারই আমার নেই। তাই আমি যেটি মনে করি,কেউ যদি স্বেচ্ছায় নেকাব দিতে চায়,তাকে তা করতে দেওয়া উচিত। অন্ততপক্ষে নেকাব দিলে কিছু নোংরা দৃষ্টির হাত থেকে নিজের চেহারাটাকে পবিত্র রাখা যায়। তবে অবশ্যই এখানে স্থান, কাল,পাত্র,এবং ব্যক্তির সুবিধা- অসুবিধা বিবেচনা করা উচিত। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আসলে শেখার কোন শেষ নাই। আপনার এই মন্তব্যটির উত্তর আমার পোষ্টে রয়েছে। নবীপত্নীগন মুসলিম মহিলাদের জন্য অনুসরনীয়। পর্দার ব্যাপারে নারীদের সর্বোত্তম পরহেজগারি হল অতীব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়া, যা নবীপত্নীদের জন্য ফরজ ছিল, অন্যদের জন্য নয়। আর পরহেজগারি কখনও প্রদর্শনের বিষয় নয়। তবে আপনি যখন বাইরে বের হবেন তখন অন্যের অধিকারের প্রতিও নজর রাখা উচিৎ। আপনার ঢাকামুখ যেন অন্যের বা আইন শৃঙখলার জন্য বিব্রতকর বা চ্যালেণ্জিং না হয়।
হাবীবুল্লাহ আল কাছেম লিখেছেন : আপনি সুন্দর লিখেছেন। তবে (তিনিতো তার নাতী হজরত ইমাম হাসান ও হোসাইন (রাঃ) এর সামনেও কখনো আসেন নি) - এ কথাটির দলিল পেতে পারি?
সুমাইয়া জামান লিখেছেন : হাবীবুল্লাহ আল কাছেম, যতদুর মনে পরে, মহিলা সাহাবী,নামক বইয়ে পড়েছিলাম, লেখকের নাম মনে নেই। আর বইটিও এখন আমার কাছে নেই, আমি সম্ভব হলে কয়েকদিনের মধ্যেই উপযুক্ত রেফারেন্স জানানোর চেষ্টা করব।( ইনশাআল্লাহ)
সুমাইয়া জামান লিখেছেন : হাবীবুল্লাহ আল কাছেম, আমি দুঃখিত ,আমি বোধ হয় বইটি হারিয়ে ফেলেছি। আসলে নারী-অধিকার লিখাটি নিয়ে একটু ব্যস্ত আছি, তাই ভালভাবে খুঁজতেও পারছিনা। আমি সম্ভব হলে আপনাকে পরে জানিয়ে দেব। আর এ ব্যাপারে আপনার কাছে যদি স্পষ্ট দলিল থাকে,তাহলে আপনি সেটি প্রকাশ করতে পারেন। আমার ভুল হলে ইনশাআল্লাহ আমি সেটি স্বীকার করে নেব। আনেক ধন্যবাদ।
সত্য কথা লিখেছেন : আপনার ঢাকামুখ যেন অন্যের বা আইন শৃঙখলার জন্য বিব্রতকর বা চ্যালেণ্জিং না হয়।
অর্থহীন কথা।
আলমগীর নূর লিখেছেন : "যখন জ্ঞানী লোকদের মধ্যে মতভেদ থাকে তখন আমাদের মত সাধারণ মানুষের উচিৎ বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগানো। " - তাহলে জ্ঞানীদের সিদ্ধান্ত কি বিবেক বুদ্ধি বর্জিত?
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : বিবেক বুদ্ধি বর্জিত লোকেরা কখনও জ্ঞানী হয়না। কথাটি হল কোন ভুল বিষয়ে জ্ঞানী লোকেরা একমত হন না। আর জ্ঞানী লোকেরা যখন একমত হন না, তখন নিজের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগানো উচিৎ এই উদ্দেশ্যে যে ঐ জ্ঞানী লোকদের কোন মতকে আপনি গ্রহণ করবেন। পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
মুক্তিকন্যা সুমাইয়া লিখেছেন : অনেক কিছু শিখলাম। ভাল লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ। তবে জীবনেও এতো বড় পোষ্ট দিও না। পড়তে পড়তে জান শেষ!
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ। তোমার এই gif ছবিটি কোথায় পেলে? একবার ভেবেছিলাম পর্দার ছবিতে তোমার আগের ছবিটি দিয়ে দিব। কিন্তু ভাল করে দেখলাম তাতে তোমার চুল বের হয়ে আছে। ভাগ্যিস দিইনাই। আর সবকিছু ক্লিয়ার করতে গিয়েই পোস্টটি এত বড় হয়ে গেছে। নাহলে যে বিতর্ক থাকবে, আর ব্লগারদের বকা খেতে খেতে জাহান যাবে।
সাকিন মাগরেব লিখেছেন : মাফ করবেন, আপনার মাথার রুমালকে ভাল ভাবে বেধে রাখুন। মাথার চুল যদি দেখা যায় তাহলে সেটি আর হিযাব হয় না হয়ে যায় মুসলিম ফ্যাশন।
সংগ্রামী মানুষ লিখেছেন : "মামনি", আল্লাহ পাক কুরআন শরীফ-এর সূরা নূর, সূরা আহযাব ও সূরা নিছা এ তিনটি সূরায় সৌন্দর্য পর-পুরুষকে না দেখানো এবং সম্পূর্ণ শরীর ও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : @সংগ্রামী মানুষঃ মুখ ঢাকার বিষয়টিই এ লেখার মুল আলোচ্য। আপনি যে আয়াতগুলোর কথা বলছেন সেই আয়াতগুলোই আলোচনা করা হয়েছে। মুখ ঢাকা যদি ফরজ হয় তাহলে "তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে" - এই আয়াতে 'যা সাধারণত প্রকাশমান' বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
পরহেজগারি তো প্রদর্শনের বিষয় নয়। এ আলোচনায় যদি কম্প্রমাইজকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়, তাহলে মুসলিম মহিলাদের ঘরের বাইরে আসা বন্ধ হওয়া উচিৎ। কারণ অন্য আয়াতে নবীপত্নীদের প্রতি নির্দেশ হল "তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে, মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।" আর নবীপত্নীগন যেহেতু মুসলিম মহিলাদের জন্য অনুসরনীয়, কাজেই তাদের ঘরের বাইরে আসা কি কম্প্রমাইজ নয়?
বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনা করাই ভাল।
মনসুর লিখেছেন : মাশাআল্লাহ, সুন্দর লিখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, যাযাকাল্লহু খাইরান, ধন্যবাদ।
আসলে পর্দা মানার অবস্থা সংশ্লিস্ট ব্যক্তির শিক্ষা, ঈমানের মাত্রা, লজ্জার বোধ, মনের প্রকৃত ইচ্ছা, শারীরিক অবস্থা, আর্থ-সামাজিক পরিবেশের চাপ ইত্যাদি অনেকগুলি বিষয়ের সম্মিলিত ফলাফল। বাহ্যত একজন মুসলিম ব্যক্তির (পুরুষ/মহিলা) পর্দার মানার অবস্থা দেখে তার ঈমানের ধরন সর্ম্পকে ধারনা করা যায়। সেই জন্য খবিস ইবলিসের অনুসারী অমুসলমানরা ইসলামের পর্দা প্রথা নিয়ে সবসময়ই আক্রমনাত্ত্বক বা কু-সমালোচনামূখর।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে নেক হেদায়েত দান করুন - আমীন।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : আমীন। আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
মাসউদ লিখেছেন : নেকাব বাধ্যতামূলক মনে করিনা তবে কেউ করতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া অমানবিক ও ব্যক্তিস্বার্থে হস্তক্ষেপের শামিল!! তবে অবশ্যই এখানে স্থান, কাল, পাত্র,এ বং ব্যক্তির সুবিধা- অসুবিধা বিবেচনা করা যেতে পারে! মানে কোথাও নেকাব খোলার প্রয়োজন হলে খোলা দোষের নয়!!
ইবনে হাসেম লিখেছেন : শতভাগ সহমত।
সংগ্রামী মানুষ লিখেছেন : আল্লাহ পাক কুরআন শরীফ-এর সূরা নূর, সূরা আহযাব ও সূরা নিছা এ তিনটি সূরায় সৌন্দর্য পর-পুরুষকে না দেখানো এবং সম্পূর্ণ শরীর ও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : @সংগ্রামী মানুষঃ মুখ ঢাকার বিষয়টিই এ লেখার মুল আলোচ্য। আপনি যে আয়াতগুলোর কথা বলছেন সেই আয়াতগুলোই আলোচনা করা হয়েছে। মুখ ঢাকা যদি ফরজ হয় তাহলে "তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে" - এই আয়াতে 'যা সাধারণত প্রকাশমান' বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
পরহেজগারি তো প্রদর্শনের বিষয় নয়। এ আলোচনায় যদি কম্প্রমাইজকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়, তাহলে মুসলিম মহিলাদের ঘরের বাইরে আসা বন্ধ হওয়া উচিৎ। কারণ অন্য আয়াতে নবীপত্নীদের প্রতি নির্দেশ হল "তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে, মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।" আর নবীপত্নীগন যেহেতু মুসলিম মহিলাদের জন্য অনুসরনীয়, কাজেই তাদের ঘরের বাইরে আসা কি কম্প্রমাইজ নয়?
বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনা করাই ভাল।
ইবনে হাসেম লিখেছেন : আমার আরো একটি অবজার্ভেশন আছে। আজকাল যে খাটো কামিজের ফ্যাশন শুরু হয়েছে, তাতে, আগে মহিলারা ঘরে বাইরে যেটুকু পর্দা করতে পারতো, সেটুকু পর্দা রক্ষা তাদের হচ্ছেনা। যারা হিজাব পরেন না, তারা যদি বাইরে যেতে শুধু মাথায় ওড়না টেনে দেন, তখন তা দেখতে এমন বিদঘুটে মনে হয়, যে গ্রাম্য প্রবাদটির কথা মনে পড়ে যায়, 'উপর দিয়ে ঘোমটা, আর নীচে দিয়ে ন্যাংটা। আবার পর্দানশীনরাও যেভাবে ঘরে এসব ছোট কামিজ পরা ধরেছেন, তাতে ঘরে তাদের চলাফেরা, নামাজ কালাম পাঠের সময়ও ফরজ পর্দা পালন হয়না বলেই মনে হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, ঢিলেঢালা লম্বা কামিজ না হলে কোন নারী যখন রুকু কিংবা সেজদাতে যায় তখন তার বর্তমান ফ্যাশনের কামিজ তার শরীরের সতর ঢাকায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়। শুধু তাই নয়, তিনি যখন দুহাত উপরে তুলে ঘরে ঝাড় পোচ বা অন্য কোন কাজে লিপ্ত হন তখনো তাঁর এই ফতুয়া সম কামিজ দ্বারা তাঁর সতর ঢাকা সম্পূর্ন ব্যর্থ হয়। এ ব্যাপারে পর্দানশীন বোনদের অগ্রনী ভূমিকা নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : বোরখা যদি এমন হয় যে তার ভিতর দিয়ে নারীর বুক ও নিতম্বসহ শরীরের গঠন প্রকাশ পায়, তাহলে এটি কোন পর্দা হল না। একটু বিশ্রী শোনা গেলেও আপনার অবজার্ভেশনের প্রেক্ষিতে কথাটি বলতে বাধ্য হলাম। এরূপ বোরখা ইদানিং হরহামেশাই চোখে পড়ছে। তবে রুকু সেজদারত নারীকে দেখা ঠিকতো নয়ই, পর্দার শর্ত পুরন করেনা এরূপ পোষাকে নারীর নামাজও দুরস্ত নয়।
সাকিন মাগরেব লিখেছেন : আপনাকে আল্লাহ আগে চোখে পর্দা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর নিজ ঘরে নারী সে কি পরবে না পরবে তার সাথে পর্দার কি সম্পর্ক?
ইবনে হাসেম লিখেছেন : সাকিন সাহেব, আপনার মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে, আপনি আপনার ঘরের জানানাদের ঘরে ন্যাংটা হয়ে ঘুরাফিরা করতেও কোন দোষ মনে করেন না। হউক না সে কাজের লোকদের সামনেও। আর চোখের পর্দা করা মানে এ নয় যে সর্বদা চোখ বন্ধ করে চলতে হবে, এবং বাই চান্স কিছু বেমক্কা নজরে এলেও তা শোধরানোর কোন পদক্ষেপ নেয়া যাবেনা। ধন্যবাদ
ইবনে হাসেম লিখেছেন : পাটিশান '৪৭, আপনার সাথে সম্পূর্ন সহমত। ধন্যবাদ
সাকিন মাগরেব লিখেছেন : ঘরে তো কেউ ন্যাংটা থাকেনা। তবে আপনার কথায় ধরে নিলাম ঘরের মেয়েরা ন্যাংটা! আর ঘরে ন্যাংটা থাকা নিষেধ এমন আইন আপনি কোথায় পেলেন জানাবেন কি? আর এক মুসলিম পরিবারে মেয়েরা লম্বা জুব্বা পরে থাকলেও ঘরে বয়স্ক বেগনা কাজের মানুষকে রাখতে সাফ নিষেধ। আপনি যদি আরব দেশে গিয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন অন্দর মহলে পুরুষের যাওয়া নিষেধ। আর সেখানে মেয়েরা স্বল্প পোষাকেও থাকে। ধন্যবাদ।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : পর্দা বিষয়টি হচ্ছে এক ব্যক্তির সাথে অপর ব্যক্তির বিষয়। অন্যের অজ্ঞাতে আপনি আপনার বাড়িতে একা একা কি অবস্থায় থাকলেন, সেটি পর্দার বিষয় নয়। তবে সতর ঢেকে রাখাই উত্তম এবং রসুল (সাঃ) এর সুন্নত বা নির্দেশ- “সাবধান, কখনো উলংগ থেকো না, কারণ তোমাদের সাথে এমন সত্তা থাকে যারা কখনো তোমাদের থেকে আলাদা হয় না, তোমরা যখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দাও অথবা স্ত্রীদের কাছে যাও সে সময় ছাড়া, কাজেই তাদের থেকে লজ্জা করো এবং তাদেরকে সম্মান করো।”
ক্লিওপেট্রা লিখেছেন : ফাক ফোকর দিয়ে দেখার কূ-অভ্যাস বেশ রপ্ত করেছেন। আপেক্ষা করেন ; আপনার বিকৃত রুচির নিঃস্কৃয় করার জন্য এ গুলো দরকার।
মাসউদ লিখেছেন : ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্য প্রকাশ করতে বোরকা নিঃসন্দেহে অন্তরায়!!
সাকী লিখেছেন : এই খড়্গ কেন নেকাবের বিরুদ্বে তা আমাদের বু্ঝা উচিৎ। ওরা ভালো করেই জানে যে নেকাব তুলে দিলে মূসলিম নারীদের ঈমানের ভেতর তাদের কামাতুর দৃষ্টির অন্ধকার সহজে ঢুকিয়ে দেয়া যাবে। নিচের হাদীসে বলা হয়েছেঃ আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বর্ণিত একটি হাদীস, নবী (সা) আল্লাহর উক্তি বর্ণনা করেছেনঃ ''দৃষ্টি হচ্ছে শয়তানের বিষাক্ত তীর গুলোর মধ্য থেকে একটি তীর, যে ব্যক্তি আমাকে ভয় করে তা ত্যাগ করবে আমি তার বদলে তাকে এমন ঈমান দান করবো যার মিষ্টি সে নিজের হৃদয়ে অনুভব করবে।'' (তাবারানী)
হাবীবুল্লাহ আল কাছেম লিখেছেন : সহমত।
মাসউদ লিখেছেন : দামী কথা!!
অনুরণন লিখেছেন : এই বিষয়ে আমার পড়া সবচেয়ে কম্প্রিহেনসিভ বই হচ্ছে আব্দুল হালিম আবু শুক্কাহর রচিত 'রাসুলের যুগে নারী স্বাধীনতা'। ৪ বা ৬ খন্ডের বই সম্ভবত। আমি ৩ টা খন্ড পড়েছি। জামায়াতের যে সব সিদ্ধান্ত আমার অপছন্দ তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এই বইটা মার্কেট থেকে সরিয়ে নেয়ার এবং সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত না করার সিদ্ধান্ত।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : বইটা কিভাবে সংগ্রহ করা যায়, পরামর্শ দিবেন কি?
সাকিন মাগরেব লিখেছেন : আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকাল নিজ দেশে আর বিদেশে এই পর্দা নিয়ে যা হচ্ছে তা খুব সুখকর নয়। কাল না পরশু খবরে দেখলাম যে, ফ্রান্সে তাদের আইন অমান্য করায় ২ নিকবি মহিলাকে গ্রেফতার করেছে। এই মহিলারা যদি এতই ইসলাম দরদী হয়ে থাকেন তাহলে উনারা ঐ দেশ ত্যাগ করলেই পারেন। কারণ অন্যের দেশে বাস করলে সে দেশের আইনকে মেনে চলতে হবে।
আসলে যে প্রথা হয়না কেন তা যাতে বাধ্যতা মূলক জোরে চাপিয়ে যেন না হয়। চাপিয়ে দেওয়া কিছুতে সমস্যার সমাধান হয় না। আমি এই বাংলাদেশ দেখেছি বাড়িতে বাবা ভাইয়ের ভয়ে মেয়ে বা বোন বোরখা নিকাব স্কুলে বা কাজে আসে তারপর একসময় সে সেই বোরখা খুলে বেগে ঢুকিয়ে ফেলে। এই ভাবে আমি দুবাই রিয়াদ এয়ার পোর্টে দেখেছি - দল বেধে মেয়েরা বোরখা নেকাব পরে বিমানের ভিতরে আসে। আসার পর তারা সেইটি খোলে ফেলে দিব্যি ইংরেজের মত পোশাক পরে বসে থাকে। তাহলে কি লাভ এই ভাবে জোর করে পর্দা পরানোর! এর চাইতে বাবা ভাই, স্বামী তাদেরকে মার্জিত পোশাক পরার ব্যবস্থা নিতে তাহলে তা বাইরে এসে খোলে ফেলার সুযোগ হতনা। তাছাড়া দ্বীনের বিষয়ে আল্লাহ কঠোরতা করতে নিষেধ করেছেন। (২২:৭৭-৭৮) আপনার এই পোস্টটি অন্যান্য জনপ্রিয় ব্লগে পোস্ট করতে পারলে ভাল হবে।
আবূসামীহা লিখেছেন : কে নিক্বাব পরবে বা খালি হিজাব পরবে এটা নির্ধারণ করে দেয়ার অধিকার ইসলাম কাউওকে দেয়নি। কোন বোন যদি শুধু মুখ এবং হাত খোলা রেখে পর্দা করে তাকে যেমন কেউ জোর করে মুখ ঢাকাতে পারেনা, ঠিক তেমনি যে বোন মুখ ঢাকতে চায় তাকে জোর করে মুখ খুলতে বাধ্য করার অধিকারও কারো থাকা উচিৎ নয়; অবশ্য পরিচিতি এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা করতে পারেন। আর এ ক্ষেত্রেও নারী কর্মকর্তা ব্যবহার করা কোন কঠিন কাজ নয়।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : একটি অনাবশ্যক বিষয় যদি কোন রাষ্ট্র নিরাপত্তার খাতিরে নিষিদ্ধ করে তাহলে কি তা অন্যায় বা বাড়াবাড়ি হবে? বরং সেক্ষেত্রে ফ্রান্স সহ বিভিন্ন দেশে মুসলিম মহিলারা যা করছে বা করেছে তাকেই তো বাড়াবাড়ি বলতে হয়। আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
সত্য কথা লিখেছেন : সহমত আবু সামীহা। আশ্চর্য ব্যপার পার্টিশন ৪৭ এর কাছে ফ্রান্সের মুসলিম মেয়েদের ভুমিকাকে বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। আর তাদের মুখ খুলতে বাধ্য করার বিষয়টাকে স্বাভাবিক মনে হয়েছে।
নেটপোকা লিখেছেন : আপনার লেখাটি পড়ে খুব ভাল লাগল। ইসলামে নিকাব বাধ্যতামূলক নয়, বরং এটি মুস্তাহাব বা উত্তম। বিধর্মী দেশ ফ্রান্স কেন নিকাব নিষিদ্ধ করল, এ নিয়ে গোটা মুসলিম বিশ্বে নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। অথচ মুসলিম দেশ মালয়েশিয়ায় আইন করে সরকারী অফিস-আদালতে নিকাব নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এ নিয়ে কাউকে কোন কথা বলতে শুনি না।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : একটি মুস্তাহাব বিষয় কোন রাষ্ট্র যদি তার নিরাপত্তার স্বার্থে নিষিদ্ধ করে তা কি অন্যায় হবে? আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
এম এন হাসান লিখেছেন : আমরা যেন ইসলাম ও মুসলিমের ঐ সমালোচনাকেই প্রমাণ করতে সাহায্য করছি যেখানে সমালোচকরা বলে, ইসলামে গৃহ হচ্ছে নারীদের জন্য জেলখানা আর পুরুষের জন্য পতিতালয়। আল্লাহ মাফ করুন। কি কঠিন কথা বললেন? অনেক দিন থেকে আপনার কমেন্টস দেখে আসছি, এই প্রথম মনে হয় পোষ্ট করলেন। খুবই ভাল লাগল একটি ব্যালান্স আলোচনা পেশ করার জন্য। ভাই, আমার পরিবারের সবাই নেকাব সহ পর্দা করে, তারপরেও আমি নেকাব পড়ার ক্ষেত্রে চাপাচাপি একদম পছন্দ করিনা। কেউ পড়লে ভাল,না পড়লে সেটাও ভাল। সিম্পল ইজ দ্যাট। মেয়েদের দেখলে আমরা পুরুষরা টেনশানে উত্তেজিত হয়ে উঠি, আর তাই তাদেরকে একেবারে ঢেকে চলতে হবে সব, এটাতো এক জনের বোঝা অন্যের উপর চাপানো মনে হয়। সময়োপযোগি আলোচনার জন্য মুবারকবাদ
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ। উক্ত কথাটি প্রখ্যাত বা কুখ্যাত প্রথাবিরোধী বাংলা লেখিকা তসলিমা নাসরিনের।
আলোক লিখেছেন : চমৎকার এই পোস্টটির জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
সংগ্রামী মানুষ লিখেছেন : এডভোকেট সাহেব, চমৎকার বলতে আপনি কি বুঝালেন ভাই ? আপনি মেহেরবানী করে যদি পাক কুরআন শরীফ-এর সূরা নূর, সূরা আহযাব ও সূরা নিছা এ তিনটি সূরা পড়তেন, এখানে সৌন্দর্য পর-পুরুষকে না দেখানো এবং সম্পূর্ণ শরীর ও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ্।
নঈম এর পিতা লিখেছেন : সন্ত্রাসী কাজে নেকাব ব্যবহার হতে পারে। আবার ছদ্মবেশেও সন্ত্রাস করা হয়। কোনটা বেশি সেটা স্ট্যাটিস্টিকাল ব্যাপার। নেকাব নিষিদ্ধ না করে সিকিউরিটি পারসোনের সামনে নেকাব খোলার বিষয় টা ভেবে দেখা যেতে পারে।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : শুধু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কথা কেন বলছেন। সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিও মাথায় রাখুন। আমি একটি জায়গায় প্রাকটিস করি। সেখানে ৯৯% মহিলা বোরখা পড়ে চলাফেরা করে। তাদের বেশির ভাগই নেকাব পড়ে। এই নেকাবের উদ্দেশ্য কিন্তু পরহেজগারি নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নিজেকে লুকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে। এসব আমার জানার কারণ- পেশার স্বার্থে তাদের অনেক ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয় আলোচনা হয়।
হাবিবুল্লাহ লিখেছেন : এক ব্যাক্তি চোরের ভয়ে ঘরের জানালা বন্ধ করলেন,ফাক ফোকর বন্ধ করলেন, কিন্তু ঘরের দরজাটা খুলা রখলেন তো লাভটা কি? তবে হ্যা প্রয়োজনের সময় নেকাব খুলতে পারে।
খান বংশের ছেলে লিখেছেন : ভাল লিখছেন। চমৎকার হয়েছে।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : সত্য বলে যা বুঝেছি, তাই লিখেছি। আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
ওয়াসিম লিখেছেন : আপনার আমার অনুধাবন থেকে সাহাবায়ে কেরাম, মুফাসসিরিনে কেরাম, আইম্মায়ে মুজতাহিদের অনুধাবনটা নিশ্চয় অধিক গ্রহণযোগ্য। সময় করতে পারলে বিস্তারিত আলোচনার ইচ্ছা আছে। ভাল থাকবেন।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : তবুও প্রশ্ন থেকেই যাবে। সাহাবায়ে কেরাম, মুফাসসিরিনে কেরাম, আইম্মায়ে মুজতাহিদের অনুধাবনকে অনুধাবন করার ক্ষমতাটাও আমাদের থাকতে হবে। আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
ওয়াসিম লিখেছেন : সেটা আমাদের বর্তমান সময়ের অনেক বড় বড় ওলামায়ে কেরামের আছে, যেমন তাফসিরে মাআরিফুল কুরানের রচয়িতা। আর আমার মন্তব্যর শেষ লাইনটা দেখার অনুরোধ রইল।
রেইন স্পট লিখেছেন : অনেক দিন পর একটি চমৎকার লেখা পড়লাম। এরকম যৌক্তিক ও মানসম্পন্ন লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ।
ভোরের পাখী লিখেছেন : পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
Sharmeen লিখেছেন : পোড়ে ভাল লেগেছে।
শিকদার দস্তগীর লিখেছেন : মেয়েদের মুখ ঢাকাঢাকি নিয়ে এখন সমাজে অনেকে অনেক কিছু করছেন। এর আড়ালে অনেক অপসংস্কৃতির জন্ম নিয়েছে। কিন্তু সেগুলো ব্যতিক্রম। মেয়েদের মুখ ঢাকাঢাকির বিষয়টা নিয়ে যারা একে পশ্চাদপদতা বলেন আমি মনে করি , তারা আসলেই মুর্খ। বর্তমানে অবশ্য ইসলামের নামে অনেক পন্ডিত বের হয়েছে। তারা নেকাব নিয়ে নানারকম কম্প্রোমাইজের কথা বলে একটা পক্ষের প্রশংসা কুড়িয়ে আধুনিক ইসলামী স্কলার দাবী করে বসেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলি, মেয়েদের আল্লাহ ঢেকে থাকতেই নির্দেশ দিয়েছেন। আর সেটাই সবচেয়ে আধুনিক, বিজ্ঞান সম্মত, মেয়েদের নিরাপত্তা, সম্মান সব কিছুই নিহিত সেইখানেই। মেয়েরা ঢেকে থাকলে সে যুদ্ধ করতে পারবে না, এটা কারা বলেন ? মেয়েরা ঢেকে থাকলে সে প্রকৌশলী হতে পারবেনা, বিজ্ঞানী হতে পারবে না, প্রফেসর হতে পারবেনা, ডাক্তার হতে পারবেনা, একথা কে প্রমাণ করতে পারবেন ? আমি তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলাম। যদি প্রমাণ করতে পারেন একটা মেয়ে নিজেকে ঢেকে রেখে সমাজের সবচেয়ে অগ্রগামী হতে পারবে না তাহলে আমি পুরুষ খাতা থেকে নাম কেটে দিব। আসলে মেয়েদের এই ব্যবস্থাকে যারা পশ্চাদপদতার কথা বলে এটা নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করেন, তারা সবাই সেই সম্মানিত নাসিরুদ্দিন সাহেবের মতই। সেই গল্পটা বলি। কবি সুফিয়া কামাল বোরকায় থেকেই প্রতিষ্ঠিত কবি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিলেন। বেগম পত্রিকা অফিসে রোজ তিনি বোরকা পরেই যেতেন। নাসিরুদ্দিন সাহেব তার পিতৃতুল্য। তিনি রোজ কবিকে উত্তক্ত করতেন, “তুমি না কবি, তুমি বোরকা থেকে বেরিয়ে এস, নাহলে তোমার কবিত্ব সৃষ্টি করবে কিভাবে ?” এ কথা তিনি প্রায় প্রতিদিনই তাকে বলতেন। কবি লজ্জা পেতেন। আবার ভাবতেন বাপের মত সম্মান করি, উনি যদি আমাকে এমন কথা বলে অনুপ্রাণীত করেন, সে আর খারাপ কি? উনি অনেকদিন তার এসব কথা শোনার পর একদিন বোরকা খুলে উনার চেয়ারে বসলেন। নাসিরুদ্দীন সাহেব আনন্দে আত্মহারা হয়ে বললেন, আহ ! কি চমতকার সুন্দর একটা মুখ তোমার! এমন যারে আল্লাহ বানিয়েছেন, সে কি এরকম জুব্বা পরে ঢেকে রাখার জন্য ? "পাঠক, কি বুঝলেন ? যে কবি বোরকায় থেকেই কবি হয়েছেন। বোরকা তার কবিত্ব আটকায়নাই। তাহলে নাসির সাহেব কেন তাকে বোরকা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নসিহত করতেন ? এটা হচ্ছে পুরুষের সেই আদিম চালাকি। ভদ্রতা, প্রগতিশীলতার ভান ভনিতা করে এরা তাদের চোখের আর মনের শান্তি খুজে বেড়াতেই এভাবে বোরকা ছাড়তে মেয়েদের উৎসাহিত করতেন। আগেকার রাজা বাদশারা পথ চলতে যে মেয়েকেই তাদের পছন্দ হত তাকেই ধরে নিয়ে যেত তাদের খাস কামরায় বাগান বাড়িতে। আর এখন এসব পুরুষরা প্রগতির নামে, মননশীলতার নামে, সাংস্কৃতিক বিকাশের নামে মেয়েদেরকে ব্যবসার পন্য বানিয়ে ফেলেছে, মেয়েদের অজান্তেই। মেয়েরা আগে নাচত বাইজী ঘরে। এখন নাচে বটতলায় সার্টিফিকেট নিয়ে। এ সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা এসব দুষ্ট পুরুষরাই করেছে। মেয়েরা জানতেই পারছে না কীভাবে সে তাকে বিলিয়ে দিচ্ছে বাণিজ্যিক বাজারে, পুরুষের কুটিল চালাকীর কাছে কীভাবে সে আত্মসমর্পন করছে। তাই আমি অধুনিক সব মেয়েকেই বলব, ভাবুুন তো যদি এমন হয় একদিন সকালে দেশের সব পুরুষ ঘর থেকে বেরিয়ে কোন মেয়েমানুষের মুখ আর দেখতে পেলনা। তাহলে কেমন হয় ? দেখবেন কুকুর যেমন পাগোল হয়ে যায় এসব পুরুষরা সেরকম পাগোল হয়ে যাবে। ভাবতে বলছি ।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : আপনি সম্ভবত এ লেখার মর্ম অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছেন, এটা অবশ্য আমারই ব্যর্থতা যে আপনাকে আমি আমার বক্তব্য বুঝাতে পারিনি। তবে আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ। আপনি হিজাব এবং নেকাব একত্রিত করে গুলিয়ে ফেলেছেন। আপনি ভাবছেন, "যদি এমন হয় একদিন সকালে দেশের সব পুরুষ ঘর থেকে বেরিয়ে কোন মেয়েমানুষের মুখ আর দেখতে পেলনা। তাহলে কেমন হয়?" তার চেয়ে বরং এটাই ভাবুন না, "যদি এমন হয় একদিন সকালে দেশের সব পুরুষ ঘর থেকে বেরিয়ে কোন মেয়েমানুষকে আর দেখতে পেলনা। তাহলে কেমন হয়?" এটাই তো সর্বোচ্চ পর্যায়ের পর্দা। লেখাটি আরেকবার মনোযোগ দিয়ে পড়ুন না। পরহেজগারি তো প্রদর্শনের কোন বিষয় নয়। কোরান হাদিসের বানী বুঝার জন্য স্কলার হওয়ার দরকার আছে কি? বাজারে অনেক নির্ভরযোগ্য বাংলা তাফসীর আছে। ও গুলো সাধারণ মুসলমানের জন্যই লিখিত নয় কি? আল্লাহ তায়ালা ইসলামকে এমন কোন ধর্ম হিসেবে পাঠান নাই যে ধর্মের বানী সাধারণ মানুষের বোধগম্যতার বাইরে। আর জনাব, উপরে যা লিখিত হয়েছে তার সবকিছুই রেফারেন্স সহকারে দেয়া হয়েছে, বইগুলো সংগ্রহ করে পড়তে পারেন।
শিকদার দস্তগীর লিখেছেন : পার্টিশন '৪৭, আপনাকেও ধন্যবাদ। আমি আপনার লেখা পড়েছি। আপনার সাথে আমি অধিকাংশ বিষয়ে সহমত। আসলে আমি বোধহয় বোঝাতে পারিনি আমি কি বোঝাতে চেয়েছিলাম। এটা হয়তো আমার ব্যর্থতা। আপনি যে সব রেফারেন্স দিয়েছেন আমি তার বিরোধী নই। তবে আমার এ লেখা মূলত আপনার সমগ্র লেখার বিপক্ষে নয়। অনেক মন্তব্যকারী মেয়েদের পর্দা নিয়ে অনেক কু মন্তব্য করে, পর্দা নিয়ে অনেক সময় সমাজের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে অনেক কম্প্রোমাইজ করা হয়ছে। অনেক রকম লেখনির মাধ্যমে রসুল (স) এর রেফারেন্স দিয়ে যে সমস্ত কারণে মেয়েদের মুখমন্ডল উন্মোচনের কথা বলা হয়েছে তার আগে পিছে না ভেবেই সে ব্যাখ্যার অনেক রকম অপব্যাখ্যা হয়েছে। আসলে অনেক অনুবাদ বাংলায় হয়েছে অনেক রকম লেখক তাদের মত করে লিখছেনে। আমার কথা হল পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে পর্দা করার বিধান যা সরাসরি আল্লাহ বলে দিয়েছেন, একেবারে বাবা , মা ভাই বোন থেকে শুরু করে আতমীয় স্বজন এবং অন্যান্য মানব সমাজে কীভাবে পর্দার বিধান মেনে চলতে নির্দেশ করা হয়েছে তা পালন করাই জরুরী। আমাদের উচিত সরাসরি কোরআন কি বলেছে সেখানে চলে যাওয়া। এখানে কম্প্রোমাইজের কোন সুযোগ নেই।মূলত এটা বুঝাতে যয়ে হয়তো লেখাগুলো এলোমলো হতেই পারে। আশা করি কবি সুফিয়া কামালকে নাসিরুদ্দিন সাহেব কেন বোরকা থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিলেন সেটা যদি মানুষ বুঝতে পারে তাহলেই দেখবেন পর্দা নিয়ে ক্ষেত্রবিশেষ কম্প্রোমাইজের নীতির কিভাবে অপব্যবহার হয়েছে। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : "আমাদের উচিত সরাসরি কোরআন কি বলেছে সেখানে চলে যাওয়া"------
আমিও আপনার একথার সাথে একমত এবং ইহাই রসুল (সাঃ)-এর বিদায় হজ্বের ভাষণের অনুসরণ--'আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি- আল কুরআন এবং আমার সুন্নাহ। যে একে মজবুত করে আঁকরে ধরে রাখবে সে কখনও বিপথগামী হবে না।' (ভাবার্থ) অনেক মতের মাঝে আমি রসুলের ঐ বানীর অনুসরণ করতে গিয়েই পর্দার এরূপ অর্থ খুঁজে পেয়েছি। মধ্যপন্থা অবলম্বনই শ্রেয়। যেমন রসুল বলেন, "নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বীন তার ওপর বিজয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং মধ্যপন্থার নিকটবর্তি থাক; আশান্বিত থাক এবং সকাল-সন্ধ্যা ও রাতের কিছু অংশে আল্লাহর সাহায্য চাও।" (বুখারিঃ৩৮) পর্দার ক্ষেত্রেও তাই। মধ্যপন্থার এই হাদিসের আলোকেই কুরআনকে বুঝার চেষ্টা করা উচিৎ। কোন সুন্দর উদ্দেশ্য সাধনে চরমপন্থা অবলম্বন কাম্য হতে পারেনা। অযথাই চরম পন্থা অবলম্বন করে দ্বীনকে কঠিন করে ফেলা উচিৎ নয়।
শিকদার দস্তগীর লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ। আমার লেখার উদ্দেশ্যের মধ্যে কি চরম পন্থা খুজে পেলেন ? আসলে মধ্যপন্থার সুযোগ নিয়ে নারিউদ্দিন সাহেবদের উদ্দেশ্য হাসিলের বিষয়টা যদি সমাজকে আপনারা না বোঝান, যত কথাই বলেন না কেন ফলাফল বয়ে আনবেনা। জামাতপন্থী ইসলামের ঠিকাদাররা এসব মধ্যপন্থী দোহাই পেড়ে ইসলামের অনেক সর্বনাশ করেছে। কোথায় কোন কোন বিষয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে আর কোথায় বলা হয়নি এটা বোঝা দরকার। সরাসরি আল্লাহ যা বিধান দিয়েছেন সেখানে কম্প্রোমাইজের কোন সুযোগ নেই। সব ক্ষেত্রে মধ্য পন্থা তালাশ করে আমরা নাসিরুদ্দিন সৃষ্টি করেছি। যেমন সাইকেলের টিউবকে টিউবের স্থানে এবং টায়ারকে টায়ারের স্থানেই থাকতে হবে তাহলে সাইকেল চলবে। টিউব যদি টায়ারের সাথে কম্প্রোমাইজ করে একটু স্থান বদল করতে চায়, সাইকেল চলবে না। আমি অধম যদি বোঝাতে না পারি ক্ষমা করে দেবেন।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : ১। নাসিরুদ্দিন সাহেবের কথা বারবার কেন আসছে? আমি তো আপনাকে বোরখা খুলতে বলিনি।
২। ইসলামের কথা আলোচনা করলেই জামাতপন্থী ইসলামের ঠিকাদার হয়ে যায় নাকি? আপনি কিসের ঠিকাদার? ইসলাম ও মুসলমানকে বিভক্ত করার ঠিকাদারি আর কতদিন করবেন?
৩। সরাসরি আল্লাহ যা বিধান দিয়েছেন সেখানে কম্প্রোমাইজের কোন সুযোগ নেই। কিন্তু এ লেখার কোন জায়গায় কম্প্রোমাইজ করা হয়েছে বুঝিয়ে বলুন। মুখ ঢেকে রাখা ফরজ নয় একথাই এখানে বলা হয়েছে, আপনার দ্বিমত থাকলে দয়া করে কুরআনের রেফারেন্স সহকারে বলুন, আবেগতারিত কথা বার্তা নয়।
৪। যা ফরজ নয় তাকে ফরজ বলে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টাই চরমপন্থা। আবেগ থাকা ভাল। ইসলামি অনুশাসনের জন্য আপনার আবেগকে আমি সম্মান করি। কিন্তু সে আবেগের বশবর্তি হয়ে গালাগালি করাটা কিন্তু চরমপন্থা।
এক্সপার্ট ম্যান লিখেছেন : আসলে মধ্যপন্থার সুযোগ নিয়ে নারিউদ্দিন সাহেবদের উদ্দেশ্য হাসিলের বিষয়টা যদি সমাজকে আপনারা না বোঝান, যত কথাই বলেন না কেন ফলাফল বয়ে আনবেনা। জামাতপন্থী ইসলামের ঠিকাদাররা এসব মধ্যপন্থী দোহাই পেড়ে ইসলামের অনেক সর্বনাশ করেছে। কোথায় কোন কোন বিষয়ে মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে আর কোথায় বলা হয়নি এটা বোঝা দরকার। সরাসরি আল্লাহ যা বিধান দিয়েছেন সেখানে কম্প্রোমাইজের কোন সুযোগ নেই। সব ক্ষেত্রে মধ্য পন্থা তালাশ করে আমরা নাসিরুদ্দিন সৃষ্টি করেছি। যেমন সাইকেলের টিউবকে টিউবের স্থানে এবং টায়ারকে টায়ারের স্থানেই থাকতে হবে তাহলে সাইকেল চলবে। টিউব যদি টায়ারের সাথে কম্প্রোমাইজ করে একটু স্থান বদল করতে চায়, সাইকেল চলবে না। আমি অধম যদি বোঝাতে না পারি ক্ষমা করে দেবেন। কঠিনভাবে সহমত।
সত্য কথা লিখেছেন : মূখ ঢাকা থাকলে কাউকে চেনা যায়বা,এর চেয়ে অর্থহীন কথা মনে হয় আর কিছুই হয়না।আমরা মুখ ঢেকে চলি,এবং আজো পর্যন্ত আমাদের চিনতে কারো ভূল হয়নি।একজন নারী মূখ ঢাকবে না খুলবে সে সিদ্বান্ত নিবে নারী,পূরুষের লাফালাফি করার কিছু নাই এ জায়গায়।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : ছবিতে তো মুখটি খুলেই রেখেছেন। এতে কি ফরজ লঙ্ঘন হয়েছে? হয়েছে মনে হলে এরূপ ছবি না দিয়ে চোখমুখ ঢাকা উপরের ৪নং ছবির মত একটি ছবি দিন। তখন এরকম পোশাকের ভিতরে যেই থাকুক না কেন ঐ ছবি দেখলে আমরা আপনাকেই মনে করব। যাই হোক, আপনার বর্তমান পোশাকটিই আমি সাপোর্ট করি। তবে একটু ভুল হয়েছে। এরূপ উজ্জ্বল রঙ্গিন পোশাক না পরে সাদামাটা পোশাকে পর্দার শর্ত পূরণ হয়। কারণ, উজ্জ্বল রঙ্গিন পোশাকে সৌন্দর্য প্রদর্শনের ইচ্ছা প্রকাশ পায়। সবচেয়ে ভাল আবশ্যকীয় না হলে ছবি না দেয়া। যেমন এই ব্লগে ছবি দেয়াটা আবশ্যকীয় নয়।
এক্সপার্ট ম্যান লিখেছেন : মূখ ঢাকা থাকলে কাউকে চেনা যায় না,এর চেয়ে অর্থহীন কথা মনে হয় আর কিছুই হয়না। আমরা মুখ ঢেকে চলি,এবং আজো পর্যন্ত আমাদের চিনতে কারো ভূল হয়নি।একজন নারী মূখ ঢাকবে না খুলবে সে সিদ্বান্ত নিবে নারী,পূরুষের লাফালাফি করার কিছু নাই এ জায়গায়।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : @সত্য কথাঃ ছবিটি চেঞ্জ করার জন্য ধন্যবাদ।
সত্য কথা লিখেছেন : হিহিহি..আপনার মনতব্য আজকে দেখলাম,আর আপণি ভেবে নিয়েছেন আপনার কারনে আমি ছবি চেনজ করেছি। খুবি মজার কৌতুক। হিহিহি...নিজেকে একটু কম গুরুত্বপুর্ণ ভাবেন। সরি, আমার কি তে প্রবলেম, সে জন্য এই অবস্থা। কিন্তু এমন জোক দেখে এতোটুকু না লিখে পারলামনা।
শিকদার দস্তগীর লিখেছেন : আপনার অনুভুতি আমি শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করলাম। গালাগাল আমি করিনি, আঘাত পেয়ে থাকলে মার্জনা করবনে। আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা তো অবশ্যই আছে। এজন্যই তো যা পাই তা থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করি। আসলে পৃথিবীতে সেই ইসলাম আর নেই যা নবী করিম (স) আমাদের জন্য রেখে গিয়েছিলেন। আমরা তো স্কলার নই। ওলামায়ে কেরাম যা বলেন, লেখেন তা থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করি। দুনিয়ায় এখন ইসলামের হাল হকিকত দেখে এবং এত মত ও পথে দ্বিধাবিভক্ত ইসলামের অবস্থা দেখে ব্যথিত হই। সত্যটাকে খুজতে চেষ্টা করি। সেটা খুজতে যেয়ে সত্যিকার ফান্ডামেন্টাল নির্দেশনা মানতে যেয়ে দেখা যায় এসবের অনেক রকম ব্যাখ্যা- বিশ্লেষণ ।মাথাটা ঘুরিয়ে দেয়। এজন্য একটা কথা আছেনা, এরূপ ক্ষেত্রে মন যা সঠিক বলে রায় দেবে সেটাই সঠিক। হয়তো আমার বুঝে এরকম মনে হয়েছে যে, যে সব মেয়েদের মুখ কোন পরপরুষের দেখার সুযোগ থাকা আল্লাহ নিষেধ করেছেন, তা পালন করাই জরুরী। এসবের পরবর্তী ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সেভাবে মনে স্থান দিতে ভরসা পাইনা, কেননা এসবের কারণেই সমাজে বিপর্যয়, বিপত্তি বেড়েই চলেছে। মানুষ সুযোগের অপব্যবহার করেছে। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ আমাকে সময় দেবার জন্য। জামাতকে ঠিকাদার বলা আবেগের বশবর্তী হয়ে। কেননা এদেরকে আদর্শ হিসেবে মনে হয়েছিল। কিন্তু মুখে " মহিলাদের নেতৃত্ব মানব না বললাম, আর রাজনৈতিক অংকের কারণে মহিলাদের সামনে নতজানু হলাম" - এধরনের দ্বৈত নীতি ইসলামের ভাষায় মুনাফেক বলা হয়েছে কি না, তাই এদের সহবতে ইসলাম নিরাপদ নয় বলে আমার কাছে মনে হয়েছে, আমার এ ধারনা ঠিক নাও হতে পারে। মানুষের মনতো কারো হুকুমে চলেনা, সে চলে তার নিজের বুঝ মত। কাউকে কষ্ট দিলে বা কেউ কোন কথায় কষ্ট পেলে ক্ষমা চেয়ে নেয়াটাই জরুরী। আমার কথায় আপনি দুঃখ পেয়ে থাকলে আমি আবারো তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। আমি আপনার কথায় কোন কষ্ট পাইনি। আপনাকে আমার বন্ধুই মনে হয়েছে, কেননা আপনার সাথে বাক যুদ্ধে আমার কিছু শিক্ষা হয়েছে বই কমেনি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ। একটি কথা আগেই বলেছি যে, জ্ঞানী ব্যক্তিরা কখনো কোন ভুল বিষয়ে একমত হন না। আর সে ক্ষেত্রে উপায় হল নিজের বিবেককে কাজে লাগানো। এ ক্ষেত্রে ভূল বুঝাবুঝি, যুক্তি-তর্ক ইত্যাদি হবেই এবং এভাবেই আমাদের জ্ঞানচর্চা সভ্যতা এগিয়ে যাবে। আল্লাহতায়ালার এই জটিল সৃষ্টি ও সভ্যতাকে যা সামনের দিকে এগিয়ে নেয় তাই সত্য আর বাকি সবই মিথ্যা, মুর্খতা, শয়তানি ও অসভ্যতা। আপনাকে আঘাত দেয়ার জন্য ক্ষমা প্রার্থী।
সংগ্রামী মানুষ লিখেছেন : মুসলিম নারীর পর্দা করা ফরয। এই পর্দা প্রথা মুসলমানদের ধর্মীয় বিধি-নিষেধের আওতায় পড়ে। কিন্তু ইদানীং দেখা যাচ্ছে কিছু ইহুদী-নাছারার দেশ এই পর্দা নিয়ে অহেতুক বাড়াবাড়িতে জড়াচ্ছে। সকল ধর্মাবলম্বীদেরই ধর্মীয় স্বাধীনতা রয়েছে। সুতরাং মুসলিম নারীর পর্দার স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সারকোজি নৈতিকতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা বা শালীনতা বলে কিছু বুঝে না। তার রাজনৈতিক জীবনে একটাই উদ্দেশ্য আইন করে পর্দা বন্ধ করা। সে যাই হোক যখন আইন হবে তখন দেখা যাবে। আমার আলোচনার বিষয় আধুনিক পর্দানশীনদের নিয়ে। এরা পর্দাকে স্টাইলের মধ্যে এনে ফেলেছে। এক পিস লম্বা গাউন এবং রুমাল। রুমাল দিয়ে সুন্দর করে মাথার চুল আবৃত করা থাকে। যার অর্থ হলো মুখমণ্ডল, হাত ও পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত খোলা। এই অবস্থায় পর্দা হলো কই? নারীর সৌন্দর্য তার চেহারায়। চেহারা দেখানোর অর্থ হলো সৌন্দর্য পর-পুরুষকে দেখানো। অন্যদের সৌন্দর্য দেখানো নারীর একটা চরম দুর্বলতা। অথচ আল্লাহ পাক কুরআন শরীফ-এর সূরা নূর, সূরা আহযাব ও সূরা নিছা এ তিনটি সূরায় সৌন্দর্য পর-পুরুষকে না দেখানো এবং সম্পূর্ণ শরীর ও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পশুদের মধ্যে নরপশুর সৌন্দর্যে মাদিপশু আকৃষ্ট হয় আর মানবকুলে নারীরূপ দ্বারা পুরুষ আকৃষ্ট হয়। নারী যদি তার মুখমণ্ডল খুলে রাখে তাহলে পর্দা হলো কিভাবে? যেখানে নির্দেশ রয়েছে নারীর কণ্ঠস্বর, পায়ের শব্দ অথবা গহনার শব্দ পর্যন্ত পরপুরুষকে শোনানো হারাম সেখানে মুখমণ্ডল প্রদর্শন করে পর্দা করা কি পর্দার প্রহসন নয়? মুসলমান মহিলাদের মুখমণ্ডল, হাত ও পা কব্জি পর্যন্ত শুধু ঘরের মধ্যে এবং মাহরামের সম্মুখে এবং নামাযের সময় খুলতে পারবে। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এ পর্দার উপর নির্দেশ যখন স্পষ্ট সেখানে নতুন কিছু আবিষ্কার করার উপায় নেই। বাতিল ফিরক্বার লোকেরা পর্দার এই বিদআত করে মূল পর্দা থেকেই সরে গেছে; যদিও এসব আধুনিকরা পর্দার মূল উদ্দেশ্যটাই বুঝে না এরা, সেই সাথে পর্দার নির্দেশও মানে না। পর্দার এ ধরনের প্রহসন থেকে মুসলিম নারীদের ফিরে আসতে হবে। সমস্ত শরীর, মুখমণ্ডল ও হাত পা ঢেকে পর্দা করতে হবে। নিজস্ব সুবিধা মত পর্দা করলে পর্দাতো হবেই না বরং বিদআতের গুনাহয় আবদ্ধ হবে।
শিকদার দস্তগীর লিখেছেন : সংগ্রামী মানুষ , আপনাকে ধন্যবাদ। অনকে রকম ফতেনা ফাসাদ আসলে নানা রকম কম্প্রোমাইজরে নীতি (যা ক্ষেত্র বিশেষে ইসলাম অনুমোদন দিয়েছে) পর্দার মত একটা জরুরী বিষয়ের সাথে সেই কম্প্রোমাইজরে নীতি অনুসরণ করতে যেয়ে সমাজ আজ কোথায় এসে দাড়িয়েছে তা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। অথচ এক শ্রেণীর আলেম কতিপয় রেফারেন্স এর দোহাই পেড়ে সমাজে এ বিষয়ে একটা কম্প্রোমাইজরে নীতি ইসলামের মূল নীতি বলে চালিয়ে দিয়েছে। আপনি যে সত্যটা তুলে ধরেছেন, এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। চরমপন্থার নামে অনেকেই সত্য প্রচার থেকে বিমুখ রাখতে নান কৌশল অবলম্বন করে আসছে। আল্লাহ তা থেকে আমাদের হেফাযত করুন। এ বষিয়টা সত্যিকার অর্থে মেয়েরা নিজেরা যদি বোঝে তাহলে সে বুঝতে পারবে যে এ বিষয়ে কম্প্রোমাইজরে নীতিটা আসলে পুরুষদের তৈরী একটা ফাদ। পুরুষদের একটা অপকৌশল মাত্র।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : @সংগ্রামী মানুষঃ মুখ ঢাকার বিষয়টিই এ লেখার মুল আলোচ্য। আপনি যে আয়াতগুলোর কথা বলছেন সেই আয়াতগুলোই আলোচনা করা হয়েছে। মুখ ঢাকা যদি ফরজ হয় তাহলে "তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে" - এই আয়াতে 'যা সাধারণত প্রকাশমান' বলতে কি বুঝানো হয়েছে?
পরহেজগারি তো প্রদর্শনের বিষয় নয়। এ আলোচনায় যদি কম্প্রমাইজকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়, তাহলে মুসলিম মহিলাদের ঘরের বাইরে আসা বন্ধ হওয়া উচিৎ। কারণ অন্য আয়াতে নবীপত্নীদের প্রতি নির্দেশ হল "তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে, মূর্খতা যুগের অনুরূপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না।" আর নবীপত্নীগন যেহেতু মুসলিম মহিলাদের জন্য অনুসরনীয়, কাজেই তাদের ঘরের বাইরে আসা কি কম্প্রমাইজ নয়? বাস্তবতার নিরিখে বিবেচনা করাই ভাল।
মনপবন লিখেছেন : লেখাটা কিছুটা পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হয়েছে। বড় আলিমদের মধ্যে নিকাব পড়া ফরয নাকি মুস্তাহাব এবিষয়ে মতভেদ আছে কিন্তু এটাকে জায়েজ পর্যায়ে রাখাটা ঠিক নয়। রসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেমন আমাদের উসাওয়াতুন হাসানা তেমনি তার স্ত্রী গণ, উম্মুল মুমিনিনরা মেয়েদের উত্তম আদর্শ। তবে এটা ঠিক যে এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত নয় বরং মেয়েদের ব্যক্তিগত এখতিয়ারে ছেড়ে দেয়া উচিত।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : লেখাটা কিছুটা পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে হওয়া স্বাভাবিক। কারন উভয় পক্ষের বাড়াবাড়ির প্রেক্ষাপটে রচিত এ লেখায় 'নিকাব পড়া ফরয নয় বরং মুস্তাহাব'- এটিই প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে আপনার 'কিন্তু এটাকে জায়েজ পর্যায়ে রাখাটা ঠিক নয়' কথাটির অর্থ বুঝলাম না।
মনপবন লিখেছেন : আমাদের দেশের মডার্ন মুসলিমদের মতে নিকাব পড়া জায়েজ, পড়লে সোয়াব নেই, কিন্তু কথাটা ঠিক নয়।
পার্টিশন '৪৭ লিখেছেন : এরকম মতামত আগে অবশ্য শুনিনি, এই প্রথম শুনলাম। মুস্তাহাব আমল তো মানুষ সোয়াবের উদ্দেশ্যেই করে।
সংগ্রামী মানুষ লিখেছেন : শিকদার দস্তগীর ও পার্টিশন '৪৭ ভাই@ আপনাদের বাকযুদ্ধ পড়ে দু'জনকেই বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে।
সালমা১৯৭৫ লিখেছেন : শেখার মত একটা আর্টিকেল
বিষয়: বিবিধ
৮৭৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন