স্বাধীনতা লাভের দ্বারপ্রান্তে স্কটল্যান্ড
লিখেছেন লিখেছেন শহর ইয়ার ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:২৯:৫৮ রাত
আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি। আগামী ১৮ই সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গণভোট। স্কটল্যান্ড কী যুক্তরাজ্যের সাথে অঙ্গীভূত থাকবে না আলাদা রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত হবে? নানা জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে গত কয়েকদিনে। ভোটের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে দুই পক্ষেই নানা সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। একদিকে বিশ্বের অন্যতম একটি শীর্ষ ধনী দেশের সাথে অংশীভূত থেকে নিজেদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখা। অন্যপক্ষে নিজেদের স্বাধীন সত্তাকে সারা বিশ্বে তুলে ধরে স্বতন্ত্র জাতি হিসাবে নিজেদের পরিচয় নিশ্চিত করা।
এতদিন মনে করা হত প্রায় তিনশত বছরের ইউনিয়ন না ভেঙ্গে স্কটিশ জনগণ যুক্তরাজ্যের সাথেই থাকবেন। যেহেতু যুক্তরাজ্যের সাথে থাকলে সহজেই মিলছে সবক্ষেত্রে সমান সুবিধা। কিছু সামাজিক সুবিধা বেশ লোভনীয়। যেমন, বেকার ও বয়স্ক ভাতা, গরীবদের জন্য বাসস্থান ভাতা তথা ফ্রি ফ্ল্যাট, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ সামগ্রী, প্রতিবন্ধী ও শিশ্ত ভাতা, বিনামূল্যে শিক্ষাসেবা সর্বোপরি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের আনুষঙ্গিক সবকিছু সমতার ভিত্তিতে বন্টন। যুক্তরাজ্যের চিকিৎসাসেবা বিনামূল্যে পাওয়া যায় যেটা বিশ্বের অন্য কোথাও সমমানের নয়।এতকিছুর কারণে যুক্তরাজ্যের সরকারের ধারণা ছিল স্কটল্যান্ড তাদের সাথেই থাকবে। তাদের প্রচারণাও ছিল এতদিন দায়সারা গোছের।
অন্যপক্ষে যারা স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা চান তাদের যুক্তি হচ্ছে স্বাধীন হলে তাদের নিজস্ব জাতিসত্ত্বা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারবেন। সারাবিশ্বে তাদের নিজস্ব দূতাবাস থাকবে। স্কটল্যান্ডের নিজস্ব প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার করে তারা যাবতীয় প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে পারবেন। স্কটল্যান্ডে যে পরিমান প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল ও খনিজ সম্পদের মজুদ রয়েছে সারা ইউরোপে আর কোথাও তা নেই। সুতরাং নিজস্ব সম্পদের সঠিক ব্যবহার করলে তারা বিশ্বের শীর্ষ বিশটি ধনী দেশের তালিকায় থাকবেন। এ তালিকায় তারা এমনকি ইটালী, ফ্রান্স, জাপান ও যুক্তরাজ্যেরও উপরে থাকবেন বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
একমাস আগেও মনে করা হত 'না' ভোট অর্থাৎ যারা যুক্তরাজ্যের সাথে থাকতে চান তারাই জিতবেন। এ কারণে তারা অনেকটাই হাত গুটিয়ে বসে ছিলেন। কিন্তু স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতাকামীরা নিরলস প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। মাত্র একমাসের পরিশ্রমে তারা ব্যবধানই শুধু কমাননি, জরিপে এগিয়ে গেছেন। এখন মনে করা হচ্ছে স্বাধীনতা লাভ করতে যাচ্ছে স্কটল্যান্ড। স্বাধীনতার সুখের কাছে দুনিয়ার কোন লোভনীয় অফারই যে বড় নয় তা প্রমান করতে যাচ্ছেন স্কটিশরা।
এতদিন যুক্তরাজ্যের সাথে থাকলেও স্কটল্যান্ডের ছিল নিজস্ব মুদ্রা। সেটা পাউন্ডের সাথে একই বিনিময় মূল্যের। স্কটল্যান্ডে তাদের নিজস্ব মুদ্রার সাথে বৃটিশ পাউন্ডও চলে দেদারসে। কিন্তু লন্ডনসহ যুক্তরাজ্যের অন্য যেকোন জায়গায় গেলে কেউ স্কটিশ পাউন্ড নিতে চায় না। এ কারণে নিজ দেশেই তারা পরিগনিত হন পরদেশী হিসাবে। এটা সত্যিই অপমানজনক। যদিও যুক্তরাজ্যের আইনে সব জায়গায় স্কটিশ মুদ্রা রাখার বিধান রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে সেটার প্রয়োগ নেই। স্কটল্যান্ডবাসী এই একটি কারণেই অনেকটা ক্ষ্যাপা। এখন অনেকেই হয়তো এই অপমানের বদলা নেবার সুযোগ পাবেন।
পথেঘাটে শহরে বন্দরে কিংবা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এখন চলছে ব্যাপক প্রচারণা। এখন পর্যন্ত হাঁ ভোটের পক্ষেই বেশি প্রচারণা পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাস্তাঘাটে বিলবোর্ডে সন্তানকোলে মায়ের ছবিসহ লেখা হয়েছে আগামী প্রজন্মের সিদ্বান্ত আজকেই নিন। স্কটিশদের ভাগ্য নির্ধারন করুক তারাই। আর মাত্র তিন দিন বাকি। এর পরেই জানা যাবে স্কটিশদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত।
বিষয়: বিবিধ
১২৬১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 8870
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> লিটুয়ারা লিখেছেন : পার্বত্য চট্টগ্রাম?স্কটল্যান্ড যদি স্বাধিন হয় তা হলে কিন্তু ইউরোপের আরো ভুখন্ড এই ধরনের দাবি নিয়ে উঠতে পারে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন