কোন দলকে সমর্থন করে যেন আমরা ঈমান হারিয়ে আল্লাহর অভিশাপ প্রাপ্ত না হই [পর্ব- ৫ ও শেষ পর্ব]
লিখেছেন লিখেছেন ইঞ্জিঃ আবুল হোসেন রহমতুল্লাহ ০৭ মার্চ, ২০১৪, ০৯:০৮:২৯ রাত
[পর্ব-৪ এর পর]
[ধারাবাহিকতার জন্য পূর্বে প্রকাশিত পর্ব-১ থেকে পর্ব-৪ পড়ার অনুরোধ করছি]
আমরা আবার আয়াতুল কুরসিতে ফিরে যাই। সূরা বাক্বারার ২৫৫ আয়াতে ‘আয়াতুল কুরসি’ অংশটুকুই শুধু আমরা মুখস্ত পড়ি ফজলিতের নিয়তে, তাও আবার অর্থ ছাড়া, তাই আয়াতুল কুরসিতে কি আছে তাও জানি না। সূরা বাক্বারার যে আয়াতে আয়াতুল কুরসি আছে তার পরের আয়াতে কি আছে তাও জানার চেষ্টা করি না।
পূর্ববর্তি পর্বে উল্লেখ করেছিলাম সূরা বাক্বারার ২৫৫ আয়াতে ‘আয়াতুল কুরসি’ তে আল্লাহ নিজেই “লা-ইলাহা ইল্লা-আল্লাহ” কলেমার ব্যাখ্যা এবং কিভাব ঐ কলেমায় ঈমান আনতে হবে তা বর্ননা করার পর পরবর্তি আয়াতে বলেনঃ “যে তাগুতকে অস্বীকার ও বিরোধিতা করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান (বিশ্বাস) রাখে, সে এমন একটি মজবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরেছে যা কখনো ছিন্ন হবার নয়”। (সূরা বাক্বারাঃ ২৫৬)
তাই তাগুতকে অস্বীকার ও তাগুতের বিরোধিতা করাও ঈমানের একটি শর্ত এবং তাগুতকে অস্বীকার ও বিরোধিতা করলেই আল্লাহ নিশ্চয়তা (guaranty) দিয়ে বলেছেন তার ঈমান এমনভাবে মজবুত হবে যেন সে একটি মজবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরেছে যা কখনো ছিন্ন হবার নয়। তাগুতকে অস্বীকার ও তাগুতের বিরোধিতা না করলে তার আর ঈমান থাকে না। আমরা না বুঝে ফজিলতের নিয়তে আয়াতুল কুরসী মুখস্ত পড়ি, কিন্তু ঐ আয়াতুল কুরসিতে যেভাবে আল্লাহকে ইলাহ মেনে ঈমান আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা তো মানিই না এবং আয়াতুল কুরসীর পরের আয়াতে যেভাবে তাগুতকে অস্বীকার, বর্জন, অমান্য ও বিরোধিতা করে ঈমানকে মজবুত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাও মানি না।
“যারা (জিবত ও তাগুতকে না বলে অর্থাৎ বর্জন করে) ঈমান আনে আল্লাহ তাদের অভিভাবক (Guardian)। তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে (শয়তানের রাজত্ব ও তাগুতি শক্তির অভিভাবকত্ব থেকে) বের করে আলোর দিকে (ঈমানের পথে) নিয়ে আসেন। আর যারা (জিবত ও তাগুতকে অস্বীকার ও বর্জন না করার কারনে) কুফরীর পথ অবলম্বন করে তাদের অভিভাবক (Guardian) হচ্ছে তাগুত, সে তাদেরকে আলো থেকে (ঈমানের পথ থেকে) বের করে অন্ধকারের দিকে টেনে নিয়ে যায় ৷ এরা সবাই জাহান্নামের আগুনের অধিবাসী, সেখানে এরা চিরকাল থাকবে।” (সূরা বাক্বারাঃ ২৫৭)
পাঠক! দেখলেন তো? আয়াতুল কুরসির পরের দুইটি আয়াতে আল্লাহ কি বললেন? কখনো কি তা আমরা জানার চেষ্টা করেছি?
সাহাবা কেরামগন (রা) যখন কলেমা “লা-ইলাহা ইল্লা-আল্লাহ” পড়তেন তখন “লা-ইলাহা” শব্দ উচ্চারন করে কুরআন শরীফের ঐ আয়াতে “জিব্ত” অর্থাৎ মূর্তি পুজা, যাদু, তাবিজ, ভাগ্য গণনা, জ্যোতিষ, তন্ত্রমন্ত্র, কুসংসার ইত্যাদিকে যেমন অস্বীকার করেছেন, তেমনি যারা এসবের স্রষ্টা, যারা এসব পরিচালনা করতো, যারা আল্লাহর আইন ও নির্দেশ অমান্য করতো এবং সমাজের সাধারন লোকদেরকে অমান্য করতে বাধ্য করতো সেই সব নেতা আবু লাহাব, আবু জেহেল, শাইবা, ঊতবাদেরকেও অস্বীকার, অমান্য ও বিরোধিতা করে “তাগুত” কে অস্বীকার, অমান্য, বর্জন ও বিরোধিতা করেছিলেন। আর এ কারনেই তাঁদের উপর চরম নিষ্ঠুর ও বর্বরতম যুলুম নির্যাতন করা হয়েছে এবং তাঁরা তা সহ্য করেছেন। সাহাবা কেরামগন (রা) যদি কলেমা “লা-ইলাহা ইল্লা আল্লাহ” পড়ে শুধুমাত্র “জিব্ত” কেই অস্বীকার, অমান্য ও বর্জন করতেন, আর “তাগুত” কে অস্বীকার, অমান্য, বর্জন ও বিরোধিতা না করতেন তা হলে তো আর তাঁদের উপর কোন যুলুম নির্যাতন করা হত না।
আল্লাহর কলেমা এমন এক শক্তিশালী যা দ্বারা রাসুলুল্লাহ (স) সাহাবা কেরামগনকে (রা) সাথে নিয়ে ঘুনে ধরা অসুস্থ সমাজকে পরিবর্তন করে দিয়ে মদীনায় একটি শক্তিশালী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করলেন যে শক্তিকে তখনকার বিশ্বের দুই বৃহৎ শক্তিধর রোমান সাম্রাজ্য ও পারস্য সাম্রাজ্য ভয় করতো এবং এ কলেমার শক্তির কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরন করে পৃথিবী থেকেই বিলুপ্ত হয়ে গেল। আমাদের এমন দুর্ভাগ্য! সেই যুগে যে কলেমা এত আলোড়ন তৈরী করলো, আর এখন সেই কলেমা পড়ে ভিক্ষুকেরা ভিক্ষা করে এবং লোকেরা সেই কলেমা শুনে ভিক্ষা দেয়, সেই যুগের মত কলেমার তেমন আলোড়ন তৈরী হতে দেখা যায় না। এর কারন এখন আমরা কলেমার অর্থ ও মর্ম জানি না, কলেমার অর্থ ও মর্ম বুঝে শপথ নেই না এবং বাস্তবেও পালন করে দেখাই না।
কুরআন শরীফে আল্লাহ আরো বলেনঃ “(হে নবী!) তুমি কি তাদেরকে দেখ নাই, যারা দাবী করে যে, তারা ঈমান এনেছে এই কিতাবের প্রতি যা তোমার ওপর নাযিল করা হয়েছে এবং সেই সব কিতাবের প্রতি যেগুলো তোমরা পূর্বে নাযিল করা হয়েছিল? কিন্তু তারা নিজেদের বিষয়গুলি ফায়সালার জন্য তাগুতের দিকে ফিরতে চায়, অথচ তাদেরকে তাগুতকে অস্বীকার করার হুকুম দেয়া হয়েছে। শয়তান তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে সরল সোজা পথ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়ে যেতে চায়।” (সূরা নিসাঃ ৬০)
আমরা কলেমা পড়ে “তাগুত” কে অস্বীকার, অমান্য ও বিরোধিতা করি না বলেই আমাদের আজ চরম দুর্দশা। ঈমান, শক্তি সামর্থ্য, মনবল সবকিছু হারিয়ে আমরা তাগুতী ও বিধর্মী শক্তির নিকট পদানত এবং পথভ্রষ্ট হয়ে ও পথ হারিয়ে দুর্বল চিত্তে তাদের দিকে ধর্না দেই। কুরআন শরীফের এ আয়াত পড়েও কি আমাদের হুশ হবে না?
“তাগুতকে অস্বীকার, অমান্য, বর্জন ও বিরোধিতা করার কথা বললেই অনেকে খুব রেগে গিয়ে তেড়ে উঠেন, তাহলে কি অধিকাংশ লোকই ভুল করছে? অধিকাংশ লোকের কি তাহলে ঈমান নাই? উত্তরে বলবো, এগুলো তো আমার কথা নয়, আল্লাহর নিজের কথা যা তিনি কুরআন শরীফে সহজভাবে খুলে বলেছেন। অধিকাংশ লোকের ব্যাপারে আল্লাহ কি বলেন শুনুনঃ
“মানুষের মধ্যে এমন অনেক লোক আছে যারা বলে, ‘আমরা আল্লাহর উপর ও আখেরাতের বিচার দিনের উপর ঈমান রাখি’, অথচ তারা আসলেই মু’মিন (মুসলমান) নয়”। (সূরা বাক্বারাঃ ৮)।
“তাদের অধিকাংশই আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে, কিন্তু (আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরীক অর্থাৎ সমভাগী করায়) তারা মুশরিক”। (সূরা ইউসূফঃ ১০৬)
“কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না ও কাণ্ডজ্ঞানহীন” (সুরা আনফালঃ ৩৪, সূরা দুখানঃ ৩৯, সূরা জাসিয়াহঃ ২৬, সূরা নাহলঃ ৩৮,৭৫,১০১, সূরা রুমঃ ৬,৩০, সূরা ইউসুফঃ ২১,৪০,৬৮, সূরা সাবাঃ ২৮,৩৬, সূরা মু'মিনঃ ৫৭)।
“বরং তাদের অধিকাংশই প্রকৃত সত্য জানে না, অতঃপর তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়” (সুরা আম্বিয়াঃ ২৪)।
“অতঃপর তাদের অধিকাংশই মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তারা শুনতে চায় না” (সূরা হা-মীম সেজদাহঃ ৪)।
কলেমা মুখস্ত জানলেও এবং নিজেকে ঈমানদার মুসলমান বলে দাবী করলেও অধিকাংশ লোকের যে ঈমান নাই তা আল্লাহ এভাবেই কুরআন শরীফে বলেছেন আরও অনেক আয়াতে। শুধু তাই নয়, অধিকাংশ লোক প্রকৃত সত্য জানে না, জানারও চেষ্টাও করে না, কেউ যদি কুরআন হাদীসের দলিল সহ সঠিক তথ্য জানাবার চেষ্টা করে তখন তার কথা শুনতে তো চায়ই না, উল্টা অহংকার করে বলে, “আমরা কি ইসলাম কম জানি? আমাদের ঈমান কি এতই ঠুনকো যে স্বাধীনতা বিরোধী, ধর্ম ব্যবসায়ী, মৌলবাদীদের কথায় আমাদের ঈমান চলে যাবে?”
পাঠক লক্ষ্য করুন! উপরের ঐ আয়াতে অধিকাংশ লোকই যে প্রকৃত সত্য জানে না, আর কেউ প্রকৃত সত্য বলতে চাইলে শুনতে চায় না এবং মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাদের এমন অহংকারী মনভাবের কথাও আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন। বাস্তবেও আমরা তাই দেখি। তাবলীগের কাজে লোকদের কাছে গিয়ে যখন বলি “ভাই আসেন কুরআন হাদীসের কথা এবং ঈমান আমল নিয়ে কিছু আলোচনা হবে’, তখন দু একজন লোকই শুধু সেই ডাকে সারা দেয়, আর অধিকাংশ লোকই বলে, “অনেক কাজ আছে, এখন খুব ব্যস্ত ইত্যাদি”। অথচ ঐ সময় বন্ধুরা মিলে অপ্রয়োজনীয় আড্ডা কিংবা টেলিভিসনে গান বা নাটক সিনেমা দেখছে। অনেকে আবার উগ্র মেজাজে সামনাসামনি এবং আড়ালে রাজাকার,স্বাধীনতা বিরোধী, ধর্ম ব্যবসায়ী, মৌলবাদী ইত্যাদি গালাগালিও করে।
যখন অহঙ্কার করে উগ্র মেজাজে বলে, “আপনাদের চেয়ে ইসলাম কম জানি না এবং আপনাদের চেয়ে বেশী পালন করি”, তখন তাদেরকে বিনিত ও নম্রভাবে বলি, “খুশী হলাম শুনে। তাহলে আসেন আপনাদের কাছ থেকে কুরআন হাদীসের কথা শুনি, আমরা যদি ভুল পথে থাকি তাহলে নিজেদেরকে শুধরে নেব এবং পালন করার চেষ্টা করবো। আপনাদেরও তো ফরজ দায়িত্ব কুরআন হাদীসের যুক্তি দিয়ে আমাদেরকে ভুল পথ থেকে সঠিক পথে আনা, তা না হলে তো আপনাদেরকেও আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে”, তখন তারা পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
কুরআন হাদীসের জ্ঞান রাসুলুল্লাহর (স) সাহাবা কেরামরা (রা) তো কম জানতেন না এবং যেভাবে তাঁরা ইসলাম পালন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মর্যাদা লাভ করেছেন সেই তুলনায় আমরা তাঁদের পায়ের ধুলার সমানও না, তারপরও তাঁরা যখন একজন আর একজনের সাথে দেখা হত তখন একজন আর একজনকে কুরআন হাদীসের কথা শুনাতেন এবং তাঁরা মনযোগ দিয়ে শুনতেন, ফলে তাদের ঈমান আরও বৃদ্ধি পেত। কুরআন শরীফেও আল্লাহ তাই বলেছেন, “সত্যিকারের ঈমানদার তো তারাই, আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের হৃদয় আত্মা কেঁপে উঠে, আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে তেলাওয়াত করা হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের রবের উপর ভরসা করে।” [সূরা আনফলঃ ২]
যতই জানা থাকুক সাহাবা কেরামরা (রা) এ কারনেই একজন আর একজনকে কুরআন হাদীসের কথা শুনালে খুবই খুশী হতেন, ফলে সাহাবা কেরামদের (রা) মাঝে নিয়মিত কুরআন হাদীস চর্চা থাকতো এবং শয়তানের ওয়াসওয়াসায় ভুলে যাওয়ারও কোন সম্ভাবনা থাকতো না, আর ভুলে গেলেও নুতন করে কুরআন হাদীস আবার স্মরন হত ও আল্লাহর প্রতি ভয় বৃদ্ধি পেত, এভাবে তাঁদের ঈমান আরও বৃদ্ধি পেত। “আমরা কি ইসলাম কম জানি? ঈমান কি আমাদের নাই? রাজাকার,স্বাধীনতা বিরোধী, ধর্ম ব্যবসায়ী, মৌলবাদীদের কাছ থেকে ইসলামের কথা শুনতে হবে?” এসব কথায় তো অহঙ্ককারই প্রকাশ পায় যা ইবলিস শয়তানের চরিত্র। ইবলিস শয়তানও কিন্তু কম জানতো না, আল্লাহর ইবাদতও কম পালন করতো না, ফেরেস্তাদের চেয়েও বেশী আল্লাহর ইবাদত পালন করতে করতে ফেরেস্তাদের সর্দার পদমর্যাদা লাভ করার পরও অহঙ্কারের কারনে আল্লাহর লানত (অভিশাপ) প্রাপ্ত হয়ে ফেরেস্তাদের সর্দার পদমর্যাদা হারিয়ে জাহান্নামীদের সর্দার পদ পেয়ে চিরকাল জাহান্নামে সবচেয়ে বেশী ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করতে থাকবে।
এ আয়াতগুলি পড়ে আমার নিজেরই খুব ভয় লাগছে, আল্লাহ না করুক এ অধিকাংশ লোকের তালিকায় থাকলে তো ঈমান আমল সব বরবাদ। অতএব আমাদের সাবধান হওয়া উচিৎ নয় কি?
কোন কলসে পানি দুষিত হয়ে গেলে কিংবা কোন পাত্রে খাবার পঁচে গেলে আমরা কি করি? ঐ কলসের পানি এবং ঐ পাত্রের খাবার ফেলে দেই। শুধু ফেলে দেওয়াই যথেষ্ট নয়, ঐ কলসে এক ফোঁটা দুষিত পানি থাকলে যদি আবার বিশুদ্ধ পানি ভরি এবং ঐ পাত্রে এক ফোঁটা পঁচা খাবার থাকলে যদি আবার টাটকা ভাল খাবার রাখি তাহলে ঐ পানি ও খাবার আবার দুষিত হয়ে যাবে। তখন আমরা কি করি? ঐ কলসের পানি এবং পাত্রের খাবার ফেলে দেওয়ার পরও পরিস্কার বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ভাল করে ধুয়ে পাক পবীত্র করি, তারপর নতুন করে ঐ কলসে পানি ভরি এবং পাত্রে খাবার রাখি। এ বুঝ যখন আমাদের আছে তখন আমাদের মন পাক পবিত্র করতে হলে মনের ভিতরে এত দিনের জমে থাকা ইসলাম বিরোধী দুষিত ও পঁচা সব আকিদা ও বিশ্বাস ছুড়ে ফেলে দিয়ে ভাল করে ধূয়ে পরিস্কার করে নতুন করে ঈমানের আলো ঢুকানোর দরকার নয় কি? আর তাই মনকে পাক পবিত্র করে ঈমানের উপযোগী করার জন্যই আলাহ প্রথমে “লা-ইলাহা” এর “লা” অর্থাৎ “না” বলে “জিব্ত” অর্থাৎ যাদু, তাবিজ, ভাগ্য গণনা, জ্যোতিষ, তন্ত্রমন্ত্র, মূর্তি পুজা ইত্যাদি কুসংসার ও যাবতীয় কাল্পনিক বানোয়াট ক্রিয়াকর্ম এবং "তাগুত" অর্থাৎ যে সব শাসক ও রাজনৈতিক দলের নেতারা আল্লাহর নির্দেশ বিরোধী আইনে ও রাসুলুল্লাহর (স) সুন্নত বিরোধী নীতিতে দেশ চালায় এবং জনগনকে তা মানতে বাধ্য করে সেইসব আল্লাহ বিদ্রোহী শক্তিকে অস্বীকার, অমান্য, বর্জন ও বিরোধিতা করতে হবে। এভাবে মনের যাবতীয় জঞ্জাল ও আবর্জনা সম্পূর্ন ধুয়ে মুছে পাক পবীত্র করার পরই আমাদের মন ঈমানের আলো দিয়ে ভরার উপযোগী হবে, আর তখন “ইল্লা-আল্লাহ” বলে আল্লাহর সার্বভৌত্বের উপর পরিপূর্ন ঈমান আনতে হবে। আর তখনই কেবল আমাদের মনের ভিতরে ঈমান বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং সে ঈমান এমনভাবে সুদৃঢ় হয়ে থাকবে যা কখনো দুষিত ও কলুষিত হতে পারবেনা। এ কথাই আল্লাহ কুরআন শরীফে এভাবে বলেছেনঃ “যে তাগুতকে অস্বীকার ও বিরোধিতা করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান (বিশ্বাস) রাখে, সে এমন একটি মজবুত অবলম্বন আঁকড়ে ধরেছে যা কখনো ছিন্ন হবার নয়”। [সূরা বাক্বারাঃ ২৫৬]
অতএব আমাদের ঈমান পরিশুদ্ধ ও সুদৃঢ়ভাবে বহাল রাখার জন্য এবং আল্লাহর নিকট মুসলমান হিসাবে স্বীকৃতি ও পরিচিতি লাভের জন্য “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” কলেমা অনুযায়ী যাদু, তাবিজ, ভাগ্য গণনা, জ্যোতিষ, তন্ত্রমন্ত্র, মূর্তি পুজা, কুসংসার ইত্যাদি “জিব্ত” কে অস্বীকার, অমান্য, বর্জন করার সাথে সাথে “তাগুত” হিসাবে পরিচিত ঐ সব রাজনৈতিক দলগুলিকে অস্বীকার, অমান্য, বর্জন ও বিরোধিতা করা উচিৎ নয় কি?
সমাপ্ত
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন