হরতাল ও জ্বালাও-পোড়াও পিকেটিং কি ইসলাম সম্মত ?
লিখেছেন লিখেছেন ডুবোজাহাজ ০৪ মার্চ, ২০১৩, ০৮:৫৮:০৩ রাত
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত; রাসুল (সাঃ) বলেন, ‘তোমরা রাস্তার উপর বসা থেকে বিরত থাক”। সাহাবাগন বলেন, “হে আল্লাহর রাসুল! রাস্তায় বসা ছাড়া তো আমাদের কোন উপায় নেই। আমরা সেখানে বসে পারস্পরিক প্রয়োজন সম্পর্কিত আলাপ-আলোচনা করে থাকি”। রাসুলুল্লাহ(সাঃ) বলেনঃ “তোমরা যখন রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাকতে অস্বীকার করছ, তাহলে রাস্তার অধিকার আদায় কর”। তারা বলেন, “হে আল্লাহর রাসূল! রাস্তার অধিকার আবার কি?” তিনি বলেনঃ “রাস্তার অধিকার হল, দৃষ্টি সংযত রাখা, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা, সালামের জবাব দেয়া, সৎ কাজের নির্দেশ দেয়া এবং অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখা”। [বুখারী ও মুসলিম]
যদি রাস্তা থেকে কষ্টকর বস্তু সরানো রাস্তার হক্ব হয়ে থাকে, তাহলে জনগণের জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেয়া, রাস্তা অবরোধ করে রাখা কিভাবে ইসলামে অনুমোদিত হতে পারে?
-
হরতালের দিনে গরীব রিকশাওয়ালা, দিন-মজুররা কিভাবে তাদের রুজী জোগাড় করবেন? সেদিন অনেক দিন মজুর হয়তো অর্ধাহারে – অনাহারে দিন কাটান। তারা তাদের পেটের ভাত কিভাবে জোগাড় করবেন? এই দায়িত্ব যারা হরতাল পালন করেন তাদেরকে নিতে হবে। এটা মস্ত বড় জুলুম। নিজেদের নেতাদের মুক্তির জন্য ইসলামী শরীয়াত সম্মত পন্থা বাদ দিয়ে সাধারণ দুর্বল মুসলমানদেরকে চাপে ফেলা কোন ক্রমেই জায়েজ নয়।
হরতাল-অবরোধ ইত্যাদি এর মুল লক্ষ্যই হলো সাধারণ জন-জীবন ব্যাহত করে সরকারকে নিজের দাবী মানতে বাধ্য করা। এটা কিভাবে ইসলামে অনুমোদিত হতে পারে। অথচ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেনঃ
وَلاَ تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى
কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না।
এটাই শরীয়াতের একটা উসুল যে, একজনের অপরাধের জন্য অন্যজনকে শাস্তি প্রদান করা যাবে না। তাহলে মুরতাদ সরকার কিংবা রামপন্থী-বামপন্থীদের জুলুম ও অপরাধের কারণে কিভাবে সাধারণ মুসলমানদেরকে কষ্টে ফেলা অনুমোদিত হয়?
আর এই পদক্ষেপের ফলে মুল অপরাধীরা সবসময় অন্ধকারে আড়ালে চলে যায়। এটা ন্যায় বিচার ও ইনসাফের খেলাফ।
সাধারণ মুসলমানদের গাড়ী, দোকান ইত্যাদি জ্বালিয়ে দেয়া কখনো ইসলামসম্মত কোন প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে না। বরং এটা শরীয়াতের মুল মাকসাদের পরিপন্থী। ইসলামী শরীয়াতের অন্যতম একটা লক্ষ্য হলোঃ সাধারণ মুসলমানদের জান-মালের হেফাজত করা। এখন দ্বীন ইসলাম কায়েম করার আন্দোলনে কিভাবে ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মুসলমানদের ধন-সম্পদ বিনষ্ট করা হবে? রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে বলেছেনঃ
আজকের এই দিন, এই মাস ও এই শহর যেমন সম্মানার্হ, তোমাদের রক্ত, সম্পদ ও ইজ্জত তেমনি সম্মানার্হ।
তাহলে হরতাল করে সাধারণ মুসলমানদের দোকান, গাড়ী ইত্যাদি পুড়িয়ে কি তারা রাসুল (সাঃ) এর বিদায় হজ্জ্বের ভাষনের বিপরীত আমল করছেন না?
বিষয়: বিবিধ
২০১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন