শার্লক হোমস হইতে চাই
লিখেছেন লিখেছেন রেহনুমা বিনত আনিস ২৯ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:২১:১৫ রাত
ডঃ ওয়াটসন শার্লক হোমসের সাথে প্রথম পরিচয়ে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিলেন যে এত তুখোড় মেধাবী লোকটা জানেনা পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে! তথ্যটা জানাতেই শার্লক হোমস বলে ওঠেন তাঁর কাজের সাথে এই তথ্যের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই, সুতরাং এটি তাঁর জানার কোন প্রয়োজন নেই; যেহেতু তথ্যটা যেভাবেই হোক তিনি জেনে গিয়েছেন, তিনি চেষ্টা করবেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি ভুলে যেতে। লাইনগুলো পড়ে সেই অল্প বয়সে আমার মনে হয়েছিল কথাগুলো চরমপন্থী। কিন্তু আজ পরিণত বয়সে এসে আমার মনে হচ্ছে শার্লক হোমস একজন যুক্তিবাদী মানুষ। কিন্তু যুক্তিবাদী লোকজনের সমস্যাই হোল তাঁদের আশেপাশে কেউ তাঁদের যুক্তি বুঝতে পারেনা বা এর পেছনে কারণগুলো অনুধাবন করতে পারেনা।
আমি আমার নিজের যুক্তি খাটিয়ে এখন যেটা বুঝি সেটা হোল, যার জীবনের কোন লক্ষ্য নেই তার কথা আলাদা, কিন্তু যার জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য তাঁর কাছে স্পষ্ট তিনি তো সে তথ্যই সংগ্রহ করবেন যা তাঁর জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যে তথ্য তাঁর জীবনের লক্ষ্য অর্জনের সহায়ক হবে। আর নইলে এস এস সিতে এসে বিভাগ নির্বাচন বা অনার্সে বিষয় নির্বাচনের কোন প্রয়োজনই হতনা। আমরা মাস্টার্স, পি এইচ ডি পর্যন্ত সকলে সকল বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে থাকতাম। কিন্তু, আমরা কেউ কার্যত Jack of all trades, master of none হতে চাইনা। আমাদের ইচ্ছে থাকে অন্তত একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করার। তাই আমরা সে বিষয়ে অধিক জ্ঞান অর্জন করায় লিপ্ত হই যেটা আমাদের কাঙ্খিত সাফল্য এনে দেবে।
আমরা বাজারে গেলে নিশ্চয়ই অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ব্যাগ ভর্তি করে নিয়ে আসিনা। প্রথমত, এতে টাকা নষ্ট হয়, এত টাকা আমাদের অধিকাংশেরই নেই। দ্বিতীয়ত, এতে সময় নষ্ট হয়, এতটা সময় নষ্ট করার পক্ষপাতী আমরা অধিকাংশই নই। তৃতীয়ত, যে জিনিসের প্রয়োজন নেই সেটি ঘরে স্থান দেয়ার মত প্যালেস আমাদের অধিকাংশেরই নেই। এবার যদি আমরা টাকার জায়গায় মেধা, সময়ের জায়গায় জীবন এবং প্যালেসের জায়গায় মস্তিষ্ক পড়ি তাহলে হয়ত চিত্রটা আমাদের কাছে আরেকটু স্পষ্ট হবে। আমাদের অধিকাংশের মেধা সীমিত, সুতরাং সেটা খরচ করা দরকার খুব বুঝেশুনে, ব্যাবসায় টাকা লগ্নি করার মত করে, যেখানে মেধা খরচ করলে উত্তম প্রতিদান পাওয়া যাবে সেখানে। ক্ষণস্থায়ী জীবন আমাদের, কখন কোন ফুঁৎকারে নিভে যায় কেউ জানেনা। তাহলে আমাদের আসলেই কি সময় আছে ঘন্টার পর ঘন্টা সিনেমা টিভি দেখে, আজেবাজে ম্যাগাজিন পড়ে, চ্যাটিং কিংবা ফেসবুকিং করে জীবনের অমূল্য মূহূর্তগুলো নষ্ট করে ফেলার? অথচ এই সময় আর ফিরে আসবেনা কোনদিন! আর মস্তিষ্ক? সে তো আরেক বিশাল চ্যাপ্টার।
আমরা আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসগুলো তুলে রাখি আলমারীতে। সে আলমারী সাধারনত হয় বসুন্ধরার মত। এতে যতই জিনিস ঢোকানো হয় ততই যেন জায়গা বাড়ে। কিন্তু তাই বলে এই সুযোগের অপব্যাবহার করাও সঙ্গত নয়। অগোছালো আলমারীর ক্ষেত্রে দেখা যায় দরজা খোলার সাথে সাথে ঝাঁকে ঝাঁকে জিনিসপত্র যেন ‘আক্রমন কর!’ বলে ঝাঁপিয়ে পড়তে থাকে, কিন্তু তাদের আক্রমনের বূহ্য ভেদ করে কিছুতেই কাঙ্খিত বস্তুটি খুঁজে পাওয়া যায়না। অপরদিকে একটি গোছানো আলমারীতে হাত দেয়া মাত্র প্রয়োজনীয় বস্তুটি খুঁজে পাওয়া যায়। মস্তিষ্কের ব্যাপারটাও তেমনই। এতে বাছাই করে জিনিস রাখলে সুসজ্জিত ফাইল ক্যাবিনেটের মত প্রয়োজন হওয়ামাত্র কাঙ্খিত তথ্য বেরিয়ে আসে। অপরদিকে যে মস্তিষ্ক দুনিয়ার হাবিজাবি তথ্যে পরিপূর্ণ সেখানে দু’আ বলতে গেলে গান বেরিয়ে আসে। যেমন একবার এক পুলিশ অফিসার হাইওয়েতে প্যাট্রোল ডিউটিতে ছিলেন। দেখলেন, তাঁর সামনে দিয়ে উচ্চস্বরে গান বাজাতে বাজাতে দ্রুতগামী একটি গাড়ী চলে গেল। কিছুক্ষণ পর তিনি সামনে গিয়ে দেখলেন গাড়ীটি অ্যাকসিডেন্ট করেছে। গাড়ীর ভেতর দুই তরুণকে দেখলেন তখনো প্রান আছে, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে ওদের বাঁচার সম্ভাবনা নেই। তিনি তাদের কালেমা পড়ানোর চেষ্টা করলেন, কিন্তু তাদের মুখ দিয়ে কিছুতেই কালেমা এলোনা, তারা যতবারই বলার জন্য মুখ খুললো প্রতিবারই তাদের মুখ থেকে কেবল গান বেরিয়ে এলো, এই অবস্থাতেই তারা মারা গেল। কি ভয়ানক মৃত্যু!
গানের ব্যাপারেও আছে আরেক বিশাল চ্যাপ্টার। সাধারনত মানুষ গান শোনার সময় কথাগুলো তেমন খেয়াল করেনা, কিন্তু কথাগুলো নিজের অজান্তেই ঢুকে যায় মাথার ভেতর, আর তারপর সেগুলো গুনগুন করে বের হতে থাকে সময় অসময়ে। যেমন একবার আমার এক বান্ধবীর বাবা সিরিয়াস অসুস্থ। সকালে ওকে ফোন করলাম জানার জন্য কি অবস্থা। বিকালে ওর বাসায় গিয়ে দেখি মন ভীষণ খারাপ। জিজ্ঞেস করলাম আঙ্কেলের অবস্থার অবনতি হয়েছে কি’না। বলল, না, অবস্থা তূলনামূলকভাবে ভালো। আশ্চর্য হলাম, তাহলে এত মন খারাপ কেন? বলল, ‘তোমার সাথে কথা বলার পর ফোনের পাশে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশপাতাল ভাবছিলাম আর কি যেন গুনগুন করছিলাম খেয়ালও করিনি। কিছুক্ষণ পর দেখলাম মেজ খালা সামনে দিয়ে যেতে যেতে প্রচন্ড সন্দেহ নিয়ে আমার দিকে তাকাচ্ছে। তখন খেয়াল করলাম আমি গাচ্ছি, ‘পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম, তবু বন্ধুভাগ্য হইলোনা’। কোথায় কখন শুনেছি, মাথায় বিঁধে গিয়েছে। কিন্তু খালা কি ভাবল? খালা ভাবল ফোনে আমি কোন ছেলের সাথে কথা বলেছি। তারপর মনের আবেগে গান ধরেছি। অথচ ওদিকে আমার বাবা হাসপাতালে শয্যাশায়ী। কি অসভ্য মেয়ে! এখন আমি যদি খালাকে বলিও যে আসলে ব্যাপারটা তেমন না - আমি কথা বলেছি তোমার সাথে, তোমাকে তো খালা চেনেই; যদি বলি আমি আসলে আব্বার কথা ভাবছিলাম; যদি বলি আমি জানিনা আমি কেন এত গান থাকতে ঐ গান গুনগুনাচ্ছিলাম - কে বিশ্বাস করবে আমার কথা?’
শুধু গানই নয়, অধিকাংশ আজেবাজে জিনিসই আমাদের মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে দীর্ঘ সময়। যদিও কোন বাজে দৃশ্য, বাজে কথা, বাজে ছবি, বাজে তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে মনকে কৃষঙ্গহ্বরে ঠেলে দেয়; কিন্তু পরবর্তীতে ওখানে থেকে বেরিয়ে এলেও এসব জিনিস মাথা থেকে বেরোতে চায়না সহজে, বরং বার বার ভেসে ওঠে মনের স্ক্রিনে আর পীড়া দিতে থাকে নিরন্তর। অদ্ভুত ব্যাপার হোল এই ধরনের জিনিসগুলো বার বার ঘটতে থাকলে এক সময় এগুলো আমাদের কাছে সহজ হয়ে যায়, হয়ে আসে স্বাভাবিকও। তখন এগুলো আর আমাদের পীড়াদায়ক মনে হয়না বরং আনন্দ দিতে থাকে। আনন্দময় জিনিস সহজেই আমাদের মন মগজ মস্তিষ্কে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে আমাদের মন এক সময় যেটাকে ঘৃনা করত সেটাকেই আলিঙ্গন করে নিতে প্রস্তুত হয়ে পড়ে। জ্ঞান পরিণত হয় কর্মে। মানুষের জীবনে বিনোদনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু সেটা নির্মল এবং বুদ্ধিবৃত্তিক হওয়াটাই বাঞ্ছনীয়, যেটা জীবনে আলোর বিস্তার ঘটায়, দূর করে অন্ধকার।
একবার এক ব্যাক্তি আমাকে বলেছিল, ‘আমি আমার সন্তানকে এমনভাবে বড় করতে চাই যেন সে নামাজী হয়, আবার গান বাজনাও পছন্দ করে’। কিন্তু দু’টো বিপরীতমুখী জিনিস কি একই হৃদয়ে ধারণ করা সম্ভব? একটি হোল স্রষ্টার সামনে অবনত হওয়া, আরেকটি হোল স্রষ্টার প্রদত্ত উপহারের প্রদর্শনেচ্ছা। একটির জন্য প্রয়োজন বিনয়, আরেকটির জন্য অহংকার। কি করে সমন্বয় হবে এই দুটির? আর কিভাবেই বা দু’টোর মধ্যে সুসম ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে একজন মানুষ যে সৃষ্টিগতাবেই দুর্বল, যার পেছনে লেগে রয়েছে শয়তান এবং যার ভেতরে অবস্থান করে নিরন্তর তাড়না দিয়ে যাচ্ছে নাফস?
এখানেই আমরা ভুল করি। আমরা সেটাই করি যেটাকে ইংরেজীতে বলে to bite more than one can chew. আমরা তলস্তয়ের সেই লোভী কৃষকের মত করতে চাই যে বার্বারদের কাছ থেকে বেশি জমি পাওয়ার আশায় ভোরবেলা লাঙ্গল নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিশাল এলাকা নিয়ে আয়তক্ষেত্র আঁকতে যায়। কিন্তু সন্ধ্যায় সে মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়ে আয়তক্ষেত্র পুরো হবার মাত্র কয়েক ফুট বাকী থাকতেই। তাকে কবরস্থ করতে প্রয়োজন হয় মাত্র ছয়ফুট জমি।
জীবন সীমিত, মেধা সীমিত। সুতরাং আমাদের ঘর পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরী। আমাদের সময় সেই জ্ঞানের পেছনেই ব্যায় করা বুদ্ধির কাজ যা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে, সাফল্য অর্জন করতে সাহায্য করবে; সেই জ্ঞানকেই আত্মস্থ করার পেছনে মেধা ব্যায় করা উচিত যা আমাদের জন্য কল্যাণকর; সেই জ্ঞানেরই অনুশীলন করা প্রয়োজন, এমনভাবে চর্চা রাখা প্রয়োজন যেন দরকার হবার সাথে সাথে তা এসে বলে, ‘হুজুর, বান্দা হাজির’। বাকীটুকু এক জীবনে অর্জন করা যাবেনা, প্রয়োজনও নেই। একে প্রলোভন মনে করে এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
বিষয়: বিবিধ
২৬১০ বার পঠিত, ৫৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সবকিছু শিখার প্রয়োজন নাই কিন্তু জানার প্রয়োজন মনে হয় আছে। সিমিত মেধার ব্যায় যদি আমরা শুধু একটি ক্ষেত্রে করি তাহলেও কিন্তু একটা সমস্যা হবে যে পৃথিবীর বাকি মানুষ থেকে বিচ্ছিন্নতা। বার্নাাড শ সম্পর্কে একটা গল্প আছে যে ইংল্যান্ড এর মানুষ হয়েও তিনি ক্রিকেট সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাকে বলা হলো ইংল্যান্ড টেষ্ট জিতেছে তিনি জিজ্ঞেস করলে তারা কি টেস্ট করছিল।
মানুষের মেধা যেন প্রকৃত কাজে ব্যায় হয় সেই বিষয়ে চেষ্টা করা উচিত। শান্তিনিকেতনে নাকি একজন ছাত্র কে তার মেধা অনুযায়ি একেক বিষয় একেক ক্লাসে পড়ান হতো। যাতে সে সব বিষয় শিখতে পারে মেধামত। এমন শিক্ষা ব্যাবস্থা কিন্তু আমাদের কওমি মাদ্রাসার ক্ষেত্রেও ছিল। কিন্তু এখন তো সব বিষয়ে এ+ পাওয়া কেই মেধার প্রমান মনে করা হচ্ছে।
মেধার ব্যাপারে সেটাই বলছিলাম। মেধা নাম্বার দিয়ে যাচাই করা যায়না। একজনের আই কিউ অনেক হতে পারে, অথচ হয়ত সে সামাজিকতায় দক্ষ নয়। আবার অনেক গ্রাম্য গৃহবুধূ আছেন যাদের বযাপারে রাডিয়ার্ড কিপ্লিং লিখেছেন, অনেক নারীকেই দেখা যায় ধান ঝেড়ে জীবন ফালা ফালা করে ফেলতে যারা হয়ত অন্য স্থানে এবং যুগে জন্মালে হতে পারত একেকজন জোন অফ আর্ক!
কিন্তু কিছু কিছু মানুষ আছেন যাদেরকে এই কথাটা কিছুতেই বোঝানো যায় না। তারা প্রশ্ন করে করে আপনার মাথা নষ্ট করে দেবে কেন আপনি সেই জিনিস নিয়ে ভাববেন না যা আপনার দরকার নেই! আমি কোন ধরণের খেলা দেখিনা। BMW বা এমন কিছু একটা জিনিস মনেহয় আছে ক্রিকেট খেলায়। একদিন আলোচনার সময় আমার এক স্টুডেন্ট এই শব্দটা বললে আমি বললাম এটা কি জিনিস? ও হাসতে হাসতে বলল, হায় আল্লাহ! ম্যাম আপনি এটাই জানেন না? আমি বললাম, উহু জানি না। এবং না জানার কারণে আমি লজ্জিতও না। জানতে হবে এমন প্রয়োজনও বোধ করছি না।
তবে হ্যা সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুন জ্ঞান অবশ্যই থাকা উচিত একজন মানুষের ভেতর। এখন কার কতটুকু এবং কি কি জ্ঞান দরকার স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্য সেটা প্রত্যেকে নিজ নিজ লাইফ স্টাইল অনুযায়ী নির্ধারণ করে নেবে।
তবে একটি বিষয় আছে যেটা নিয়ে জ্ঞানার্জনের কোন লিমিটেশন নেই। যত জানা যায় ততই মঙ্গল। সেটা হচ্ছে শরীয়ত বিষয়ক জ্ঞান। কেননা শরীয়তের ব্যাপারে অল্প বিদ্যা শুধু ভয়ংকরই না। অতি অতি মাত্রায় ভয়ংকর। নিজের চাইতেই এমন অল্প বিদ্বানদের কারণে অন্যের জীবনযাপন কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠে।
ইয়া বড় হয়ে গিয়েছি মন্তব্য। সরি...! অনেক অনেক ভালো লেগেছে আপিজ্বি লেখাটা। জাযাকিল্লাহ।
ক্রিকেটে!!
এটা একটা জার্মান গাড়ি!!!
একটা কেীতুক আছে। হিটলার সকালে অফিসে যাওয়ার সময় দেখরেন একটা মাঠে কয়েকটা ছেলে খেলছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন তারা কি খেলছে। বলা হলো ক্রিকেট। আবার আফিস থেকে আসার সময় দেখলেন তারা তাই খেলছে। তিনি জিেজ্ঞেস করলেন এখনও খেলছে কেন। বলা হলো এই খেলা সারাদিন ধরে চলে এবং পাঁচদিন পর্যন্ত চলতে পারে। হিটলার রেগে গিয়ে বললেন এভাবে খেললে মানুষ কাজ করবে কখন? তাই তিনি জার্মানিতে ক্রিকেট নিষিদ্ধ করে দিলেন! আর সেই জার্মানির গাড়ির সাথে ক্রিকেট এর তুলনা!!!!
এনিওয়ে, আমি মোটেই লজ্জিত নই। হিহিহি...কিন্তু আমার মাথায় একবারও আসেনি আমি গাড়ির নাম লিখছ.... হিহিহিহিহি..।
ব্যাপার না। যা আমরা দু'জনেই বললাম, যেটা অপ্রয়োজনীয় সেটা না জানায় লজ্জা নেই। এবং যে কথাটা অত স্পষ্ট করে বলিনি কিন্তু বোঝাতে চেয়েছি তা তু্মি বলে দিলে।
অনেকেই এত কষ্ট করে লেখা একটা পোস্টে মন্তব্য করে 'ভাল লাগল, ধন্যবাদ'। মাঝে মাঝে এটা হতেই পারে। সময়টা কারো কারো জন্য না হলেও অনেকের জন্য একটা বিশাল ফ্যাক্টর। কিন্তু প্রতিবার এই ধরনের মন্তব্য দেখলে জানতে ইচ্ছা করে কি ভাল লাগল এবং কিসে ধন্য হোল। :
তোমার মত বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্য প্রমাণ করে লেখাটা তুমি আসলেই পড়েছ, এটা নিয়ে ভেবেছ এবং নিজের মতামত প্রকাশ করেছ।
তুমি নিজে একজন লেখিকা। তুমি জানো এই ধরনের একটি মন্তব্যের জন্যই আমরা লিখি। তাই অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা তোমার প্রতি।
দু'আ কোর আপু
আমার জানা মতে রেহনুমা বিনত আনিস আপুর প্রিয় সাবজেক্ট সাইকোলজি এবং বিজ্ঞান, কিন্তূ উনি ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন।
হুমায়ন আহম্মেদ ছিলেন কেমিস্ট্রির শিক্ষক কিন্তূ আমরা জানি উনি স্বাধীনতা উত্তর বাংলার সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যিক।
আপনার এই থেওরি যদি নিউটন ফলো করতেন তবে তিনি আজ নিউটন হতে পারতেন না। বিজ্ঞান এমন কোন শাখা কি আছে যেখানে নিউটনের অবদান নেই?? ফিজিক্স , কেমিস্ট্রি, এভেন ম্যাথম্যাটিকস ।
তিন টা উদাহরণ দিলাম, কারণ সাইকোলজির একটা থিম হল “ উপদেশ অপেক্ষায় দৃষ্টান্ত ভাল” (Example is better than advise )
( আর হিটলার বেঁচে থাকলে কিন্তু আপনি আজ জার্মানির নাগরিকত্ব পেয়েই যেতেন । হাঁ হাঁ হাঁ ----)
ধন্যবাদ রেহনুমা বিনত আনিস আপু এবং আফরোজা আপু । আর ও ধন্যবাদ আমার প্রিয় আরোহী রায়হান প্রিয়ন্তি আপুকে ।
আমার প্রিয় কাল্পনিক চরিত্র নিয়ে টানাটানি! বিদ্রোহ করব না আন্দোলন করব সে সিদ্ধান্তে আসতে আসতে মন্তব্য চাই।
ছোটখাটো কিছু বিষয়ে একমত না হলেও পোষ্টের মরালের প্রতি একমত এবং সম্মান দেখিয়ে, সেই দ্বিমত গুলো বললাম না। ভাল লেগেছে শার্লক হোমস থেকে টার্ন করে লেখায় যে নতুন Dimension দিয়েছেন ।
তার পরও একটা কথা বলব, যে কোন একটি বিষয়ে আপনি বিশেষজ্ঞ হন কিন্তূ অন্যান্য বিষয়েও বেসিক জ্ঞানের স্কেলটা অন্তত কাঙ্ক্ষিত লেভেলে থাকা উচিৎ। যেটা আপনাকে সুন্দর এবং পরিপাটি জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করবে। ধন্যবাদ আপু । মহান আল্লাহ্র দরবারে আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া থাকল।
আপনি লেখাটার যে জায়গাগুলোতে দ্বিমত পোষণ করছেন সেটা আপনি আমার লেখার উদ্দেশ্য বোঝেননি এবং আফরোজা বুঝেছে বলেই। কোন বিষয়ে বেসিক জ্ঞান থাকলে তো সেটা অ্যাডভান্টেজ, তাই না? কিন্তু তাই বলে কোন নায়িকা হিন্দি জানেনা, কার সাথে কার লাইন, কোন সিরিয়ালের কে মারা গেল, কোন গান কত জনপ্রিয় ইত্যাদি টাইপের জ্ঞান আমাদের কোন প্রয়োজন নেই। তাছাড়া রাসূল (সা) এর সাহাবীগণ শুধু শারীয়তের জ্ঞানকেই জীবন চলার জন্য যথেষ্ট মনে করেছেন এবং জান্নাত কিনে নিয়েছেন। পদার্থবিদ্যা না জানায় তাঁদের কারো জান্নাতের দরজা বন্ধ হয়ে যায়নি। আমাদের কথার ভিউপয়েন্ট এটা
এবার নিশ্চয়ই আর কোন দ্বিমত নেই
আর আপনি যেটা বললেন" কোন নায়িকা হিন্দি জানেনা, কার সাথে কার লাইন, কোন সিরিয়ালের কে মারা গেল, কোন গান কত জনপ্রিয় ইত্যাদি টাইপের জ্ঞান আমাদের কোন প্রয়োজন নেই।" আপু এটা জ্ঞান না, জ্ঞান এর বিষয় ও নয়। তা হলে এটা কি ??
এটা হল information. আর হা এই সব ফালতু বিষয়ের information collect করা জন্য সময় ব্যয় না করাই ভাল।
আপনার ইংরেজীর জ্ঞান যদি আমার আরবীর জ্ঞানের মত হয় তাহলে এই তথ্যটা জ্ঞানের পর্যায়ভুক্ত হবে, আর যদি হাফিজ সাহেবের আরবীর জ্ঞানের সাথে তুলনা করি তাহলে এটা নেহায়েত একটা information
সুতরাং কোনটা জ্ঞান এবং কোনটা তথ্য সেটা আপেক্ষিক, অনেক ক্ষেত্রে একই বসুত্র প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির তফাত। আপনার কাছে পদার্থবিদ্যার বেসিক জ্ঞান জরুরী। সাহাবীদের মধ্যে খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) ছাড়া কেউ পদার্থবিদ্যা নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন বলে জানা নেই, অথচ অনযান্য সাহাবীদের তুলনায় তিনি ছিলেন অনেকখানি পিছিয়ে।
যাই হোক, আমরা পরসপরের দৃষতিভিঙ্গির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে জ্ঞান এবং তথ্য উভয়ক্ষেত্রে যার যেটা প্রয়োজন নেই সেটা বাদ দিতে পারি, এটাই মূলকথা
আপনার চিন্তাশীল মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
হজরত আলী (রাঃ) একজন ভাল রসায়নবিদ ছিলেন, মর্যাদার দিকদিয়ে উনি মনেহয়----১০জন জান্নাতবাসীর একজন (৪র্থ স্থানে) ছিলেন।
"কোনটা জ্ঞান এবং কোনটা তথ্য সেটা আপেক্ষিক" আমি বলি এখানে ব্যাখ্যা করার মত পার্থক্য বিরাজ মান। যেমনঃ অভাব এবং চাহিদার মধ্যে পার্থক্য , যেমন পাওয়ার এবং এনার্জি এর মধ্যে পার্থক্য,ঠিক তেমন।
যাক আপনাকে আর বিরক্ত করবনা। আগেও একমত ছিলাম এখন একমত হয়ে বলছি, পোষ্টের উদ্দেশ্যে এবং সারকথার সাথে আমি একমত।
আল্লাহ আপনাকে আর ভাল ভাল পোষ্ট লেখার তাওফিক দিন। আমীন।
লেখার মুল বক্তব্যের সাথে একমত হয়েও কিছু বলতে ইচ্ছে হয়-
আমাদের দেশে তৃণমূলে যাঁরা সামাজিক নেতৃত্ব দেন তাঁদের অ-নে-ক কিছুই জানতে হয়! প্রশাসনিক পদে নিয়োগের জন্যও "অলরাউন্ডার" খোঁজা হয়, "বিশেষজ্ঞ" দিয়ে তৃণমূলের প্রশাসন চলেনা! তাই "উচিত নয়" জেনেও "সব কাজের কাজী" হতে হয় বাধ্য হয়ে, সমাজের প্রয়োজনে! আর এটা হতে গিয়ে "বিশেষজ্ঞ" হওয়াটা দুঃস্বপ্নই রয়ে যায়!!
সত্য-ন্যায় সুবিচার প্রতিষ্ঠায় যে দলটি জাতির আশার আলো হাতে ঝড়ঝাপ্টা মোকাবিলা করে এগিয়ে চলেছে- তার সবচেয়ে বড় অভাবটাই হলো "অলরাউন্ডার" নেতৃত্ব, যেখানেই এটা পাওয়া গেছে সেখানেই অবস্থার উন্নতি হয়েছে!
"বিশেষজ্ঞ" অবশ্যই প্রয়োজন, কিন্তু "বিশেষজ্ঞ"র পরামর্শ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমাদের দেশে এখনো "অলরাউন্ডার" নেতৃত্বের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য!
যেদিন দেশের মানুষের ৮০-৯০ভাগ শিক্ষিত হয়ে যাবে তখন হয়তো "অলরাউন্ডার"এর প্রয়োজন ফুরাবে!
জবাব দিতে অনেক দেরী হয়ে গেল
কঠিন তত্ত্ব বুঝিলাম না, পড়িতেই দাঁত ভাঙ্গিয়া গেল। জানেন তো আমি একজন বিশেষজ্ঞ= বিশেষ+ অজ্ঞ
আচ্ছা, অলরাউন্ডার কিভাবে হতে হয় জানাবেন কি? ক্রিকেটেরটা বুঝি, জীবনে তো নিজের ঘরই ঠিকভাবে রাউন্ড দিতে পারিলাম না! আমার ভবিষ্যত অন্ধকার
আমি কি অন্যায় করলাম?
বিশ্বাস করেন আজ পর্যন্ত কাউকে মারিনি, এমনকি কামড়েও দেইনি
তবে আমার মতে যদ্দুর সম্ভব অনুমোদিত সব বিষয়ের উপরই বেসিক এবং প্রয়োজনীয় ধারনাটুকু কিন্তু থাকা চাই। যা নিজের দরকারে না লাগলেও অন্যদের হেল্প করতে তো কাজে লাগতে পারে। সময় থাকলে এতো সেলফিশ হতে যাবো কেন?
পাদটীকাঃ এই মন্তব্য মূলতঃ ঝগড়া > মানে ভীষণ তুমুল ঝগড়া বাঁধানোর উদ্দেশ্যে কৃত হইয়াছে..
আপনি ...
বুদ্ধিমতী।
"জীবন সীমিত, মেধা সীমিত। সুতরাং আমাদের ঘর পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরী। আমাদের সময় সেই জ্ঞানের পেছনেই ব্যায় করা বুদ্ধির কাজ যা আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে, সাফল্য অর্জন করতে সাহায্য করবে; সেই জ্ঞানকেই আত্মস্থ করার পেছনে মেধা ব্যায় করা উচিত যা আমাদের জন্য কল্যাণকর; সেই জ্ঞানেরই অনুশীলন করা প্রয়োজন, এমনভাবে চর্চা রাখা প্রয়োজন যেন দরকার হবার সাথে সাথে তা এসে বলে, ‘হুজুর, বান্দা হাজির’। বাকীটুকু এক জীবনে অর্জন করা যাবেনা, প্রয়োজনও নেই। একে প্রলোভন মনে করে এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।" যথার্থ বলেছেন। মেঘে মেঘে অনেক বেলা হলো। আর দেখুন, এই বয়সে এসে কেবল মাত্র দুয়া করতে শিখেছি, 'হে আল্লাহ আল কুুরআনের আলোয় আমার হৃদয় আলোকিত করে দাও।'
আপু, ব্যাপারটা এখানে কেমন যেন আনক্লিয়ার মনে হচ্ছে; গান-বাজনা পছন্দ করা প্রদর্শনেচ্ছা হবে কেন বা অহংকারের আকর হবে কেন বুঝে আসছেনা। মল্লিক ভাই, নাজিল অথবা কবি নজরুলের ভক্তিমূলক গানগুলো শুনলে তো আমাদের ঈমান বাড়ে বৈ কমেনা....। মনে আছে একবার বিশাল এক মাহফিলে, মল্লিক ভাইর গাওয়া 'দাও খোদা দাও হেথায় পূর্ণ ইসলামী সমাজ' গানটি শুনে উপস্থিত ৮০ ভাগ জনতারই চোখ দিয়ে দরদর করে অশ্রু ঝরছিল।
মন্তব্য করতে লগইন করুন