।।বলে কি তোমার ঈমান আজ জবাব দাও হে মুসলমান।। ----------------------------------------------------------- ইসলামী রাজনীতিঃজামাত-শিবির নাকি খালেদা-হাসিনা সহ সকল মুমীনের উপর ফরয?তাহলে......

লিখেছেন লিখেছেন মুক্তমন ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১১:৫৪:২৫ রাত

।।রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ছাড়া সকল ফরয আদায় অসম্ভব।।

ইসলামী রাষ্ট্র অর্থ্যাৎ রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি ইসলামী আইন ও কানুন সম্পূর্ণভাবে চালু না থাকে তবে পরিপূর্ণভাবে ইসলাম পালন করা অসম্ভব।আবার ইসলামী বিধি-বিধান পালনেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হয় নানাভাবে।

কারণ, কোরআনের আইনঅনুযায়ী চুরি করলে চোরের হাত কেটে দেয়া,জেনা-ব্যভিচার করলে ১০০দোররা মারা,খুন করলে কেসাস অর্থ্যাৎ হত্যার বদলে হত্যা,সন্ত্রাস করলে মেরীট অনুযাযী প্রথমে এক হাত এক পা আড়াআড়িভাবে কেটে দেয়া থেকে মৃত্যুদন্ড বা দেশান্তর করা ইত্যাদি।

এসব বিধান-মহান স্রষ্টা আল্লাহ-রাব্বুল আলামীনের অকাট্য-অলঙ্ঘনীয় বিধান।পবিত্র কোরআনের এসব বিধান অনুযায়ী বিচার ফায়সালা করা ফরয।

এখন বলুন আজকে আপনি এ ফরজ কিভাবে আদায় করবেন?চোর ধরে কি বঠি বা কোরবানীর ছুরি-চাকু এনে আল্লাহু আকবার বলে চোরের হাত কেটে ফরজ আদায় করবেন?এমনটা করলে কি আদৌ কোরআনের বিধান মানা হবে?

আবার গ্রাম্য মতলববাজ মৌলবী-মোল্লা দিয়ে শালিস বসিয়ে

বেত্রাঘাত বা পাথর মেরে ফরজ পালন করবেন?এমনটা করলেও কি আদৌ কোরআনের বিধান মানা হবে?

না-কিছুতেই না।এতে আপনি দুনিয়ার আদালতেও খুনি হবেন আর আখেরাতের আদালতেও পাকড়াও হবেন।কারণ কোরআনের এ ফরজ আদায় করার জন্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে সামাজিকভাবে আগে সেই পরিবেশ সেই সমাজ কায়েম করার ফরজটি আদায় করতে হবে।

আপনাকে আমাকে আগে সব ধর্মের-সব গোত্রের সব মত ও পথের তথা সব মানুষের জন্য বস-বাসযোগ্য একটি শান্তি-সুখের ন্যয়-ইনসাফ এর সমাজ বিনির্মান অত্যাবশ্যক।

চোরের হাত কাটার কোরআনিক আইন প্রয়োগ করার ফরজটি আদায় করতে হলে আপনার সমাজ হতে হবে অভাব-অনটনবিহীন দয়া-মায়া-মমতাপূর্ণ,জুলুম-শোষণ-নির্যাতন-নিপীড়ন-লান্ছনা-বঞ্চনামুক্ত,খেয়ে-পড়ে বাচার মত, জীবনের পরিপূর্ণ নিরাপত্তার গ্যারান্টিযুক্ত ন্যায়-ইনসাফের সূখী-সমৃদ্ধ- একটি সমাজ।

এমন একটি সমাজের বাসিন্দা হয়েও সুবিধা বঞ্চিত হয়ে কি চোর চুরি করেছে? আগে জানতে হবে চোর কেন চুরি করেছে?অভাবের কারণে নাকি স্বভাবের কারণে- নাকি সমাজ-রাষ্ট্রের কারণে?এসব কিছু অতি সূক্ষভাবে পরহেজগার-ঈমানদার বিচারক প্যানেল সম্বলিত আদালত, এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রমানাদি-সাক্ষীসমূহ সব বিচার-বিশ্লেষণ করে তারপর ইনসাফের সাথে কোরআনের উক্ত আইন প্রয়োগ করবেন।তখনই কেবল চোরে হাত কাটার কোরআনিক আইনের ফরয আদায় হবে অন্যথায় নহে।

আবার সমাজে-রাষ্ট্রে অন্যায়-অশ্লীলতা-বেহায়াপনার সয়লাব বয়ে যাবে আর আপনি ধরে ধরে দোররা মেরে ফরজ পালন করবেন কিছুতেই তা হবে না।

তেমন উপযুক্ত সমাজ-রাষ্ট্র এবং অন্যায়-অশ্লীলতা থেকে নিজেকে সংরক্ষণের রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা পাবার পরও যদি কেউ উক্ত অপরাধ করে তখন রাস্ট্রীয় আদালত এর মাধ্যমেই কোরআনের সকল নির্দেশনা অনুসরণ করে, এসব কিছু অতি সূক্ষভাবে পরহেজগার-ঈমানদার বিচারক প্যানেল, এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রমানাদি-সাক্ষীসমূহ সব বিচার-বিশ্লেষণ করে তারপর ইনসাফের সাথে কোরআনের উক্ত আইন প্রয়োগ করতে হবে।কোরআন দ্বারা বিচার ফায়সালা করতে হবে।আর সে জন্যেই আল-কোরআনের রাষ্ট্র-সমাজ কায়েম করা মুমীনদের উপর ফরজ।

।।ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধের আওয়াজ কেন?।।

জামাত-শিবির সহ ইসলামী রাজনৈতিক দলসমূহ সে জন্যেই (তাদের ভাষায়)মুমীন হিসেবে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ফরয বলেইতার মুমীন হিসেবে ইসলামী আন্দোলন-ইসলামী রাজনীতি করেন।

আর ৭১ই না শুধু- যে কোন সময় ইসলামী দল বা তাদের যে কেউ যে কোন অপরাধ করলে তার শাস্তি তাকে পেতেই হবে।যুগপৎ আন্দোলন বা জোটএর আন্দোলন করে পাপ মোচন কশ্মিণকালেও সম্ভব নহে যদি আদালতে আখেরাতে মুক্তি না মেলে।এ ঈমান তারা পোষণ করেন।

তারা আরও বলেন- শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণেই পাক-হানাদার থেকে মুক্ত হয়ে ভারতের তাবেদার হবার আশঙ্কায়ই ওরা তখন বিপক্ষে থাকলেও স্বাধীনের পর প্রিয় বাংলাদেশকে মেনে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই ইসলামী রাজনীতি সাংবিধানিকভাবে ঘোষনা দিয়ে করে যাচ্ছে।

আজ ৪২ বছর পর জামাতের বেশ ক-জন শীর্ষনেতাদের মানবতাবিরোধি অপরাধী বলে নতুন আদালত আর নতুনভাবে সংশোধিত আইন করে বিচার হচ্ছে-সু্ষ্টু-ন্যায়নিষ্ঠ বিচারের দাবীতে জামাত সোচ্চার ! বিরোধীদলীয়জোট সহ দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংগঠন সমূহ স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মান তথা হীন রাজনৈতিক স্বার্থের বাইরে ন্যায়বিচারের প্রত্যাশী।যদিও স্কাইপি কেলেঙ্কারীতে আদালত ও সরকার বেশ প্রশ্নবিদ্ধ বলেই পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন।

যাক জামাত-শিবিরের কেউ অপরাধী প্রমানিত হলে শাস্তি হবে অপরাধি না হলে বেকসুর খালাস পাবে।কিন্তু আজ ইসলামী দল-ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধের উত্তাপ কেন?

ইসলাম নিছক ধর্ম নয়-জানতে হবে-বুঝতে হবে

আল-কোরআনের মানবতাবাদী আইনে -নাস্তিক-মুরতাদদের ব্যাপারে-কাফের-বেঈমানদের ব্যাপারে,অমুসলিম নাগরিকদের মৌলিক মানবিক বিষয়ে, তাদের সকল অধিকার সংরক্ষণের বিষয়ে ইসলামের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে।

এসব না জেনে না বুঝে মতলব-বাজরা ইসলামের অপপ্রচার করে আর আমরাও কেউ কেউ না পড়ে, না বুঝে, হয় অতি বিপ্লবী-না হয় সুবিধাবাদী-না হয় চুপ-চাপ অবস্থানে থাকার চেষ্টা করি।

নিজের জীবন বিধানকে নিছক ধর্ম বলে (ধর্মহীনদের ?)শ্লোগানে সুর মিলাই- ধর্ম যার যার- রাষ্ট্র সবার। ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ কর-করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি..

ইসলামী রাষ্ট্র গড়ার কাজ-ইসলামী রাজনীতি

সকল মুমিনের জন্য শ্রেষ্টতম ফরজকাজ


------------------------------------

অথচ ইসলাম সর্বাধুনিক। কিয়ামত পর্যন্তই আকাশ-বাতাস-চন্দ্র-সূর্যের মতোই আধুনিক থেকে আধুনিকতরই হবে এবং থাকবে। ইসলামী রাষ্ট্রই হচ্ছে সব মানুষের সব ধর্ম-বর্ণের তথা সব মানুষের সকল অধিকার সংরক্ষণকারী একমাত্র আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র ।

এমন একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র স্বয়ং নবীজী নিজেই প্রতিষ্ঠা করে তার উম্মতদের জন্যে অনুসরণীয় আদর্শ স্থাপন করে গেছেন। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজ,ইসলামী রাজনীতি করা মুমীনের জন্যে তাই শ্রেষ্ঠতম ফরজ কাজ।এ কাজ স্বয়ং নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে করেছেন, তাঁর উম্মতদের করার নির্দেশ দিয়েছেন।নবীজির জীবন-সাহাবাদের জীবন,হাদীস-কোরআন সবই আছে আগের মতোই, কিয়ামত পর্যন্ত কোরআন অবিকৃতই থাকবে ইনশাআল্লাহ।

।আল-কোরআন বুঝে পড়ুন-জীবন-সমাজ-বিশ্ব গড়ুন।

শুধু হরফে দশটি নেকীর জন্যে না বুঝে বুঝে আরবীতে তেলাওয়াত করে চুমু খেয়ে উঠে যাবেন না। দয়া করে আপনি যে ভাষায় বোঝেন সেই ভাষাতেই দয়াময় মহান মাবুদ তার সেরাসৃষ্টি মানব জাতির কল্যানের জন্য কোরআনে কি বলেছেন একবার ঠান্ডা মাথায় বুঝে বুঝে পড়ে দেখুন।নেকীও মিলবে কোরআনের প্রতি হক্বও আদায় করা হবে।

কেননা পৃথিবীতে কেউ কোন বই-কিতাব কোন কিছুই না বুঝে পড়ে বলে আমার জানা নেই।আমরা আল-কোরআনের সাথে কেবল হরফের দশ নেকির আশায় এমনি অবিচার করছি।

মহান সম্রাটেরসম্রাট!বিশ্ব স্রষ্টার প্রেরিত বিশ্ব ফরমান-আল-কোরআন! বিশ্ব মানবতার জন্যে আপনার আমার জন্যে,আজকে আমাদের সামাজিক-রাষ্ট্রীয়-বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে আমাকে- আপনাকে -চাকুরীজীবি-ব্যবসায়ী- সমাজপতি-রাজনীতিক-রাষ্ট্রপতি-বিচারপতিকে মহান আল্লাহ পাক আজ কিভাবে কি করতে বলছেন।কি সমাধান দিয়েছেন?আসুন না কোরআন থেকে সরাসরি সমাধান নেবার চেষ্টা করি। অবশ্যই অবশ্যই সুন্দর সমাধান দয়াময় মাবুদ এর মধ্যে রেখেছন।

[b।মুমীন হিসেবে ইসলামী রাজনীতি সবার জন্যে ফরজ।।[/b]

যারা ইসলামী রাজনীতি নিয়ে কটাক্ষ করছেন এমনকি নিষিদ্ধ করার কথাও বলছেন তারা কি ইসলাম-কোরআন হাদীস বুঝে এসব বলছেন?অমুসলিম ভাইদের কথা থাক।

আপনারাতো মুসলমান!বেশ বিজ্ঞ ডক্টর-ব্যারিষ্টার এবং সবাই সচেতন মুসলমান। আপনারা কি অন্যান্য ধর্মের মতো ইসলামকেও নিছক ধর্ম ই ভেবে নিলেন?কেন?

ইসলামতো কোন ধর্মের নাম নয়! ইসলাম হচ্ছে পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নাম। এতো কারও মনগড়া কোন কথা নয় বা কোন দল-বিশেষের বানানো কোন মতবাদ নহে। বরং মানবজাতির জন্যে মহান আল্লাহ তায়ালার মনোনীত একমাত্র জীবন বিধান হচ্ছে ইসলাম।

আল-কোরআনের ভাষায়-"ইন্নাদ্বী-না ইন্দাল্লাহিল ইসলাম।-"আল্লাহর মনোনীত একমাত্র জীবন-ব্যবস্থা আল-ইসলাম"। মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যুর পর পর্যন্ত, ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক,সামাজিক,রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক,

সাংস্কৃতিক,আন্তর্জাতিক তথা গোটা জীবন পরিচালনায় কোরআনিক ব্যবস্থার নামই হচ্ছে ইসলাম।

।।আংশিকভাবে নয় পরিপূর্ণভাবেই মুমীন হতে হবে।।

ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে যারা জেনে বুঝে গ্রহন করেন তারাই মুমীন-মুসলমান।

মহান আল্লাহ পাক বলেছেন-"উদ্খুলু ফীস্ সীলমি কাফফাত"-"তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে দাখিল হও"। আবার বলা হয়েছে-তোমরা কোরআনের কিছু আয়াত মানবে আর কিছু মানবে না?তা হলে তো মুমীন হওয়া যাবে না।

।।ঈমান কি বলে-জবাব দিন।।

আমাদের সরকারী দলের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -যিনি ব্যক্তিগত জীবনে নামাজি-ধার্মিক মুসলমান। এদলের অমুসলিম ভাই-বোনরা ছাড়া সকল মুসলমান নেতা-কর্মীরা অবশ্যই কোরআনের-ফরয কাজগুলোর ব্যাপারে সতর্ক।

একইভাবে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদাজিয়া সহ তাদেরও সকল মুসলমান নেতা-কর্মীরা কোরআনের ফরয কাজগুলোর ব্যাপারে সতর্ক।তেমনিভাবে আমাদের দেশের সকল রাজনৈতিক দলের সম্মানিত সকল মুসলমান নেতা-কর্মীরাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক। কেননা কোরআনের বিধান-শরীয়ার ফরজকাজ কেবল জামাত-শিবির নহে সকল মুমীনের উপরই ফরয-শিরোধার্য্য এবং অলঙ্ঘনীয়।এখন প্রশ্ন হচ্ছেঃ

সরকারী-বিরোধী দল বা দেশের আর সব রাজনৈতিক দল এর নেতা কর্মীরা যারা মুসলমান তারা কি কোরআনের কিছু আয়াত মানবেন আর কিছু মানবেন না?না কি আংশিকভাবে শুধু বিয়ে-শ্বাদী-তালাক আর খৎনার কাজে এবং মরণের পর দাফন-কাফন এর মতো পারিবারিক কিছু বিষয়ে ইসলাম মানবেন? অর্থ্যাৎ আসমানের উপর আর মাটির নীচের জন্যে ইসলাম আর আসমানের নীচে আর মাটির উপরে - সমাজনীতি অর্থনীতি রাজনীতিতে আন্তর্জাতিক জীবনে ইসলাম মানার প্রয়োজন নেই? ওসব জামাত-শিবিরের রাজনীতি বলে ওসব থেকে দুরে থাকবেন?বিষয়টি আজ ঈমানদারীর সাথেই ভেবে দেখা অতীব জরুরী নয়কি?

এখানে এই বলে লিখাটি শেষ করতে চাই-

ইসলামী রাজনীতি চলবেকি চলবেনা

জবাব দে-রে-দে মুসলমান!

আল-কোরআনের আইন চলবেকি চলবেনা

বলে কি-রে তোর ঈমান

জবাব দে-রে-দে মুসলমান!

জবাব দে-রে-দে মুসলমান!

বলে কি-রে ঈ-মা-ন।।

বিষয়: রাজনীতি

১৫৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File