জাতিসঙ্ঘ থেকে বাদ পড়তে পারে বাংলাদেশ পুলিশ
লিখেছেন লিখেছেন ফয়সাল ১৪ মার্চ, ২০১৩, ০৯:৫৩:৪২ রাত
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে পুলিশের আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের পুলিশকে বাদ দেয়া হতে পারে বলে উদ্বেগজনক একটি সংবাদ বুধবার বাজারে আসা সাপ্তাহিক ঠিকানায় ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। মানবাধিকার রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা এবং নীতি-নৈতিকতা জাতিসঙ্ঘসহ বিশ্ব মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের নজরে এসেছে বলেও অনুসন্ধানী এ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘জাতিসঙ্ঘ থেকে বাংলাদেশের পুলিশ প্রত্যাহার হতে পারে’ শীর্ষক ওই সংবাদে বলা হয়েছে, ‘জাতিসঙ্ঘের হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের সাথে সংশ্লিষ্টদের অনেকেই পুলিশের জন্য মানবাধিকার সম্মত আচরণবিধির নিরিখে বাংলাদেশের পুলিশের আচরণ ও তাদের মনোভাব এবং দৃষ্টিভঙ্গি বিচার বিশ্লেষণ শুরু করেছেন। দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুলিশের আচরণ ভয়াবহ।’
খবরে বলা হয়েছে, অন্যান্য আইন প্রয়োগকারীদের মধ্যে সেনাবাহিনী নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে। চলতি বিক্ষোভ দমনে র্যাবের নাম শোনা যাচ্ছে না বা তাদের নিয়োজিত করা হয়নি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বর্ডার গার্ড নিয়োগ করা হলেও তাদের ব্যবহার করা হয়নি। রাজপথে এবং মাঠে একমাত্র পুলিশকেই তৎপর দেখা যাচ্ছে একটি বিশেষ গোষ্ঠির স্বার্থ রা করে আরেক গোষ্ঠির ওপর চড়াও হতে। যা বিশ্ব মানবাধিকার পর্যবেকদের মধ্যে মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের বেশ কিছু সদস্য কাজ করছেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে। কিন্তু যেভাবে পুলিশ বাংলাদেশের জনগণের ওপর অমানবিক আচরণ করছে তাতে তারা জাতিসঙ্ঘের বিবেচনায় মানবাধিকারের যথার্থ স্ট্যান্ডার্ড ও চর্চার ধারক হবার যোগ্য কিনা তা পুনরায় বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বলে ওই সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘এই বিবেচনায় যদি বাংলাদেশের পুলিশের যোগ্যতা প্রশ্নের সম্মুখীন হয় তাহলে তাদের মিশন থেকে বাদ দেয়া হতে পারে’- ধারণা করা হয়েছে ঠিকানা’র রিপোর্টে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বর্তমানে বাংলাদেশের ১৭৭০ জন পুলিশ, ৬৯২৭ সেনাসদস্য এবং অন্যান্য েেত্র ৮৪ অফিসারসহ মোট ৮৭৮১ জন কাজ কাজ করছেন। অপরদিকে ভারতের ১০২২ পুলিশ, ৬৭৪৩ সেনাসদস্য, অফিসার ৭৫ জনসহ মোট ৭৮৪০ জন কাজ করছেন শান্তিরা মিশনে। শান্তিরা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ ও সৈনিকদের ভূমিকা অনেক দেশের কাছেই ঈর্ষণীয়। অনেকে মনে করেন বাংলাদেশের পুলিশকে আন্তর্জাতিকভাবে হেয় করতে পারলে অনেকের পোয়াবার। বাংলাদেশের প্রতিবেশী অনেক দেশ এক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী।
জাতিসঙ্ঘ হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটসের উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা ঠিকানাকে বলেন, দাতাগোষ্ঠি বাংলাদেশের পুলিশের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সাধারণ জনগণের উপর গুলিবর্ষণ, কয়েকদিনে শতাধিক বেসামরিক লোক ও কতিপয় পুলিশ সদস্যের রহস্যময় মৃত্যু নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের আচরণ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিক্ষোভ দমাতে পুলিশের আচরণ জাতিসঙ্ঘের ‘হিউম্যান রাইটস স্ট্যান্ডার্ড এন্ড প্র্যাকটিস ফর দ্য পুলিশ’ গাইডের কী কী ধাপ লঙ্ঘিত হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাইড বুকের যে সব ধারা গুরুত্ব পাচ্ছে সেগুলো হচ্ছে, ১. ইউজ অব ফোর্স বা শক্তির প্রয়োগ, ২. একাউন্টেবিলিটি ফর দ্য ইউজ অব ফোর্স এন্ড ফায়ার আর্মস বা শক্তি ও আগ্নেয়াস্ত্র প্রয়োগে জবাবদিহিতা, ৩. পারমিসিবল সারকামস্ট্যান্সেস ফর দ্য ইউজ অব ফায়ার আর্মস বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে অনুমোদিত প্রোপট, ৪. প্রসিডিউর ফর দ্য ইউজ অব ফায়ার আর্মস, বিফোর ইটস ইউজ এন্ড আফটার ইউজ অর্থাৎ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের আগে ও পরে প্রক্রিয়া এবং ৫. হিউম্যান রাইটস স্ট্যান্ডার্ড বা মানবাধিকার বিবেচনার মাপকাঠি ইত্যাদি।
click here
বিষয়: বিবিধ
১২২৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন