যুদ্ধাপরাধীর বিচার যে আওয়ামী লীগের বড় ভুল ছিল তা একদিন প্রমাণিত হবে : কাজী জাফর আহমদ
লিখেছেন লিখেছেন আমলক ২৯ মার্চ, ২০১৩, ১০:৪৮:০৮ রাত
http://newsmediabd.com/?p=20041
নিউজমিডিয়াবিডি.কম, নিউজডেস্ক : শাসকদলকে কঠোরতম ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ বলেছেন, সরকারকে তার কর্মকান্ডের জন্য নিষ্ঠুর পরিণতি ভোগ করতে হবে। তিনি বলেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে যখন এরকম সঙ্কট দেখাদেয় তখন বিরোধীদল যতটা না ভোগ করবে তার চাইতে শাসকদলকেই বেশী ভোগ করতে হবে। তাই সরকারেরই উচিত সংঘাত বন্ধকরে সমঝোতার পথে আসার।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে চ্যানেল আইয়ের জনপ্রিয় টক শো তৃতীয় মাত্রায় কাজী জাফর আহমদ এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, পুলিশের এমন দানবীয় রূপ এদেশে এর আগে আমি আর কখনো দেখিনি। কিছুদিন আগে যে হত্যাকান্ড ঘটলো সেখানে পাখির মত মানুষকে চিহ্নিত করে করে মারা হল, আমার পাশের গ্রামে তিন জনকে এবং তার পাশের গ্রামেও তিনজন মানুষকে হত্যা করেছে পুলিশ।
পুলিশের এমন আচরণের জন্য তিনি পুলিশকে যারা পরিচালনা করছেন তাদেরকে দায়ী করে তিনি বলেন তারা কি বুঝতে পারছেন না যে তাদের পায়ের নিচে মাটি সরে যাচ্ছে, তাদেরকে এর জবাবদিহিতা করতে হবে। তারা যে ক্রিয়া করছে তারও একটা প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
বর্তমানে দেশের সবচেয়ে গুরুতবপুর্ন সমস্যা হচ্ছে নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক না করা। সরকার এ বিষয়টি বাদ দিয়ে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কারন সেটা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল তাই সেটা সম্পাদন করার দিকেই সরকারের বেশী মনযোগ।
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে কাজী জাফর বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার করতে গিয়ে যে আওয়ামী লীগ ভুল করেছে তা একদিন প্রমাণিত হবে। এটা করে তারা যে লাভের চেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাও প্রমাণিত হবে। তিনি বলেন, অতীতে আমরা দেখেছি তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জামায়াত একসাথে আন্দোলন করেছে, এছাড়া একই দাবিতে জাতীয় পার্টি, জামায়াত, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ আড়াই বছর একসাথে আন্দোলন করেছে ১৭৩ দিন হরতাল অবরোধ করেছিল। তখন লিয়াজো কমিটি গঠন করা হয়েছিল তাতে জাপার পক্ষে দায়িত্ব পালন করেছি আমি, জামায়াতের পক্ষে ছিলেন মুজাহিদ আর আওয়ামী লীগের ছিলেন প্রয়াত আব্দুস সামাদ সাহেব তখনও আমি দেখেছি আওয়ামী লীগ জামায়াতের কথাবার্তাকেই বেশী প্রাধান্য দিত। এছাড়া জামায়াতের সাথে আওয়ামী লীগের সভা, বৈঠক, সংবাদ সম্মেলন ছিল নিয়মিত, পরবর্তীতে ৯৬ সালে গোলাম আজমের বাসায় শেখ হাসিনার যাতায়াত এবং রাজনৈতিক আলাপ, আলোচনা ছিল লক্ষ্যকরার মত।
তিনি আরো বলেন, আসল যুদ্ধাপরাধীদের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে তিনজাতি চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করার অভিযোগে যাদেরকে বিচার করা হচ্ছে তাদের অধিকাংশই বঙ্গবন্ধুর সেই মহান ঘোষনার মাধ্যমে ক্ষমা পেয়ে গিয়েছিলেন। আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি তখন টগবগে তরুণ ছিলাম বঙ্গবন্ধু আমাকে বলেছিলেন, দেখ আমাদের দেশটা ছোট এখানে বেশির ভাগই কৃষক শ্রেণীর, প্রায় সবাই আমরা মুসলিম মাত্র কয়েকটি হিন্দু পরিবার, আমরা এত রক্তদিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছি এর পর ওদের আবার বিচার করে, ফাঁসির কাষ্টে ঝুলিয়ে আরেকটি দাঙ্গার সৃষ্টি করতে চাইনা।
বঙ্গবন্ধু আরো বলেছিলেন, তোর পরিবারের দিকে দেখ সেখানে চাচা মামা অনেকেই সেই অপরাধে অপরাধী, আমার চাচা শেখ মোশাররফ হোসেন শান্তি কমিটির সাথে যুক্ত ছিলেন তাকে হাজতে পাঠিয়েছি, আমরা আসলে কার বিচার করবো ?
কাজী জাফর আহমদ বলেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচার সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা সে ব্যপারে মানুষের যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। তিনি বলেন, বিশেষকরে মাওলানা সাইদী সাহেবের রায়ের পর আমরা দেখেছি ২ দিনে ১৫০ জন মানুষ প্রাণ দিল। এছাড়া তিনি আদৌ রাজাকার ছিলেন কিনা সে বিষয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে কারন তিনি জামায়াতে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৭৯ সালে এর আগে রাজনীতির সাথে তার কোন সম্পর্কও ছিল না, যাই হোক সে বিষয়ে আমি যাব না আমি শুধু বলতে চাই দেশের যে অবস্থা হয়েছে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।
এছাড়া শাহবাগের আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমি দেশের অনেক গুরুতপুর্ণ আন্দোলনের সাথে জড়িত ছিলাম, আমি কখনো দেখিনি শাষককে বাদ দিয়ে বিরোধীদলকে লক্ষ্যবস্তু করে এভাবে আন্দোলন হতে। এ আন্দোলনে আদালতকে অপমানিত করা হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন