প্রবাসের স্মৃতিময় দিনগুলো

লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত হুসাইন নবীনগর ০৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:৩৬:৩৩ সকাল

জীবনের প্রথম সৌদী আরবের মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করতে গেলাম । এই মসজিদে নির্ধারিত কোন ইমাম নেই শুধুমাত্র জোহরের নামাজই এখানে পড়া হয় ।

সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অফিস টাইম তাই এক ওয়াক্ত নামাজের জন্যই এই মসজিদ ।

সুন্নত পড়ে বসে পড়লাম , যিনি আযান দিয়েছিলেন তিনি ইক্বামত দিলেন । সাদা জুব্বা মাথায় পাগড়ী-রুমাল, মুখভর্তি সুন্নতি ছোট-বড় দাড়ি, সাদা-কালো চামড়ার মানুষ মসজিদ কানায়-কানায় ভরপুর আরাবীয়ান মুসল্লী। ইক্বামত শেষে আমাকে দেওয়া হল নামাজের ইমামতি করার জন্য ।

গতকাল রাত তিনটায় এসেছি সৌদী আরব । ফজরের নামাজ পড়লাম বাসায় একা একা যদিও জানা ছিলনা কিবলা কোন দিকে । পরে জানতে পারলাম আমার কিবলা ছিল ভুল, আশা করি আল্লাহ্ ক্ষমা করবেন কারন তা ছিল আমার অজানা ভুল।

কিছুটা ভয় নিয়েই নামাজ শেষ করলাম কারন আমার পিছনের মুসল্লী যারা বেশী সংখ্যকই আলেম তাও সাধারন আলেম নয় নবীর দেশের আলেম ।

যদি কোন ভুল হয়ে যায় ?

নামাজ শেষে বাংলাদেশের সেই চিরাচরিত নিয়মে মুনাজাতের জন্য হাত তুললাম রাব্বে কারীমের দরবারে । সৌদী আরবে যারা আছেন তারা জানেন এখানে ফরজ নামাজের পর হাত উঠিয়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা হয়না তবে নামাজ শেষে দোআ-তাসবীহ পড়া হয় । কেউ কেউ এককভাবে হাত উঠিয়ে মুনাজাত করেন তবে আমার দেশের মত দলা-দলি নেই এখানে ।

আমি মুনাজাতের জন্য হাত উঠানোর পর আমার স্মরন হল এইটাতো বাংলাদেশ নয় , খুব দ্রুত হাত নামিয়ে ফেললাম । মাথায় রুমাল ছিল কেউ বুঝতে পারেনাই বিষয়টা মুসল্লীদের দিকে তাকিয়ে তাই মনে হল; মনে মনে আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করলাম ।

একে একে সবাই চলে গেলেন আমিও চলে যাবো কোম্পানীর ডিউটি আরো বাকি আছে, এক আরাবীয়ান শায়খ আমাকে ডাকলেন সালাম দিয়ে হাত মেলালেন জানতে চাইলেন কোন দেশী আমি? আমার পরিচয় পেশ করলাম বাংলাদেশী । আরাবীয়ান শায়খ বললেন ঢাকা কাকরাইল , টঙী ইজতেমা?

আমি নতুন, আরবীও বেশী বুঝিনা ভাংগা-ভাংগা আরবী আর ইশারা ইংগিতে যা বুঝলাম তিনি তাবলীগের সাথী । বাংলাদেশে গিয়েছিলেন চিল্লায় তাই কাকরাইল আর টঙী ইজতেমার নামও জানেন ।

সব শেষে তিনি বললেন আমি দেখেছি তুমি নামাজের পর মুনাজাতের জন্য হাত তুলেছ এইটা বাংলাদেশে করা হয়। তুমি যখন দেখেছো তোমার পিছনে কেউ হাত তুলেনি তুমি আস্তে করে হাতি নামিয়ে ফেলেছো আমি তা দেখেছি ।

আমার পিঠে তার হাত বুলিয়ে মসজিদ থেকে বের হতে হতে বললেন ” ইনতা মুখ ক্বাতীর ।”

আমি বুজলামনা “ইনতা মুখ ক্বাতীর ” এর মানে কি ?

পরে জানতে পারলাম এর মানে হল তুমি বুদ্ধিমান , যদিও আমি তা না ।

শাহাদাত হুসাইন

জানুয়ারী ২০০৮ ইংরেজী

রিয়াদ সৌদী আরব ।

বিষয়: বিবিধ

১২৭৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

364964
০৮ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১০:৪৬
নকীব কম্পিউটার লিখেছেন : ধন্যবাদ, ভাল লাগল। আশা করি নিয়মিত লিখবেন।
০৮ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ১১:১৫
302793
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
364985
০৮ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:১৯
আবু জারীর লিখেছেন : সে ঠিকই বলেছিল।
ধন্যবাদ।
০৮ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৯:০১
302817
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ প্রিয় আবু জারীর ভাই।
364999
০৮ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:২৬
শেখের পোলা লিখেছেন : একটা বিষয় জানা হল৷আপনাকে ধন্যবাদ৷
০৮ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৯:০১
302818
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck
365003
০৮ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:৪০
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : ওই দেশ থেকে এসে অনেক মুসল্লি মুনাজাত না ধরে মসজিদ থেকে বের হলে গ্রামে গঞ্জে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যায়। মুনাজাত না ধরলে নাকি ওহাব!
যাক, আপনার অভিজ্ঞতা শুনে ভালো লাগল।
০৮ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৯:০৩
302819
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : আমরা একটু বেশী আবেগী। ফরজের নামে খবর নাই সামন্য কিছু নিয়ে যত বাড়াবাড়ি।
365059
০৯ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:১১
আবু জান্নাত লিখেছেন : চমৎকার শিক্ষা, সত্যিই ছাত্রও বুদ্ধিমান।
১০ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৯:৪৭
302979
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : ধন্যবাদ জানবেন।
365318
১১ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ১২:৫৫
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, ভাই আপনার স্মৃতিচারণ মূলক ও শিক্ষামূলক লিখাটা খুব ভালো লাগলো, এখানে আবুধাবি তেও সম্মিলিত কোন মুনাজাত করা হয় না। কারণ রাসূল (স) সম্মিলিত মুনাজাত করেন নি। কিন্তু বাঙ্গালীরা কোথায় যে এই আমল পাইলো এখনো বুঝিনা। ধন্যবাদ আপনাকে
১১ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:৫৭
303132
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : আসলে বাড়াবাড়িটা আমরা একটু বেশীই করি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File