কোরআন কুইয: ফরম্যাট " কে কাকে বলেছেন"

লিখেছেন লিখেছেন যুমার৫৩ ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৮:০১:৫৮ রাত



ইশকুলে বাংলা প্রথম পত্রে "কে কাকে বলেছেন" জাতীয় শর্ট কোয়েশ্চেন থাকতো। যেমন,"তুমিওতো একটা আস্ত গাড়ল, টিন খুললে আর এ সরেস মাল চেখে দেখলেনা !" কে কাকে কোন প্রসঙ্গে বলেছেন ? উত্তর হবে, সৈয়দ মুজতবা আলীর "রসগোল্লা" গল্পের ইটালিয়ান পুলিশ অফিসার ভেনিসের চুঙ্গীওয়ালাকে এই কথা বলেছেন।

এই ফরম্যাটে এবার কোরআন কুইজ। উদ্ধৃতিগুলো পড়ুন এবং বলুন কে কাকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বলেছেন।

[১] " এ আমার জন্য ও তোমার জন্য এক চোখ-জুড়ানো আনন্দ। একে হত্যা কোরোনা। হতে পারে সে আমাদের উপকারে আসবে, অথবা তাকে আমরা পুত্ররূপে গ্রহণ করবো।"

[২] " ও আমার মায়ের ছেলে, তুমি আমার দাড়ি ও চুল ধরে টেনোনা"

[৩] " যদি তার জামা সামনের দিক থেকে ছিন্ন থাকে, তবে মহিলা সত্যবাদিনী এবং সে মিথ্যবাদী। এবং যদি তার জামা পেছনের দিক থেকে ছিন্ন থাকে, তবে মহিলা মিথ্যাবাদিনী এবং সে সত্যবাদী।"

[৪] " ওহে (.......), তুমিই কি আমাদের দেবতাদের প্রতি এরকম আচরণ করেছো ? ..... "না এদের এই প্রধানই তো একাজ করেছে। অতএব তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তারা কথা বলতে পারে।"

[৫] " যদি আপনি তাদেরকে শাস্তি দেন, তবে তারা আপনার দাস এবং যদি আপনি তাদেরকে ক্ষমা করেন, তবে আপনিই পরাক্রান্ত, মহাবিজ্ঞ।"

[৬] " অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর এবং কন্ঠস্বর নীচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।"

[৭] " কিরূপে আমার পুত্র হবে, যখন কোন মানব আমাকে স্পর্শ করেনি এবং আমি ব্যভিচারিণীও কখনও ছিলাম না ?"

[৮] " আব্বা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চান তো আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসাবে পাবেন।"

[৯] " তুমি তো জানই, তোমার কন্যাদের নিয়ে আমাদের কোন গরজ নেই। আর আমরা কি চাই, তাও তুমি অবশ্যই জান।"

[১০] "বাছা, আমাদের সাথে (নৌকায়) চড়, আর অবিশ্বাসীদের সঙ্গী হয়োনা।"

-------- উত্তরমালা -------------

[১] মিসরের ফারাওকে উদ্দেশ্য করে ফারাও-পত্নী এই কথা বলেছেন। জালিম ফারাও ইসরাইলবংশীয়দের পুত্রসন্তানদের হত্যা করতো, কিন্তু কন্যাসন্তানদের জীবিত রাখতো। মুসার জন্মের পর তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তার মা তাকে নদীতে ভাসিয়ে দেন, আর এই পরিত্যক্ত শিশুকে কোলে তুলে নিলো সেই ফারাও-এরই পরিবার! তখন ফারাও-পত্নী ঐ কথা বলে শিশুটার প্রাণ বাঁচালেন।

আয়াত দেখুন: ২৮:৯

পুরো প্রসঙ্গ পড়ুন: ২৮:২ থেকে ২৮:১৩

[২] হারুন (আ.) তার ভাই মুসা (আ.) কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন। মুসা তাঁর সম্প্রদায়ের মাঝে ফিরে এসে দেখেন সামেরীর প্ররোচনায় তারা বাছুর-পুজা শুরু করে দিয়েছে। তারা হারুন (আ.) এর কথাকে পাত্তা দেয়নি। ক্ষুদ্ধ হয়ে মুসা (আ.) তখন হারুনকে পেটাতে উদ্যত হন।

আয়াত দেখুন: ২০:৯৪

প্রসঙ্গ জানুন: ২০:৮৩ থেকে ২০:৯৭

[৩] মিসরের আযীয (উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা)এর স্ত্রীর পরিবারের জনৈক ব্যক্তি আযীযকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন।

এটা সেই বিখ্যাত অ্যাডাম-টিযিং এর ঘটনা - যা যুলেখা এবং ইউসুফের মধ্যে ঘটেছিল।

আয়াত: ১২:২৬-২৭

প্রসঙ্গ জানুন: ১২:২১ থেকে ১২:৩২ তারপর ১২:৫০ থেকে ১২:৫৪

[৪] ইবরাহীম (আ.)ও তার মূর্তিপূজারী সম্প্রদায়ের মধ্যে এই কথোপকথন। ইবরাহীম চেষ্টা করেছিলেন আযর ও অন্যান্য পৌত্তলিকদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে মূর্তিপূজা ছাড়াতে। তারা রাযী না হলে তিনি একদিন তাদের অনুপস্থিতিতে সব কয়টা মূর্তি চুরমার করে দিয়ে কেবল দেবতা-সর্দারের মূর্তিটা অক্ষত রেখে দেন। তারপরের ঘটনা এটা।

আয়াত: ২১:৬২ - ৬৩

প্রসঙ্গ পড়ুন: ২১: ৫১ থেকে ২১:৭০

[৫] খৃষ্টানদের আকীদার গুরুতর ত্রুটি প্রসঙ্গে এখানে ঈসা (আ.) [যীশু] আল্লাহর কাছে তাদের জন্য ক্ষমার আবেদন করছেন। উল্লেখ্য আল্লাহ ঈসাকে প্রশ্ন করেন যে উনি কাউকে এটা শিখিয়েছেন কীনা যে তিনি [ঈসা] এবং তাঁর মা মরিয়ম (আ.)[মেরি] কে উপাস্য বানিয়ে নিতে হবে। ঈসা (আ.) জবাব দেন, " আপনি পবিত্র! আমার জন্যে শোভা পায় না যে, আমি এমন কথা বলি, যা বলার কোন অধিকার আমার নেই। যদি আমি বলে থাকি, তবে আপনি অবশ্যই পরিজ্ঞাত.........আমি তো তাদেরকে কিছুই বলিনি, শুধু সে কথাই বলেছি যা আপনি বলতে আদেশ করেছিলেন যে, তোমরা আল্লাহর দাসত্ব অবলম্বন কর।" তারপর ঈসা (আ.) খৃষ্টানদের সম্পর্কে এই মন্তব্য করেন।

আয়াত: ৫: ১১৮

পুরো প্রসঙ্গ: ৫: ১১৬ – ১১৮

[৬] জ্ঞানী লুকমান একথা তার পুত্রকে উপদেশ হিসেবে বলেছেন।

আয়াত: ৩১:১৮ - ১৯

পুরো উপদেশ: ৩১: ১৩ থেকে ৩১: ১৯

[৭] মরিয়ম (আ.) [কুমারী মেরি] বিস্মিত হয়ে এই প্রশ্ন করছিলেন "রূহ" জিবরাঈল (আ.)ফেরেশতাকে - যখন জিবরাঈল ওনাকে একটি পবিত্র পুত্রসন্তান [ঈসা (আ.) বা যীশু] লাভের সুসংবাদ দেন।

আয়াত: ১৯:২০

পুরো ঘটনা: ১৯:১৬ থেকে ১৯:৩৪

[৮] ইবরাহীম (আ.) কে উদ্দেশ্য করে তাঁর ছেলে [মুসলিম মতে ইসমাইল (আ.)] এই কথা বলেছেন, যখন তাকে যবেহ করার বিষয়টি তিনি জানতে পারেন।

আয়াত: ৩৭:১০২

প্রসঙ্গ: ৩৭:৮৩ থেকে ৩৭: ১০৯

[৯] এটা লুত নবীর উদ্দেশ্যে বদমায়েশ সমকামীদের মন্তব্য। তারা আল্লাহর গজবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো।

আয়াত: ১১:৭৯

ঐ বদমাশদের আচরণ ও মর্মান্তিক পরিণতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে: ৭:৮০ - ৮১, ২৯:২৯, ১১:৭৭ থেকে ১১:৮২ এবং ১৫:৫৮ থেকে ১৫:৭৪।

[১০]

কাফের পুত্রকে উদ্দেশ্য করে নূহ (আ.) এই আবেদন করেছিলেন। সে রাযী হয়নি, বরং বলেছিলো, "আমি এখনই কোন পাহাড়ে আশ্রয় নেব, যা আমাকে প্লাবন থেকে রক্ষা করবে। করুণ পরিণতির পরও পিতৃস্নেহের কারনে পুত্রের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন নূহ নবী, কিন্তু আল্লাহ সে দরখাস্ত কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

আয়াত: ১১:৪২

ঘটনাবলী: ১১:২৬ থেকে ১১:৪৬

অনুবাদসূত্র: (১)মুহিউদ্দীন খান

(২) ড. জহুরুল হক

নোট: আমি কোথাও ভুল করলে অনুগ্রহ করে শুধরে দেবেন। ধন্যবাদ।

বিষয়: বিবিধ

১৭২০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

360600
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:২৯
শেখের পোলা লিখেছেন : ৫ নং ছাড়া সবকটির উওর খাতায় লিখে নীচে এসে দেখি উওরগুলো দেওয়া৷ তাই আর দিলাম না৷ ভাল প্রচেষ্টা৷
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৫:১১
298873
যুমার৫৩ লিখেছেন : ধন্যবাদ। ২য় পর্ব আসছে। এবার আর সাথে সাথে উত্তর প্রকাশ করবোনা। Happy
360609
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৯:৩৪
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
আমিতো পুরোটা না পড়ে উত্তর লিখে পেলেছি। নিচের দিকে এসে দেখি উত্তর দেওয়া।

তো কুইজ হলো কি করে ভাই!

আমি কিন্তু আপনার উত্তর এখনো পড়িনি।

১। রামসীসের স্ত্রী আসিয়া রামসীসকে বলেছিলেন শিশু নবী মূসা আঃ সম্পর্কে।
২। বনী ইসরাঈলের নবী হারুন আঃ আপন ভাই নবী মূসা আঃ কে বলেছিলেন।
৩। আযিযে মিশরকে উদ্দেশ্য করে বাদশার এক কর্মচারীনীর ছোট বাচ্ছা বলেছিলেন ইউসুফ আঃ সম্পর্কে।
৪। ইব্রাহীম আঃ ও তার কাওমের কথোপকথন। প্রথম অংশ মুর্তিপূজক কাওমের দ্বিতীয় অংশ নবী ইব্রাহীম আঃ এর।
৫। হযরত ঈসা আঃ দোয়াতে আল্লাহ তায়ালার কাছে আর্জি পেশ করেছেন।
৬। লোকমান হাকীম তার সন্তানকে নসীহতের সময় বলেছিলেন।
৭। মারইয়াম আঃ মানুষরূপী জিব্রাইল আঃ কে কথাগুলো বলেছিলেন।
৮। ইসমাঈল আঃ উনার পিতা ইব্রাহীম আঃ কে বলেছিলেন।
৯। নবী লূত আঃ এর নিকট আসা ফেরেস্তাদের দেখে হযরত লূত আঃ কে বলেছিলেন উনার কাওমের লোকেরা।
১০। পুত্র কেনান কে নবী নূহ আঃ এর আহবান।
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৫:১৬
298874
যুমার৫৩ লিখেছেন : ওয়াআলাইকুমুসসালাম।
আপনার উত্তরের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। পরের পর্বে সাথে সাথে উত্তর না লিখে পরে জবাব দেব। Happy
360616
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১১:০২
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোষ্টের জন্য
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৫:১৭
298875
যুমার৫৩ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
360617
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১১:০৭
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : অভিনব কুইজ প্রতিযোগিতা! প্রশ্ন নিয়ে ভাবার আগেই উত্তর হাজির
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৫:১৮
298876
যুমার৫৩ লিখেছেন : ভেবেছিলাম সাথে সাথে জবাব লিখে দিলেই পাঠক বেশী খুশী হবে।
360622
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ১১:৫৮
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হাহাহাহাহা আমি কেবল ৫ নং পর্যন্ত উত্তর সেট করলাম...তারপর নীচে একটু চোখ পড়তেই দেখলাম উত্তর প্রদান করা হয়েছে। যাক কষ্ট কমে গেল Happy
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৫:২০
298877
যুমার৫৩ লিখেছেন : আচ্ছা ২য় পর্বে উত্তর সাথে থাকবেনা Happy ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File