পরীর দেশের দুষ্ট পরী, মজার কথায় হাসায় ভারী!! পর্ব-২
লিখেছেন লিখেছেন ইশরাত জাহান রুবাইয়া ০৩ জুন, ২০১৩, ১১:০০:৫৩ রাত
ঘটনাঃ১
মাইমুনার বয়স তখন ৪ বছর। একদিন আম্মু ওকে পড়াচ্ছেন। বেশ কিছুক্ষণ অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করলো সে! তারপর একসময় আর থাকতে না পেরে বললঃ ওহ! নানু! আপনি যদি কোন স্কুলের টীচার হতেন, তবে ঐ স্কুলের বাচ্চারা সব পাগলই হয়ে যেত!!
'
ঘটনাঃ২
সেদিন ও আম্মু ওকে পড়াতে বসিয়েছেন। ও একে একে আরবী, বাংলা, অংক, ইংরেজী অক্ষরগুলি লিখলো। তারপর বইখাতা বন্ধ করে আম্মুকে জিজ্ঞেস করলো,
- পড়ালেখা কি শেষ?
- হ্যাঁ, আজকের মত সমাপ্ত!
- তো, আমাকে এইবার বাসায় দিয়ে আসেন, আবার বৌভাতের দিন আসবোনে।
আম্মু তো অবাক!
- কিইইহ! কার বৌভাত? কবে?
-কেন বড়খালামনির! আরে বুঝলেননা? বড়খালামনির একদিন বিয়ে হবেনা? তারপর একদিন বৌভাত হবেনা? সেদিন আসব!
- কেন?
- অনুষ্ঠানের দিন পড়ালেখা করেনা কেউ!
আমি ততক্ষণে ওখান থেকে উঠে দৌঁড়, এই মেয়ে আমার ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করে খালি! সবকথার মাঝখানে এইরকম একটা প্রসঙ্গ তুলতেই হয় তার!
'
ঘটনাঃ৩
দরজাটা খুলতেই মাঈশার প্রচন্ড কান্নার আওয়াজ! আব্বু আম্মু দৌঁড়ে গিয়ে আপুকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন। আপু বলল, রাস্তা দিয়ে আসার সময় মাঈশা বায়না ধরেছে দোকানের সবকিছু কিনে দিতে হবে! আপু দেয়নি বলেই এই কাহিনী!
আমার আব্বু আবার উনার নাতনীদ্বয়ের কান্না সইতে পারেননা। তাই তিনি মাঈশাকে বললেন, চল নানাভাই, কি কি কিনবে তুমি, নিয়ে আসি। আম্মু দুষ্টুমি করে মাঈশার হাতে একটা বাজারের ব্যাগ ধরিয়ে দিলেন!
কিছুক্ষণ পর আব্বু আর ও বাসায় আসলো। দেখলাম আপুর পাটকাঠির মত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী মেয়েটা খুব বেশি কিছু আনেনি! ৬ প্যাকেট এনার্জি বিস্কিট, ৬ প্যাকেট টিপ বিস্কিট, ৩টা পটেটো চিপস, ২টা ক্রীম মাখানো ব্রেড আর ললিপপ! :-P :-P
এতগুলি কে খাবে, জিজ্ঞেস করতেই ব্যাখ্যা দিল, ৩টা চিপস ওদের দুইবোনের আর ছোট মামার, ২টা ক্রীম মাখানো ব্রেড দুই খালামনির, আর বিস্কিটগুলি ওরা দুই বোন মিলে নাকি ধীরে ধীরে খাবে!!
'
ঘটনাঃ৪
বাসার দেয়ালে নতুন রং করেছে। দুই বিচ্ছু বাসায় এলেই আমি আর সায়মা কড়া নজর রাখি যেন দেয়ালে শিল্পকর্ম করতে না পারে। বেশ কয়দিন আগে আমার রুমে বসে পড়ছিলাম। হঠাত্ বড়জনের ডাক, ও খালামনি! জলদি দেখে যাও, মাঈশা কি করে! গিয়ে দেখি ছোটজন মনের আনন্দে দেয়ালে মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে আর মেঝেতে নীল দিয়ে আল্পনা আঁকছেন!
'
ঘটনাঃ৫
তিন বছরের মামাত বোন নিশাত। ছোটমামার বড় মেয়ে। মামা দেশের বাইরে থাকেন। একদিন মামীর সাথে ফোনে কথা বলছেন এমন সময় মামীকে জিজ্ঞেস করলেন,
- নিশাত কি করছে?
- সে একমনে তোমার একটা ছবি দেখছে!
- এক কাজ করো তো! তুমি আমার ছবিটার উপর একটা থাপ্পড় দাও তো!
- কেন?
- আরে, দিয়েই দেখোনা কি হয়!
মামী তাই করলেন! ফলাফল হিসেবে উনার কিসমাতে উনার কন্যা প্রদত্ত উত্তম মধ্যম জুটল অনেকগুলি!
'
ঘটনাঃ৬
পরশু মামী বললেন, নিশাত তুমি তো বড় হয়ে যাচ্ছো, পড়ালেখা করতে হবেনা, স্কুলে যেতে হবেনা? একটু অ আ ক খ পড়োতো দেখি! সে সাফ জানিয়ে দিল পড়ালেখাও করবেনা, স্কুলেও যাবেনা!
- কেন?
- আমার রুবাইয়া আপু বলেছে কি, স্কুলে বাঘ থাকে, তাই স্কুলে না যেতে, পড়ালেখা না করতে!
ইজ্জত শ্যাষ আমার!
'
ঘটনাঃ৭
বান্ধবী রাইহানের ছোটবোন শিপু। জীবনের প্রথম স্কুলে যাবে। জিজ্ঞেস করা হল ওর অনুভূতি কি?
- খুবই ভালো!
- তাই নাকি! কারণটা কি?
- ওখানে নিশ্চয়ই আমার সমান অনেক পিচ্চি থাকবে! মনের মত খামচি দিতে পারবো! :-P :-P
বিষয়: বিবিধ
৩১৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন