ভুল করে ভুলে যাওয়া
লিখেছেন লিখেছেন রেহনুমা বিনত আনিস ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৬:৩৯:৪৮ সকাল
আমার বিয়ে পিছানো হয়েছিল তিনবার। যতবার বিয়ে পিছানো হয়ে ততবার মাস্টার্স পরীক্ষা পিছানো হয় এবং উভয় গিয়ে পড়ে একই তারিখে। শেষবার বাবা বলল, ‘আমি বিদেশ থেকে কতবার ছুটি নিয়ে আসব? একই দিনে যদি পরীক্ষা হয় তাহলে পরীক্ষা দিয়ে এসে বিয়ের অনুষ্ঠানে আসবে, আর যদি পরীক্ষা দুই একদিন আগেপরে হয় তাহলে তো সমস্যাই নেই’।
একদিকে পরীক্ষা দিচ্ছি, আরেকদিকে বাসায় লোকজন গমগম করছে। আমার এক বান্ধবী ওর বিয়ের সময় বলেছিলো, ‘জানিস, আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে অন্য কারো বিয়ে হচ্ছে, আমি কিছুই অনুভব করতে পারছিনা’। এবার বুঝলাম ও কি বুঝাতে চেয়েছে। কেমন যেন নির্লিপ্ত নিরাসক্ত এক দর্শকের ভূমিকায় মনে হচ্ছিল নিজেকে, মনে হচ্ছিল চারপাশে যা ঘটছে তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আকদের দিন একহাতে একজন মেহদী লাগাচ্ছে, আরেক হাতে বই নিয়ে পড়ছি; একদিকে বান্ধবীরা গল্প করছে, আমি হুঁ হাঁ করে মনে মনে শেক্সপিয়ারের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছি।
পরদিন, অনুষ্ঠানের দিন আমি ছিলাম চরম অসুস্থ। এমনিতেই লোকজনের সামনে সং সেজে বসে থাকার আমার কোন অভিপ্রায় ছিলোনা। উপরন্তু অসুস্থতার ছুতা দিয়ে বরপক্ষকে বললাম, ‘আপনারা অনুষ্ঠান শেষে বাসায় এসে আমাকে নিয়ে যেয়েন’। কিন্তু বড় আপা বললেন, ‘তুমি মাত্র দু’এক ঘন্টার জন্য এসো। আমরা তোমাকে বেশীক্ষণ বসিয়ে রাখবনা’। ওরা কথা রেখেছিলেন, কিন্তু শেষের দিকে সমস্ত বাঁধানিষেধ অমান্য করে হৈ হৈ করে পুরুষরা ঢুকে পড়ল মহিলাদের হলে। মেজাজ প্রচন্ড খারাপ, অথচ মুখটা হাসি হাসি করে রাখতে হচ্ছে। সেটা নিয়ে আবার কথাকথি, ‘বৌ তো একটু কাঁদলোও না’। আচ্ছা, আমার দুর্বলতা আমি মানুষের সামনে প্রকাশ করব কেন? আমার অনুভূতি মানুষকে দেখাতে হবে কেন?
দুপুরের বিয়ে, বিকেল থেকে লোকজন আসতে শুরু করল বাসায় দেখা করতে। শাশুড়ি আম্মা মেহমানের চাপে অসুস্থ হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী, বোনরা এবং বাসায় অবস্থানরত আত্মীয়স্বজনরা মিলে সাধ্যমত সামাল দিচ্ছেন। এভাবে গেল রাত দশটা পর্যন্ত। নিজে অসুস্থ, নতুন জায়গা আর হাফিজ সাহেবের নাক ডাকা মিলে ঘুম হোলনা। আবার সকাল ছ’টায় নীচতলায় গিয়ে অন্যান্য শহর থেকে আগত আত্মীয়স্বজনদের বিদায় দিলাম। একঝাঁক নতুন মুখ, কিছুতেই মনে থাকছেনা নাম কিংবা সম্পর্ক। নাস্তার পর কিছুক্ষণ আমার রুমের জিনিসপত্র গুছালাম, ঝাড়ু দিলাম। আমি প্রচন্ড গোছালো, আর হাফিজ সাহেব ঠিক উলটো। সুতরাং, ঐ মূহূর্তে ওটাই মনে হচ্ছিল জরুরী কাজ। সারাদিন আরো অনেক মেহমান আসতে রইলেন। সন্ধ্যার দিকে সামান্য পড়ার সুযোগ পেলাম। রাতে খেয়েদেয়ে হাফিজ সাহেব ঘুমাতে গেলেন আর আমি বই নিয়ে বসলাম। সারারাত পড়ার পর সকালের দিকে একটু চোখ লেগে এলো। কিন্তু উঠে পড়তে হোল নাস্তার জন্য। তার কিছুক্ষণ পর আম্মার ভাইয়েরা তাঁকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে ঢাকা রওয়ানা হলেন। বিকালের দিকে বড় আপা চলে গেলেন নিজের বাসায়।
বাসায় তখন আব্বা, চার ননদ আর আমরা। হাফিজ সাহেব চলে গেলেন কাজে। আমরা দু’জন একই জায়গায় কাজ করতাম। একটি নতুন প্রতিষ্ঠানের দু’জন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য একইসাথে দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটা সমস্যা। কিন্ত আম্মা নেই, হাফিজ সাহেবও নেই, এই অবস্থায় বোনগুলোকে একা রেখে আমি আমার রুমে বসে থাকব সেটা কিছুতেই ভাল লাগছিলোনা। তাই কিছুক্ষণ পর পর ওদের সাথে বসে আবার রুমে গিয়ে পড়ার চেষ্টা করতে রইলাম। সেদিন আবার সারারাত পড়ে সকালে গেলাম পরীক্ষা দিতে। পরীক্ষা ভাল হোলনা। তিনবছর অনার্সে প্রথম স্থান ধরে রাখার পর, মাস্টার্সের সব পরীক্ষা ভাল দেয়ার পর, একটা পরীক্ষায় যদি পাশই করতে না পারি এই চিন্তায় তখন প্রচন্ড মন খারাপ।
কিন্তু আমার আলহামদুলিল্লাহ কোন ব্যাপার নিয়েই দীর্ঘক্ষণ মন খারাপ করে থাকা হয়না, মন খুব অল্পতেই ভাল হয়ে যায়। কলেজ থেকে বের হয়ে রিক্সা পেয়ে মহাখুশী হয়ে গেলাম। সাধারনত যখন এতগুলো ছাত্রছাত্রী একসাথে বের হয় তখন রিক্সা পাওয়া যায়না। কিন্তু এত বছরে অনেক রিক্সাওয়ালা পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা নিজেরাই হাঁক দিয়ে বলতেন, ‘এই যে অমুক ঠিকানার আপা, এত টাকা ভাড়া, আমার রিক্সায় আসেন’। একজনের হাঁক শুনে উঠে বসলাম। ঠিকানা বলতে হোলনা, তিনি আমাকে নিয়ে বাসায় নামিয়ে দিলেন। অনেকক্ষণ বেল টিপলাম, কিন্তু কেউ দরজা খুললনা। আমাদের বাসার গেট আর দরজার মাঝে দুরত্ব মোটামুটি ভালই। সুতরাং, বেল টিপে অপেক্ষা করতে আমরা অভ্যস্ত। তবু এতক্ষণ তো লাগার কথা না! এ’সময় পাড়ার এক মুরুব্বী পাশে দিয়ে যেতে যেতে বললেন, ‘আরে, তুমি কবে এলে? ওরা তো সবাই গতকাল ঢাকা চলে গিয়েছে!’
তখন মনে পড়ল, তাই তো! আমার বিয়ে হয়েছে! গতকাল বাবামা ভাইয়েরা ঢাকায় চলে গিয়েছে, হাফিজ সাহেব আমার জন্য কলেজগেটে অপেক্ষা করার কথা! তখন মোবাইলের যুগ ছিলোনা, পুরো বাংলাদেশে মোবাইল ছিলো দু’টো, একেকটার দাম দেড় দুইলাখ টাকা করে। কি করি, কি করি! আবার রিক্সা নিয়ে গেলাম আমাদের কর্মস্থলে, কারণ বাসা আমি খুঁজে পাবনা। বিয়ের আগে অধিকাংশ সময় আমি থাকতাম বিদেশে, দেশে এলে আমার কলেজ, কর্মস্থল, বন্ধুবান্ধবের বাসা সব ছিলো মোটামুটি একই এলাকায়। আমার শ্বশুরবাড়ী যেখানে সে এলাকায় আমি গিয়েছি সাকুল্যে তিন চার বার, এক বান্ধবীর বাসায়, সেটাও কয়েকবার খুঁজে না পেয়ে ফিরে এসেছি।
কর্মস্থলে পৌঁছলে সবাই খুব খুশী হোল, আবার একটু অবাকও হোল, ‘কি ব্যাপার? হাফিজ ভাই কই? উনি তো আপনাকে আনতে গেল কলেজে সেই কবে!’ জানি, কিন্তু এতবড় কলেজে আমি ওনাকে কোথায় খুঁজতে যাব? উনিই বরং আরো আধঘন্টা পর ফিরে এসে শুনি অফিসে সবাইকে বলেছেন, ‘বৌ কোথায় গেল জানিনা। পুরো কলেজ তন্ন তন্ন করেও খুঁজে পেলাম না’। ওরা বললেন, ‘কই, উনি তো সেই কবে থেকে আয়শা আন্টির রুমে বসে আছেন!’ হাফিজ সাহেব দৌড়াতে দৌড়াতে এসে আমাকে দেখে আশ্বস্ত হলেন। আশ্বস্ত হলেই ওনার মাথা থেকে সব দুশ্চিন্তা ঝরে যায়, উনি আবার ওনার নিত্যকার অবতারে অবতীর্ণ হোন। দুষ্ট হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমি তো ভেবেছিলাম বৌ পালিয়েছে! আবার বিয়ে করতে পারব ভেবে কত খুশী হলাম!’
সবার কাছে বিদায় নিয়ে বাসায় ফেরার পথে রিক্সায় জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি গিয়েছিলে কোথায়? সকালে না বললাম পরীক্ষা শেষ হলে নিতে আসব?’
আস্তে করে বললাম, ‘ভুলে গেছিলাম।’
‘তাহলে ঠিক আছে।’
কিন্তু অর্ধেক সত্য বলে থাকতে পারলাম না, লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে বলেই ফেললাম, ‘বিয়ে হয়েছে সে কথা ভুলে গেছিলাম, বাসায় চলে গেছিলাম।’
উনি চোখ বড় বড় করে বললেন, ‘কি?!’
তারপর হা হা হো হো করে হাসতে শুরু করলেন। বেচারা নিজেও বুঝতে পারলেন আমার সিস্টেম ওভারলোড হয়ে গিয়েছিলো, মাথা খালি হয়ে গিয়েছে পুরোটা, তাই হেসেই উড়িয়ে দিলেন।
ওহ আচ্ছা, রেজাল্টের কথা! অনেকেই হয়ত জানেন আমি এক অদ্ভুত ছাত্রী। পরীক্ষা দিতে আমার এত মজা লাগে যে পরীক্ষার পর যে রেজাল্ট আসে সেটা আমার কখনোই মনে থাকেনা। পরীক্ষা খারাপ হলে আরো বেশী মনে থাকেনা। যেমন ইন্টারের পর চার পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও, পেপার পত্রিকাতে পড়েও আমার মাথায় আসেনি যে এর মধ্যে আমার রেজাল্টও আছে। এক আন্টি জিজ্ঞেস করার পর ওদের বসিয়ে রেখে কলেজে গেছিলাম চেক করতে, ফার্স্ট ডিভিশন চেকই করিনি, অন্য কোথাও আমার নাম্বার পাইনি, তাই ফিরে এসে নির্লিপ্তভাবে জানালাম ফেল করেছি। এক সপ্তাহ পর জানলাম যেখানে চেক করিনি আমার রেজাল্ট সেখানেই ছিলো।
একইভাবে মাস্টার্সের রেজাল্টের কথাও আমার মাথায় আসেনি। একদিন আমার সহপাঠী, অনার্সের সেকেন্ড গার্ল এবং একবোতল কোকের শেয়ারের পার্টনার, (তখনকার স্টুডেন্টরা এত বড়লোক হতনা, আমরা এক বোতল কোকে দু’টো স্ট্র দিয়ে খেতাম, এক ঠোঙ্গা ঝালমুড়ি দু’জনে ভাগ করে খেতাম, কিন্তু ঐ খাওয়ায় যে তৃপ্তি ছিলো সেটা এখনকার ছাত্রছাত্রীরা পূর্ণ এক বোতল কোক খেয়েও কোনদিন অনুভব করতে পারবেনা) ছোটি ফোন করে খবর দিলো রেজাল্ট দিয়েছে চার পাঁচদিন আগে; আমার কোন খবর না পেয়ে স্যাররা জানতে চেয়েছেন আমি কোথায়। জিজ্ঞেস করলাম পাশ করেছি কি’না। সে খুব মন খারাপ করে বলল, সে ফার্স্ট হয়েছে, আমি সেকেন্ড প্লেসে চলে এসেছি, কিন্তু ওর মনে আমিই ফার্স্ট। এই না হলে বান্ধবী, যার মনের উদারতা আকাশের সমান, হৃদয়ের গভীরতা সাগরের মতন!
স্যারদের সাথে দেখা করতে গেলে ওরা খুব মন খারাপ করে বললেন, ‘বাবাজী আর ক’টা দিন অপেক্ষা করতে পারলনা? তোমার শুধু ভাইভাতেই ছোটির চেয়ে এগারো নাম্বার বেশী ছিলো। কিন্তু শেক্সপিয়ারের পেপারটা তোমার সব খেয়ে দিলো।’ মনে মনে বললাম, এজন্যই তো শেক্সপিয়ারকে আমার এত অপছন্দ! তবে এর কয়েক মাসের ভেতর আমার ইউনিভার্সিটিতে চাকরী হয়ে যায়। ইন্টারভিউতে শেক্সপিয়ারের ওপরই ছিলো অর্ধেক প্রশ্ন। আলহামদুলিল্লাহ ইন্টারভিউ এত ভালো হয় যে মহিলা শিক্ষক নেয়ার কথা না থাকা সত্ত্বেও আমি সুযোগ পেয়ে যাই! সুতরাং, জীবনের কোন ঘটনাতেই ভেঙ্গে পড়া উচিত না, কারণ সামনে কি আছে তা আমরা কেউ দেখতে পাইনা।
(ভিশু ভাইয়ের কৌতুহল নিবৃত করার উদ্দেশ্যে লেখা, সুতরাং তাঁকেই উৎসর্গ করলাম। হাফিজ সাহেবের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা যে বৌ তাঁকে ভুলে যায় তাকে এত বছর যাবত প্রতিদিন নিজেকে মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।)
বিষয়: বিবিধ
২৯৫৩ বার পঠিত, ৫২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক অনেক দিন পর আমার ব্লগে এলেন। ভাল আছেন তো?
খুব মজা লাগলো। চরম মজাদার একটি বিবাহ বাসরীয় চুটকী উপহার দেয়ার জন্য থ্যাংকু ভেরী মাচ
অত্যন্ত সঠিক কথা৷ আপনার লেখায় এমন অনেক কথাই থাকে, তবুও এটার প্রতি আকৃষ্ট হলাম৷ ধন্যবাদ৷
আল্লাহ আপনাদের পরিবারে শান্তির সুবাতাস বইয়ে দিন।
আপনার দু'আয় আমাদের সবার জন্য আমীন
আমার বিয়ের দিন বরযাত্রী নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল বিকেল চারটায়। খুবই ছোটখাট এক ইস্যূতে আমার ক্রোধোন্মত্ত এক চাচাকে (উনার এক বায়রাকে সপরিবারে দাওয়াত দেয়া হয় নি কেন এই ইস্যূতে) বুঝিয়ে শুনিয়ে ম্যানেজ করতে করতে সময় সন্ধ্যা পেরিয়ে গিয়েছিল। পরে রাত সাড়ে আটটায় রওয়ানা দিয়েছিলাম।
ভাগ্য ভাল ভুলে গিয়ে বাসায় ঢুকে জাননি যদি কাছে চাবি থাকত!!
মোবাইল তো মনে হয় তখন বেশ চালু হয়েছে। ফিরোজ ভাই এর ছিল তখন সম্ভবত।
আমাদের গ্রুপের কারোরই তখনো মোবাইল ছিলোনা। তবে এর কিছুদিন পর ধীরে ধীরে সবার হাতে মোবাইল চলে আসে।
খুশি হলাম 'ভুলোমনা' আরেকজনকে পেয়ে
পড়ে অনেক মজা পেয়েছি, অন্যরকম একটি অভিজ্ঞতে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভিশু ভাইয়ের সেদিনের সেই লিখায় আপনার কমেন্ট পড়ে মনে হয়েছিল ভাইয়া হয়ত ভুলে গিয়েছিলেন কিন্তু সেটা যে আপনি এটা বুঝতে পারলাম আপনার লিখা পড়ে.......হায়রে কপাল!!!।
এজন্যই আগের কয়েকদিনের বর্ণনা দিলাম, যাতে আপনারা বুঝতে পারেন ভাইয়া যখন নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিল তখন আপুর ওপর দিয়ে কি যাচ্ছিল
ভাল থাকুন আপনারাও
মাশাল্লাহ! এমন ভালো এবং জিনিয়াস মানুষ দেখলে মনের মধ্যে একটু কনফিডেন্স পাই
সময় পেলে সেই ভালোবাসার নদীটি পোস্টটি পড়ার আমন্ত্রণ রইল।
নিজ বাড়িকে বলুন না, "তোমাকে যে গিয়েছি ভুলে,
সে কথাও গিয়েছি ভুলে,
তাই তো আসি বারবার পথভুলে"
আপনি কই? ব্লগে নাই কেনো?
মন্তব্য করতে লগইন করুন