ছোট ছোট বালুকণা - ৫
লিখেছেন লিখেছেন রেহনুমা বিনত আনিস ২৬ অক্টোবর, ২০১৪, ০৮:৩৫:২১ সকাল
সামিয়া সিদ্ধান্ত নেয় এবার সাহস করে মাসরুরের সাথে কথা বলতেই হবে, আর এভাবে চলতে পারেনা। তবে বান্ধবী পরামর্শ দিয়েছে সুস্থিরভাবে কথা বলতে হবে, কারণ ঝগড়ার মুডে চলে গেলে দু’জনই কথা বলতে থাকে, কিন্তু কেউ কারো কথা শোনেনা। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে পাঁচ মিনিট ভেবে নেয় সামিয়া কিভাবে কথা শুরু করা যায়, তারপর দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করে। মাসরুর মাথা তুলেও তাকায়না। ঢোঁক গিলে সামিয়া। তারপর গলাটাকে যথাসম্ভব স্বাভাবিক করে বলে, ‘আপনার পড়া শেষ হলে একবার ভেতরে আসবেন প্লিজ। কথা আছে’।
মাসরুর অবাক হয়ে তাকায়, ‘কি কথা? এখনই বলতে পারো’।
সামিয়া মাথা দুলিয়ে বলে, ‘নাহ। আপনি শেষ করেই আসুন’।
মাসরুরকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায় সামিয়া। পাঁচ মিনিট পর দেখে মাসরুর এসে উপস্থিত। অভাবনীয় এই ঘটনায় বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে বেচারাকে।
দরজার দুই ইঞ্চি ভেতরে দাঁড়িয়ে মাসরুর জিজ্ঞেস করে, ‘কোন সমস্যা হয়েছে সামিয়া?’
সামিয়া মুচকি হেসে বলে, ‘আহা, এভাবে কি কথা বলা যায়? আসুন, এখানে এসে বসুন। নইলে যে চিৎকার করতে হবে!’
মাসরুর এসে বিছানার পায়ের কাছে বসে। সামিয়ার মাথায় দুষ্টুমী চাপে, বলে, ‘আরাম করে বসুন প্লিজ। ভয় পাবেন না, আমি কোন হিংস্র পশু নই যে সুযোগ পেয়েই শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ব’।
এবার মাসরুরের গম্ভীর মুখেও হাসি ফোটে।
সামিয়া এবার সিরিয়াস হয়ে বলে, ‘আমি বুঝতে পারছি আমি কিছু একটা অন্যায় করেছি, কোনভাবে আপনার মনে কষ্ট দিয়েছি। কিন্তু তাই বলে এভাবে দিনের পর দিন আপনি আমাকে চার্জ গঠন, তদন্ত বা সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া শাস্তি দিয়ে যাবেন এটাও তো কোন কাজের কথা না। আপনি যদি আমাকে খোলাখুলিভাবে বলতেন আমার কোন জিনিসটি আপনাকে কষ্ট দিয়েছে তাহলে আমি অন্তত নিজেকে সংশোধনের সুযোগ পেতাম। এটুকু অধিকার তো আমার থাকা উচিত, না’কি?’
মাসরুর অবাক হয়, ‘শাস্তি?!’
‘আমাদের বিয়ে হয়েছে আজ তিনমাস। আপনি আমার সাথে কাজের বাইরে ক’টা কথা বলেছেন? আমরা একসাথে কবে কোথায় বেড়াতে গিয়েছি? মারযান আজ জিজ্ঞেস করছিলো আমরা আলাদা থাকি কেন। আমি কোন উত্তর দিতে পারিনি, কারণ আমি নিজেই জানিনা ...’
মাসরুর মনের ভেতর কথাগুলো গুছিয়ে নেয়, তারপর ধীরে ধীরে বলে, ‘সামিয়া, বিশ্বাস কর, বিয়ের রাতেই প্রথম আমি বুঝতে পারি আমার কারণে তোমার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। কিন্তু তখন আমার আর কিছুই করার ছিলোনা, তোমার অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া। একদিন আগেও যদি তুমি আমাকে জানাতে তাহলে আমি নিজে তোমাকে আবদুল্লাহ ভাইয়ের সাথে বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু তখন আর আমার পরিবারকে এসব কথা জানানো সম্ভব ছিলোনা। তাই আমি চেষ্টা করেছি এখানে সবার সাথে যেন তুমি মিলেমিশে থাকতে পারো, এতে হয়ত তোমার এখানে মানিয়ে নেয়াটা সহজ হবে। ওদের আমি তোমার কষ্ট বোঝাতে পারতাম না, কিন্তু অন্তত চেষ্টা করেছি আমার নিজেকে তোমার ওপর বোঝা হিসেবে চাপিয়ে না দিতে ...’।
রাগে মুখ লাল হয়ে যায় সামিয়ার, ‘আপনি কি ভেবেছেন, ভেবেছেন কি আপনি? আবদুল্লাহ ভাইয়ের সাথে আমার প্রেম ছিলো? আমি আপনাকে আমার মনের কথা খুলে বললাম যেন আমাদের বন্ধুত্ব দৃঢ় হয়, আপনাকে আমার গোপন ইচ্ছার কথা জানালাম যা আমি কোনদিন আমার বাবামার সাথেও শেয়ার করিনি। আপনাকে উদাহরণ হিসেবে একজন চালচুলোহীনের কথা বললাম, যে এমন কেউ হলে হয়ত আমি তাঁর অভাব পূরণ করতে পারতাম, আর ওমনি আপনি ধরে নিলেন ...’
বেশি রেগে গেলে সামিয়ার মুখে কথা জোগায়না, মাসরুরের মনোযোগী ভঙ্গিতে কথা শোনা ওকে আরো ক্ষেপিয়ে তোলে, নিজের অক্ষমতায় চোখের কোণে জল জমতে থাকে ওর, কিন্তু সে দাঁতে দাঁত চেপে সামলাতে থাকে, এই মূহূর্তে কিছুতেই দুর্বলতা প্রকাশ করা চলবেনা।
মাসরুর সব শুনে বলে, ‘সরি, এখন বুঝতে পারলাম আমি তোমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করেছিলাম। কিন্তু তুমিও তো আমার অর্থনৈতিক অবস্থানের কারণে আমাকে ভুল বুঝেছ! তুমি আমাকে একজন মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন না করে টাকায় মেপেছ, যেন যার টাকা আছে তার আর কিছুর অভাব থাকতে পারেনা! সামিয়া, আবদুল্লাহ ভাইয়ের অনেক কিছুর অভাব ছিলো যা স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে। কিন্তু তুমি কি একবারও ভাবোনি প্রাচুর্যের মাঝেও আমার কিছু অভাব থাকতে পারে, একজন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন থাকতে পারে যার কাছে আমি আমার মনটাকে মেলে ধরতে পারি যেন সেখানে তুমি তোমার মমতার পরশ বুলিয়ে কষ্টগুলো মুছে দিতে পারো?’
সামিয়া মুখ নামিয়ে নীচুস্বরে বলে, ‘আমি আমার ভুলটা পরদিনই বুঝতে পেরেছি, আপনাকে না বুঝে কষ্ট দেয়ার জন্য প্রতিটা দিন অনুশোচনায় দগ্ধ হয়েছি, কিন্তু আপনার গড়ে তোলা প্রাচীর পেরিয়ে আপনার কাছে স্বীকার করতে পারিনি’।
কিছুক্ষণ দু’জনই চুপ। সন্দেহের ছোট ছোট যে বালুকণাগুলো এতদিন ওদের হৃদয়ের কোমল আঙ্গিনায় সুঁচের মত বিঁধে রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত করছিলো সেগুলো একে একে নিশ্চিহ্ন হতে থাকে। এই ক্ষতগুলো দুই হৃদয়ের মাঝে বন্ধনকে আরো মজবুত করে। কিন্তু অনেকেই বোঝেনা, অনেক সময় দাম্পত্য সম্পর্কের ভালো অংশটুকু আসে কিছু বেদনার পর। অনেকেই ভড়কে যায়। কিন্তু একটু ধৈর্য্য ধরতে পারলে সেই বেদনা মানুষকে নিজেকে চিনতে, পুণর্গঠিত করতে, পরস্পরকে বুঝতে এবং একজন আত্মপ্রত্যয়ী মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সাহায্য করে। দু’জনে পরস্পরের মন্দটুকু দেখে নেয়ার পর আর কিছুই তাদের পরস্পরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনা। নিকষ কালো আঁধার রাতের পরই ফুটে ওঠে ভোরের সোনালী আলো।
সময়টা উপযোগী নয় বুঝেও সামিয়া এতদিন চেপে রাখা কৌতুহলটা আর চেপে রাখতে পারেনা, ‘একটা জিনিস আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে। আপনি আমার মত একটা সাধারন আর বোকা মেয়েকে কি দেখে বিয়ে করেছিলেন বলেন তো? আপনি তো চাইলে নায়িকা বিয়ে করতে পারতেন!’
মাসরুর দুষ্ট হাসি হেসে বলে, ‘নায়িকা বিয়ে করলে তো তার সৌন্দর্য্য সবাই উপভোগ করত, আমি চেয়েছি আমার বৌয়ের সাহচর্য শুধু আমিই উপভোগ করব’।
তারপর বুঝানোর ভঙ্গিতে বলে চলে, ‘আমি চেয়েছি এমন একটা সহজ সরল মেয়ে যে আমার পরিবারকে ভালবেসে গ্রহণ করবে, যার পরিবারকে আমি গ্রহণ করতে পারব; যে আমাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে, যার কাছে আমি মনের কথা খুলে বলতে পারব; যে আমাকে আমার সমস্ত দৈন্যসহকারেই গ্রহণ করবে এবং আমাকে পরিপূর্ণ করে নেবে। আমি তোমার মাঝে এই যোগ্যতা দেখতে পেয়েছিলাম, তাই তোমাকে পেয়ে এত খুশি হয়েছিলাম’।
সামিয়ার চেহারায় বেদনার ছাপ ফুটে ওঠে, ‘বিনিময়ে আমি আপনাকে কষ্টই দিলাম!’
‘কই, নাতো! সামিয়া, অল্প বয়সে দুনিয়াদারীতে জড়িয়ে যাওয়ায় আমার মাঝে অনেক ত্রুটির বিস্তার ঘটেছিল। আমি একসময় নামাজের ব্যাপারে অনিয়মিত হয়ে পড়ি, তোমাকে দেখে আমি আবার নিয়মিত নামাজ পড়তে শুরু করি। কুর’আনের সাথে সম্পর্ক তো প্রায় তালাকের পর্যায়ে চলে যায়, তোমার সুমধুর তিলাওয়াত শুনে আমি আবার কুর’আনের কাছে ফিরে আসি। তোমাকে ইম্প্রেস করার জন্য মাস্টার্সে ভর্তি হলাম, নইলে যদি বল এই জামাই আমার চলবেনা! হা হা হা। কিন্তু আসল কথা হোল, তুমি আমাকে দুনিয়ার কাছ থেকে টেনে এনে একটি বৃহত্তর লক্ষ্যের দিকে ধাবিত হতে উদ্বুদ্ধ করেছ। আর এ’ সবই তুমি করেছ আমার সাথে বিশেষ কথাবার্তা না বলেই। তাহলে কল্পনা কর তো আমরা একসাথে হলে আরো কত কি করতে পারি!’
হাত বাড়িয়ে দেয় সামিয়া, ‘এবার বলুন, আমার সমস্ত দৈন্যসহকারে আপনি আমাকে একজন পরিপূর্ণ বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবেন কি’না যাকে আপনি মনের সব কথা খুলে বলবেন, যার ত্রুটিগুলো আপনি চুপ করে না থেকে সংশোধন করতে সহযোগিতা করবেন, যার কোন ব্যাপারে সন্দেহ হলে আপনি চুপ করে না থেকে তাকে জিজ্ঞেস করবেন?’
মাসরুর দু’হাত পেতে গ্রহন করে নেয় সামিয়ার বন্ধুত্বের আমন্ত্রণ। আকাশের তারারাও আনন্দে ঝিকমিক করে ওঠে ওদের মুখের হাসি দেখে।
(সমাপ্ত)
বিষয়: বিবিধ
২৩৫২ বার পঠিত, ৭৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
চার পর্ব পর্যন্ত খুব ভালো লেগেছে।
যাক , প্রতিটি শুরুর ই শেষ আছে , আবার একটি শেষ মানে অন্য একটির শুরু .... এই হিসেবমত আবার নতুন একটি মিষ্টি মধুর লেখা আমাদের পাওনা হয়ে রইলো , উঁহু .... না বলার কিন্তু কোনো সুযোগই থাকছেনা ! পরিশেষে , সুন্দর একটি পরিবারের সঙ্গে জুড়ে রাখার জন্য আপনাকে আমার হৃদয়ের আগল ভাঙ্গা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি , শ্রদ্ধেয়া আপুজ্বি !
আপা আমি একটা গল্প লিখা শুরু করেছি। আমার জন্য একটু স্পেশাল দুয়া করেন যেন তাড়াতাড়ি লিখে শেষ করতে পারি। আজ থেকে মনে হয় ব্লগে দেয়া শুরু করব। অলসতার জন্য লিখে শেষ করতে পারছিনা।
হবে আপা, ইনশা আল্লাহ আমার এই গল্পটা মাথা থেকে ডাউনলোড করতে বিশ বছর সময় লেগেছে। আপনার তো মাথা আমার মত ভোঁতা না, সুতরাং শীঘ্রই হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ
অনেক ধন্যবাদ। পরবর্তী গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।
"মাসরুর দু’হাত পেতে গ্রহন করে নেয় সামিয়ার বন্ধুত্বের আমন্ত্রণ। আকাশের তারারাও আনন্দে ঝিকমিক করে ওঠে ওদের মুখের হাসি দেখে।"
গল্পের উপসংহারটি যেমন সুন্দর এবং শিক্ষনীয় হয়েছে তেমনি গল্পের সমাপ্তিটাও এমন নির্মল, পরিপাটি ও চমৎকার হয়েছে যে, একবার ভাবলাম মাসরুর এর স্থানে যদি সে না হয়ে আমি হতাম, অন্ততঃ কিছুক্ষণের জন্য হলেও....(হা, হা, হা, হা,বুড়ো বয়সে ভীমরতি )
তারপর যে যার পছন্দমত কল্পনা করে নিক, কি বলেন?
তবে আমার মতো শেষের দিক থেকে পড়া শুরু করলে আমার কমেন্ট 'কপি-পেস্ট' মনে হতো না উল্টো অরিজিন্যালটাকেই কপিপেস্ট মনে হতো তখন @যাত্রী ভাপু
একটা উপনাম আপনার সাথে বেশ মানায়, সেটা হচ্ছে "অলসের রাজা"।
আচ্ছা, ভাপুনি..... "অলসের রাজা"টা যে আমার সাথে মানায় ...... আপনি কিভাবে বুঝলেন? আমি কি অলস @যাত্রী ভাইয়াপুনি
যে কমেন্টার প্রতিমন্তব্যে লিখছি সেটাও একটা অলস টাইপের মন্তব্য।
আপনার প্রায় সব লেখাই পড়েছি।
বারাকাল্লাহু ফীকি।
দোয়ার ফরিয়াদ রইলো আপু। মানে এখনও শুভ কাজটি হয়নিত, তাই।
থাক! আরো সুন্দর সুন্দর গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।
গল্পের প্লটটি যেহেতু বিশ বছর ধরে তৈরি হয়েছে, ঘটনাটাও সত্যি তাই শুভকামনা রইলো গল্পের নায়ক, নায়িকা এবং পরিবারের সকলের জন্য
আমিও আপনার সাথে একমত।খুনসুটি,মান,অভিমান,...টাইপের কিছু না থাকায় গল্পটা বাস্তব হয়েছে।এই ছেলেমানুষি ব্যাপারগুলা সাধারনত সিনেমা,উপন্যাসে দেখা যায়।
বাস্তবতার কঠিন সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার জন্য শুকরান আপুমনি।
তাছাড়া আমি খুব রসকষহীন মানুষ। নিজেই কোনদিন এসব করতে পারলাম না, অন্যদের দিয়ে করাব কিভাবে?
লাগকরছি পড়বো না
আমিও আপুর লেখায় এরকম অনেক বিষয় খেয়াল করেছি। তাই পড়তে পারি সবাইকে নিয়ে। নির্মল আর পরিচ্ছন্নতার ছাপ রয়েছে।
এই গল্পে আরও এক জায়গায় খেয়াল করেছি যে, "মাসরুর ওয়াশ্রুমে গেলো ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করতে।" বেশ দারুন বিষয় তুলে ধরেছেন।
অধিকাংশ পরিবারেই এই জিনিস খুঁজে পাওয়া ভার। কোথাও থেকে এসে বা যাওয়ার আগে এমনভাবে ড্রেস আপ করে যেন লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বসে আছে। ছেলে বলে কী আর লজ্জা থাকতে নেই?
আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই গল্প থেকে মুয়ামালাতের বিষয়ে শিক্ষা নেওয়ার তাওফিক দিন। আমীন।
আল্লাহ আমাদের সুন্দর মানুষ হবার তাওফিক দিন কারণ আল্লাহ নিজে সুন্দর এবং তিনি সুন্দর ভালবাসেন
প্রথমেই একগাদা ধন্যবাদ জানাই, গল্প ভালো হয়েছে সেজন্য নয় কিন্তু, সে'তো হওয়ারই কথা... বরং দু'জনে মিলে পুরোটা পড়ে রোমান্টিক স্মৃতিচারণের সুযোগ করে দেয়ার জন্য! একটুকরা অতীত উড়ে এসে তার সুগন্ধ রেখে গিয়েছে আমাদের মাঝে...
তারপর, কিছুটা বাস্তবের ভিত্তিভূমিতে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করি। বড্ড ভালো মেয়ে সামিয়া কিন্তু খুব সেনসেটিভ সময়ে একটি বড় ধরণের ভুল করেছিলো, আর ছেলেটিও তিন তিনটি মাস দুরে থেকে বকা খাবার মত কাজই করেছে। আমাদের অভিজ্ঞতা কিন্তু বলে খোলামেলা কথারও বুদ্ধিমত্তার আগল থাকা চাই, আবার দূরে দূরে থেকে কোন এক ম্যাজিক মোমেন্টের অপেক্ষা করাটাও বোকামি। গল্প, কবিতা আর উপন্যাসে "অভিমান" নামক জিনিষটা সাহিত্যরস যতই ঘন করে তুলুক না কেনো, বাস্তবে জীবনে তা কেবল জটিলতার মেঘকেই ঘনঘোর করে তোলে...
কথাগুলোও আসলে লেখিকার জন্য প্রযোজ্য হয়তো নয়, কারণ অনুমান করা কঠিন নয় এসব দাম্পত্যের হাতের পাঁচ আপনার অগম্য নয়। আসলে আপনার মুগ্ধ পাঠক পাঠিকাদের অনেকেই হয়তো জীবনের শিক্ষা নেবে এখান থেকে- তাদের জন্যই মূলতঃ বলা।
আর, আমার মত মন্তব্যসমেত সবটুকু একদমে পড়ার মত একগাদা পাঠকপাল সৃষ্টি- সে কৃতিত্বটুকু আপনার পাওনা!
যে আল্লাহর কাছে যা চায় আল্লাহ তাকে তা মিলিয়ে দেন। আপনাকে খুঁজছিলাম মনে মনে, কিন্তু যোগাযোগের কোন মাধ্যম তো নেই। এখানেও দেখিনা বহুদিন। আল্লাহ কি অদ্ভুতভাবে মিলিয়ে দিলেন, তাও আমার ব্লগে! আলহামদুলিল্লাহ!
ভাই, কষ্ট করে এই ঠিকানায় একটু যোগাযোগ করবেন প্লিজ? আপনার সাথে জরুরী দরকার।
আসসালামু আলাইকুম
আশা করি আমাদেরকে আরো কিছু জীবন ঘনিস্ট লিখা উপহার দিয়ে উপকৃত করবেন। যাযাকাল্লাহ। মহান রব আপনার সময় শ্রম ও মেধায় বরকত দিন। আমাদের জন্য মানবতার কল্যাণে যথোপযুক্ত লিখার তৌফিক দিন। শুক্রিয়া আপুজ্বী....
মন্তব্য করতে লগইন করুন