চার কন্যা
লিখেছেন লিখেছেন রেহনুমা বিনত আনিস ১২ অক্টোবর, ২০১৪, ১১:১৫:২০ সকাল
বহুদিন পর ওরা চার বান্ধবী একত্রিত হোল। হিসেব করলে দেখা যায় সালমার বিয়ের পর এই প্রথম। এর মধ্যে হয়ত আরিফার সাথে মুনিয়ার দেখা হয়েছে বা সালমার সাথে মিলির, কিন্তু চারজনের একসাথে দেখা হয়নি। মিলির ড্রয়িং রুমে বসে গল্প করছে চার বান্ধবী। দেখে মনে হচ্ছে যেন চারটা রঙ্গিন প্রজাপতি। কিন্তু ওদের সাথে কিছুক্ষণ বসলে একজন সম্পূর্ন অপরিচিত মানুষও বলে দিতে পারবে স্বভাব এবং চাল চলনে ওরা প্রত্যেকেই খুব ভিন্ন প্রকৃতির। মিলি খুব স্টাইলিশ, ওর ঘরবাড়ী থেকে পোশাক আশাক চলন বলন সবই কেতাদুরস্ত। সালমা একটু লাজুক ধরনের, পোশাক আশাকে রুচিশীল এবং শালীন, কথা বলে থেমে থেমে যেন একটু এদিক সেদিক হলেই পৃথিবীর ভারসাম্য ভেঙ্গে পড়বে। মুনিয়ার পোশাক আশাক কথাবার্তা সবই একটু উগ্র মেজাজের। আরিফা প্রচন্ড শান্ত, ভদ্র, চুপচাপ একটা মেয়ে যাকে দেখে মনে হয় পৃথিবীর সবকিছু থেকেই একটা সুন্দরের নির্যাস বের করে আনাই ওর জীবনের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য। কিন্তু এই আরিফাই সালমার বিয়ের সময় কি না করেছে যেন সালমা এখানে বিয়ে না করে! অথচ মিলি আর মুনিয়া তখন পাশে থেকে সাহস জুগিয়েছে।
একই পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন মানুষ ভিন্ন ভিন্ন আচরন করে। কার আচরন কেমন হবে তা নির্ভর করে ঐ পরিস্থিতির ব্যাপারে তার দৃষ্টিভঙ্গি, অভিজ্ঞতা বা জানার পরিধির ওপর। কোন পরিস্থিতে কারো রিঅ্যাকশনের ওপর নির্ভর করে একই ব্যাক্তিকে এক সময় আদর্শ এবং অন্য সময় জঘন্য মনে হতে পারে। ব্যাপারটা বুঝতে সালমার দু’বছর সময় লেগেছে। তাই আজ দু’বছর পর আবার চার বান্ধবীর মিলিত হওয়া, একত্রে বসে গল্প করা, খাওয়া দাওয়া। বান্ধবীদের পুণর্মিলনী উপলক্ষ্যে মিলি আজ ওর স্বামীকে ছুটি দিয়েছে যেন ওদের আলাপচারিতায় কেউ বিঘ্ন না ঘটায়। সে গিয়েছে তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপের এক পর্যায়ে বান্ধবীদের কথাবার্তা এসে ঠেকল বিবাহিত জীবনের প্রসঙ্গে।
মিলির বিয়ে হয়েছে তিন বছর, আরিফার দেড়। মুনিয়া এখনো প্রেম করে, কিন্তু এক জায়গায় এসে স্থির হতে পারছেনা, তাই বিয়ে জিনিসটা এখনও সুদূরপরাহত মনে হচ্ছে। সালমার বিয়ে আগে হলেও, আরিফার বিয়ের সবকিছুই যেহেতু স্বচ্ছভাবে ঘটেছে, জনগণের আগ্রহ স্বভাবতই সালমার বিবাহিত জীবনের খুঁটিনাটি জানার প্রতি। মিলি আর মুনিয়ার সাগ্রহ প্রশ্নের উত্তরে সালমা শুধু আমতা আমতা করছে। আরিফা চুপচাপ, যেহেতু সে একবার কথা বলতে গিয়ে শত্রু হয়েছে। আচমকা সালমার চোখের কোণ বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগল, কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে এলো। মিলি চা বানাতে উঠে গেল। মুনিয়া গা ঘেঁষে বসে সান্তনা দিতে লাগল। আরিফা উঠে চলে গেল বারান্দায়।
কিছুক্ষণ পর মুনিয়া উঠে মিলির কাছে চলে গেল সাহায্য করার বাহানায়। তারপর ফিস ফিস করে বলতে লাগল, ‘জানিস, শাহেদ নাকি সালমাকে নিয়মিত মারধোর করে! ছিঃ! এত্ত সুন্দর আর স্মার্ট একটা ছেলে কি’না ...!’ মিলি মাঝখানে থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘থাক , থাক। আমি এসব কথা শুনতে চাইনা। শাহেদের কি টাকার অভাব, না বাড়িগাড়ীর? গিয়ে দেখ, সালমারই হয়ত কোন সমস্যা! আমি বাপু, নিজের জীবন নিয়ে বেশ আছি। অন্যের ঝামেলা মাথায় নেয়ার আমার কোন ইচ্ছে নেই। তোরও নেই অবশ্য। তোর দরকার বদনাম করা। আরিফা শুনবেনা, তাই আমার কাছে এসেছিস। লাভ নেই রে বন্ধু। আমিও শুনতে ইন্টারেস্টেড না। এসব শুনলে আমার মাথা ব্যাথা করে!’ মুনিয়া এ’ কথা শুনে মিইয়ে গেল।
ওদিকে সালমা হাঁটি হাঁটি পা পা করে বারান্দার দিকে এগিয়ে গেল। ওর পায়ের শব্দ শুনে আরিফা চকিতে চোখের পানি মুছে হাসি হাসি মুখ করে ফিরে তাকালো। সালমা এগিয়ে গিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবে বলল, ‘জানিস আরিফা, তুই যখন আমাকে বার বার বলছিলি শাহেদকে বিয়ে না করতে তখন আমার কি মনে হয়েছিল?’
‘কি?’
‘ও যেহেতু এত সুন্দর, পয়সাওয়ালা, লেখাপড়া জানা, স্মার্ট, আবার তোদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ড, নিশ্চয়ই তুই নিজেই ওকে বিয়ে করতে আগ্রহী। তাই তুই আমাকে বিয়ে করতে বাঁধা দিচ্ছিলি’।
আরিফা কোন উত্তর দিতে পারলনা, ওর বিস্ফারিত নেত্র দু’টোই বলে দিলো যা বলার। সে সামনে তাকিয়ে কিছুক্ষণ ভাবল। তারপর মনের ভাবনাটা গুছিয়ে নিয়ে বলতে শুরু করল, ‘এজন্যই বুঝি তোর মত এত শান্ত শিষ্ট মেয়েটা এত ডেস্পারেট হয়ে উঠেছিলো শাহেদকে বিয়ে করার ব্যাপারে! পাগলি! শাহেদের পরিবার আমাদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ড বলেই আমি জানতাম ওর কীর্তিকলাপের ব্যাপারে। কিন্তু এগুলো জনসমক্ষে আলাপ করা আমার কাছে অন্যায় মনে হয়েছে। তাই আমি তোকে বার বার তোর বাবামার কথা ভাবতে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। বাবামা এত কষ্ট করে আমাদের জন্ম দেন, লালন পালন করেন, আমাদের স্বপ্নের পেছনে নিজেদের জীবনের সব স্বপ্ন কোরবানী করে দেন, এটুকু অধিকার তো ওদের থাকা উচিত যেন আমরা তাদের বাদ দিয়ে আমাদের জীবনের বৃহৎ পরিকল্পনাগুলো না সাজাই! আর বিয়ে তো জীবনের মেজর সিদ্ধান্তগুলোর একটা। কিন্তু তুই কখনো আমার কথা বুঝত পারিসনি। হয়ত তোর বয়স কম ছিলো, ইমোশন ছিলো বেশি। হয়ত আমার উচিত ছিলো শাহেদের ব্যাপারে তোর সাথে খোলাখুলিভাবে আলাপ করা, কিন্তু সেক্ষেত্রে মিলি আর মুনিয়াও জানত, আর মুনিয়া জানা মানে কি তা তো বুঝিসই! কিন্তু এটুকু মনে রাখিস, তোর কোন ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বা তোকে বঞ্চিত করার জন্য আমি বিয়েতে বাঁধা দেইনি’।
সালমা মৃদু হাসে, ‘এখন বুঝতে পারছি। কিন্তু এখন বুঝে কি হবে?’
আরিফা আশান্বিত হয়ে তাকায়, ‘সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ হোল সমস্যা চিহ্নিত করা। সমস্যার প্রকৃতি বুঝতে পারলে সমাধানের জন্য ব্যাবস্থা নেয়া যায়’।
এবার সালমাও যেন কিছুটা আশার আলো দেখতে পায়। আরিফার হাত দু’টো জাপ্টে ধরে বলে, ‘আমাকে সাহায্য কর বন্ধু! আমি একটা সুস্থ, স্বাভাবিক, সুখী জীবন চাই!'
মাথা ঝাঁকায় আরিফা, ‘চল, চেষ্টা করে দেখি। সমাধান হোক বা না হোক, আমি আছি তোর পাশে’।
আরিফা জানে হয়ত এই সমস্যার সমাধান হবেনা, হয়ত হবে, হয়ত সালমার সমস্যা কাঁধে নিতে গিয়ে কিছু মানুষের সাথে ওর সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, হয়ত সমস্যা সমাধানের পর এই সালমাই ওর পিঠে ছুরি বসাবে – কিন্তু কিছু কিছু মানুষ এমনই হয় যারা অন্যের বিপদ দেখে চুপ করে বসে থাকতে পারেনা, তা নিয়ে হাসতে বা গল্পগুজব করে উড়িয়ে দিতে পারেনা। এই ন্যাড়ারা বার বার বেলতলায় যায়, বার বার ন্যাড়ামাথায় বেলের বাড়ি খায়, তবু আবার কাউকে বিপদে পড়তে দেখলে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার জন্য সময় ব্যায় করতে মনে থাকেনা। আরিফা তাদেরই একজন। এই ন্যাড়ারা যুগে যুগে বেঁচে থাকুক, ওদের কারণেই হয়ত পৃথিবীটা স্বার্থপরতার কালো মেঘের ফাঁকে ফাঁকে সূর্য কিরণ পেয়ে হেসে উঠবে মাঝে মাঝে।
বিষয়: বিবিধ
২০১১ বার পঠিত, ৫৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ আপনার এই কথা অনুধাবন করতে পারবে না। আন্তরিক সেই ব্যক্তিটি সর্বদা মানুষের অছন্দের হয়ে যায়, অথচ তার আন্তরিকতাই সঠিক ও বস্তুনির্ভর ছিল। সুন্দর গল্পটির জন্য অনেক ধন্যবাদ
প্রথম মন্তবযের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
মন্তব্য নিয়ে আসছি , একটু পরেই .....
ভয় পাচ্ছি, রেজাল্ট কি হয়!
স্বার্থপরতার এই যুগে ত্যাগী মানুষের দেখা পাওয়া এমনিতেই শক্ত , তার উপর অকৃতজ্ঞ ও কৃতঘ্ন মানুষ তো অগুণতি ! সেখানে আরিফার মত মেয়েরা সংখ্যায় কম হলেও সমাজে তাদের উপস্থিতি সদা উজ্জ্বল। কোনো কিছুর বিনিময় প্রত্যাশায় নয় , মানুষ হিসেবে মানবিকতার দায় পরিশোধের খাতিরেই এদের সমস্ত আত্মত্যাগ। আপনার গল্পে এই চরিত্রটি অসাধারণ লেগেছে আমার !
আপু , আরেকটু জানতে চাই , এটি কি একটি সিরিজ ?
আসলে মাথায় ক'দিন ধরে অন্য একটা লেখা ঘুরছে। সময় পাচ্ছিনা বলে মাঝখানে এটা লিখে ফেললাম। সিরিয়াস লেখায় সময় বেশি লাগে, মেধা কম তো!
হুমম, আরিফার মত মানুষদের আমি প্রচন্ড শ্রদ্ধা করি, তাই লিখলাম। তবে আরেকটা কারণ হোল এটা দেখানো যে আমাদের দেখায় অনেক সময় ভুল থাকে। তাই সবাইকেই তাদের দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে বিচার করাও জরুরী।
"এই ন্যাড়ারা যুগে যুগে বেচে থাকুক,
ওদের কারণেই হয়তো পৃথিবীটা স্বার্থপরতার কালো মেঘের ফাকে ফাকে সুর্য কিরণ পেয়ে হেসে উঠবে মাঝে মাঝে।"
অসাধারণ নান্দনিকতায় অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে সুন্দর ভাবে।
আবেগময়ী লেখনীর জন্য অনেক ধন্যবাদ....।
আমি তো শিরোনাম দেখে ভয়ই পেয়ে গেছিলাম যে
আমার "তিনকন্যা"র জবাবে কিছু লিখলেন কিনা-
আল্লাহতায়ালা রক্ষা করেছেন! আলহামদুলিল্লাহ
আর যেসব ন্যাড়াদের কথা বলেছেন-
ওদের মাথা ন্যাড়া হলেও বেল-প্রুফ হয়ে যায়
তাই সারাজীবন বেলতলাতেই ঘুরঘুর করে-
এও এক দারুণ নেশা!!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকিল্লাহ
ঠিক বলেছেন, এই নেশা দারুণ নেশা, কাটতেই চায়না!
আপনার পিছু নিয়ে, ইনশাআল্লাহ সেখানে যাবার আশা রাখি!
ইয়াগফিরুল্লাহুলানা ওয়া লাকুম..
অধ্যাপক গোলাম আযম এক আলোচনায় বলেছিলেন-
যার মূল্যবান সম্পদ আছে তার মনেই তো সম্পদ চুরি যাবার ভয় থাকে!!
যার কিছু নেই তার ভয়ও নেই!!
আল্লাহতায়ালা আমাদের ভয় আরো বাড়িয়ে দিন-
যেন তাঁর রহম ছাড়া আর কিছুর দিকে না তাকাই!
আধুনিক যুগের কলেজ ভার্সিটি পড়ুয়ারা তো এটাকে তার ব্যক্তি স্বাধীনতা মনে করে, বলে, "জীবনটা তো আমার, আমাকেই তো আমার সিদ্ধান্ত নিতে হবে....."
সালমার মত মানুষ এখনো রয়েছে বলেই সমাজে অনেক সমস্যার দ্রুত সমাধান হচ্ছে। যদিও এদের সংখ্যা অপ্রতুল। কিন্তু অন্যদেরকেও সালমার মত নিঃস্বার্থ ভাবে সকলের তরে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের আশেপাশে বেশীরভাগ মানুষ্কেই দেখতে পাই, যে কোনো পারিবারিক সমস্যাকে উস্কানি দিয়ে আরো ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে। তাই গল্পের সালমার চরিত্রটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।
সুন্দর একটি ম্যাসেজ ফুটে উঠেছে লিখাটিতে। আর এর লেখিকা হিসেবে পুরো ক্রেডিট আপনারই প্রাপ্য। তাই বারো ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানালাম।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ক্রেডিট চাইনা ভাই, মানুষকে ভাবাতে চাই। আপনি ভেবেছেন এতেই আমার প্রচেষ্টা সার্থক। আপনি লেখক মানুষ, হয়ত আপনার লেখার মাধযমে এই মেসেজ ছড়িয়ে দেবেন আরো বহুদূর
চমৎকার শিক্ষণীয় গল্পের জন্য ধন্যবাদ।
আপনার সাথে কথা আছে। দেখি ফেবুতে যোগাযোগ হবে ইনশা আল্লাহ
আমাদের দেশে বেশিরভাগ বাবা-মা(বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মা) সন্তান কে নিজের সম্মত্তি মনে করে। তেমনি স্ত্রিরাও স্বামিকে সম্পত্তি মনে করে। ব্যাক্তি স্বাধিনতা কে যদি কেউ মাত্রাহিন মনে করে তা হলে এই ধরনের ভুল হওয়াই স্বাভাবিক। একজন ব্যাবসায়িও কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে অভিজ্ঞদের সাথে আলোচনা করেন বা তথ্য নেন। সেখানে মানুষ তার নিজের জিবনের গুরুত্বপুর্ন সিদ্ধান্ত কিভাবে একাকি নেওয়ার সাহস করে সেটা বুঝিনা! আর এই ধরনের পারিবারিক সমস্যা মিটাতে যাওয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে যায় থ্যাংকলেস টাস্ক।
আমাদের দেশে নারীদের এই মাত্রাতিরিক্ত অধিকার ফলানোর ব্যাপারে আমার একটা থিওরী আছে যেটা আমি 'বিয়ে' বইটির একটি গল্পে এক্সপ্লোর করার চেষ্টা করেছি। আমাদের অধিকাংশ মহিলার জীবনটা হয় খুব সীমিত। স্বামী সন্তানে সংসারের বাইরে তাদের কোন জীবন থাকেনা। ফলে একদিন যখন তাদের পাখীর ছানাগুলো পাখা মেলে উড়ে যাবার সময় হয় তখন একাকীত্বের ভয়ে তাঁরা পাখীগুলোর ডানা কেটে দিতে চান। এটা একটা হিউম্যান ট্র্যাজেডি। কারণ প্রতিটা মা পাখী জানে তার ছানারা একদিন উড়ে যাবে, সে প্রস্তুত থাকে সে সময়ের জন্য, আবার সন্তানকেও প্রস্তুত করে এমনভাবে যেন সে স্বাধীনভাবে উড়তে পারে। কিন্তু বছরের পর বছর একই বৃত্তে ঘুরতে থাকা আমাদের এই মা বোন ভাবীরা কল্পনাও করতে ভয় পান এর বাইরেও একটা দিগন্ত আছে।
শুনতে খারাপ শোনালেও এর আরেকটা কারণ আল্লাহর প্রতি আস্থায় ঘাটতি। এটা সম্ভবত আমাদের অমুসলিম অতীতের অবশিষ্টাংশ যেখানে স্বামীকে ভগবানের মর্যাদা দিতে গিয়ে আসল উপাস্যের প্রতি devotion এর সাথে conflict হয়। তখন মোক্ষলাভের উদ্দেশ্যে বেচারা humanকেই স্ত্রী godএর মত আঁকড়ে ধরে। আমাদের পুরুষরাও স্ত্রীকে বশে রাখতে এই ট্রেডিশনের কার্যকারীতা দেখে একে পরিবর্তন করার উদ্যোগ নেননি। ফলে যা হবার তাই হয়েছে।
তবে বিয়ের সিদ্ধান্ত মেয়েরা একা নেয়না। ওরা বাবামায়ের পরিবর্তে বন্ধুবান্ধবকে পরামর্শদাতা হিসেবে গ্রহণ করে। বন্ধবান্ধবের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা তার নিজের তুলনায় খুব বেশি সম্বৃদ্ধ থাকেনা। ফলে পরামর্শের ফলটাও তেমনই হয়। যেমন এখানে সালমার পরামর্শদাতা ছিলো মিলি আর মুনিয়া। তবে এটা কিয়ামতের সাইনগুলোর একটা যে ছেলেমেয়েরা বাবামায়ের ওপর বন্ধুবান্ধবকে প্রাধান্য দেবে। এর ছোঁয়া আমাদের ইসলাম সম্পর্কে অসচেতন পরিবারগুলোতে এসে লাগবে বৈকি!
আমার থিওরীর ব্যাপারে তোমার অভিমত কি?
আপনার অভিজ্ঞতা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম
আরিফা নামটা অনেক সুউইট তাইনা?
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই
পড়ার এবং উৎসাহ দেয়ার জনয ধন্যবাদ আপু
আল্লাহ আপনার লিখায় আরো বারাকাহ দান করুন
মন্তব্য করতে লগইন করুন