ক্ষুদ্রপোস্ট প্রসঙ্গঃ মুখে দূর্গন্ধ

লিখেছেন লিখেছেন জয়নাল আবেদীন টিটো ১১ নভেম্বর, ২০১৩, ০১:০০:০৯ রাত

খাদ্যতালিকায় যদি শর্করা জাতীয় খাবার না থাকে তাহলে একটি বিষয় আপনাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিতে পারে। খাদ্যে শর্করার মাত্রা কম থাকলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। এই দুর্গন্ধ দূর করার উপায় খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন ঘটিয়ে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া। গবেষকেরা বলছেন, কম শর্করাযুক্ত খাবার পরিপাকের সময় কিটোন নামক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরিত হয় এবং এটি নিঃশ্বাস ও মূত্রের সাথে বের হয়ে আসে। এতে মুখে সৃষ্ট দুর্গন্ধ দাঁত ব্রাশ বা জিহ্বা পরিষ্কার করেই দূর করা যাবে না। খাবারে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে এ থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। তবে মুখে দুর্গন্ধের আরো অনেক কারণ আছে। গ্যাস্টাইটিস, লিভার অ্যাবসেস, ফুসফুসে অ্যাবসেস, নিউমোনিয়া, কিডনিতে সমস্যা কিংবা ধূমপানের কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে।

সূত্র : Daily Nayadiganta, 10th November, 2013.

এবার আমার কিছু কথা ।

মুখে দূর্গন্ধের অনেক কারণ আছে । এর মধ্যে একটি বড় কারণ হল, কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার অভাব । কার্বোহাইড্রেটের মূল কাজ শক্তি বা ক্যালরি উৎপাদন করা । শরীরের যে কোন শরীরবৃত্তীয় কাজের জন্য এই ক্যালরী খুবই প্রয়োজনীয় । দীর্ঘক্ষণ অনাহারে থাকলেও শরীরকে ক্যালরী যোগান দিতেই হয় । শরীরে যখন কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি দেখা দেয়, তখন ক্যালরী উৎপাদনের দায়িত্ব পড়ে শরীরে সঞ্চিত ফ্যাটের উপর । ফ্যাট নিজেকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ক্যালরী উৎপাদন করে ঠিকই; কিন্তু উপজাত হিসাবে তৈরী করে 'কিটোন বডি' । কিটোন বডি অতিরিক্ত পরিমাণে তৈরি হলে শ্বাসের সাথে কিছু কিটোন বের হয়ে যায় । এই কিটোনের গন্ধটা বড়ই বাজে এবং বিশ্রী । যারা সকাল বেলায় নাস্তা করেন না বা সারাদিন অনাহারে উপবাসে থাকেন, তাদের মুখ দিয়ে এই বিশ্রী গন্ধটা বের হয় । ঠিক এ কারণেই বিকালের দিকে রোজাদারের মুখ থেকে দূর্গন্ধ বের হয় । হাদীসে আছে, রোজাদারের মুখের দূর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশক আম্বরের চেয়েও প্রিয় । দাঁত ব্রাশ করলে মুখ থেকে দূর্গন্ধ চলে যাবে, এই ভয়ে মোটা বুদ্ধির মানুষ রমজান মাসে দাঁত ব্রাশ করে না । টুথপেস্ট তো তারা একেবারেই ব্যবহার করতে চান না । ঐ দূর্গন্ধ-মুখযুক্ত মানুষের পাশে দাড়ানো খুবই কষ্টকর । তারা যদি একটু বিজ্ঞানচর্চা করত, তাহলে বুঝতে পারত, রোজাদারের মুখের ব্যক্টেরিয়ার পঁচনজনিত দূর্গন্ধ নয়, বরং 'কিটোন বডি'র কারণে তৈরী হওয়া দূর্গন্ধটাই আল্লাহর কাছে প্রিয় । সৌদী আরবের শ্রেষ্ঠ আলেম শায়খ বিন বায রমজান মাসে টুথপেস্ট দিয়ে মুখ ঘবর এবং দাঁত পরিষ্কার করা সম্পূর্ণ বৈধ বলে মতামত দিয়েছেন ।

[Is it permissible for the fasting person to use toothpaste while he is fasting during the daytime of Ramadan ? (রমজান মাসে দিনের বেলায় একজন রোজাদারের জন্য টুথপেস্ট ব্যবহার করা বৈধ কি ?) এই প্রশ্নের উত্তরে Fatwa regarding Fasting and Zakah বইয়ের ৬৫ পৃষ্ঠায় শায়খ আবদুল আজিজ বিন আবদুল্লাহ বিন বায বলেছেন,

There is no harm in that as long as one is careful not to swallow any of it. ( একজন মানুষ যদি সতর্ক থাকে এবং গলাধঃকরণ না-করে, তাহলে এতে কোন দোষ নেই বা ক্ষতি নেই ) ]।

তাই, মোটাবুদ্ধির মানুষদের কাছ থেকে মতামত নেয়া কiরও জন্য কল্যাণকর নয় ।

বিষয়: বিবিধ

৩২৬২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

280390
০১ নভেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৫৭
তিমির মুস্তাফা লিখেছেন : সুন্দর বুদ্ধিদীপ্ত পোস্ট। অনেক ধন্যবাদ।
এখানে সমস্যা হল- সংযোগহীনতা ।
আমাদের ধর্মের হর্তাকর্তা বলে যারা দাবী করেন তাদের বিজ্ঞান বা গবেষণাল্বব্ধ জ্ঞানের অপর্যাপ্ততা অনেক সমস্যার তৈরী করেছে। তাদের অনেকের সাধারন বুদ্ধিবৃত্তি ও হতাশা ব্যাঞ্জক।
কোন পিতার তিন ছেলে থাকলে- বুদ্ধিবৃত্তিতে মেধাবীদেরকে দেয়া হত পাবলিক স্কুলে, আর যেটার বুদ্ধি একটু কম, তাকে পাঠানো হত মাদ্রাসায়, যেন আল্লাহ্‌ বিল্লাহ করে তার রুটি রুজির ব্যবস্থা হয়ে যায়। এজন্য দাওয়াত খাওয়া, স্ফীতোদর মৌলভী/ মাওলানার সংখ্যা বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রক্রিয়া চলেছে। এর ফলশ্রুতিতে যা হওয়ার তাই হয়েছে। মহাগ্রন্থ কুরআন যা কিনা অসংখ্য বিজ্ঞানময় ঘটনায় পরিপূর্ণ, তার ব্যাখ্যার ভার পড়েছে তাঁদের হাতে যাদের বুদ্ধিবৃত্তির দৌড় নেহায়েত কম, তাঁদের ধারনাও নেই তাঁরা কি বস্তু নিয়ে কথা বলছে।
সবাই এক রকম তা বলব না, অনেক বুদ্ধিমান, জ্ঞানী আলেম রয়েছেন, আশার কথা এখন প্রতিভাবান ছেলেরাও মাদ্রাসা শিক্ষায় আসছে, অনেক পিতামাতাদের শুভ বুদ্ধির কারনে। তাদেরকে ধন্যবাদ।
উম্মাহকে শিক্ষিত করা জরুরী। এ ধরণের আরও পোস্টের আবেদন থাকল।
280401
০১ নভেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৫৬
জয়নাল আবেদীন টিটো লিখেছেন : পড়ার জন্য এবং দীর্ঘ মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ । সামনে এমন ধরনের পোস্ট লিখতে চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ ।
293557
১২ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:০৬
কাহাফ লিখেছেন :
একান্ত প্রয়োজনীয় সুন্দর একটি পোস্ট! রোজাদারদের অনেক কাজে আসবে এই উপস্হাপনা!
চলার জন্যে প্রয়োজনীয় দ্বীনী ইলম অর্জন ফরজ আর বৈষয়িক বিদ্যার্জন ফরজে কেফায়া, যা আজ আলেম-ওলামারা অবহেলায় ছেড়ে দিচ্ছে! সাধারন মুসলিম সমাজের উদাসীনতাই দায়ী এর জন্যে! ব্লগার তিমির মুস্তফা যে বিষয়ে ইংগিত করলেন!

এ ধরণের পোস্ট আমাদের জানার পরিধি বাড়াতে উৎসাহী করবে!
Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up Rose Rose Rose

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File