চাকুরী করার প্রায়োরিটি
লিখেছেন লিখেছেন উম্মু রাইশা ০২ জুলাই, ২০১৩, ০৯:২৬:২৫ রাত
প্রতিটা মানুষের সিচুয়েশন আলাদা। আমরা বাংগালীরা কেন জানি বড় বেশী বিচার করি অন্যদের।একজন মানুষের একজাক্ট সিচুয়েশন আর তার নিয়ত আল্লাহ জানেন আর জানতে পারেন উনি নিজে। কিন্তুসময়ের প্রায়োরিটি বুঝাটা শিক্ষিত মানুষের বুঝতে হবে। আমি আমার উদাহরন দিলেই আপনারা বুঝবেন কত ইউনিক একেকজনের সিচুয়েশন।
রাইশা যখন ছোট ছিল আমি মাষ্টার্স করা থেকে কিছুদিন জব কররা সবই করতে পেরেছি। ওর আব্বু বাসা থেকে কাজ করতে পারত। রাইশা খুবই ইজি বাচ্চা ছিল। মানুষজনের কাছে থাকতে বেশী পছন্দ করত। ও যাতে ইসলামিক মাইন্ডেড মানুষের সাহচর্যে থাকে এটা নিশ্চিত করতাম। আমার তেমন অসুবিধা হতনা ।
আখদানের বেলায় পরিস্হিতি বদলে গেল। ওর যখন অটিজম ধরা পড়ল আমি তখন পিএইচডিতে ভর্তি হয়েছিলা. রাতের পর রাত জেগে থাকত।কান্না করত।আমিও ঘুমাতে পারতামনা।সংসারের কাজই ভাল করে করতে পারতামনা। আখদান আমাকে ছাড়া আর কারো কাছে যেতনা। ওর আব্বু ওকে ধরতে গেলেও রাগ হয়ে যেত। ওর ভুবনময় শুধু আমি।এখন আমিদেখলাম ওর ট্রিটমেন্ট করতে হবে। শারীরিক, থেরাপী এগুলি সব করাতে হবে। কোন ট্রিটমেন্ট টা ওর জন্য কাজ করে তাও আমাকে বের করতে হবে। আমি আমার জামাইয়ের সাথে পরামর্শ করে পিএইচডি করা বাদ দিয়ে দিলাম।
আমি এখন দেখি অনেক সাদা আমিরিকান এইসব বাচ্চা হলে চাকরী বাদ দিয়ে দেয়। ওদের ডেডিকেশন দেখলে অবাক হতে হয়। ইন্ডিয়ানরা চাকরি বাদ দিতে চায়না। অনেক সময় অনেক ইন্ডিয়ান মাদের দেখলে মনে হয় তারা এসব বাচ্চাদের সমস্যা বুঝতে চায়না আর আ্যবিউস করে।ফলেদেখা যায় সাদাদের বাচ্চা গুলি অনেক সময় ভাল হয়ে যায়,এটলিষ্ট হাইফাংশন হয়ে যায়।
ষেদিন একজন ভাবী বলছিলেন উনি উনার বাচ্চাটিকে ফোষ্টার হোমে দিয়ে দিবেন। আমি শুনে মন খারাপ করলাম।
আমি এখন যতটা সময় পাই নতুন গবেষনা পড়ি, কোন সাপ্লিমেন্ট ভাল হবে ,কোন থেরাপীভাল হবে, আমার ভাল লাগে যে আমি এ বিষয়ে আরো কিছু মাকেও হেল্প করি। বাংলাদেশী মাগুলি অনলাইনে কিছু পড়তে রাজীই না,তারাশুধু ডাক্তারের কথামত চলে পুরা অন্ধের মত। আমিও যাই ডাক্তারের কাছে,তবে অন্ধের মতনা। ওকে প্রশ্ন করেজীবন অতিষ্ঠ করে আসি।
আমি জানিনা আমার ছেলের কতটা কি হবে,তবে ওর প্র্রগ্রেস দেখে থেরাপপিষ্টরা খুব খুশী।ও রাতে ঘুমায়,বাবার সাথে খেলে, ইমিটেট করতে পারে,কিছু কিছু শব্দও বলতে পারে। আমি আমার অবদানের কথা বলবনা,তবে চাকরি করে বা ঐদিকে মনোযোগ দিলে ও এতটা আসতে পারতনা।
আমি আবারো বলছি জীবনে প্রায়োরিটি বুঝাটা ইম্পর্টেন্ট।সেটা বুঝে কাজ করাই জ্ঞানের কাজ।
বিষয়: বিবিধ
১৯১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন