রক্ত যখন টগবগ করে
লিখেছেন লিখেছেন শাহাদাত হুসাইন নবীনগর ১২ মে, ২০১৩, ০১:১৩:০৮ দুপুর
হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.)-এর খিলাফত কাল। ইয়ামামার উন্মুক্ত প্রান্তরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে বারোশত সাহাবায়ে কিরামের পবিত্র লাশ। কারও মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন। কারও বক্ষ ছিঁড়ে চৌচির। কারও পেট বিদীর্ণ। কারও দেহ ছিন্ন-বিছিন্ন। কারও সুন্দর দুটি আঁখি স্বীয় অবচেতন দেহের পাশেই পড়ে আছে। কারও হাত নেই। কারও পা নেই। এরা কারা? এগুলো কাদের লাশ? বারোশত সাহাবায়ে কিরামের (রা.)। যারা ইয়ামামার ময়দানে নিজেদের তাজা-তপ্ত রক্তের নহরে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছেন । যাদের আলোক রশ্মি দেখে আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্রগুলো ঈর্ষাান্বিত।
দেশবাসীরা, একবার বুকে হাত রাখুন। চিন্তা করুন, তাঁরা কারা? এরা সেই সাহাবী, যাঁদের স্বয়ং হযরত মুহ্ম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রহমতের পরশে বুকে নিয়ে, অতি যতেœ আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। তাঁরা সেই সাহাবী (রা.) যাঁরা নববী শিক্ষাকেন্দ্র থেকে লাভ করেছেন সর্বোচ্চ ডিগ্রি। যাঁদের অন্তরে ঈমানের আলো জ্বালিয়েছেন সরাসরি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম। যাঁদের হৃদয়ে আল-কুরআন দৃঢ়ভাবে প্রোথিত এবং যাঁদেরকে ঢেলে সাজিয়েছেন স্বয়ং হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম। যাঁদের সম্পর্কে নবীজী ইরশাদ করেছেন,“ আমার সাহাবীগণ নক্ষত্রের ন্যায়, যাকেই অনুসরণ করবে হিদায়াত প্রাপ্ত হবে।”
যাঁদেরকে তাঁদের জীবদ্দশায় স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা চিরস্থায়ী জান্নাতের চূড়ান্ত ও অকাট্য সার্টিফিকেট প্রদান করেছেন। যাঁদের সম্মান, মর্যাদা এত বেশি ঊর্ধ্বে, আজকের সকল উম্মত সম্মিলিতভাবেও তাঁদের মধ্য থেকে কোন একজনের সমকক্ষ হতে পারে না।
ইয়ামামার প্রান্তরে শাহদাতের রক্তøাত পোশাকে অফুরন্ত সুখনিদ্রায় শায়িত শহীদবর্গের মধ্যে কারা আছেন? আছেন সাত শত হাফিজে কুরআন সাহবী (রা.)। আছেন সত্তরজন বদরী সাহাবী (রা.)। যাঁরা ইসলাম ও কুফরের মধ্যে সংগঠিত সর্বপ্রথম যুদ্ধ ‘গাযওয়ায়ে বদর’-এ নিজের জীবনকে হাতে নিয়ে, জীবন বাজি রেখে, সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পতাকাতলে সমবেত হয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন এক অসম লড়াইয়ে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার অদম্য জযবা নিয়ে প্রাণপণ লড়াই করেছিলেন। যাঁরা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অতি প্রিয় ও আদরের ফুল ছিলেন। যাঁরা ছিলেন নবীজীর শেষ রাতের অশ্র“। আজ তাঁরা ইয়ামামার প্রান্তরে মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় শায়িত।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়্যাত প্রাপ্তির পর থেকে তাঁর জীবদ্দশায় যত যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছে, যত লড়াই হয়েছে, দাওয়াত ও তাবলীগের যত গ্র“পকে প্রতারণা করে শহীদ করা হয়েছে এবং কাফির, মুশরিকদের অত্যাচার-নির্যাতনে যতজন সম্মানিত সাহাবায়ে কিরাম (রা.) শাহাদাতের অমিয় সুধা পান করেছেন, তাঁদের সর্বমোট সংখ্যা ছিল দুইশত ঊনষাট। অর্থাৎ সম্পূর্ণ নববী যুগে সর্বমোট শহীদ সাহাবীর সংখ্যা ছিল দুইশত ঊনষাট। আর শুধুমাত্র খতমে নবুওয়াতের সংরক্ষণের জন্য শাহাদাত বরণ করেছেন বারোশত সাহাবায়ে কিরাম। তাঁদের মধ্যে সাত শত সাহাবী ছিলেন হাফিজে কুরআন।
মুসাইলামা কায্যাব । চল্লিশ হাজার যোদ্ধা তার একান্ত অনুগত। অঢেল ধন-সম্পদ ও প্রাচুর্যের মালিক। অন্য দিকে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিদায়ে বেদনা বিধুর সাহাবায়ে কিরামের মন সীমাহীন মর্মাহত। বিরহ-ব্যথা আর আর্তনাদে মদীনা শরীফের আকাশ-বাতাস ভারি। আবার মদীনা শরীফ এক ধরনের অরক্ষিত। চতুর্র্দিক থেকে আক্রমণের প্রবল আশংকা। নাজুক অবস্থা। কিন্তু হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) খতমে নবুওয়াতের মুকুট নিয়ে প্রকাশ্য ডাকাতির চেষ্টাকে সহ্য করলেন না।
গুহার প্রিয় আপনজন ভয়াবহ অবস্থা ও পরিস্থিতির তোয়াক্কা করলেন না। মুসায়লামা কায্যাবকে শায়েস্তা করার লক্ষ্যে হযরত শুরাহবীল (রা.) এর নেতৃত্বে একটি বাহিনী প্রেরণ করলেন। সেই বাহিনী সফল না হওয়ায় হযরত ইকরামা (রা.)-এর নেতৃত্বে দ্বিতীয় পদাতিক বাহিনী প্রেরণ করেন। সেই বাহিনীও পরাজিত হন। কিন্তু হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) সাহস ও মনোবল হারালেন না। নির্দেশনা পাঠালেন হযরত শুরাহবীল (রা.) ও হযরত ইকরামা (রা)- এর কাছে। তোমরা ফিলে এলে মন্দ প্রভাব পড়বে। তোমরা সেখানেই অবস্থান কর, অপেক্ষা কর। তোমাদের উদ্দেশ্যে হযরত খালিদ ইবনে ওলীদের নেতৃত্বাধীন বাহিনী প্রেরণ করছি।
হযরত খালিদ ইবনে ওলীদ (রা.)-এর বাহিনী ইয়ামামায় উপস্থিত। মুখোমুখি দুটি বাহিনী। শুরু হয় প্রচণ্ড, ভয়াবহ যুদ্ধ। একে অন্যের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। গাজর-মুলার মত মানবদেহ কেটে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। মানব দেহের টুকরো অংশ মাটিতে ছটফট করছে। সাহাবায়ে কিরাম শহীদী তামান্না নিয়ে লড়ে যাচ্ছেন। পক্ষান্তরে মুসাইলামা কায্যাবের বিশাল বাহিনী সিসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় অটল, অবিচল। এক পর্যায়ে হযরত খালিদের দৃষ্টি পড়লো অনতিদূরে দাঁড়ানো মুসায়লামা কায্যাবের উপর। বিলম্ব না করেই তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত হযরত খালিদের (রাঃ)। উল্টো দিক থেকে আক্রমণের লক্ষ্যে পরিণত করলেন সরাসরি মুসায়লামা ক্যাাবকে। সহযোদ্ধারা তাঁর পাশাপাশি দৃপ্তপদে এগিয়ে গেলেন। সম্মিলিত আক্রমণের পর আক্রমণ শানালেন। মুসায়লামা বাহিনী নড়বড়ে হয়ে যায়। মুসলমান তাঁদের আকক্রণ আরও জোরদার করে তুলে। লাশের স্তুপ জমতে থাকে। শেষ পর্যন্ত মুসলমানদের বিজয়ের পতাকা উড়তে থাকে পতপত করে। মুসায়লামা কায্যবাও পৌঁছে যায় তার চূড়ান্ত ঠিকানা-জাহান্নামে। মিথ্যা নবুওয়াতের দাবিদার মুসলিম মুজাহিদদের হাতে ইয়ামামার প্রান্তরে চিরদিনের জন্য মাটির নীচে চাপা পড়ে।
অত্যন্ত বেদনার সাথে বলতে হয়ে যে, এই যু্েদ্ধ মুসলমানদের এমন অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, ইতিপূর্বে ইসলামের ইতিহাসে আর কখনও এত বিপুল পরিমাণ ক্ষতি সাধিত হয়নি। বারোশত সাহাবী নিজেদেরকে রক্তে রঞ্জিত করেছেন, নিজের জীবন দিয়েছেন, নিজেকে মাটির সাথে একাকার করেছেন কিন্তু মিথ্যা নবীর অস্তিত্ব ন্যূনতম সময়ের জন্যও সহ্য করেননি।
সাহাবায়ে কেরামের যুগের মিথ্যা নবীর দাবিদার ছিল মুসায়লামা কায্যাব। আমাদের সময়ের মিথ্যা নবীর দইবদার ভণ্ড মির্জা কাদিয়ানী। মুসায়লামা কায্যাব ও তার অনুসারীরা যাত জঘন্য, ভয়াবহ ও মারাতœক ছিল তারচেয়ে অনেক বেশি জঘন্য, ভয়াবহ ও মারাতœক ভণ্ড কাদিয়ানীর অনুসারী ও অনুগতরা।
আজ যখন কোন মুসলমানকে কাদিয়ানীদের সাথে হাত মেলাতে কমমর্দন করতে দেখি, তখন হযরত সাহাবয়ে কেরামের রক্তাক্কাটা হাত আমার মন স্পটে ভেসে উঠে। যখন কোন মুসলমানকে কাদিয়ানীদের সাথে গলা মিলাতে, আলিঙগণ করতে এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে দেখি তখন সাহাবায়ে কিরামের (রা.) মাটিতে পড়ে ছফফটরত বাহুর দৃশ্য আমার চোখের সামনে ভেসে উঠে। যখন মুসলমান নামধারী কোন ব্যক্তিকে তাদের পক্ষে কথা বলতে দেখি, তখন টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া সাহাবায়ে কিরামের (রা.) রক্তাক্ত দেহ আমার নয়নযুগলে ভাস্বর হয়ে উঠে। যখন নামধারী কোন মুসলমানকে কাদিয়ানীদের মিছিলে দেখি তখন সাত শত হাফিজে কুরআন সাহাবায়ে কিরামের শহীদী লাশের মিছিলের অনুপম দৃশ্য দর্শনে আমার দুটি আঁখি অশ্র“সিক্ত করে। যখন সরকারী পর্যায়ের কাউকে কাদিয়ানীদের নিরাপত্তা বিধানের নামে তাদের সাথে দহরম-মহরম করতে দেখি তখন বেদনা বিধুর হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) এর মুখাবযর স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠে। কলিজা হয়ে উঠে রক্তাক্ত।
সাহাবায়ে কিরাম (রা.) কালিমা তৈয়্যেবা পাঠ করতেন, এই তথাকথিত মুসলমানরাও কালিমা তৈয়্যেবা পাঠ করে। সাহাবায় কেরাম (রাঃ) রাসূল্লুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত ছিলেন, এই কথিত মুসলমানরাও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লামের উম্মত হওয়ার দাবি করে।
সাহাবায়ে কিরাম (রা.) খতমে নবুওয়াতের ডাকাতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন আর একই ডাকাতদের সাথে এদের বন্ধুত্ব ও সখ্যতা। সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) খতমে নবুওয়াতের আকীদ-বিশ্বাসকে সমুন্নত রাখার জন্য নিজেদের সর্বস্ব কুরবান করেছেন। অন্যদিকে খতমে নবুওয়াতের বিদ্রোহীদের সাথে এদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সর্বক্ষেত্রে নানাবিধ স্বার্থ জড়িত ও সংশ্লিষ্ট। সাহাবায়ে কিরামের (রা.) সাথে এদের এত ভয়াবহ বিরোধ ও সংঘাত কেন? প্রকৃত প্রস্তাবে এরা কালিমা তৈয়্যেবা মুখে পাঠ করে, কিন্তু অন্তরে কালিমার লেশমাত্র নেই। এরা মুখে যা বলে অন্তরে তা বিশ্বাস করে না। এদের কর্মকাণ্ড এটাই প্রমাণ করে। নতুবা এরা কখনো কাদিয়ানীদের সাতে হাত মিলাতে পারতো না। ভণ্ড কাদিয়ানীদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারতো না। কাদিয়ানীদের মিথ্যা, অযৌক্তিক দাবির সাথে ঐকমত্য পোষণ করতে পারতো না। কাদিয়ানীদের সেবাদাসে পরিণত হতে পারতো না। কাদিয়ানীদের থেকে মাসুহারা নিয়ে নিজ ও নিজ পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করতে পারতো না। কাদিয়ানীদের সাথে গলাগলি, ডলাডলি করতে পারতো না। কাদিয়ানী প্রতারকদের পক্ষে নির্লজ্জ মিথ্যাচার করতে পারতো না। ঠকবাজ কাদিয়ানীদের মিছিলের অগ্রভাগে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারতো না। ভণ্ড কাদিয়ানী বিরোধী মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারতো না। মুসলমানদের ধর্মীয় আকীদা-বিশ্বাস-এর বিরুদ্ধাচরণ করতে পারতো না। কুরআন-সুন্নাহর অকাট্য, অলঙঘনীয়, অখণ্ডনীয় সুস্পষ্ট বিধান ও ঘোষণার সাথে ভিন্নমত পোষণ করতে পারতো না ।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যার শরীরের রক্তকণায় সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসা বিদ্যমান সেই শরীর কোন দিনও কাদিয়ানীদের পক্ষাবলম্বন করতে পারে না। পারে না কাদিয়ানীদের সহায়ক শক্তি ও মুখপাত্র হতে।
সময়ের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হযরত আল্লামা সাইয়্যেদ আনওয়ার শাহ কাশ্মিরী (র.)-এর দুটি বাক্য গভীর ভাবে প্রণিধানযোগ্য এবং চিন্তাশীলদের জন্য চিন্তার খোরাক। আমারাও চিন্তা করি। তিনি মৃত্যুসজ্জায় শায়িত। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী খাটে করেই তাঁকে নিয়ে আসা হয় দারুল উলুম দেওবন্দের মসজিদের মিহরাবে। সেখানে তিনি তাঁর জীবনের সর্বশেষ অসিয়্যতটি করলেন। বললেন, “এই উম্মতের জন্য কাদিয়ানী ফিতনা থেকে মারাত্মক ও ভয়াবহ ফিতনা আর পরিলক্ষিত হয়নি। মুসলমানদেরকে ধর্মদ্রোহীর হাত থেকে সংরক্ষণ কর এবং এক্ষেত্রে নিজেদের সর্বশক্তি প্রয়োগ কর। এটি এমন এক জিহাদ যার একমাত্র বদলা চিরস্থায়ী জান্নাত এবং আমি এই বদলার জামিন।” তাঁর দ্বিতীয় বাক্যটি ছিল,“ আমাদের সামনে আজ একথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, আমরা যদি খতমে নবুওয়াতের সংরক্ষণ করতে না পারি তবে আমাদের থেকে রাস্তার কুকুরটিও শ্রেয় এবং উত্তম।”
অতএব, মুসলমানদের যদি কবরে রহমতে দু আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামÑ এর পরিচয় লাভ করতে হয়, হাশরের ময়দানে ভয়াবহ, ভীতিকর, ভয়ংকর, দুর্দশা ও নাফসী নাফসী-এর চরম মুহূর্তে শফিউল মুযনাবীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাফায়াত লাভের যদি আগ্রহ ও ইচ্ছা থাকে, যদি সাকিয়ে কাউছার সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র ও মোবারক হস্তে জামে কাউছার পান করে হাশরের ময়দানে তৃষ্ণা নিবারণের ইচ্ছা থাকে, তবে এর জন্য একটি মাত্র পথ খোলা। সেই পথই আমাদের চিরস্থায়ী জান্নাতে অবগাহন করার দ্বার উন্মুক্ত করে দিবে। সেই পথেই চলতে হবে প্রতিটি মুসলমান নর-নারীকে। সেই পথ হচ্ছে, আল্লাহর দুশমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুশমনদের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করা। নিষ্ঠা, সততা ও আন্তরিকতার সাথে খতমে নবুওয়াত-এর সুমহান মুকুটকে হিফাজত ও সংরক্ষণ করার মহান দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা। খতমে নবুওয়াতের আকীদা-বিশ্বাস লালন ও ধারণ করে এর শত্র“দের নিশ্চিহ্ন করে এদের বিরুদ্ধে বজ্র কঠিন শপথ গ্রহণ করা এবং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বিশ্বস্ততার প্রকাশ ঘটিটে তাঁকে প্রচণ্ড ভালোবাসার প্রমাণ উপস্থাপন করা। যদি আপনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে পারেন তবে সমগ্র পৃথিবী আপনার। আসমান, জমিন, লাউহে মাহফুজসহ স্রষ্টার সব কিছুই আপনার।
আসুন, আমরা আমাদের হৃদয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি আমাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা অনুভব ও প্রকাশ করি। বিশ্বাস রাখুন, আল্লাহ সব কিছুই দেখেন। মৃত্যু ফিরিস্তা আজরাইল সর্বদা প্রস্তুত। তিনি অপেক্ষায় আছেন আল্লাহর নির্দেশের। অতঃপর মৃত্যুর পোস্টমার্টেম আমাদের চোখের সামনে সব কিছুই তুলে ধরবে। আসুন, আকীদায়ে খতমে নবুওয়াতের সংরক্ষণে আমরা আমাদের জান-মাল কুরবান করি। প্রমাণ করি আমাদের ধমনীতে প্রবাহিত শহীদানে ইয়ামামার রক্ত বিদ্যমান। সেই রক্ত ভণ্ড-কাদিয়ানীদের প্রতিরোধে দেওয়ার সৎ সাহস আমাদের আছে।
লেখাটি , হেফাজতে ইসলামের যুগ্ন মহাসচিব আল্লামা মুফতী ফয়জুল্লাহ সাহেবের ফেইসবুক থেকে নেওয়া
বিষয়: বিবিধ
২৭৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন