গণজাগরণ মঞ্চ এখন প্রাণহীন; পুলিশ বলল ‘উপরের চাপে আছি’

লিখেছেন লিখেছেন আমলক ২৭ মার্চ, ২০১৩, ১১:৪৫:০২ সকাল

click here

২১ মার্চ (রেডিও তেহরান) : শাহবাগ ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ এখন প্রাণহীন হয়ে পড়েছে। কিছুদিন আগেও যেখানে ভিড় জমাতো হাজারো তরুণ, সেখানে আজ দু’দিকে র‍্যাব-পুলিশের পাহারায় একটি ফাঁকা মঞ্চ ও কয়েকটি অ্যাকটিভিস্ট স্টল। সেখানে মিডিয়ার সার্বক্ষণিক উপস্থিতিও নেই। কয়েকদিন আগে মঞ্চটি খুলে নেয়া হলেও পরে নামকাওয়াস্তে রেখে দেয়া হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ খাবার দোকান ও ফেরিওয়ালাদের হাকডাকের মধ্যেই মঞ্চটি কোনো রকমে টিকে আছে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয়া হলে সেখানে শাহবাগ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। প্রথম দিকে ব্লগার অ্যাকটিভিস্ট নামের একটি সংগঠন ওই সমাবেশের নেতৃত্বে থাকলেও পরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, তাদের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ ও একই ঘরানার বাম রাজনৈতিক দলের নেতারাই মঞ্চের কর্তা বনে যান। সরকারি দলের সমর্থক সাংস্কৃতিক নেতারাও সেখান থেকে নির্দেশনা দিতে থাকেন। এছাড়া, প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক স্লোগান দেয়া হয়। ফলে, জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তি কথিত গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। এরই জের ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে গণজাগরণ মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়। তাতে প্রভাব পড়ে শাহবাগের মঞ্চের ওপরও। সাধারণ মানুষ এর সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করতে থাকে এবং মঞ্চের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়। এসব কারণে মঞ্চ এখন প্রাণহীন হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের তেমন কোনো কর্মসূচি না থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টি.এস.সি থেকে শাহবাগমুখী রাস্তাটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে এই রাস্তায় কোনো যান চলাচল করতে পারছে না। সাধারণ পথচারীদের দুর্ভোগ বেড়েছে। অপরদিকে মঞ্চ রক্ষার নামে ৩ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরী করে রাখা হয়েছে। এ কারণে পথচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদেরও ব্যাগ তল্লাশির নামের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম উদ্যোক্তা ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু জানান, “আমাদের কর্মসূচি নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলছে। তবে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এর মৃত্যুতে আমরা আমাদের কিছু কর্মসূচি স্থগিত করেছি।” তিনি বলেন, “আমাদের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চলমান আছে।”

গণজাগরণ মঞ্চের সমালোচনা করে হেফাজতে ইসলাম যে শাস্তির দাবি করছে এ প্রসঙ্গে ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি বলেন, “এটি তাদের ভুল ধারণা। আমরা তাদের সাথে বারবার আলোচনায় বসতে চাইলেও তারা মুখ ফিরে নিয়েছেন, আমরা এতে ক্ষুব্ধ।” বাপ্পাদিত্য বসু হেফাজতে ইসলামকে জামায়াতে ইসলামীর দ্বিতীয় টিম বলেও দাবি করেন।

গণজাগরণ মঞ্চ দেখতে আসা ঢাকা সিটি কলেজ ছাত্রী এশা বলেন, শাহবাগের মঞ্চ গতি হারিয়ে ফেলছে। ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র দেলোয়ারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে দেশে অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যার কারণে মঞ্চ আগের মতো প্রাণবন্ত দেখা যাচ্ছে না। দেলোয়ার বলেন, আমরা রাজাকারদের বিচার চাই। তবে সেটা যেন হয় স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সদস্য বলেন, “মূলত উপরের চাপে আমরা এখানে অবস্থান করছি।”

রেডিও তেহরান/এআরকে/এসআই/২১

বিষয়: বিবিধ

১১১৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File