আলো কমে আসছে প্রথম আলো'র

লিখেছেন লিখেছেন শহর ইয়ার ০৬ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:৪৫:৪৪ রাত

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভালই বিপদে পড়েছে সুশীল ও নিরপেক্ষতার ধ্বজাধারী প্রথম আলো। হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে দেশের ইসলামপ্রিয় মানুষের জাগরণে সারাদেশে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে যে উত্তাল জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তাতে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে কাওরান বাজারের (তারা লিখে কারওয়ান বাজার) দৈনিকটি।

প্রথম আলো পাঠকপ্রিয়তা পায় মুলত তাদের ফিচার পাতা গুলোর কারনে। আবার তাদের মুখে চুনকালিও পড়েছিল একটা ফিচারপাতা বা ফান ম্যাগাজিনের কারনে। ওয়ান ইলেভেন নামক উদ্ভট সরকারের আমলে হুজুর (স: ) এর অবমাননামুলক একটি কার্টুন প্রকাশ করে এক ভয়ানক বিপদে পড়েছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক। দেশব্যাপী নবীপ্রিয় মানুষেরা তুমুল প্রতিবাদ শুরু করলে মতিউর রহমান এক কঠিন সংকটে পড়েছিলেন।

কিন্তু সারাজীবন মেপে মেপে পা ফেলা হিসাবী লোক মতিউর রহমান তৎকালীন সামরিক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেনের হাতে পায়ে ধরে সেই সংকট থেকে পরিত্রাণ লাভ করেছিলেন। ব্যারিষ্টার মইনুলের পরামর্শে বায়তুল মোকাররম মসজিদের তৎকালীন খতিব মরহুম ওবায়েদুল হক সাহেবের কাছে গিয়ে আল্লাহপাকের উদ্দেশ্যে তওবা করেছিলেন। সেই থেকে তিনি তওবা সম্পাদক নামে খ্যাত।



হেফাজতে ইসলামীর ঢাকামুখী লংমার্চের কভারেজ দেখতে গিয়ে প্রথম আলোর সংবাদগুলোর সার সংক্ষেপ দেখে পুরনো কথাগুলো মনে পড়ল। প্রথম আলোর নীতি হচ্ছে ব্যালেন্স করা। মানে বিরোধীদলের একটি সংবাদ থাকলে সরকারের পক্ষে যায় এমন আরেকটি সংবাদ তৈরি করে সমান গুরুত্বে প্রকাশ করা। এটিহচ্ছে যদি প্রথম আলোর পছন্দের দল সম্পর্কে তাদের নীতি। আর সংবাদ যদি প্রথম আলোর অপছন্দের দলের দিকে যায়, তাহলে সেটাকে কম গুরুত্বপূর্ণভাবে উপস্থাপন করে এর বিপরীতে পছন্দের দলের পক্ষে যায় এমন গুরুত্বহীন বিষয় আশয় ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় করে তুলে ধরা।

হেফাজতে ইসলামীর লংমার্চের গণজোয়ার সারাদেশ থেকে ঢাকামুখী স্রোতে ধাবিত। কিন্তু সেসবের কোন খবর নেই। ঘাদানিক ও আওয়ামীপন্থী ব্লগারদের একাংশের ডাকা তথাকথিত হরতাল কোন বিবেচনাতেই যে হেফাজতে ইসলামীর লংমার্চের সমান গুরুত্ব পেতে পারে না তা বুঝার জন্য সাংবাদিক হওয়া লাগে না। কিন্তু এটা প্রথম আলোর মহা সুশীল সাংবাদিকরা বুঝেন না। তাদের পত্রিকার হেডলাইন: সবার দৃষ্টি ৬ এপ্রিলের দিকে। বিশ্লেষণধর্মী এই প্রতিবেদনে মাওলানা শাহ আহমদ শফির সাথে সমান গুরুত্ব দিয়ে ঘাদানিক নেতা শাহরিয়ার কবীর ও ব্লগারদের নেতা ডা: ইমরান সরকারের বক্তব্য প্রকাশ পেয়েছে। কোন মাপকাঠিতে এই সংবাদটি করা হল?



শাহবাগে বিশ পন্চাশজন মানুষের জমায়েতকে শত শত মানুষ আখ্যা দিয়ে অনলাইনে তাদের একটি প্রধান নিউজ: আবার জেগেছে শাহবাগ। পাশেই মুল খবরে বলা হচ্ছে, কামরাঙ্গীর চরে সংঘর্ষ, গুলিতে আ.লীগ কর্মী নিহত। হেড লাইনে বলা হয়নি পুলিশের গুলিতে আ.লীগ কর্মী মারা যাবার খবর। এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে শুধু হেডলাইন পড়লে মনে হবে এটা হেফাজতে ইসলামীর কাজ। মানুষের সহানুভূতি টানার চেষ্টা আ.লীগ ও নাস্তিক্যবাদীদের পক্ষে।

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজের পতনের পর রবার্ট ক্লাইভ তার আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, সিরাজের মৃতদেহ দেখতে যেসব উৎসাহী নেটিভ লোকজন হাজির হয়েছিল তারা যদি কোন অস্ত্র ছাড়া শুধু একটি করে পাথর আমাদের দিকে নিক্ষেপ করতো তাহলেও আমাদের প্রাণ নিয়ে ফেরার উপায় ছিল না।

চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের কাছে আমাদের দেশ ও স্বাধীনতা পলাশীতে দুইশ বছরের জন্য পদানত হয়েছিল। এখনও কি সে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ আছে? লংমার্চের আগত ইসলামপ্রিয় জনতা যদি রুখে দাড়ায় শাহবাগী নাস্তিকদের তাহলে কী অবস্থা হতে পারে তা কি ভেবে দেখেছেন সুশীলরা?

বিষয়: বিবিধ

১৩৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File