মুরসির পতনঃ আল বারাদির কপটতার মুখোশ উম্মোচন
লিখেছেন লিখেছেন বঙ্গ বাবা ০৪ জুলাই, ২০১৩, ০২:৩২:১৮ দুপুর
মিশরে “তামারুদ” বা “রেবেল” ক্যাম্পেইন এর হোতা হাইপক্র্যাট আল-বারাদি, মুরসি বিরোধি আন্দোলনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন ব্রাদারহুডের কর্মীদের সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ড। অথচ সংখ্যাগরিষ্ঠ এই রেজিম যতটা উদারপন্থিতা দেখিয়েছে তুরস্কের এরদোগান এর বিন্দুমাত্র দেখায় নি।
১।গত বছর ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস এ নিরন্তর বোমাবাজি করা হয়।
২।কিছু সরকারি বাসভবন, হেডকোয়ার্টার সহ ৩০ টি সাংগঠনিক ভবন, ব্রাদারহুডের ৪ টি বাস আরো নানা উপকরণ আগুনে জালিয়ে দেওয়া হয়।
৩।আন্দোলন চলাকালেই তাহরির স্কয়ার এ নারীদের যৌন হয়রানীর স্বীকার হতে হয়।
# আল-বারাদি আর তার সাঙ্গোপাঙ্গরা মুরসি সরকারের ইকোনমি, ট্যুরিস্ম ব্যবস্থা আর ফরেইন পলিসি নিয়ে পরিতাপ শুরু করে।অথচ মোবারক বিরোধী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর AFTERMATH এর লেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই নিরবাচনের এক সপ্তাহ পরেই আগস্ট মাসে বারাদি গোষ্ঠী নতুন করে মুরসি বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। এত কম সময়ে তারা কি করে প্রবৃদ্ধি আসা করে????
# বারাদি দাবী করে মুরসি, সরকারকে “ব্রাদারহুডকরন” এর প্রচেষ্টায় ছিল। অথচ-
১।কেবিনেট মিনিস্টার এর মাত্র ৩৫% ছিল ব্রাদারহুডপন্থী
২।তাছাড়া বিভিন্ন উচ্চস্থানীয়ও পদের জন্য(মন্ত্রিত্ব, ভাইস প্রেসিডেন্ট) বিরোধী দল কে আমন্ত্রন জানান হয়েছিলো। এমনকি বারাদির পলিটিকাল সহযোগী হামিদ সাবাহি কে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হলে বারাদিপন্থীরা তা নাকচ করে দেয়।
এই সেই ভণ্ড এল- বারাদি-
#সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হল ডিক্রি জারি সংক্রান্ত অস্থিতিশীলতায়, ডিসেম্বরের ৬ তারিখ আল- বারাদি সংলাপের জন্য মুরসিকে আমন্ত্রণ জানালে মুরসি তাতে রাজি হন এবং সকল বিরোধী দলের নেতাদের উপস্থিতি আশা করেন। অথচ এই সংলাপে আমন্ত্রণকারী বারাদিই সংলাপে যোগ দেয় নি।আসলে তার এই চাল টি ছিল স্রেফ লোক দেখানো।
#বারাদি দাবী করেন মুরসি কারো কথা শুনার পাত্র নন, বরং তিনি তার নিজ প্ল্যনমত আগান। অথচ মুরসি ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত এই সংলাপে ঘোষণা করেন তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ মাক্কির সভাপতিত্তে সংলাপ ছেড়ে দিয়ে নিজে সংলাপকক্ষ প্রস্থান করবেন এবং সকলে যেই সিদ্ধান্তে পৌঁছান তাই মেনে নিবেন।
#এমনকি সংবিধানের জটিলতা সংক্রান্ত আরেকটি সংলাপেও (২১ ডিসেম্বর) বারাদি যোগ দেননি
#এলবারাদি দেশটির সংবিধানকে “ব্রাদারহুড সংবিধান” বলে দাবী করেন যদিও সংবিধান প্রনয়ন কমিটির ১০০ জনের মধ্যে ৩৩ জন ছিলেন ব্রাদারহুড সদস্য আর বাকিরা ছিলেন বিরোধীদলীয় নেতৃবৃন্দ।
#এলবারাদি সংবিধানের কিছু প্রবন্ধের সমালচনা করে তা পুনঃরালোচনা করার দাবী জানালে মুরসি তার দাবি মেনে নিয়ে সমস্যা সমাধানে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেন। অথচ পরবর্তীতে বারাদি,মুরসির এই প্রচেস্টাও প্রত্যাখ্যান করে।
এভাবে সময়ে সময়ে বারাদি পক্ষ মুরসি সরকারের সমালোচনা আর বিরধিতা করলেও বিরোধী দল হিসেবে মুরসির পক্ষ হতে প্রাপ্ত সকল প্রস্তাবই তারা নাকচ করে দেয়। প্রকৃতপক্ষে দেশ কে একটি স্থিতিশীল ও প্রগতিশীল অবস্থায় আনার কোন ইচ্ছাই তাদের ছিল না। ছিল ক্ষমতায় আসার লোভ।
এই কারনেই তারা মিথ্যা সব কালিমা লেপন করে গেছে ব্রাদারহুডের উপর।গত কয়েকদিনে ক্ষমতাসীন ব্রাদারহুডের প্রায় ৫০ এর উপর একটিভিস্ট নিহত হয়েছে বারাদি বাহিনির হামলায়। সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে টিভি চ্যানেল,সংবাদপত্র,ইন্তারনেট অফিসিয়াল পেইজ। ৬০% সমর্থক নিয়ে ব্রাদারহুড ইচ্ছা করলেই আরো কঠোর অবস্থায় যেতে পারতো। অথচ তারা সারবক্ষনিক নমনীয়তা প্রদর্শন করেছে। এর পরেও মুরসি সরকারকে আপোষহীন স্বৈরাচারী উদ্ধৃতি দেয়া থেকেই বুঝা যায় সেকুলার এই বিরোধীদল কতটা কপট হতে পারে।
বিষয়: আন্তর্জাতিক
১৬৭০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন