অরেগনের পথে – ৮ (উইন্সটন ওয়াইল্ড লাইফ সাফারি) - ছবি ব্লগ

লিখেছেন লিখেছেন আইমান হামিদ ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১২:৪৬:২৬ দুপুর







পোর্টল্যান্ড থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে অবস্থিত উইন্সটন সাফারি পার্কে যেতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা। সেই ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে শুরু হওয়া আই ফাইভ হাইওয়ের ব্যাপ্তি ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়েগো অতিক্রম করে সুদূর মেক্সিকো পর্যন্ত! আমাদের গন্তব্যস্থল পোর্টল্যান্ড থেকে দক্ষিণ দিকে, যাত্রা পথে কিছুদূর গেলেই অরেগনের রাজধানী সালেম। আরও কিছুদূর এগিয়ে গেলে দেখা মিলবে চোখ ধাঁধানো ফার্ম হাউজ ও ল্যান্ড স্কেইপ। মহাসড়কের দুপাশে গড়ে উঠা বিশাল আকৃতির ফার্ম হাউজের ব্যাপ্তি আমাদের প্রাথমিক গন্তব্যস্থল ইউজিন পর্যন্ত। ইউজিন অরেগনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর, যাত্রা বিরতিতে গাড়ি থেকে নেমেই অসংখ্য অস্থায়ী তাঁবু ও ভ্রাম্যমান ভ্যান দৃষ্টি গোচর হলো। পাহাড়ের পাদদেশে খোলা চারণ ভূমি বিধায় অনেকেই এই স্থান টিকে বেছে নিয়েছেন ক্যাম্পিং এর জন্য। পাশেই রয়েছে সশব্দে বয়ে চলা স্বচ্ছ ও উষ্ণ পানির পাহাড়ি নদ। রয়েছে মৎস শিকারিদের জন্য বিশেষ সুযোগ।

যাহোক ঘণ্টা খানেক বিরতির আবার রওনা হলাম আমাদের গন্তব্য স্থল উইন্সটন ওয়াইল্ড লাইফ সাফারি পার্কের উদ্দেশ্যে। দীর্ঘ ক্লান্তি নিয়ে যখন পৌঁছলাম, বেলা তখন প্রায় সাড়ে তিন টা। দ্রুত চেক ইন শেষে ম্যাপ হাতে নিয়ে ঢুকলাম জীবন্ত চিড়িয়া দর্শনে। মেক্সিকান সহকর্মীর অনেক দিনের ইচ্ছা উলফ দেখবে! কিন্তু হায় আশেপাশে তো কোনো উলফের দেখা নাই। সাফারির ভেতরে গাড়ির ঘণ্টায় সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৫ মাইল, ইতি মধ্যে সিংহ মশাইয়ের দেখা মিলেছে। হঠাৎ কিছুদূর যাওয়ার পর গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো দীর্ঘ শিং যুক্ত বন্য গরু! ভিতর থেকে শব্দ করা, হর্ন বাজানো (যদিও পার্কের ভিতরে হর্ন বাজানো সম্পূর্ণ রূপে নিষেধ), হাইবিম জ্বালানো সহ সব রকমের চেষ্টাই করা হয়েছে। তারপরও সে অবিচল! অবশেষে আমাদেকেই বিকল্প পন্থা অবলম্বন করে পিছু হটতে হয়েছে। আরও কিছু দূর যাওয়ার পর দেখা মিললো আলাস্কান বিয়ারের ফাইট। কিছুক্ষন পর আমাদের সবাইকে অবাক করে দিয়ে জিরাফ হাজির। ক্যাট ওয়াকও চললো বেশ কিছুক্ষন! চমৎকার ল্যান্ড স্কেপের মাঝে গড়ে উঠা এই পার্কে আরও দেখা মিললো পার্কেই জন্ম নেওয়া চিতা, স্থানীয় কুগার, উট (দেখতে কিছুটা কুৎসিত মধ্যপ্রাচ্যের গুলোর মতো না), আফ্রিকান হাতি, জেব্রা, বন্য মহিষ, আলাস্কান বাঘ ইত্যাদির। তবে বানরকে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে একঘরে করে রাখা হয়েছে। পার্ক থেকে বের হবার পথে আরেক বাঁধা! বন্য মহিষের দল। কোনভাবেই গাড়ীর উইন্ডো খোলা যাবে না!

ঘণ্টা দুয়েক অবস্থানের পর সহকর্মীকে সান্তনা দিতে দিতে পার্ক থেকে বের হলাম।

পরবর্তী গন্তব্যস্থল বিখ্যাত ক্রেটার লেকের নিকটবর্তী কোন হোটেল! জিপিএস’এর দিকে তাকিয়ে দেখলাম ১২০.৬ মাইল! বিকাল ৬ টা, আশা করি আলো থাকতে থাকতে পৌঁছতে পারবো ! চলবে ……………………



































বিষয়: বিবিধ

১৯১৭ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

175494
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:০৭
নূর আয়েশা সিদ্দিকা জেদ্দা লিখেছেন : অপূর্ব! বেশ ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৫২
128927
আইমান হামিদ লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু
175498
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:২৮
জারা লিখেছেন : বেশ ভালো লিখেছেন। Thumbs Up। ছবিগুলোও ভালো হয়েছে। Happy>- ধন্যবাদ।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৫৪
128929
আইমান হামিদ লিখেছেন : জি এখানে আসলে ছবিগুলোই আসল
জন্তু জানোয়ারের বর্ণনা আমি আবার সাবলীল ভাবে লিখতে পারি না! আপনার কাছ থেকে টিপস নিতে হবে
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:২০
129112
জারা লিখেছেন : আমি সাবলীল ভাবে লিখি আপনাকে কে বললো? আপনার প্রথম লিখা আরাকানে মুসলিম রোহিঙ্গা নিধন পড়ে তাতো মনে হয়নি। খুব চমৎকার একটি লিখা ছিলো। এখনও লিখাটি আমার প্রিয়তে রয়েছে।Happy Good Luck
175517
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:১২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ছবিগুলি খুবই ভাল লাগল। সিঙ্গপুর এর চিড়িয়াখানায় যাওয়ার ভাগ্য হয়েছে। মন খারাপ হয়ে যে ওইটুক একটা দেশ যা আমাদের দেশের প্রায় ৫০ ভাগের একভাগেরও কম এরকম সুন্দর করে সাফারি পার্ক বানাতে পেরেছে অথচ আমরা পারিনাই।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০১:৫৫
128930
আইমান হামিদ লিখেছেন : আমাদের ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের কি অবস্থা ? কখনো যাওয়া হয়নি তাই জিজ্ঞাসা করলাম
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:২৩
129047
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : প্রচুর জায়গা থাকলেও স্থানিয় প্রানী প্রধানত এক পাল বুনো হাতি ছাড়া আর কিছু এভাবে বিশাল জায়গা জুড়ে নাই। বরং প্রবেশ মুখের সামনে চিড়িয়াখানার মত ছোট ঘর করে রাখা হয়েছে। আমার সহযাত্রি এব সাংবাদিক পরিচালক কে এভাবে কেন রাখা হয়েছে প্রশ্ন করলে জবাব দেন যে দেখার সুবিধের জন্য! তবে এর প্রাকৃতিক পরিবেশ অনন্য। আর লেকটিতে এই সময় অর্থাত ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত প্রচুর পাখি দেখা যায়।
176127
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৭:০৯
আবূসামীহা লিখেছেন : অনেক কিছু দেখা হল। উটটা ব্যাক্ট্রিয়ান উট - দুই কুঁজ ওয়ালা। এগুলো মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে [সব ....স্তান] হয়।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৭:১৫
129314
আইমান হামিদ লিখেছেন : আমার জানা ছিলো না। নতুন তথ্য জানলাম।
জাযাকাল্লাহ
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৭:২৩
129316
আবূসামীহা লিখেছেন : http://en.wikipedia.org/wiki/Bactrian_camel

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File