ঘুম থেকে জাগতে হবে ! অন্যকে জাগাতে হবে !
লিখেছেন লিখেছেন ডুবোজাহাজ ১৯ জুন, ২০১৪, ০২:১৪:০৯ দুপুর
কোন ঘুমন্ত ব্যক্তি যদি পানিতে ডুবে যায় তবে সে বাঁচবে কিভাবে ?
বাঁচার জন্য তাকে প্রথম যে কাজটা করতে হবে তা হল ঘুম হতে জাগতে হবে । কারণ সময় খুবই কম । দ্রুত তার শ্বাস ফুরিয়ে যাচ্ছে । ঘুম থেকে না জাগলে সে কোন action নিতে পারবে না । এবং সে ঘুমের মধ্যেই মারা যাবে । সে ঘুমের মাঝে জান্নাতের বাগিচায় স্বপ্নে ঘুরাঘুরি করলেও তা কোন কাজে আসবে না ।
ঘুম থেকে জাগতে পারলে তার যা করতে হবে , তা হল সাঁতরে পানির উপর উঠার চেষ্টা করতে হবে । সাঁতারের কিছু movement এ উপরে উঠা যায় আবার কিছু movement করলে নিচে নেমে যেতে হয় । তাকে যেহেতু বাঁচতে হবে তাই তাকে সে movement গুলোই করতে হবে যেন সে পানির উপর উঠতে পারে ।
সে পানির উপরে সাঁতরে উঠে শ্বাস নিয়ে ভাবল সে বেঁচে গেছে । কিন্তু তা নয় ! সে দেখল তার পা শিকল দিয়ে বাঁধা । সে তীরের দিকে আগাতে পারছে না । সে তখন ডুব দিয়ে দেখার চেষ্টা করল এই শিকল কোথায় বাধা । সে দেখল শিকলের আরেক মাথা তার প্রিয় মায়ের পায়ের সাথে বাধা । কিন্তু তিনি রয়েছেন ঘুমের মধ্যে !
নিজে বাঁচতে হলে এখন তাকেও ঘুম হতে জাগাতে হবে । বুঝাতে হবে এমন পরিস্থিতিতে ঘুমালে চলবে না । সাঁতরে উপরে উঠতে হবে । তাকে ধাক্কাধাক্কি করে জাগাতে হবে । ডাকতেই থাকতে হবে ঘুম থেকে উঠার জন্য । কারণ তাকে না জাগালে নিজেও সে বাঁচতে পারবে না । তীরে পৌঁছতে পারবে না !
তার ডাক শুনে তার মা জাগলেন । তারা দুজন উঠে এলেন উপরে । কিন্তু ! তার মায়ের পায়ের সাথে আরেকটি শিকল বাধা ! যার অপর প্রান্ত তার বাবার সাথে বাধা । কিন্তু তিনিও ঘুমিয়ে আছেন।
কিন্তু তার বাবা স্বপ্নের দুনিয়ায় আছেন । তা ছেড়ে এই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে তিনি রাজি নন । তাই তিনি বলে দিলেন আমাকে ডিস্টার্ভ করো না । এখান থেকে ভাগো । এটা শুনে যদি সেই ব্যক্তি ভেঙে পরে তবে হবে না । তাকে ধৈর্য্য ধরতে হবে । তারপর পুনরায় তাকে ঘুম থেকে উঠানোর চেষ্টা করতে হবে । কারণ তাকে না উঠালে পারলে কেউ তীরে পৌঁছতে পারবে না ।
দুনিয়ায় মানুষের জীবণটাও ঠিক একই রকম ।
সূরা আসরে আল্লাহ তাআলা বলেন,
কসম দ্রুত অতিবাহিত সময়ের,
মানুষ নিশ্চয় ক্ষতিগ্রস্ত
কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে
ও সৎকর্ম করে
এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের
এবং তাকীদ করে সবরের।
পানিতে ডুবন্ত ওই ব্যক্তির মত মানুষের জীবণের সময়ও দ্রুত চলে যাচ্ছে। আর সে আছে ক্ষতির মধ্যে ।
এই ক্ষতি হতে বাঁচতে হলে তাকে ঘুম হতে উঠতে হবে । বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে । সে যে ক্ষতির মাঝে ডুবে আছে বুঝতে হবে । সময় ফুরাবার আগেই প্রয়োজনীয় কাজ করতে হবে।
ডুবন্ত ব্যক্তি যেমন সাতরে উপরে উঠেছে বাঁচার জন্য । তেমনি তাকেও ক্ষতি হতে বের হবার জন্য সৎকর্ম করতে হবে । সৎকর্ম করে বের হবার চেষ্টা করতে হবে । কিন্তু সে দেখবে অন্যরা এখনো ঘুমিয়ে । এবং তাদের সাথে সেও বাধা । তাই তাদের ডাকতে হবে । ঘুম থেকে উঠিয়ে সত্যের দিকে আনতে হবে । সৎকর্মে করতে বলতে হবে ।
কিন্তু ওই স্বপ্নের দুনিয়ায় থাকা ব্যক্তির মত তারাও তাকে গালি দিবে , উপহাস করবে । সত্যকে মানতে চাইবে না । তাকে কষ্ট দিবে । তখন নিজে ধৈর্য্য ধরতে হবে । এবং তার মত বাকি যারা ঘুম থেকে উঠেছে তাদেরকেও ধৈর্য্য ধরার আহ্বান চালিয়ে যেতে হবে । এবং ঘুমন্তদের ঘুম থেকে উঠানোর জন্য দাওয়াত দিয়ে যেতে হবে ।
*** নোমান আলী খানের লেকচার অবলম্বনে রচিত
বিষয়: বিবিধ
১৩২৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন