উস্তাদ নোমান আলী খানের সাথে একদিন

লিখেছেন লিখেছেন রেহনুমা বিনত আনিস ২৬ মে, ২০১৪, ০৬:২৫:৩৩ সকাল

২০১৩র নভেম্বরে খবর পেলাম ২০১৪য় ফেব্রুয়ারীর ২৪ তারিখ উস্তাদ নোমান আলী খান আমাদের পাশের শহর এডমন্টনে আসছেন। সাথে সাথে তাঁর লেকচারের জন্য রেজিস্ট্রেশন করলাম। কিন্তু এ’বারের শীতে এত বেশি তুষারপাত এবং তুষারঝড় হোল যে দূরপাল্লার জার্নি করা বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াল। যাওয়া ক্যান্সেল হওয়ায় বাচ্চাদের কান্নাকাটি দেখে পরিকল্পনা করছিলাম তাঁকে কোনভাবে ক্যাল্গেরী আনা যায় কিনা। আল্লাহ যেন আলৌকিকভাবে আমাদের আশা পূরণ করলেন। মার্চে খবর পেলাম মে’র দুই তারিখ তিনি ক্যাল্গেরী আসছেন, বিষয়টাও বাচ্চাদের জন্য আকর্ষনীয়ঃ কুর’আনে গল্প বলার পদ্ধতি। টিকেট করতে গিয়ে দেখি খবর পেতে না পেতেই আটশ টিকেট সমস্ত বিক্রি হয়ে গিয়েছে! এবার বাচ্চাদের সাথে সাথে বাবামায়েদেরও হাহাকার আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াতে লাগল। এপ্রিলের শুরুতে ছোটবোন তানজি আবিষ্কার করল নোমান আলী খানের লেকচারের ভেন্যূ পরিবর্তন করা হয়েছে, ঘরের কাছে আকরাম জুমা মসজিদে স্থানান্তরের ফলে এখন দ্বিগুনের চেয়েও বেশি লোক ধারণ করা সম্ভব, ফলে টিকেট আবার পাওয়া যাচ্ছে। আনন্দে আপ্লুত হয়ে আমরা বন্ধুদের সবাইকে খবর দিলাম, সবাই দ্রুত টিকেট করলাম, অনেকের টিকেট সংগ্রহ করে দিলাম- টিকেটের মূল্য যখন মাত্র বিশ টাকা তখন সপরিবারে যাওয়া সহজ। আমাদের অনেক বাংলাদেশী ভাই অবশ্য শাহরুখ খানকে দেখতে, ইন্ডিয়ান নায়িকাদের অঙ্গভঙ্গি উপভোগ করতে, রুনা লায়লা কিংবা জেমসের গান শুনতে শত শত টাকার টিকেট কিনে দূর দূরান্তের শহরেও যান। তাঁদের আবার এই টিকেট অতিরিক্ত ব্যায়সাধ্য মনে হওয়াতে আমরা হাতে গোণা ক’টি পরিবার ছাড়া অনুষ্ঠানে আগতদের অধিকাংশই ছিল আরবী, পাকিস্তানী, আফ্রিকান ইত্যাদি বংশোদ্ভূত।

টিকেট কেনার ক’দিন পর, কাজ থেকে ফিরছি, তখনও আনন্দে মুচকি মুচকি হাসি থামেনি। সেদিন অতিরিক্ত কাজ থাকাতে দেরী করে বেরিয়েছি। আমার দুই স্টেশন পর দেখি আলিম ভাই ট্রেনে উঠলেন। ইনি আমার সেই পাকিস্তানী সহকর্মী যার সাথে চার বছর আগে সি আর টি পি কোর্স করেছিলাম; আমাদের দু’জনের পোস্টিং হয় একই অফিসে, পাশাপাশি ডেস্কে; তিনি আমাকে ফটোকপি করা থেকে ডকুমেন্ট স্ক্যানিং সব শেখান যেহেতু এখানে কোন পিয়ন নেই, নিজের সব কাজ নিজেরই করে নিতে হয়; এবং ইনিই তিনি যিনি আমাকে জোরপূর্বক চা খাওয়াতেন। আমি জানতাম তিনি আমার অফিস থেকে মাত্র দুই ব্লক দূরে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি আমার এক ছোটবোন জয়ার সহকর্মী। আমাদের অন্তরঙ্গ বন্ধু এবং সি আর টি পি’র আরেক সদস্য ইফতেখার ভাই তাঁর সামনের অফিসেই কাজ করেন। কিন্তু আমি সাধারনত শুক্রবার জুমায় যাওয়া এবং মাঝে মাঝে হাঁটতে যাওয়া ছাড়া অফিস থেকে তেমন একটা বেরোইনা, তাই চার বছর পর এই আবার আলিম ভাইয়ের সাথে দেখা হোল। আমাকে দেখে তিনি এগিয়ে এলেন, ভাবীর খবর নিলাম, এর মধ্যে ওনাদের আরো একটি সন্তান হয়েছে, সপরিবারে উমরা করে এসেছেন, সুদের জন্য বাড়ী কেনেননি। ওনাকে বাড়ী কেনার জন্য হালাল মর্টগেজের সন্ধান দিলাম যা আমাদের এক বাংলাদেশী ভাই ক্যাল্গেরীতে চালু করেছেন। বিনিময়ে তিনি আমাকে খবর দিলেন নোমান আলী খান সাহেব যেদিন সন্ধ্যায় আকরাম জুমায় লেকচার দেবেন, সেদিন জুমার খুতবাও তিনিই দেবেন। আমি সাধারনত আমার অফিসের পাশের মসজিদে জুমা পড়ি। কিন্তু আকরাম জুমায় যেতে হলে ছুটি নেয়া ছাড়া গত্যান্তর নেই। পরদিন আমার বস কাম বান্ধবী জেইনের সাথে কথা বললাম। সে বলল, ‘এক কাজ কর, তুমি তো এমনিতেই অনেক সকালে কাজ শুরু কর। শুক্রবার তুমি আধাদিন কাজ কর, বাকী সময়টুকু তুমি প্রতিদিন আধঘন্টা একঘন্টা বেশি কাজ করে পূরণ করে ফেল, তাহলে তোমার আর ছুটি নিতে হোলনা’। টাইম ব্যাঙ্কিং আসলেই একটা চমৎকার জিনিস! আমি শুক্রবারের আগেই তিন ঘন্টা বাড়তি কাজ করে রাখলাম যেন শুক্রবার পাঁচ ঘন্টা কাজ করে চলে যেতে পারি। সাধারনত সবাই এই সময় ছুটির পরে পূরণ করে থাকে, কিন্তু আমি কাজ বাকী রাখা পছন্দ করিনা, আমার কাছে কারো পাওনা বাকী থাকার চেয়ে আমি কারো কাছে পাওনা থাকা ঢের ভাল।

শুক্রবার বারোটায় অফিস থেকে বের হয়ে গেলাম। শুক্রবার বাচ্চাদের স্কুল আধাদিন, তাই ওদের কখনোই জুমা মিস হয়না। হাফিজ সাহেব বাচ্চাদের স্কুল থেকে নিয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। স্টেশন থেকে আমাকে নিয়ে সোজা মসজিদ। বারোটা চল্লিশে পৌঁছে দেখি অলরেডি লোকজন আসতে শুরু করেছে যদিও খুতবা দেড়টায়, নামাজ দু’টোয়। এই সুযোগে একটু পড়াশোনা করলাম। বছরের পর বছর একত্রে জুমা, তারাবী পড়তে পড়তে মসজিদের অনেকেই এখন বন্ধু বা মুখচেনা, তাঁদের সাথে সাক্ষাত করলাম, শুভেচ্ছা বিনিময় করলাম। দেখলাম, আমার মত অনেকেই আধাদিন ছুটি নিয়ে এসেছেন, অনেকে ছুটি নিয়েছেন পুরো দিন, অনেকে এসেছেন শহরের অন্য প্রান্ত থেকে। দেড়টায় খুতবা শুরু হোল। সেদিনের খুতবা ছিল মূলত তরুণ তরুণীদের জন্য যারা নিজেদের ইসলামী আইডেন্টিটি নিয়ে সংকুচিত থাকে। তিনি সূরা কাহফের যুবকদের ঘটনা বর্ণনা করে তাদের উজ্জীবিত করলেন এই বলে যে এই ক’টি মাত্র যুবক শাসকদের সামনে মাথা নত না করে আল্লাহর প্রতি আনুগত্যশীলতাকেই বেছে নিয়েছিল, যদিওবা এর জন্য প্রান যায়। ফলে আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে তাদের আশ্রয় দেন, তিনশ বছর পর তারা জেগে ওঠে, এবং তাদের আনুগত্য আল্লাহ এত পছন্দ করেন যে তিনি তা কুর’আনে উল্লেখ করেন এবং তাদের আস্থাশীলতার প্রশংসা করেন যদিও তারা ছিল নিতান্তই সাধারন মানুষ। নোমান আলী খান বলেন যারা এক আল্লাহর প্রতি আনুগত্যশীল তাদের পুরো জীবনটাই তো পরিকল্পিত, পরিশীলিত এবং গতিময়। সুতরাং তারা হবে আত্মপ্রত্যয়ী, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন এবং আস্থাশীল। তারা কেন সংকুচিত বোধ করবে? তারা কেন হতে চাইবে তাদের মত যারা উদ্দেশ্যহীন, যারা হেলা ফেলায় কাটিয়ে দেয় একটি মাত্র জীবন, যারা নিজেরাই বোঝেনা এই জীবনের লক্ষ্য কি? সবচেয়ে অবাক হলাম এই দেখে যে এখানকার অস্থিরচিত্ত বাচ্চাগুলো তন্ময় হয়ে শুনলো পুরোটা খুতবা। আসলে তিনি হাস্যরস এবং সাবলীলতা মিশিয়ে এমন একটি ভঙ্গীতে কথা বলেন যা তাঁর শ্রোতাদের জন্য হৃদয়গ্রাহী এবং আকর্ষনীয়, শ্রোতার বয়স যাই হোক না কেন।

নামাজের পর বাসায় এসে দ্রুত খাওয়া দাওয়া সেরে আবার গেলাম মসজিদে। ঐ অবধি ১৮০০ টিকেট বিক্রি হয়েছে, তার পরেও চাহিদা থাকায় গেটে আরো টিকেট বিক্রি হবে বিকাল পাঁচটা থেকে। তাই অনুষ্ঠান ছ’টায় শুরু হলেও আমরা পাঁচটায় গিয়ে আয়েশ করে বসলাম ওপরতলায়। ঈদের নামাজের জন্য ছাড়া নীচের তলায় সচরাচর পুরুষদের নামাজের ব্যাবস্থা হলেও সেদিন নারী এবং শিশুদের সংখ্যা বেশি হবে ধারণা করে নীচতলায় একাংশে ঘেরা দিয়ে মহিলাদের এবং শিশুদের বসার ব্যাবস্থা করা হয়। পরে অবশ্য পুরুষদের সংখ্যা ধারণাতীতভাবে বেশি হওয়ায় মহিলাদের একাংশকে আবার ওপরতলায় স্থানান্তরিত হতে হয়। তা সত্ত্বেও অনুষ্ঠান শুরু হয় আসর নামাজ দিয়েই, কাঁটায় কাঁটায় ছ’টায়।

প্রথমেই নোমান আলী খান সাহেব ব্যাখ্যা করেন কুর’আনের গল্পগুলো নিছক গল্প হিসেবে বর্ণনা করা হয়নি বরং প্রত্যেকটি গল্পের প্রতিটি বাক্যে, প্রতিটি শব্দে আমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। এজন্য দেখা যায় শুধুমাত্র সূরা ইউসুফ ব্যাতীত কোথাও সম্পূর্ন বা ধারাবাহিকভাবে কোন গল্প উপস্থাপিত হয়নি। আবার গল্পগুলোর বর্ণনার প্রকৃতিও ভিন্ন ভিন্ন। কোথাও উপসংহার আগেই জানিয়ে দিয়ে তারপর আগের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে, কোথাও ফ্ল্যাশব্যাক মোডে ঘটনাপরস্পরা উপস্থাপন করা হয়েছে, কোথাও কেবল ঘটনার উল্লেখযোগ্য অংশটুকুই বর্ণিত হয়েছে। তিনি দেখালেন কিভাবে হলিউডের সিনেমাগুলোতে এই পদ্ধতিগুলো ব্যাবহৃত হয় অথচ তারা কখনোই এর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেনা। তারপর তিনি উদাহরণস্বরূপ সূরা ক্কাসাস দিয়ে মূসা (আ)এর বৃত্তান্ত ব্যাখ্যা করতে শুরু করেন। এভাবে কুর’আন পড়লে আমরা শিহরিত, পুলকিত, রহস্যাপ্লুত না হয়ে পারবই না। কিন্তু আমরা অধিকাংশই যে কুর’আন বুঝে পড়িনা!

প্রথমেই আসে মূসা (আ)এর মায়ের চরিত্রটি এবং তখনকার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট যখন বনী ইসরাইলের দাসদাসীরা সারাক্ষণ ফির’আউনের সৈন্যদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকত এবং শিশুরা পর্যন্ত ফির’আউনের হত্যাযজ্ঞ থেকে নিরাপদ ছিলোনা। তারপর আসে কিভাবে সৈনিকদের শিশু সন্ধানের মধ্যখানে মূসা (আ) কাঁদতে শুরু করলে আল্লাহ তাঁর মায়ের মনে সঞ্চার করেন শিশুটিকে দুধ খাওয়াতে যার ফলে তিনি শান্ত হয়ে পড়েন এবং সৈন্যরা তাঁর অস্তিস্ত্ব টের পায়নি। এরপর আল্লাহর নির্দেশে তিনি নিজের নবজাত শিশুটিকে অনিশ্চিতের উদ্দেশ্যে নদীতে ভাসিয়ে দেন। এই একই গল্পটি কুংফু প্যান্ডা সিনেমায় ব্যাবহৃত হয়েছে এবং যথারীতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা হয়নি। তিনি শহরের মানচিত্র বুঝিয়ে দিয়ে ব্যাখ্যা করেন এই অনিশ্চিত যাত্রা কতখানি অনিশ্চিত ছিল, যেহেতু নদীর নিম্নমুখী স্রোত মূসা (আ)এর ঝুড়িটিকে নিয়ে যাবে নগরীর মধ্য দিয়ে এবং ফির’আউনের প্রাসাদের সামনে যেখানে প্রতি পদে পদে ধরা পড়ার সম্ভাবনা, তাছাড়া ঝুড়িটিও নদীতে ভাসার উপযোগী তেমন কিছু ছিলোনা। তারপর তিনি তুলে ধরেন আল্লাহর প্রতি মূসা (আ)এর মায়ের অগাধ আস্থার কথা যা ব্যাতীত তিনি এই অবস্থায় ধৈর্য্য ধারণ করতে পারতেন না।

মধ্যখানে পাঁচ মিনিট বিরতি দিয়ে তিনি আসেন মূসা (আ)এর বোন মারইয়ামের চরিত্রে। তাকে তার মা কেবল বলেন ঝুড়িটিকে অনুসরন করতে, সে খেলাচ্ছলে নদী পাড় ধরে এগোতে থাকে এবং ফির’আউনের প্রাসাদে রানী আসিয়া যখন শিশুটিকে তুলে নেন তখন তাঁকে জানায় তার পরিচিত এক ভদ্রমহিলা আছেন যিনি হয়ত শিশুটিকে দুগ্ধদান করতে পারবেন। মূসা (আ) যেহেতু তাঁর মায়ের দুধের স্বাদের সাথে পরিচিত ছিলেন, তিনি এই ব্যাক্তি ব্যাতীত আর কারো দুধ পান করতে সম্মত ছিলেন না। ফলে তাঁর নিজের মাকেই তাঁর দুধমা নিয়োগ দেয়া হয়। এখানে প্যারেন্টিংয়ের গুরুত্বপূর্ন নির্দেশনা রয়েছে। প্রথম কথা হোল, বাচ্চাদের একসাথে একটার বেশি নির্দেশ দেয়া উচিত নয়। দ্বিতীয়ত, বাচ্চাদের একবার কাজ বুঝিয়ে দিয়ে তাদের ওপর আস্থা রাখতে হবে, সাধারনত মূলনীতি বুঝিয়ে দিলে তারা নিজের বুদ্ধিতেই কাজটি সম্পন্ন করতে পারে- যেমন মারইয়াম কাউকে বুঝতে দিলোনা সে ঝুড়িটিকে অনুসরন করছে, সবাই ভাবল একটি শিশু নিছক খেয়ালের বশে নদীপাড় ধরে হেঁটে চলেছে; আবার সে নিজেই বুদ্ধি করে বলল তার পরিচিত এক ভদ্রমহিলা শিশুটিকে দুগ্ধদান করতে পারবে, কিন্তু সে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে দিলোনা তিনি এই শিশুর মা। তৃতীয়ত, এখানে সন্তানদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে বাবামায়ের নির্দেশ পালনের ব্যাপারে। কেননা আজকালকার বাচ্চাদের মত মারইয়ামকে আট দশবার বলতে হয়নি, নির্দেশ পাওয়ামাত্র সে ছুটে গিয়েছে মায়ের আদেশ পালন করতে।

এই পর্যায়ে পাঁচ মিনিটের বিরতি দেয়া হয়। এই বিরতিতে এক ক্যানাডিয়ান ভদ্রমহিলা ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি জুমাতেও এসেছিলেন কিন্তু সেদিনকার মাগরিব ছিল তাঁর জীবনের প্রথম নামাজ। মসজিদব্যাপী সবাই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে- এমন একটি ঘটনার চাক্ষুস সাক্ষী হতে পেরে কেউ আনন্দে কেঁদে ফেলে, কারো আনুগত্য চাঙ্গা হয়ে ওঠে, কেউ হিংসায় জ্বলতে থাকে কারণ সেই মূহূর্তে নও মুসলিমা বোনটি হয়ে যান সবচেয়ে নিষ্পাপ ব্যাক্তি, সম্পূর্ণ মসজিদ ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে এই নও মুসলিমাকে স্বাগত জানান সবাই। তার পরপরই মাগরিবের আজান এবং নামাজ হয়। নও মুসলিমা বোনটি তাঁর জীবনের প্রথম নামাজ আদায় করেন আমাদের সাথেই।

এরপর আসে মূসা (আ)এর জীবনে আরেক অসাধারন মহিলা আসিয়ার গল্প। মূসা (আ)এর গায়ের রঙ দেখেই বুঝা যাচ্ছিল তিনি বনী ইসরাইলের সন্তান। তবু তিনি ফির’আউনের কাছে যান এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে তাকে রাজী করেন শিশুটিকে প্রতিপালনের ব্যাপারে। তিনি প্রথমেই মূসা (আ)কে ফির’আউনের কোলে তুলে দেন, ফুটফুটে শিশুটিকে দেখে ফির’আউন নিজেই মুগ্ধ হয়ে যায়। ফলে তাকে রাজী করতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি আসিয়ার। তারপর তিনি ব্যাখ্যা করেন কিভাবে আসিয়া তাঁর চিন্তাচেতনা কথাবার্তা থেকে দু’আ পর্যন্ত সবকিছুতেই নিজেকে ফির’আউনের কাছ থেকে পৃথক রাখতেন যদিও তাঁকে ইম্প্রেস করতে ফির’আউনের চেষ্টার ত্রুটি ছিলোনা। বিশাল সাম্রাজ্য এবং ক্ষমতার আধার বাদ দিয়ে তিনি শুধু চাইতেন জান্নাতে আল্লাহর কাছাকাছি একটি ঘর।

এই সময় বাইরে প্রচন্ড তুষারপাত হলেও মসজিদের ভেতর অতিরিক্ত লোকসমাগমের কারণে ফ্যান চালিয়ে দিতে হয়। তা সত্ত্বেও হঠাৎ আমি গরমে প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ি। বান্ধবীরা ব্যাস্ত হয়ে পড়েন আমাকে নিয়ে, কেউ বলেন অতিরিক্ত পোশাক খুলে ফেলতে, কেউ বাতাস করতে থাকেন, কেউ পানীয় পান করান, কেউ নিজের চেয়ার ছেড়ে দিয়ে আমাকে মাটি থেকে উঠিয়ে বসান, নিজেরই ভীষণ লজ্জা লাগতে থাকে আমার মত সাধারন একজনকে নিয়ে তাঁদের ব্যাস্ততা দেখে। কিছুক্ষণ পর আমিও কিঞ্চিত সুস্থ বোধ করি, ওদিকে নোমান আলী খান বলতে থাকেন এই গল্পের আরেক নারী চরিত্র মূসা (আ)এর হবু বধূর কথা।

প্রসঙ্গক্রমে আসে নারীপুরুষ সম্পর্কের স্বরূপ কেমন হওয়া উচিত, বিরূপ পরিবেশেও নারীদের কাজ করার অধিকার, নারীদের প্রতি অভিভাবকদের আস্থাশীলতার অধিকার, নারীদের সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার, বিয়ের ব্যাপারে নিজের পছন্দ ব্যাক্ত করার অধিকার এবং বিয়ের পর স্বামীর সাথে থাকার উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করার অধিকার নিয়ে। এই সময় নীচের তলার বোনেরা মূহুর্মূহু তালি দিয়ে নিজেদের মনোভাব জানান দেন। ওপরতলায় আমরাও না হেসে পারলাম না কারণ আমাদের মসুলিমদের মধ্যে ইসলামের জ্ঞান এবং ইসলামের চর্চার মাঝে বিস্তর ফারাক রয়েছে যার ফলে নারীদের আজ এসব মৌলিক অধিকারও চেয়ে নিতে হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি ব্যাখ্যা করলেন, মূসা (আ) আল্লাহর কাছে দু’আ করলেন যে তিনি ভুলক্রমে এক ব্যাক্তিকে হত্যা করার পর পালিয়ে আসতে গিয়ে আল্লাহর অশেষ কৃপায় এক জায়গায় এসে তো পৌঁছলেন, কিন্তু তিনি যেকোন প্রকার সাহায্যই এই মূহূর্তে কাজে লাগাতে পারেন। উস্তাদ নোমান আলী খান দেখালেন কিভাবে আমরা উপমহাদেশীয়রা পেটে ক্ষুধা নিয়েও মুখে ভদ্রতা করি। তাঁর বর্ণনাভঙ্গির কারণে শুরু থেকেই হাসতে হাসতে সবার পেটে খিল ধরে যাচ্ছিল, তবু কেউ না হেসে পারলনা।

তারপর এলো মূসা (আ) এর মিশর যাত্রা, পথিমধ্যে আল্লাহর সাথে সাক্ষাত, নবুয়াত প্রাপ্তি, ফির’আউনের মত একজনকেও আল্লাহর সুযোগ দেয়ার মত চমকপ্রদ ব্যাপারটি, তার দরবারে উপস্থিত হওয়া, যাদুকরদের ইসলাম গ্রহণ, ফির’আউনের ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি, বনী ইসরাইলের মিশর হতে বেরিয়ে আসা এবং ফির’আউনের ধ্বংসের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা যেহেতু এই কাহিনীগুলো অনেক বেশি পরিচিত এবং আলোচিত। এরপর এশার নামাজ শেষে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।

মজার ব্যাপার হোল চরঘন্টার বক্তৃতায় তিনি কোন বই, খাতা, নোটস এমনকি কিউ কার্ডও ব্যাবহার করেননি। বক্তৃতায় কুর’আনের আয়াত ছিল, আয়াতের শব্দার্থ ছিল, তারপর ছিল ব্যাখ্যা- কোথাও তিনি এক সেকেন্ড বিরতি দেননি। শুরু থেকে শেষ অবধি এমন পাঁচ মিনিট যায়নি যখন পুরো মসজিদের সবাই হেসে লুটোপুটি খায়নি, অথচ এমন এক সেকেন্ড যায়নি যখন কেউ নিজেরা কথাবার্তা বলেছে বা মনোযোগী ছিলোনা, বাচ্চারাও এতে অন্তর্ভুক্ত। এক মূহূর্তের জন্যও তিনি পায়চারী বন্ধ করে এক জায়গায় বসেননি, অথচ অনুষ্ঠান শেষেও তাঁকে ক্লান্ত মনে হয়নি। সুবহানাল্লাহ! এই মেধা একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসতে পারে যেখানে একটিও চিত্র ব্যাবহার না করে নিজের কল্পনাকে অন্যের মাথার ভেতর চিত্রিত করে দেখানো যায়।

অসাধারন একটি বক্তৃতা শুনে, চার ওয়াক্তের নামাজ মসজিদে পড়ে, অকল্পনীয় সুন্দর একটি দিনের শেষে পরিতৃপ্ত হৃদয় নিয়ে বাড়ী ফিরে অনুষ্ঠান নিয়েই কথাবার্তা বলতে বলতে ঘুমোতে গেলাম সবাই।

বিষয়: বিবিধ

২৩৬০ বার পঠিত, ৫৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

226304
২৬ মে ২০১৪ সকাল ০৭:২৯
মোঃমাছুম বিল্লাহ লিখেছেন : আপনার গল্পটা সত্যি সুন্দর
২৬ মে ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
173293
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : প্রথম মন্তব্যের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ HappyGood Luck
২৮ মে ২০১৪ সকাল ১১:৪০
174202
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : গল্প? এখানে গল্প কোথায় দেখলেন?
226307
২৬ মে ২০১৪ সকাল ০৮:১৩
যুমার৫৩ লিখেছেন : লেকচারের ভিডিও করা হয়েছে কি ? আপনার জানা থাকলে লিংকটা দেবেন মেহেরবানী করে।
২৬ মে ২০১৪ সকাল ১০:৫১
173298
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : অনেকদিন পর! ভাল আছেন তো?
বার বার অনুরোধ করা হচ্ছিল লেকচারটি যেন রেকর্ড না করা হয়ে যেহেতু এটি বাইয়িনাহর একটি কোর্সের অংশ। তবু একটি ভিডিও ইউটিউবে এসেছে। মজার বিষয় হোল ভিডিওর শুরুতেই অনুরোধ করা হচ্ছে যেন ভিডিও না করা হয়। তবু এক ঘন্টা ভিডিও করা হয়েছে। এটা আমার নৈতিক মনে হয়নি। তাই শেয়ার করিনি।
২৬ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৭
173512
যুমার৫৩ লিখেছেন : জি আপা, অনুমতি ছাড়া ভিডিও করা হলে সেটা অবশ্যই অনৈতিক। ওনার নামে ওনার ভক্তরা এতো বেশী সাইট, পেজ বানিয়েছে যে বোঝা মুশকিল কোনটা ওনার অনুমোদিত (অফিসিয়াল) আর কোনটা অনুমতি ছাড়া !!
226321
২৬ মে ২০১৪ সকাল ০৯:২৯
আহমাদ আল সাবা লিখেছেন : অনেক ভালো লাগল.। জাজাকাল্লাহ খাইরান আপু।
আমি একটা লেখা লিখেছিলাম তাকে ও তার Bayyinah.Tv নিয়ে...আল-কোরআনের প্রকৃত অলৌকিক নিদর্শন কোথায়? কেন ৭০ জন লোক মাত্র একটি লেকচারে সমস্ত জীবনের বিশ্বাস-চিন্তাকে এই কোরআনের সামনে ছুড়ে ফেলে দিলো?

তার ছোট একটা লেকচারের লিস্টও করেছিলাম যেগুলো সবচেয়ে ভালো.।যদিও তা অপূর্ণ কারণ আরো অনেক ভালো লেকচার রয়ে গেছে
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/7762/alsabanow13/45322
২৬ মে ২০১৪ সকাল ১০:৫২
173299
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : লিঙ্কগুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। সময় পেলে দেখে নেব ইনশা আল্লাহ Happy
226322
২৬ মে ২০১৪ সকাল ১০:০৮
নতুন মস লিখেছেন : পুরোটা মনোযোগ দিয়ে দৃশ্যগুলোয় ঢুকে পড়েছি ।একটা প্রশ্নঃ
"সন্তানদের জন্য নির্দেশনা রয়েছে বাবামায়ের নির্দেশ পালনের ব্যাপারে"
"নারীদের সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার এবং নিজের বিয়ের ব্যাপারে পছন্দ ব্যক্ত করার অধিকার ।"
এ ক্ষেত্রে যদি বাবা মা তাদের পছন্দের কাউকে বিয়ে করার জন্য নির্দেশ দেন আবার নিজ্বস মতামত থাকে এক্ষেত্রে ।
২৬ মে ২০১৪ সকাল ১০:৫৩
173300
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : বিয়ে করা জন্য বাবামা পরামর্শ দিতে পারেন, নির্দেশ দিতে পারেন কি?
226343
২৬ মে ২০১৪ দুপুর ১২:০৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : কানাডাতে অফিস সময় ম্যানেজ করে জুমার নামাজ পড়তে যাচ্ছেন আর এই দেশে ফতোয়া দেয়া হচ্ছে নারিদের মসজিদে যাওয়া নাকি কুফরি!!!!
লেকচার টির বিবরন খুবই ভাল লাগল। উদাহরন ও যুক্তির মাধ্যমে সহযেই শিখান যায় যেটা চাপের মাধ্যমে কখনই শিখান যায়না।

বিঃদ্রঃ জিবনের বেশিরভাগ সময় মধ্যপ্রাচ্য আর বাংলাদেশে কাটালেন। কিন্তু অল্প সময় কানাডাতে থেকেই সে দেশের ঠান্ডায় অভ্যস্ত হয়ে গেলেন!!!!!!
২৭ মে ২০১৪ সকাল ০৫:২৬
173752
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : তারাই জবরদস্তি করে যাদের জ্ঞান নেই। এই ব্যাপারে আর কিছু বলার নেই।
ঠান্ডায় অভ্যস্ত হলাম না, ঠান্ডায় অভ্যস্ত ছিলাম। উভয় জায়গাতে এসিতে ছিলাম, গরমে শ্বাসকষ্ট হত। এখানে এসে গরমকালে মাঝে মধ্যে ছাড়া শ্বাসকষ্টটা বন্ধ হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ, এই যা।
বিঃ দ্রঃ গরমে অভ্যস্ত হওয়া সম্ভব না বলেই হয়ত জাহান্নাম আগুন দিয়ে তৈরী করা হয়েছে।
226352
২৬ মে ২০১৪ দুপুর ১২:৩১
রেজাউল ইসলাম লিখেছেন : আমার মনে হলো, আমিও উপভোগ করলাম। দারুন.......
২৭ মে ২০১৪ সকাল ০৫:২৬
173753
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ HappyGood Luck
226372
২৬ মে ২০১৪ দুপুর ১২:৫৯
নিঝুমদ্বীপের রাজকন্যা লিখেছেন : আমাদের এখানে এই ধরণের প্রোগ্রাম হয়না। বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন অবশ্য নানা ধরণের প্রোগ্রাম করে। কিন্তু সেগুলোতে যাওয়া হয় না। ভীষণ ভালো লাগলো আপু। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য জাযাকিল্লাহ।
২৭ মে ২০১৪ সকাল ১১:০২
173804
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : অনেকদিন পর তোমাকে দেখলাম আমার ব্লগে Happy ভাল আছ তো আপু?
কেন, ইসলামী অনুষ্ঠানে যাওয়া হয়না কেন? Surprised
২৭ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৩
173848
নিঝুমদ্বীপের রাজকন্যা লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ আপু আমাদের বাসাতেই তো অনেক ধরণের প্রোগ্রাম হয়। Happy তাই আর বাইরে যাওয়া হয় না।
২৮ মে ২০১৪ সকাল ০৬:৩৮
174112
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : বুঝিলাম Happy
226378
২৬ মে ২০১৪ দুপুর ০১:১২
ইবনে হাসেম লিখেছেন : কন্যার সামার ছুটিতে একটা কাজ দিয়েছিলাম, মা মনি এ সময়টা কাজে লাগাও। ভালো ভালো বক্তাদের ফলো করো এবং প্রতি রাতে আমাকে শোনাবে। আরো বললাম তা তোমার ফেবুতেও শেয়ার করবে স্টেটাস দিয়ে। তো, কিছু কিছু কাজ হচ্ছে। গতকালই সে আমাকে যে ব্যাপারটি শেয়ার করলো তা হলো আপনার বলা আসহাবে কাহাফের কাহিনী। আপু, আমার মেয়েটির জন্য সব সময় দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাকে দ্বীনের দায়ী রূপে ক্ববুল করে নেন, নাম নুসরাত জাহান, এ নামেই ফেবুতে লিখে।
২৮ মে ২০১৪ সকাল ০৬:৪০
174113
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আমার ফেবুতে কয়েকজন নুসরাত জাহান আছে, জিজ্ঞেস করবেন তো আমাকে চেনে কিনা।
226392
২৬ মে ২০১৪ দুপুর ০২:১৯
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : পুরোটা পড়লাম, খুব ভাল লেগেছে পড়ে । আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন । Good Luck
২৮ মে ২০১৪ সকাল ০৬:৪২
174114
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : এত্তবড় লেখাটা ধৈর্য্য ধরে পড়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ Happy
আপনার অ্যানিমেশন সিরিজটা ফলো করছি, ভাল লাগছে, কিন্তু একদিকে অসুস্থ অন্যদিকে অফিসে প্রচন্ড কাজের চাপ, মন্তব্য করে উঠতে পারছিনা Sad
১০
226463
২৬ মে ২০১৪ বিকাল ০৫:০৩
আনিস১৩ লিখেছেন : I listen to him on YouTube . Thanks for sharing. Your writing is a blessing.
২৮ মে ২০১৪ সকাল ০৬:৪৩
174115
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : সুবহানাল্লাহ! আমি শুধু আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। যদি এতে কারো লাভ হয় তাহলে সেটা বাড়তি পাওনা Happy
১১
226708
২৬ মে ২০১৪ রাত ১০:০৭
আমি আমার লিখেছেন : শুধুমাত্র সূরা ইউসুফ ব্যাতীত কোথাও সম্পূর্ন বা ধারাবাহিকভাবে কোন গল্প উপস্থাপিত হয়নি। আবার গল্পগুলোর বর্ণনার প্রকৃতিও ভিন্ন ভিন্ন। কোথাও উপসংহার আগেই জানিয়ে দিয়ে তারপর আগের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে, কোথাও ফ্ল্যাশব্যাক মোডে ঘটনাপরস্পরা উপস্থাপন করা হয়েছে, কোথাও কেবল ঘটনার উল্লেখযোগ্য অংশটুকুই বর্ণিত হয়েছে। তিনি দেখালেন কিভাবে হলিউডের সিনেমাগুলোতে এই পদ্ধতিগুলো ব্যাবহৃত হয় অথচ তারা কখনোই এর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেনা। কথাটা কখনো ভেবে দেখা হয়নাই। অনেক কিছু শিখলম। ধন্যবাদ আপু। Good Luck Good Luck Good Luck Rose Rose Rose
২৮ মে ২০১৪ সকাল ০৬:৪৫
174116
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য সাইয়েদ কুতুবের 'আল কুর'আনের শৈল্পিক সৌন্দর্য' নামক চমৎকার বইটি পড়তে পারেন Happy কথা দিলাম হাতে নেয়ার পর শেষ না করে রাখতে পারবেন না। প্রবন্ধ জাতীয় বই এত ইন্টারেস্টিং হতে পারে এই বইটা না পড়লে জানতে পারতাম না Angel
২৮ মে ২০১৪ রাত ০৮:১৩
174429
আমি আমার লিখেছেন : ধন্যবাদ আপু। পড়ার চেস্টা করবো।
১২
226853
২৭ মে ২০১৪ সকাল ০৬:৪৪
দ্য স্লেভ লিখেছেন : পুরোটা মন দিয়ে পড়লাম। আবেগাপ্লুত হলাম। অসাধারণ মনে হচ্ছে। যদিও ছিলাম না কিন্তু অনুমান করতে পারছি তার বক্তৃতা ছিল অসাধারণ। আমি উনার নামের সাথে পরিচিত নই। উনার পরিচয় তুলে ধরলে উপকৃত হই। জাজাকাল্লাহ। উপরের কমেন্ট মুছে দিতে পারেন
২৮ মে ২০১৪ সকাল ০৬:৪৭
174117
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : ৩ নং কমেন্টের লিঙ্ক অনুসরন করে পোস্টটি পড়ুন, বিস্তারিত জানতে পারবেন। তবে না জেনে বিরূপ মন্তব্য করলে পরে লজ্জা পেতে হয়, সুতরাং জেনে মন্তব্য করা ভাল Happy
১৩
227043
২৭ মে ২০১৪ বিকাল ০৫:২৬
জুম্মি নাহদিয়া লিখেছেন : লেখাটা খুবই ভাল লাগল আপু । আমারও আলহামদুলিল্লাহ সৌভাগ্য হয়েছে ওনার লেকচার সরাসরি শোনার । ঠিক এই কথাটাই মনে হয়েছিল ,` এই মেধা একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসতে পারে যেখানে একটিও চিত্র ব্যাবহার না করে নিজের কল্পনাকে অন্যের মাথার ভেতর চিত্রিত করে দেখানো যায়। `
২৮ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৯
174320
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আল্লাহ আমাদেরও যদি ছিটাফোঁটা মেধা দিতেন! Praying Praying Praying
১৪
227236
২৮ মে ২০১৪ রাত ০২:৫৪
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : খুবই ইম্প্রেসিভ বক্তৃতা। সবচেয়ে বড় কথা হল, যে কথাগুলো শূনেছে সে এমনভাবে তুলে ধরেছে মনে হয় আমিও ছিলাম। ধন্যবাদ। খুব ভাল লাগল। সত্যি কথা বলতে কি, কোরানের পরতে পরতে যে শিক্ষা তা বিভিন্ন লোকের বক্তৃতা শূনলে বুঝা যায়। ধন্যবাদ।
২৮ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:৫১
174321
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : জ্বী ভাই, শোনাও দরকার, আবার নিজেরাও কিছু পড়া প্রয়োজন। অনেকেই দেখেছি বক্তৃতাগুলো ঠিকভাবে ধরতে পারেনা যেহেতু তাঁদের বেসিক জ্ঞানে ঘাটতি রয়েছে।
১৫
227424
২৮ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৩১
আতিক খান লিখেছেন : চমৎকার অভিজ্ঞতা, অসাধারন বর্ণনা। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। কানাডার আনকমন অংশে থাকেন, আমার বোন থাকে টরেন্টোতে। ভাল লাগলো।
২৯ মে ২০১৪ সকাল ১১:৩৫
174652
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আজকাল এখানে অনেক বাংলাদেশী আসছেন, সুতরাং এখন আর ততটা আনকমন নয় Happy
১৬
227436
২৮ মে ২০১৪ দুপুর ০২:৫৪
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : Rose Rose Good Luck Good Luck Rose Rose অন্নেক ভালো লাগলো Good Luck Good Luck যাজাকাল্লাহু খাইর।
২৯ মে ২০১৪ সকাল ১১:৩৬
174654
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : Happy Good Luck Good Luck
১৭
227464
২৮ মে ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৪
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : চমৎকার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার বর্ণনা পড়ে মনে হচ্ছিল আমিও সেখানে আছি।
২৯ মে ২০১৪ সকাল ১১:৩৭
174655
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ Happy বিশ্বাস করেন, আমার মনে হচ্ছিল আমার পরিচিত সবাইকে অনুষ্ঠানের টিকেট কিনে দেই। কিন্তু অনেকেরই এই ব্যাপারে আগ্রহ এত কম যে আমি পয়সা দিলেও ওরা কষ্ট করে আসতে চায়না Sad
১৮
227856
২৯ মে ২০১৪ সকাল ১১:৪০
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আট মিনিটের একটি ভিডিও লেকচার শুনেছিলাম। অসাধারণ! কুরআনের অলৌকিকত্ব, মাহাত্ব্য চমৎকার তেজস্বী ভাষায় বর্ণনা করেছেন।
৩১ মে ২০১৪ দুপুর ১২:২০
175320
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আয়াতুল করসীর ওপর Happy
১৯
227888
২৯ মে ২০১৪ দুপুর ১২:৩৮
ইয়াফি লিখেছেন : আপনার বর্ণনাভংগী দারুণ! তৃপ্তিসহকারে পড়লাম। ওখানকার অধিবাসী উলেমায়ে দেওবন্দের কি অভিমত?
৩১ মে ২০১৪ দুপুর ১২:২১
175322
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : ভাল লাগা সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ Happy
২০
228203
৩০ মে ২০১৪ রাত ০২:০৫
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : এত কিছু মনে রাখেন কি করে! আমি কোন লেকচার শুনে বাসায় আসতে আসতে ভুলে যাই। যা পড়েছি তা যেন আমল করতে পারি Praying শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু আপনাকে। Good Luck Rose Love Struck
৩১ মে ২০১৪ দুপুর ১২:২২
175323
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : সবসময় নোট করবেন, নইলে মনে থাকবে কি করে? আর মনে না থাকলে শিক্ষাটা কাজে লাগাবেন কিভাবে? HappyLove Struck Good Luck
২১
228549
৩১ মে ২০১৪ সকাল ০৭:০৯
ধ্রুব নীল লিখেছেন : মা শা আল্লাহ । মনে হচ্ছিল নিজেও যেন সেই লেকচারের অংশ হয়ে ছিলাম এতক্ষন । মন ভরে গেছে ।
৩১ মে ২০১৪ দুপুর ১২:২২
175324
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ Angel Praying
২২
228642
৩১ মে ২০১৪ দুপুর ০১:৫৫
সমালোচক লিখেছেন : উস্তাদ নুমান আলী খান যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম তরুণদের কাছে খুব-ই প্রিয় ।

আমার দুই প্রিয় ইসলামী বক্তা হচ্ছেনঃ শাইখ যাহির মাহমুদ (যুক্তরাজ্য) এবং কামাল আল-মক্কী (যুক্তরাষ্ট্র) । দেখতে পারেন সময় করে ।
০১ জুন ২০১৪ দুপুর ০১:১৩
175648
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : কামাল আল মাক্কীর বক্তব্য শুনেছি, অন্যজনের সম্পর্কে জানতাম না, দেখব ইনশা আল্লাহ Happy অনেক অনেক ধন্যবাদ Good Luck
২৩
231360
০৬ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:০৮
বিদ্যালো১ লিখেছেন : অনেকের মত আমিও যেন লেকচার এ ডুবে ছিলাম, আমি স্বপ্নচারীর মাধ্যমে উনার সম্পর্কে জানতে পারি আর ইউটিউব এ উনার লেকচার শুনে মুগ্ধ হই। বেশ কিছু লেকচার ই শুনেছি, সিমাবদ্ধতার কারনে অনেক গুলো শুনা হয়নি।

এমন স্কলারদের লেকচার সামনে থেকে শুনা ভাগ্যের ব্যাপার। আমাদের ভাগ্যে যা কদাচিৎ ঘটে। আশার কথা হল, কিছুদিন আগে মির্জা ইওয়ার বেইগ আসলেন, এই মাসে আসছেন ডঃ বিলাল ফিলিপ্স। হয়ত, উস্তাদ নোমান আলি ও একদিন আসবেন।
২৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:০০
231802
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : ইনশা আল্লাহ Happy
২৪
255734
১৯ আগস্ট ২০১৪ রাত ০১:২৭
স্বপন২ লিখেছেন : আপু, আপনার লেখা বন্ধ কেন?অনেক দিন লিখছেন না।
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:১৯
210177
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : লিখলাম Happy
২৫
266797
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:০১
মামুন লিখেছেন : পুরোটা পড়লাম।
অনেক ভালো লাগল। বিশেষ করে- "প্রথমেই নোমান আলী খান সাহেব ব্যাখ্যা করেন কুর’আনের গল্পগুলো নিছক গল্প হিসেবে বর্ণনা করা হয়নি বরং প্রত্যেকটি গল্পের প্রতিটি বাক্যে, প্রতিটি শব্দে আমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে। "- এখান থেকে নীচের প্যারাগুলো।
আপনার সাবলীল লেখার ভিতরে পাঠককে ধরে রাখার এক 'ম্যাগনেটিক ফিল্ড' রয়েছে যেন।
অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা আপনাকে।
জাজাকাল্লাহু খাইর। Rose Rose Good Luck
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৫১
210738
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ! পড়ার এবং ভাল লাগার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ Good Luck Good Luck
২৬
288164
২৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৩২
অবাক মুসাফীর লিখেছেন : পড়ে মনে হল আমিও উস্তাদের সাথে একদিন কাটিয়ে দিলাম ...
২৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:০১
231803
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : Happy
২৭
288165
২৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৩২
অবাক মুসাফীর লিখেছেন : আমরা কোরান পড়তে গেলে কিছু আয়াতের শব্দগুলো আলাদা করে তার অর্থগুলো বুঝে নিতে পারি, আরো ব্‌যাখ্‌যার জন্‌য তাফসীর পড়তে পারি। কিন্তু সেই রকম তৃপ্তি পাই না, চিন্তার খোরাক একটু-আধটু পেলেও সেগুলো মাথায় জেঁকে বসতে পারে না, মিলিয়ে যায় সহসাই ... কোনো সাজেশন আছে??
২৬ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:০৮
231804
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : এটাকে বলে 'লস্ট ইন ট্রান্সলেশন'। এক ভাষা থেকে আরেক ভাষায় অনুবাদ করতে গেলে কিছু জিনিস হারিয়ে যায় যা আসল লেখাটার আনন্দময় অংশও হতে পারে। তাই যেকোন জিনিস তার মূল ভাষায় বুঝার চেষ্টা করাই শ্রেষ্ঠ পন্থা Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File