মহাকাশের অভিযাত্রী
লিখেছেন লিখেছেন রেহনুমা বিনত আনিস ০৪ মার্চ, ২০১৪, ০৯:১৮:৪১ সকাল
ক্যাল্গেরী ডাউনটাউনের অধিকাংশ অফিস ভবনগুলোতে সুউচ্চ দালানে দীর্ঘ এলেভেটর ভ্রমনের একঘেঁয়েমী দূর করার জন্য প্রতিটি এলেভেটরে একটি ছোট্ট স্ক্রীনে সার্বক্ষণিক তাজা খবর, আবহাওয়া, খেলার খবর, চমকপ্রদ তথ্যাদি বা শিক্ষণীয় কোন বিষয় দেখানো হয়। আজকের আকর্ষনীয় খবর হোল, সৌরজগতের বাইরে বিভিন্ন নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত মোট ৭১৫টি গ্রহের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যেখানে বিজ্ঞানীদের মতে মানুষের পক্ষে জীবনধারণ করা সম্ভব। বিজ্ঞানীরা এই আবিষ্কারে আনন্দে আত্মহারা, সারা বিশ্ব উৎসুক- পৃথিবী যখন বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে যাবে, তখন এই গ্রহ ফেলে যাবার জায়গার অভাব হবেনা।
ছোট্টবেলায়, সেই চার পাঁচ বছর বয়সে, আমার সবচেয়ে প্রিয় অনুষ্ঠানগুলোর একটি ছিল ‘স্টার ট্রেক’- একটি কাল্পনিক সিরিজ যেখানে একদল অভিযাত্রী একটি অত্যাধুনিক মহাকাশযানে চড়ে ঘুরে বেড়ায় গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে, শুধুমাত্র জ্ঞানান্বেষনে, আবিষ্কার করে নতুন নতুন জীবনের অস্তিত্ব, মুখোমুখি হয় রোমাঞ্চকর সব অভিজ্ঞতার। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম একদিন আমি বড় হয়ে নিজের স্পেসশিপ নিয়ে মহাবিশ্বের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াব- এমন সব গ্রহনক্ষত্র আবিষ্কার করব যার অস্তিত্ব ছিল সবার অজানা, কৃষ্ণগহ্বরের অমোঘ আকর্ষন ছাড়িয়ে সূর্যের আকর্ষনের বলয় পেরিয়ে এমন সব অচেনা আকাশে উড়ে বেড়াব যার কল্পনাও কেউ কোনদিন করেনি, জ্ঞানের সিঁড়িতে এমনভাবে আরোহণ করব যার স্বপ্ন কেউ কোনদিন দেখেনি। এই উদ্দেশ্যে পরিচিত মহাজগতের নানান তত্ত্ব, তথ্য, উপাত্ত পড়ে কেটে গেছে কত রাত! অথচ এই ক্ষুদ্র সৌরমন্ডলের রহস্যই কি আজ অবধি উন্মোচিত হয়েছে?
বাস্তবতা হোল, আমরা আজ অবধি মহাকাশে আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী মঙ্গলেই যেতে পারিনি। আমাদের দ্রুততম মহাকাশযানে চড়ে মঙ্গলে যেতে সময় লাগবে ছয়মাস যখন গ্রহটি পৃথিবীর নিকটতম দুরত্বে অবস্থান করে। ভয়েজার ১ ১৯৭৭ সালে রওয়ানা হয়ে ২০১২ সালের ২৫শে অগাস্ট, অর্থাৎ ৩৫ বছর পর, সৌরজগতের সীমানা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়। পৃথিবীর নিকটতম নক্ষত্র সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো এসে পৌঁছতে সময় লাগে ৮ মিনিট ১৩ সেকেন্ড, অর্থাৎ সূর্য যদি এই মূহূর্তে ধ্বংস হয়ে যায়, সেটা টের পেতে আমাদের সময় লাগবে ৮ মিনিট ১৩ সেকেন্ড। সৌরজগতের নিকটতম নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টরীর দুরত্ব সূর্য এবং ইউরেনাসের মধ্যকার দুরত্বের কিছু বেশি। অর্থাৎ সর্বাধুনিক মহাকাশযানেও শুধু প্রক্সিমা সেন্টরী পর্যন্ত পৌঁছতে কেটে যাবে একটা মানুষের জীবনের অর্ধেক। অন্যান্য নক্ষত্রগুলো আরো অনেক অনেক আলোকবর্ষ দূরে। অর্থাৎ আলোর গতিতে চললেও এগুলোতে পৌঁছতে সময় লেগে যাবে অনেক বছর। যেহতু কোন নক্ষত্রকেই আমরা কখনো বর্তমান অবস্থায় দেখতে পাইনা, হয়ত পৌঁছে দেখা যাবে নক্ষত্রটির মৃত্যু ঘটেছে হাজার বছর আগে, সেখানে ওঁত পেতে আছে এক বিশাল কৃষ্ণগহ্বর! কিন্তু আসল কথা হোল আলোর গতিতে চলার মত মহাকাশযান আজও আবিষ্কৃত হয়নি। আলোর গতি সেকেন্ডে ২৯৯,৭৯২,৪৫৮ মিটার। ভয়েজার ১ এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ৬২,১৩৬ কিলোমিটার অর্থাৎ সেকেন্ডে মাত্র ১৭,২৬০ মিটার। এই গতিতে আমরা একটি প্রজন্মের জীবদ্দশায় কোন গ্রহে পৌঁছতে পারব?
মহাকাশের প্রেক্ষাপটে পৃথিবী একটি বিন্দুরও সমতুল্য নয়, এমনকি সূর্যও মহাবিশ্বে তেমন কেউকেটা কেউ নয়। এইটুকুন পৃথিবীটারই তেমন কিছু আমরা ঠিকমত ঠাহর করতে পারিনি আমাদের অস্তিত্বের লক্ষ লক্ষ বছরে, এখনও হাতড়ে বেড়াচ্ছি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়েও কেউ মরুভূমির কোন এক স্থানে মরুদ্যান পাওয়া যাবে এই আশায় মরুভূমিতে বসতি স্থাপন করতে যায়না। তাহলে জীবনের অস্তিত্ব নেই কিন্তু জীবনের অনুকুল পরিবেশ থাকা সম্ভব, এই ধারণার বশবর্তী হয়ে মহাকাশের কোন এক গ্রহে পাড়ি জমানো কতখানি বুদ্ধির কথা? গন্তব্যের কথা নাহয় বাদই দিলাম, এই দীর্ঘ ভ্রমনে অক্সিজেন, খাবার , পানীয়ের জোগান আসবে কোথা থেকে তাই বা কি নির্ধারন করা গিয়েছে? পাঁচ মিনিটের এলেভেটর ভ্রমনে আমরা বিরক্ত হয়ে যাই, সেই আমরা এক জীবন ভ্রমন করব কিভাবে? বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণ করেছেন নভোচারীরা দীর্ঘকাল কৃত্রিম উপগ্রহগুলোতে অবস্থান করলে মধ্যাকর্ষন শক্তির অভাবে তাঁদের মাঝে নানাধরনের শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন দেখা দেয়, হাড় থেকে ক্যালসিয়াম ক্ষয় হতে থাকে যেহেতু ভাসমান থাকার জন্য শরীরের মজবুত কাঠামোর প্রয়োজন নেই। তাহলে আমাদের যে প্রজন্ম ভিনগ্রহে যাত্রা করবে তারা যে জেলিফিশের আকৃতি নিয়ে ঐ গ্রহে অবতরণ করবেনা তার নিশ্চয়তা কি?
ধরে নিলাম কষ্টে সৃষ্টে পৌঁছনো গেল খুব কাছকাছি কোন গ্রহে যেখানে ধারণা করা হচ্ছে জীবনের অস্তিত্ব সম্ভব। কিন্তু দূরবীন দিয়ে দেখে সেখানে জীবনধারণের মৌলিক উপাদান যেমন বায়ু বা পানি সম্পর্কে কতটা সঠিক ধারণা পাওয়া সম্ভব? পৃথিবীর বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ ২০.৯৪৭৬%। এই দাহ্য পদার্থটি যেন পৃথিবীটাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করতে না পারে সেজন্য তাকে সামলে রেখেছে ৭৮.০৮৪% নাইট্রোজেন। পৃথিবীর বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা মাত্র .০৩১৪%, এর মাঝে শূন্য দশমিক কিছু পরিমাণ হেরফের হলে পুরো পৃথিবীতে তোলপাড় পড়ে যায়। যেমন এই সেদিন উত্তর মেরুতে ম্যানহাটন আকারের এক খন্ড আইসবার্গ ভেঙ্গে পড়ল যেহেতু পৃথিবীর বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। তা দেখে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর ভবিষ্যত নিয়ে শংকিত। পানির নীচে ডুবুরীরা যে অক্সিজেন ট্যাংক নিয়ে নামে তা মূলত অক্সিজেন নয়, বাতাস। কারণ বিশুদ্ধ অক্সিজেন পানির নীচে বিষাক্ত। একই ব্যাপার মহাকাশচারীদের ক্ষেত্রে। এত দুর্বল শারীরিক ভারসাম্য নিয়ে পৃথিবীতেই যে মানুষ বেঁচে থাকে সেটা একটা আলৌকিক ব্যাপার। ভিনগ্রহে হুবহু এই কম্বিনেশনের বায়ু ছাড়া মানুষ বাঁচবে তো?
অপরদিকে পানি। কোন গ্রহে তরল পানির অস্তিত্ব দেখা যায়নি। ধারনা করা হচ্ছে তা মাটিতে মিশে বা মাটির নীচে বরফ আকারে বিদ্যমান থাকতে পারে। এই প্রসঙ্গে কোলরিজের ‘দ্য এনশিয়েন্ট ম্যারিনার’ কবিতার দু’টো লাইন খুব মনে পড়েঃ
Water water everywhere ,
Nor any drop to drink.
পৃথিবীর চারভাগের তিনভাগ পানি অথচ এই পৃথিবীতে পানির অভাবে মানুষ মারা যায়, একফোঁটা সামুদ্রিক পানি যেন একফোঁটা বিষ! এই শারীরিক ক্ষমতা নিয়ে আমরা চলেছি মহাকাশ দখল করতে! সেখানে গাছপালা জন্মাবে কিভাবে, কোন প্রানীর অস্তিত্ব ছাড়া খাবারের জোগান আসবে কি করে কিছুই কি ভাবার প্রয়োজন নেই?
ছোটবেলার দেখা একটি অসাধারন দৃশ্যের কথা প্রায়ই মনে পড়ে। একবার আমরা ছুটিতে ঢাকা এসেছি, সচরাচরের মতই আমি ছিলাম ভালোদাদু, আমার দাদার ছোটবোনের বাসায়, ধানমন্ডী লেকের পাড়ে। রাতের কোন এক সময় দাদু আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বারান্দায় নিয়ে গেল। তখনো লেকের পাড়ে এত অবৈধ বাড়ীঘর ওঠেনি। দাদুর বারান্দার সামনে থেকে লেক পর্যন্ত ছিল উন্মুক্ত। আকাশের দিকে তাকিয়ে চোখ মলতে শুরু করলাম। বিশ্বাস হচ্ছিলোনা যা দেখছি তা ঠিক দেখছি। নিকষ কালো আকাশে পাশাপাশি দু’টো আলোকবর্তিকা! কোন এক অদ্ভুত কারণে সূর্য উঠছিল, চাঁদ ডুবছিল- পাশাপাশি, একই সময়- দু’টোর আকার এবং রঙ ছিল একই, অবস্থানও ছিল একই সরলরেখায়। দাদু ধাঁধাঁ করে বলল, ‘বল তো কোনটা চাঁদ আর কোনটা সূর্য!’ কিছুতেই নির্ণয় করতে পারলাম না। যখন চাঁদটা নামতে শুরু করল আর সূর্যটা লালিমা ছড়াতে লাগল তখনই বুঝলাম কোনটা কে। বড় হয়ে পড়েছিলাম, ‘সূর্য তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে, এটাই পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহর নির্দেশ। চন্দ্রের জন্য আমি বিভিন্ন অবস্থান নির্ধারন করেছি, অবেশেষে সে পুরোনো খেজুর শাখার মত ক্ষীণ এবং বাঁকা হয়ে যায়। সূর্য নাগাল পেতে পারেনা চাঁদের এবং রাত আগে চলেনা দিনের, প্রত্যেকেই প্রত্যেকের নির্দিষ্ট কক্ষপথে সাঁতারের ভঙ্গিমায় চলমান’ (সূরা ইয়াসীনঃ ৩৮-৪০)। কি অসাধারন নিয়মতান্ত্রিক এই মহাবিশ্ব! কি সৌভাগ্য আমার যে এই দৃশ্য আমি নিজ চোখে দেখেছি যেখানে চাঁদ ও সূর্য এক আকাশে একই সাথে বর্তমান থেকেও পরস্পরের সীমা অতিক্রম করেনা!
রবীন্দ্রনাথ ঠিকই বলেছেনঃ
বহুদিন ধরে বহু পথ ঘুরে
বহু ব্যয় করে বহুদেশ ঘুরে,
দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা
দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু,
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর
একটি শিশির বিন্দু।
কতগুলো আধপাগলা বিজ্ঞানী ধারণা করছে ৭১৫টি গ্রহে মানববস্তি সম্ভব আর আমরাও ধেই ধেই করে নাচছি অথচ আল্লাহ্ বলে দিয়েছেন, ‘হে জিন ও মানবকূল, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের প্রান্ত অতিক্রম করা যদি তোমাদের সাধ্যে কুলায়, তবে অতিক্রম কর। কিন্তু আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত তোমরা তা অতিক্রম করতে পারবে না’ (সূরা রাহমানঃ আয়াত ৩৩)। আমরা কেন যে নিজের ঘরে সচ্চরিত্র সুন্দরী স্ত্রী ফেলে অপরের কুৎসিত দুশ্চরিত্র সঙ্গিনীর পেছনে ছুটি কে জানে।
ফেরেস্তারা ঠিকই বলেছিলেন, ‘আপনি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন যে দাঙ্গা হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা প্রতিনিয়ত আপনার প্রশংসা করছি এবং আপনার পবিত্র সত্ত্বাকে স্মরন করছি’ (সূরা বাক্কারাঃ আয়াত ৩০)। আমরা দয়ামায়া, ভালবাসা, মানবতা সব বিসর্জন দিয়ে আমাদের এই বাসভূমিকে বিরান করে ফেলছি। স্বার্থ, লোভ, মোহ, অর্থ, ক্ষমতার তাড়নায় আমরা দ্বন্দ্ব কলহ, খুন, বিধ্বংসী অস্ত্র দিয়ে পৃথিবীটাকে ধ্বংস করে ফেলছি। তারপর বসে আছি দূরের তারার অজানা অচেনা ঝিকিমিকি হাতছানির আশায়। কিন্তু এতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে কি? স্বভাব যায়না মরলে। জর্জ লুকাসের ‘স্টার ওয়ার্স’ সিরিজের জনপ্রয়তাই প্রমাণ করে আমাদের ভিনগ্রহে বসতি স্থাপনের উদ্দেশ্য শান্তির আবাস গড়ে তোলা নয় বরং যুদ্ধবিগ্রহ, খুনাখুনিকে মহাজাগতিক পর্যায়ে উন্নীত করা।
কতই না ভাল হত যদি আমরা বরং আমাদের এই পার্থিব বাসস্থানের প্রতি যত্নশীল হতাম, পরস্পরকে বেঁধে নিতাম মায়ার বাঁধনে, দূর নক্ষত্রের শোভা এই পরিচিত আকাশটা থেকেই উপভোগ করতাম এবং এই বিশাল অংকের টাকা কতগুলো ক্ষ্যাপাটে লোকের কল্পনার পেছনে না উড়িয়ে তা দিয়ে মানবতার কল্যাণ সাধনে ব্রতী হতাম! পৃথিবীটাও বাঁচত, আমরাও বাঁচতাম। কিন্তু চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনী। তাই এই পৃথিবীটাকে আমরা ধ্বংস করেই ছাড়ব। কিয়ামত আসবে এরই ক্রমানুবর্তিতায়। তারপর আমার প্রভু আমাদের সকলকে একে একে প্রশ্ন করবেন, ‘অতঃপর তোমরা আমার কোন কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে?’
বিষয়: বিবিধ
২২৫৯ বার পঠিত, ৫৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
প্রথম মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহ দেয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ
ধরুণ ০.৫ সেন্টিমিটার লম্বা একটি পিঁপড়া। সে কি আদৌ কখনো মহাসমুদ্রের রহস্য ভেদ করতে পারবে? এই মহাবিশ্বের তুলনায় পৃথিবী একটি ধুলিকণার চেয়েও অনেক অনেক ক্ষুদ্র। আর পৃথিবীর তুলনায় একজন মানুষ বা একজন বিজ্ঞানী? মহাবিশ্বের রহস্য ভেদ করা কি কেয়ামত পর্যন্তও সম্ভব কারো পক্ষে?
আজ কেউ কেউ এসব না বুঝেই (তাদের বেশিরভাগই বাংলা বা কলার ছাত্র, বিজ্ঞানের ছাত্র নয়) অপ্রমাণিত বিগ ব্যাং তত্ত্বকে ভিত্তি ধরে নাস্তিকতার ভেক ধরে যেটা অনেক হাস্যকর। এমনকি বিগ ব্যাং তত্ত্বটির ব্যাখ্যাও তারা ঠিকমতো দিতে পারেনা। কেমন একটা ধোঁয়াশা কথাবার্তা!
সময় পেলে দশ মিনিটের এই ভিডিওটি দেখুন, আল্লাহ্ যাকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে চান তাকে হিদায়াহ পৌঁছানোর জন্য তিনিই যথেষ্ট!
https://www.youtube.com/watch?v=fA8bZR89L9E
আপনার ব্যাপারে হুলিয়া জারি হচ্ছে!
কিন্তু আমাদের আলেমরা গবেষনায় নিমিত্ত অন্য আলেমের খুত বের করায়। যদিও শুধু মাদ্রাসার হুজুরদের জন্যই আল্লাহ চিন্তা করার বিষয় সীমাবদ্ধ করে দেননি । কিন্তু হুজুররা অনেকেই মনে করে ইসলাম নিয়ে চিন্তা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি । জাকির নায়েক আবার কে !!!
যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের
নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে এবং রাত ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে সকল বোধসম্পন্ন লোকদের জন্যে। যাঁরা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে, (তারা বলে ওঠে) হে আমাদের প্রতিপালক! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করোনি। সকল পবিত্রতা তোমারই, আমাদেরকে তুমি আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করো! -(সুরা আল-ইমরান: ১৯০-১৯১
সংগৃহিত, শিক্ষাবিষয়ক ওয়েবসাইট
tafhimul quran
[33] O assembly of jinn and men! If you have power to pass beyond the zones of the heavens and the earth, then pass beyond (them)! But you will never be able to pass them, except with authority (from Allâh)!
আমি ছাড়পত্রের জায়গায় অনুমতি শব্দটি ব্যাবহার করেছি। আপনি যে তরজমাগুলোর কথা বলেছেন সেগুলোও দেখেছি ভাই, কিন্তু শক্তি এবং ছাড়পত্র শব্দ দু'টি একই অর্থে ব্যাবহার করা হয়নি। ওখানে বাক্যটি আলাদাভাবে তরজমা করা হয়েছে। প্রত্যকে মুসলিমের দায়িত্ব অপর ভাই বা বোনের ভুল ধরিয়ে দেয়া। আপনার সতর্কবানীর জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই।
প্রত্যেককে চিন্তা করতে বলা হয়েছে, কিন্তু আমরা তো সব শিক্ষাদীক্ষা চিন্তা গবেষনার দায়িত্ব একটি শ্রেণীর ওপর তুলে দিয়ে নিজেরা চিন্তামুক্ত হয়ে বসে আছি!
Actually if any person just think about his body or the besides creation....he absolutely praise the allah.
your write up system is really nice, Cary on.
may allah give us the realization.
সুরা আররহমান এর যে আয়াতটির কথা লিখেছেন ডঃ এম শমশের আলি এর ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন যে এর অর্থ হবে জ্ঞান ব্যাতিরিকে। আর এতটুক অভিযান কেই মহাশূন্যের রহস্য জেনে ফেলা বলে দাবি করার সুযোগ নাই।
গত পড়শু একজন ভারতিয় লিখকের একটি সম্বর্ধনা তে গিয়েছিলাম। একজন প্রশ্ন কর্তা তার বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি ইউরি গ্যাগারিনকে নিয়ে প্রচলিত একটি কেীতুক বলেন যে মহাশুন্যে গিয়েও তিনি আল্লাহ কে দেখেননি। কিন্তু এরা জেনেও না জানার ভান করেন কিংবা বুঝতে চাননা। যে বিরাট মহাশুন্যের শতকরা একভাগও এখনও আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। যেখানে সৃষ্টির শেষ সীমা এখনও আমরা জানিনা সেখানে স্রষ্টার নাথাকা কে কিভাবে দাবি করা যায়?
এগুলো আবিষ্কার হয়ে পৃথিবীর কি কোন উপকার এসেছে ?
মঙ্গল গ্রহে কেন , মানুষের চাঁদে গমনই তো খুবই কন্ট্রোভার্শিয়াল একটা বিষয় ।
গত ৪০-৪৫ বছরের ৩ জন বাদে আর কারও নাম শোনা যায় নি ।
এখন মহাকাশে গিয়ে কি সব গবেষনা না ছাই পাশ করেই খুব ভাব দেখায় যে কি না কি করে ফেলেছে । অথচ যারা চাঁদে গিয়েছে তাদের মহাকাশে যাওয়াটা পিএইচডি করার পর এস.এস.সি. পরীক্ষা দেবার মত ব্যাপার।
ফেরেস্তারা ঠিকই বলেছিলেন, ‘আপনি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন যে দাঙ্গা হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা প্রতিনিয়ত আপনার প্রশংসা করছি এবং আপনার পবিত্র সত্ত্বাকে স্মরন করছি’ (সূরা বাক্কারাঃ আয়াত ৩০)।ফেরেশতারা সঠিক বলেনি তাই আল্লাহ বলেছিল আমি যা জানি তোমরা তা জানো না।
মানুষ তাদের কর্ম ফলের কারনে তারাই কষ্ট পাবে । কিন্তু ধ্বংস হবে না । একমাত্র কেয়ামত ছাড়া ।
আমিও সায়েন্স ফিকশনের ভক্ত । আমি হলিউডি ছবি দেখি না তবে সায়েন্স ফিকশন হলে ছাড়ি না।
আপনার সুন্দর পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।
পড়ার এবং উৎসাহ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ
সুন্দর চিন্তার খোরাক যোগানো লিখাটির জন্য শুকরিয়া!
একসময় বে-শ সাইন্স ফিকশন পড়েছি। তখন কিন্তু আমার মনে খুব ইচ্ছে ছিলো 'গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে' ঘুরে বেড়াব!!! এখন ঐসব মনে পড়লেই হাসি পায়!!!
ধন্যবাদ।
তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টি ফেরাও; কোন ফাটল দেখতে পাও কি? অতঃপর তুমি বার বার তাকিয়ে দেখ-তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে। (সূরা মুলকঃ আয়াত ৩-৪)
পড়ার এবং পছন্দ করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ
কীভাবে লেখেন এত কঠিন কঠিন বিষয়?
মন্তব্য করতে লগইন করুন