রাষ্ট্র যেখানে নিপীড়ক

লিখেছেন লিখেছেন শহর ইয়ার ০২ আগস্ট, ২০১৩, ০১:৩১:৫৩ রাত

পবিত্র সিয়াম সাধনার মাসে সম্প্রতি তিন দিনের জন্য রিমান্ডে নেয়া হল রোজাদার মাহমুদুর রহমানকে। কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে নেয়া হয় ডিবি পুলিশের টর্চার সেলে। সেখানে নির্যাতনের যত রকম কায়দা কানুন আছে সবই প্রয়োগ করা হয়। মাহমুদুর রহমানকেও নির্মম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।



মাহমুদুর রহমানের অপরাধ তিনি ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের ভন্ডামী ও অপশাসনের বিরোধিতা করেন। আমরা এমন একটা সমাজে বাস করি যেখানে আদালতের চোখে 'সত্য কোন ডিফেন্স হতে পারে না । তাই নিজের পত্রিকায় সত্য লেখার অপরাধে একটি ব্যতিক্রমধর্মী মামলায় ইতিপূর্বে জেল খেটেছেন মাহমুদুর রহমান। ব্যতিক্রমধর্মী এই কারনে যেখানে কোন আপিলের সুযোগ ছিল না। প্রচলিত ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় এরকম নজীর ইতিপূর্বে ছিল কিনা জানা যায় না।

মাহমুদুর রহমানের সবচেয়ে বড় অপরাধ ছিল সেক্যুলারপন্থীদের ফুলানো বেলুনে আকাশে উড়তে থাকা গণজাগরণ মঞ্চ কে তিনি মাটিতে নামিয়ে এনেছিলেন। পবিত্র ইসলাম ধর্ম ও মহানবী (স : কে নিয়ে কিছু সংখ্যক ধর্মবিশ্বাসহীন লোকের অব্যাহত বিরুদ্বাচরণ এবং কটাক্ষমুলক অপবাদ ও অসম্মানের বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলেন মাহমুদুর রহমান। এতে যুদ্ধাপরাধের বিচার নামক নাটক মঞ্চস্ত করার মাধ্যমে গণজাগরন নামক কথিত গাঁজার কল্কিতে টান দিয়ে সরকারের আবারো ক্ষমতায় আশার স্বপ্ন ধূলিসাত হয়ে যায়।

যেকাজ আওয়ামী বিরোধী কোন রাজনৈতিক শক্তি পারেনি, সেই দূরূহ কাজ একাই করেছিলেন মাহমুদুর রহমান। গণজাগরনের জোয়ারে ভাটার সৃষ্টি হয়েছিল, আর সেখানে পবিত্র কোরান থেকে তেলাওয়াত এবং আযানের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়েছিল ঠেলায় পড়ে। কারন দেশের তৌহিদী ধর্মপ্রান জনতা কাফনের কাপড় শরীরে জড়িয়ে বেরিয়ে এসেছিলেন মহান আল্লাহ সুবহানাতায়ালা এবং হুজুর (স : এর অসম্মানের প্রতিবাদে। মাহমুদুর রহমানের প্রতি সরকারের এজন্যই এত আক্রোশ!

নিপীড়ক সরকারের হয়তো মাহমুদুর রহমানের মনের জোর সম্বন্ধে কোন ধারনা নাই। যে ব্যক্তি দেশের শীর্ষ আদালতে দাঁড়িয়ে নিজের অবস্থানের সপক্ষে যুক্তিতর্ক করেছেন একাই, আইন পেশার কোন বিশেষজ্ঞ না হয়েও, এবং যিনি সরকারের একান্ত বশংবদ নিম্ন আদালতে নিজের জন্য জামিন চান নাই সেটা করা বৃথা চেষ্টা হবে বলে। বাংলাদেশে এরকম কয়েকজন মাহমুদুর রহমান থাকলে আওয়ামী বাকশালীদের তখত ক্ষেপে উঠত অনেক আগেই!

বাংলাদেশে সরকারের অপকর্মের প্রতিবাদ করে সগর্বে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে গেলে যেসব সম্ভাব্য নিগ্রহ নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয় মাহমুদুর রহমানের বেলায় এর হার কয়েকগুণ বেশি। বর্তমান সরকারের সাড়ে চার বছর সময়ের প্রায় প্রতিটি ক্ষণই তাকে গুণতে হচ্ছে ভয়াবহ উৎকন্ঠায়। এখনো যে তিনি বেঁচে আছেন এটাই মনে হচ্ছে অনেক বেশি পাওয়া!

আজ আওয়ামীলীগের অনেক বড় বড় নেতার সাথে পাতি নেতাদেরও হুংকার দিতে দেখা যায়। কিন্তু যখন ক্ষমতা চলে যাবে তখন এদেরকে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। যেমনটি এর আগে দেখেছি আওয়ামী গডফাদার জয়নাল হাজারী, শামীম ওসমান এমনকি সুশীল বুদ্ধিজীবি হাসান ইমাম ও দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন! ততকালীন চারদলীয় সরকারের সামনে দাঁড়ানোর সাহস হয় নাই। তাই যারা আজ মাহমুদুর রহমানকে নির্যাতন নিপীড়ন করছেন তাদের কে বলি, সময় বেশি নাই। অতএব, খিয়াল কইরা!

বিষয়: বিবিধ

১৫০৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File