তুলি দু'হাত, করি আখেরি মুনাজাত

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ নূর উদ্দীন ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:০৪:০৪ সকাল

বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলমানের মাঝে 'পীরানী ইসলামের' সুস্পষ্ট বৈশিষ্ট দেখা যায় । পীর-মুরিদি যারা পছন্দ করেনা, তারাও লেংটা বাবা বা জটওয়ালা মামাকে তেমন ঘাটায়না । পাছে কোন অমংগল হয় ।

ইদানিং অনেক পীরের মাজারে ভিক্ষা চাওয়া বা মানত করার ভাল সমালোচক দেখা যায় । এদের একটি অংশকে আবার অন্য জায়গায় ভিক্ষার হাত পাতার আলামত দেখা দিচ্ছে । ক'দিন আগে টিভি স্বাক্ষাতকারে এক লোককে দেখলাম তার প্রতিবন্ধী ছেলের জন্য দোয়া করতে তুরাগ নদের পাড়ের আখেরি মুনাজাতের দিকে দৌড়াতে ।

সমাজের সব মানুষ ভাল হয়ে গেলে নাকি ইসলাম এমনি এমনি কায়েম হয়ে যাবে ! কিন্তু আমি কষছি অন্য হিসেব ?? সমাজের সবাই ভাল হয়ে গেলে শেয়ারবাজারের টাকা মারবে কে !! ভুয়া নামে লোন নিয়ে ব্যাংকগুলোকে ফুতুর করবে কে ! পদ্মাসেতু যারা বানায় তারাতো দেখি ইসলামি আদব-কায়দায় টেলিভিশন সেটের সামনে আখেরি মুনাজাতে অংশ নেয়!! এরা ভাল হয়ে গেলে টেন্ডারবাজি করবে কে! নাকি শুধু এরা ছাড়া দুনিয়ার সবাই ভাল হয়ে যাক এটাই আমাদের কামনা ! নাকি আকাম-কুকাম করে আখেরে আখেরি মুনাজাতে অংশ নিলেই সব ধুয়েমুছে পূত-পবিত্র মাসুম বান্দা!!

মহান আল্লাহ আল-কোরানে সৎ কাজের আদেশের সাথে অন্যায় কাজে বাধা দানের আদেশ দান করেছেন । তাই শুধু 'হামারা দোয়া কবুল পরমা' বলে চোখের পানি ভাসিয়ে সাগর বানিয়ে ফেললেও আয়াতের শেষাংশকে ফেতনা বলে মুখে কুলুপ লাগিয়ে রাখলে - দুনিয়ার সব মানুষও যদি আখেরি মুনাজাতে শামিল হয়, টেন্ডারবাজি বন্ধ হবেনা । দ্বীনের নবী মুহাম্মদ সঃ শুধু হেরা গুহায় বা মসজিদে বসে বসে দোয়া করলেই পারতেন । বদরে লড়াইয়ে নেমেছেন, একি সাথে দোয়াও করেছেন । ওহুদে রক্ত ঝরিয়েছেন, আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনাও করেছেন ।অন্যায় কাজে বাধা না দিয়ে সারাজীবন আখেরি মুনাজাত করে গেলেও চেতনা ফিরে আসবেনা । অন্যায়কে অন্যায় মনে হবেনা । উপরন্ত অন্যায় করে আখেরি মুনাজাতে গেলে নবজাত শিশুর মত মাসুম হয়ে যাবে এধারনা জন্মাবে । তখন খুন-খারাবি আর আখেরি মুনাজাত একসাথে চলতে থাকবে !

বিষয়: বিবিধ

১৩৮৯ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

175788
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:২৪
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : মোনাজাত শব্দের অন্তনিহীত অর্থ এই শব্দের মাঝেই লুকিয়ে আছে। মূলত মোনাজাত শব্দের অর্থ হল কানে কানে কথা বলা। একাকীত্বে, নিভৃতে, আন্তরিকতার সাথ অন্তরের কথাগুলো, নিজের অভিযোগ, অভাব, সমস্যা, প্রাপ্তি গুলো আল্লাহর কাছে খোলামেলো প্রকাশের নাম মোনাজাত।

বাংলাদেশে যেভাবে আনুষ্ঠানিকতার সহিত, ঢাক-ডোল পিটিয়ে যেভাবে মুনাজাত করা হয় সে ধরনের মোনাজাত কোনদিন রাসুল (সাঃ) নিজে করেন নি, সাহাবীরা করেন নি, তাবেইন, তাবে তাবেইন কেউ করেন নি। কোরআন হাদিসের কোন দলীল নাই। ইতিহাসে দেখা যায় ওমর (রাঃ) সময়ে রাসুলের (সাঃ) এর চাচা আব্বাস (রাঃ) বৃষ্টির জন্য দোয়া চেয়ে সম্মীলিত ভাবে মোনাজাত করেছিলেন। সাথে সাথেই মোনাজাত কবুল হয়েছিল।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৫৫
129109
বিন হারুন লিখেছেন : তাহলে আমরা যারা মিছিল-মিটিং শেষে মোনাজাত করি, এবং বিভিন্ন উপলক্ষ্যে মোনাজাত করি সব অবৈধ!
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৭
129121
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : না ভাই কোনাটাই অবৈধ নয়। আমাদের দেশে অনেক রেওয়াজ চালু হয়েছে, যা এবাদতের সাথে মিশিয়ে পড়া হয়। যেগুলো সহজে মূলোৎপাটন করা সহজ নয় আবার কাজ গুলো খারাপও নয়। তবে কোরআন হাদিস থেকে স্বীকৃত নয়।

আল্লাহ চার প্রকার মানুষ দেখে হাঁসেন, যারা গাজীর বেশে দ্বীন কায়েমের জন্য রাস্তায় মিছিল মিটিং করবে তারাও তার মধ্যে শামিল। এখানে মোনাজাতের কি দরকার যেখানে, আল্লাহ স্বয়ং সরাসরি তাদের দিকে তাকিয়েই থাকেন। তারা যা বলে তা শুনেন এবং কবুল করেন।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০৩:৪৭
129122
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : না ভাই কোনাটাই অবৈধ নয়। আমাদের দেশে অনেক রেওয়াজ চালু হয়েছে, যা এবাদতের সাথে মিশিয়ে পড়া হয়। যেগুলো সহজে মূলোৎপাটন করা সহজ নয় আবার কাজ গুলো খারাপও নয়। তবে কোরআন হাদিস থেকে স্বীকৃত নয়।

আল্লাহ চার প্রকার মানুষ দেখে হাঁসেন, যারা গাজীর বেশে দ্বীন কায়েমের জন্য রাস্তায় মিছিল মিটিং করবে তারাও তার মধ্যে শামিল। এখানে মোনাজাতের কি দরকার যেখানে, আল্লাহ স্বয়ং সরাসরি তাদের দিকে তাকিয়েই থাকেন। তারা যা বলে তা শুনেন এবং কবুল করেন।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:০৩
129357
মোহাম্মদ নূর উদ্দীন লিখেছেন : ক'দিন আগে ডঃ শমসের আলীর একটি টকশো দেখেছিলাম । উনার প্রশ্ন ছিল 'এত বিশাল সংখ্যায় মানুষ হাত তুলে কায়মনোবাক্যে আল্লাহর দরবারে মুনাজাত করলে সমাজে এত দূর্নীতি, হানাহানি ইত্যাদি থাকে কি করে ?'
175826
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৫১
বিন হারুন লিখেছেন : আপনি কি বুঝাতে চেয়েছেন জ্ঞানের অভাবে হয়তো পুরো বুঝতে পারিনি. তবে এতটুকু বুঝতে পেরেছি ইজতেমার লাখো-লাখো মুসল্লি যারা আখেরী মুনাজাত করে তারা "নাহি আনিল মুনকার" অর্থাৎ অসৎ কাজের নিষেধের উপর আমল করে না বুঝাতে চেয়েছেন. আপনি তাদের ভালবাসেন না তাই হয়তো লাখো মানুষের ভিড় দেখে ঈর্ষন্বিত হয়ে কথাগুলো বলেছেন. আমি আমার চোখে দেখেছি সেই শাপলা চত্বরের গণহত্যা, যেদিন লাখো মুসলিমের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই আখেরি মুনাজাত ওয়ালারাই. আমি দেখেছি তাদের ফখরুদ্দিনের সময় নারী সম অধিকারের নামে অবৈধ আইন পাশ করার চেষ্টা করেছিল. তখন রাজনীতিবিদগণ নেতাদের কারাবরণ দেখে কর্মীরা ঘরে লুকিয়ে ছিল. আর তখনও ৪৪ ধারা ভেঙ্গে এই আখেরী মুনাজাতকারী মুসলিমরাই আন্দোলন করেছিল. যার কারণে ৫০০০জনকে আসামী করে চাট্টগামে মামলা হয়েছিল. আরেকটু পেছনে গেলে দেখতে পাব বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন করার কারনে গাছে-গাছে ফাঁসি দিয়েছিল এদেরকেই. আসলে এসব পোষ্ট মুসলিমদের ঐক্যের ফাটলকে বড় করতে পারবে আর কিছু না.
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:০৪
129359
মোহাম্মদ নূর উদ্দীন লিখেছেন : আপনি তাদের ভালবাসেন না তাই হয়তো লাখো মানুষের ভিড় দেখে ঈর্ষন্বিত হয়ে কথাগুলো বলেছেন । ভালবাসি বলেই চিন্তিত, যেমন চিন্তিত আপনি আমাকে নিয়ে । এক মুসলমান অপর মুসলমানকে ভালবাসবেনা তা কি করে হয় ।
১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৩
129375
বিন হারুন লিখেছেন : আমি আপনাকে নিয়ে তেমন চিন্তিত নই, তবে মুসলিমদের ঐক্য নিয়ে চিন্তিত.

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File