তাই নাকি ?

লিখেছেন লিখেছেন বলতে চাই ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৪:৩৯:১৬ রাত

বিশ্বের দীর্ঘতম সাগরের উত্তাল ফেনিল ঢেউ, প্রকৃতির পেরেক খ্যাত পাহাড়, চির সবুজ ঝাউবাগান, সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য, প্রেমের অমর নিদর্শন মাথেনুর কূপ, প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মারটিন, পাথুরে বীচ ইনানী, দ্বিপ উপজেলা মহেশখালী, দেশের একমাত্র সাগর বাতি দ্বীপ কুতুব্দিয়া,দেশের একমাত্র রাডার স্টেশন, বার্মিজ মার্কেট, শত বছরের ঐতিহ্য বৌদ্ধ মন্দির সহ প্রকৃতির অপার আয়জনের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার। আকর্ষিত করে দেশী-বিদেশী ভ্রমন পিপাসু পর্যটকদের। ভালোবাসা দিবস (১৪ফেব্রুয়ারী ) পালন সহ ভ্রমণের লক্ষে ১৫ফেব্রুয়ারী লাখো পর্যটক ভারে মুখরিত ছিল কক্সবাজার। ঐ দিন ছিল জামায়াতের কেন্দ্রীয় করমসুচি। কিন্তু, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করতে গেলে বাঁধা প্রদান করে পুলিশ বাহিনি। রাজনৈতিক দল হিসেবে, কর্মসূচী পালনে অবৈধভাবে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে তারা মরিয়া হয়ে উঠে, গনতান্ত্রিক অধিকার চর্চায়। আর জামায়াত মরিয়া হলে যা হয়। শুরু হলো উভয় পক্ষের সংঘর্ষ। ধাওয়া- পালটা ধাওয়া, ইট পাটকেল নিক্ষেপ, গুলি বর্ষণ ইত্যাদি। পর্যটন শহর পরিণত হয়,পাকিস্তানের করাচির মত আতংকের শহরে। মধ্যখানে লাশ হল ৪জন( অনেকের কাছ থেকে শুনেছি ১০ জনের বেশি হবে), আহত হল শতাধিক। প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করল। তারপর চিরাচরিত নিয়মে যা হয়। লাশ নিয়ে রাজনীতি ! প্রতিবাদে জেলা জামায়াত কক্সবাজার জেলায় ৪৮ ঘণ্টা হরতাল আহবান করল। একই ইস্যুতে তাদের কেন্দ্র ১৮ ফেব্রুয়ারী সারাদেশে হরতাল দিল। এই হরতালের কারণে সারাদেশের অবসুতেবলতে চাই না। তবে, কক্সবাজারে আটকা পড়ে হাজার হাজার পর্যটক। সামর্থ্যবানরা বিমানে চলে গেল। কক্সবাজারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কতৃক ভিত্তিপ্রস্তর দেয়া রেল লাইনের কাজ কবে শুরু হবে কেউ জানেনা ? শুনেছি, এ সংক্রান্ত ফাইল বাতিল করে দেয়া হয়েছে। রেল লাইন থাকলে হয়তো,অনেক দুর্ভোগ লাঘব হতো।

আমার লেখা তাদের নিয়ে না। যেখানে সরকার কিছু করতে পারছেনা, সেখানে আমি ..! সংবাদ মাধ্যম সমুহের মারফত জানতে পারলাম, জামায়াত- পুলিশ সংঘর্ষের সময় নাকি জামায়েতের পক্ষে রোহিংগারা অংশগ্রহণ করেছে ! খুব, মারাত্মক বিষয়। এমনিতে সীমান্ত জেলার নাগরিক হিসেবে তারা আমাদের জন্য রীতিমত আতঙ্কের । তাদের নানান অপকর্মের দায় বহন করতে হয় আমাদের।

কিন্তু, অবাক হয়েছি জামায়াত শেষ পর্যন্ত তাদের ব্যবহার করল ?? এ প্রশ্নের উত্তর খুজতে আমার লেখা।

১৭ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ অভিজাত একটি হোটেলে সংবাদিক সম্মেলন আহবান করলেন।

(কক্সবাজারে জামায়াতের তাণ্ডবে অর্থ-অস্ত্রদাতা ২২ প্রতিষ্ঠান

০২/১৮/২০১৩

কক্সবাজারে ১৫ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের ঘটনায় চিহ্নিত ২২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অর্থ ও অস্ত্র যোগান দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ।

রোববার বিকেল ৪টায় কক্সবাজার শহরের একটি আবাসিক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ আনা হয়।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট আহমদ হোসেন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের তাণ্ডবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ইসলাম ধর্মের পবিত্র স্থান মসজিদকে ব্যবহার করে এ নৈরাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছে।’

তিনি রাজনৈতিক স্বার্থে, দেশদ্রোহীমূলক কর্মকাণ্ডে মসজিদকে ব্যবহার করতে না দেওয়ার জন্য মসজিদ পরিচালনা কমিটি, সংশ্লিষ্ট ইমাম এবং খতিবদের কাছে অনুরোধ জানান।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শুক্রবার জুমার নামাজের পর কক্সবাজারে সংঘটিত তাণ্ডবের ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত। এ পরিকল্পনায় মিশন গ্রুপ, কেয়ারী, আল ফুয়াদ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংকসহ ২২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অর্থ এবং অস্ত্র সরবরাহ করেছে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গাদের ভাড়া করে কক্সবাজার শহরে আনা হয়। এমনকি কয়েকটি মাদ্রাসার ছাত্রদের পিকনিকের কথা বলে আনা হয় শহরে। আগে থেকে কক্সবাজার শহরে জড়ো করে পরিকল্পিতভাবে তাণ্ডব চালানো হয়।’ তিনি নিহত ৩ জন সাধারণ পথচারী উল্লেখ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং নিহতদের পরিবারকে সাহায্য করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ১৪ দলের নেতারা বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রতিহত করতে এ নৈরাজ্য।’

সংবাদ সম্মেলনে শনিবার ও রোববারের হরতাল জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ্য করে সোমবারের হরতাল প্রতিহত করতে মাঠে থাকার ঘোষাণা দেন তারা।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম চৌধুরী, নুরুল ইসলাম, নুরুল আবছার, মোহাম্মদ হোসাইন, মুজিবুর রহমান, জাসদ নেতা মোহাম্মদ হোসেন মাসু ও যুবলীগ নেতা খোরশেদ আলম। সুত্র- দৈনিক সমুদ্র কণ্ঠ)

বিশ্বস্থ সূত্রে জানতে পারি, সাংবাদিক সম্মেলনে কক্সবাজারের একজন সিনিয়র সাংবাদিক জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতিকে রোহিঙ্গা কানেকশন আছে মর্মে অভিযুক্ত করে প্রশ্ন করেন, আপনি কি তাদের সাথে যোগাযোগ রাখেন না ? এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে তিনি তাঁর সাথে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। সুত্রমতে জানতে পারি, বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত জেলায় যে সমস্থ মাদ্রাসা রয়েছে, সেখানকার পরিচালনা কমিটির সভাপতি তিনি। এই সব মাদ্রাসার বিরুদ্ধে অভিযোগ- সেখানে রোহিঙ্গাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এ সমস্ত রোহিঙ্গারা দেশ বিরোধি নানা অপকর্মের সাথে জড়িত। ক্ষমতাসীন দলের একজন জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে যদি এ ধরনের কর্ম -কাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া যায়, তবে বাংলাদেশ পাকিস্তান হতে বেশিদিন লাগবে বলে মনে হয়না। প্রতিদিন ঘুম ভাঙবে বোমার আওয়াজে, ঘুমাতেও হবে বোমার আওয়াজে !

এখন প্রশ্ন, সর্ষে ভুত তাড়ানোর দায়িত্ব কার ?

বিষয়: রাজনীতি

১০৮৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File