কোন দলকে সমর্থন করে যেন আমরা ঈমান হারিয়ে আল্লাহর অভিশাপ প্রাপ্ত না হই [পর্ব-১]

লিখেছেন লিখেছেন ইঞ্জিঃ আবুল হোসেন রহমতুল্লাহ ০৭ মার্চ, ২০১৪, ০৫:৫০:৩৯ সকাল



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

আমাদের দেশে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে একদল ঢালাও ভাবে বলেন “ইসলামে রাজনীতি হারাম, আমরা কোন রাজনীতি করি না এবং কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থনও করি না”। আবার তারাই ভোটের সময় এমন সব রাজনৈতিক দলকে ভোট দেয় যারা ইসলাম বিরোধী কাজ করে এবং ইসলামে যেসব কাজ হারাম সেগুলি করে। তা হলে এ ভোট দেওয়া কি হারাম নয়? কারন, কোন রাজনৈতিক দলকে ভোট দেওয়া মানেই তো ঐ দলকে সরকার পরিচালনার সুযোগ দিয়ে ঐ দলের রাজনীতিকে সমর্থন করা। ইসলামে যদি রাজনীতি সত্যিই হারাম হয়, তাহলে সেই হারাম জিনিসকে বর্জন করা এবং ঐ হারামের বিরোধিতা করা ফরজ নয় কি? রাজনীতি হারাম হওয়ার ফলে দেশের সবাই যদি রাজনীতি বর্জন করে তাহলে দেশ পরিচালনা করবে কে? দেশে অপরাধীদের বিচার হবে কিভাবে?

বিষয়টা আর একটা উদাহরন দিয়ে বলি- শুকরের গোস্ত হারাম বলে কেউ যদি ঢালাওভাবে ঘোষনা করে গোস্ত খাওয়া হারাম, তাহলে কি সব পশুর গোস্ত হারাম হয়ে যাবে? যেমন গরু ছাগল ও হাস মুরগীর গোস্ত তো হালাল এবং শুকরের গোস্ত হারাম হওয়ার কারনে এভাবে ঢালাওভাবে সব গোস্ত হারাম করা হলে কোন গোস্তই তো খাওয়া যাবে না। ঠিক তেমনি ঢালাওভাবে সব রাজনীতি হারাম নয়, যে সব রাজনীতির ভিতরে হারাম কাজ করা হয় কেবলমাত্র ঐ সব রাজনীতিই হারাম। আমাদের প্রিয় নবী বিশ্বনেতা রাসুলুল্লাহ (স), খোলাফায়ে রাশেদীনের চার খলিফারা এবং সাহাবা কেরামরা (রা) কি রাষ্ট্র পরিচালনা করেন নাই? রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে তাঁরা যে নিয়মে রাজনীতি করেছেন সেই রাজনীতি হল সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও নির্ভেজাল রাজনীতি যা হারাম তো নয়ই, বরং হালাল এবং সুন্নত যেহেতু তা রাসুলুল্লাহ (স) করেছেন। আবার কুরআন শরীফে আল্লাহর নির্দেশ থাকায় রাজনীতি ফরজও বটে, যেমন ফরজ নামায রোযা। কারন কুরআন শরীফে আল্লাহর ঘোষনাঃ

“যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা (অর্থাৎ কুরআন) অনুযায়ী হুকুম (রাষ্ট্র শাসনসংবিধান, আইন, বিচার ইত্যাদি) পরিচালনা করে না, তারাই কাফের।”(সুরা মায়েদাঃ ৪৪)

“যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা (অর্থাৎ কুরআন) অনুযায়ী হুকুম (রাষ্ট্র শাসন, সংবিধান, আইন, বিচার ইত্যাদি) পরিচালনা করে না, তারাই যালিম।”(সুরা মায়েদাঃ ৪৫)

“যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা (অর্থাৎ কুরআন) অনুযায়ী হুকুম (রাষ্ট্র শাসন, সংবিধান, আইন, বিচার ইত্যাদি) পরিচালনা করে না, তারাই ফাসেক (মহাপাপী)।”(সুরা মায়েদাঃ ৪৭)

প্রিয় পাঠক! উপরের ঐ ৩ টি আয়াত ভাল করে লক্ষ্য করুন, ঐ ৩ টি আয়াতে আল্লাহ হুকুম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। আরবী 'হুকুম' শব্দের বাংলা অর্থ শাসন, বিচার এবং 'হুকুম' শব্দ থেকে 'হুকুমাত' শব্দ এসেছে যার অর্থ সরকার, প্রশাসন। আল্লাহ যদি ঐ ৩ টি আয়াতে ‘হা বাচক ভঙ্গিতে এভাবে বলতেন. “আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা (অর্থাৎ কুরআন) অনুযায়ী তোমরা হুকুম পরিচালনা কর", তাহলে অন্য নিয়মে হুকুম পরিচালনা করার একটা সুযোগ হয়তো থাকতো। কিন্তু আল্লাহ সেভাবে নির্দেশ না দিয়ে ‘না বাচক ভঙ্গিতে প্রথমেই বললেন, যারা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা অনুযায়ী হুকুম পরিচালনা করে না তারাই কাফের. এর পর বললেন যালিম এবং শেষে বললেন ফাসেক (মহাপাপী)। এর ফলে সুস্পস্ট হয়ে গেল- যারা কুরআন অনুযায়ী রাষ্ট্র শাসন করে না, সংবিধান ও আইন তৈরী করে না, কুরআনে আল্লাহ যে নিয়মে বিচার করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং যেভাবে অপরাধের শাস্তি কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছেন (যেমন সন্ত্রাসী ও খুনীর শাস্তি গোপনে ফাসি না দিয়ে খোলা মাঠে লাখ লাখ জনতার সামনে প্রকাশ্যে মাথা কেটে হত্যা করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি) সেভাবে বিচার এবং শাস্তি কার্যকর করে না তারা প্রথমেই কাফের। আর কুরআনে আল্লাহর নির্দেশ করা নিয়মে শাসন ও বিচার না করার ফলে জনগনের উপর অবিচার ও যুলুম করার কারনে তারা যালিম এবং সবশেষে কুফরী ও যুলুম এ দুইটি বড় অপরাধ করার কারনে তারা ফাসেক (মহাপাপী)।

আর যারা ঐসব দল সমর্থন করে এবং ঐসব দলকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে কুরআন বিরোধী আইন অনুযায়ী রাষ্ট্র শাসন ও বিচার পরিচালনা করতে সহায়তা করে তারাও তো ঐ দলভুক্ত। কারন আল্লাহ কুরআন শরীফে সাবধান করে দিয়ে বলেছেনঃ “হে ঈমানদারগন! পূন্য ও আল্লাহভীতির সমস্ত কাজে সবার সাথে সহযোগীতা করো এবং পাপ কাজ ও (আল্লাহর) সীমালংঘনের কাজে কাউকে সহযোগীতা করো না। আল্লাহকে ভয় করো, তাঁর শাস্তি বড়ই কঠোর।”(সুরা মায়েদাঃ ২)। এ আয়াতটিতে ঈমানদার মুসলমানদেরকে উদ্দেশ্য করেই সাবধান করা হয়েছে।

আল্লাহর কলেমায় ঈমান বা বিশ্বাসঃ

অনেকেই আবার ভাবেন- আমরা কলেমা “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” মুখস্ত পড়তে পারি, আল্লাহ রাসুল আখেরাত সব কিছু বিশ্বাস করি, তাই আমাদের ঈমান আছে এবং আমরা অবশ্যই মুসলমান। প্রশ্ন হলো- এমনটা ভাবলেই কি আমরা সত্যিই ঈমানদার মুসলমান হয়ে গেলাম? আসলে কি এ ধারনা ঠিক? আমাদের এমন ভাবনা ও প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহ কি বলেন শুনুন, কুরআন শরীফ খুললেই সূরা ফাতিহার পর সূরা বাক্বারার প্রথমেই মু’মিন মুসলমান ও কাফেরের পরিচয় দিয়ে ৮ম আয়াতে মুসলমান নামধারীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেনঃ “মানুষের মধ্যে এমন অনেক লোক আছে যারা বলে, ‘আমরা আল্লাহর উপর ও আখেরাতের বিচার দিনের উপর ঈমান রাখি’, অথচ তারা আসলেই মু’মিন (মুসলমান) নয়”। (সূরা বাক্বারাঃ ৮)। কি সাংঘাতিক কথা! যার ঈমান আছে তাকেই তো মু’মিন বলা হয়, আর যে মু’মিন সেই তো মুসলমান। তারপরও আল্লাহ এমন কথা কেন বললেন একটু জানার চেষ্টা করি।

আমরা যে কলেমা মুখস্ত পড়ে মুসলমান হওয়ার দাবী করি সেই কলেমা “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” -এর ‘ইলাহ’ শব্দের বাংলা অর্থ করা হয় ‘উপাস্য’ অথবা ‘মা’বুদ’। আরবী ‘ইলাহ’ শব্দের বাংলা অর্থ করতে গিয়ে আর একটি আরবী ‘মা’বুদ’ শব্দ টেনে আনা হয়েছে যার বাংলা অর্থ প্রভু বা মনিব। ‘ইলাহ’ শব্দের অর্থ যদি শুধুমাত্র ‘উপাস্য’ হত কিংবা শুধুমাত্র ‘মা’বুদ’ হত, তাহলে আল্লাহ কি শুধুমাত্র উপসনার মালিক? কিংবা শুধুমাত্র প্রভু? সৃষ্টিকর্তা, জীবন দাতা, মৃত্যু দাতা, খাদ্য দাতা,পালন কর্তা তাহলে কে? তাই আরবী ‘ইলাহ’ শব্দের অর্থ অনেক ব্যাপক যা বাংলায় একটিমাত্র শব্দে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

‘ইলাহ’ শব্দের অর্থ উপাস্য, মা’বুদ (প্রভূ বা মনিব), সার্বভৌম ক্ষমতাবান, সৃষ্টি কর্তা, রিযিক দাতা, আইন ও শাসন কর্তৃত্বের মালিক, আসমান ও জমিনের অধিপতি, সমস্ত রাজত্বের মালিক এভাবে আল্লাহর যতগুলি গুনবাচক নাম ও সত্ত্বা আছে সবগুলির সমন্বয় হল ‘ইলাহ’ এবং যেকোন একটি গুনবাচক নাম ও সত্ত্বার সাথে অন্যকে শিরকী (অংশীদারিত্ব) করলেই কিংবা কোন একটির সাথে কুফরী (অস্বীকার) করলেই তার আর ঈমান থাকে না। আমরা সবাই কলেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ মুখস্থ পড়ি, কিন্তু ‘ইলাহ’ শব্দের সঠিক অর্থ না জানার কারনে আমরা আল্লাহর অন্যান্য গুন ও সত্ত্বার সাথে মনের অজান্তে শিরকী ও কুফরী করে ফেলি। ব্যাপক অর্থবোধক এমন একটি শব্দের শুধু খণ্ডিত অর্থ দ্বারা কলেমার মর্ম বুঝা সম্ভব নয়।

‘ইলাহ’ শব্দের অর্থ ও ব্যাখ্যা আল্লাহ নিজেই কুরআন শরীফে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন, অন্য আর কারো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। যেমন আয়াতুল কুরসি যা আমরা বহু ফজিলতের নিয়তে অর্থ ছাড়াই পড়ি সেই আয়াতুল কুরসিতেই ‘ইলাহ’ শব্দের অর্থ ও ব্যাখ্যা আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন এবং এই আয়াতুল কুরসি কুরআন শরীফের কোন সূরায় আর কোন আয়াতে আছে তাও আমরা অনেকে জানি না। জিজ্ঞাসা করলে অনেকেই বিজ্ঞের মত বলে বসে, কেন আয়াতুল কুরসি তো একটি দোয়া। দোয়া মানে তো আল্লাহর কাছে চাওয়া, আয়াতুল কুরসিতে আল্লাহর কাছে কি চাওয়া হচ্ছে? আমিও আগে যখন মুর্খ ছিলাম তখন তাই জানতাম। কুরআন হাদীসের জ্ঞান ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে ইঞ্জিনীয়ার হয়েছি, তাই আমিও মূর্খ ছিলাম। সূরা বাক্বারার ২৫৫ আয়াতই হল ‘আয়াতুল কুরসি’। আসুন জেনে নেই আয়াতুল কুরসিতে কি আছে?

“আল্লাহ ছাড়া অন্য আর কোন ইলাহ নেই যিনি চিরন্তন (চির জীবিত) সবকিছুর ধারক (সমগ্র বিশ্ব-জাহানের দায়িত্বভার বহন করছেন)। তিনি ঘুমান না এবং তন্দ্রাও (ঝিঁমুনি) তাঁকে স্পর্শ করে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সবই তাঁর। কে আছে এমন যে তাঁর অনুমতি ছাড়া তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? যা কিছু (মানুষ ও অন্যান্য সৃষ্ট জীবের) দৃষ্টির সামনে এবং দৃষ্টির আড়ালে আছে সবই তিনি জানেন। তাঁর অসীম জ্ঞান রাশির সীমানা থেকে তারা কোন কিছুই পরিবেষ্টন বা আয়ত্ব করতে পারে না যতটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন ততটুকু ছাড়া। তাঁর মহাকর্তৃত্ব ক্ষমতা সমস্ত আকাশ ও পৃথিবী ব্যাপী। আর এগুলোর রক্ষণাবেক্ষন তাঁকে মোটেই ক্লান্ত পরিশ্রান্ত করে না। তিনিই সর্বোচ্চ ও অতি মহান”। (সূরা বাক্বারাঃ ২৫৫)

পাঠক! লক্ষ করুন উপরের ঐ ‘আয়াতুল কুরসি’তে “আল্লাহ ছাড়া অন্য আর কোন ইলাহ নেই” এভাবে ‘ইলাহ’ শব্দ দিয়ে শুরু করে “যিনি” শব্দটি যোগ করে পুরা আয়াতে আল্লাহর কর্তৃত্ব, ক্ষমতা ও গুনাবলী বর্ননা সহ আল্লাহ কত সহজভাবে ‘ইলাহ’ শব্দের অর্থ ও ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন। এ আয়াতে কুরসি শব্দ থাকায় আয়াতটির নাম হয়েছে ‘আয়াতুল কুরসি’। কুরসি শব্দের বাংলা অর্থ চেয়ার, আসন, গদি এবং অনেক এলাকায় বাংলায় কুরসিও বলা হয়। রাজা বাদশাহ ও ক্ষমতাসিন শাসকরা যেহেতু কুরসি বা গদীতে বসে শাসন কর্তৃত্ব চালায় তাই কুরসি বা গদী বলতে শুধু বসার আসন বুঝায় না, ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব বুঝায়। আর তাই এ আয়াতেও কুরসি বলতে বসার স্থান বুঝানো হয় নাই, আল্লাহর মহাকর্তৃত্ব ক্ষমতা বুঝানো হয়েছে যিনি আকাশ ও পৃথিবী ব্যাপী সর্বময় ক্ষমতা, শাসন কর্তৃত্ব, আইন ও বিধান এবং বিচারের মালিক যে ক্ষমতাগুলি কুরআন শরীফের অন্যান্য আয়াতগুলিতে আল্লাহ আরও বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন।

এখন এ আয়াতুল কুরসিতে ‘ইলাহ’ শব্দের অর্থ যতটুকু আমরা বুঝলাম ততটুকু কি বাস্তবে আমরা মানি? প্রথম অর্থটিই তো আমরা অমান্য করে চলছি, তাও আবার রাজনৈতিকভাবে। যেমন- আয়াতুল কুরসির শুরুতে “আল্লাহ ছাড়া অন্য আর কোন ইলাহ নেই যিনি চিরন্তন (চির জীবিত), সবকিছুর ধারক (সমগ্র বিশ্ব-জাহানের দায়িত্বভার বহন করছেন)”, অথচ আমরা আল্লাহর সৃষ্টি আগুনের শিখাকে ‘শিখা চিরন্তন’ বানিয়ে যারা অগ্নি পূজা করে তাদের মতই সামনে দাড়িয়ে সম্মান ও সামরিক কায়দায় স্যালুট করি এবং রাজনৈতিক দল ও সরকার কর্তৃক আইন করে সাধারন ঈমানদার মুসলমানদেরকে তা করতে বাধ্য করা হয়। বলুন তো এতে করে আমরা যে কলেমা পাঠ করি সেই কলেমায় আল্লাহকে কতটুকু ‘ইলাহ’ মানি? আল্লাহর সাথে আগুনের শিখাকে শেরেকী (সমভাগী) করা হল নয় কি? তাতে কি ঈমান থাকলো? ঈমান যদি নাই থাকলো, কি করে নিজেকে মুসলমান দাবী করতে পারি?

এবার ঐ একই আয়াতুল কুরসিতে ‘ইলাহ’ শব্দের আর একটি অর্থ আমরা কিভাবে অমান্য করে চলছি তা বলতে চাই। আয়াতুল কুরসিতে ‘কুরসি’ শব্দ থাকায় ঐ আয়াতটির নাম হয়েছে ‘আয়াতুল কুরসি’, অথচ এই ‘আয়াতুল কুরসি’র মূল ‘কুরসি’ শব্দের অর্থই তো আমরা অমান্য করে চলছি এবং এখানেও ঐ প্রথমটির মতই রাজনৈতিকভাবে অমান্য করে চলছি। ‘কুরসি’ শব্দের অর্থ আল্লাহর মহাকর্তৃত্ব ক্ষমতা বুঝায় যিনি আকাশ ও পৃথিবী ব্যাপী সর্বময় ক্ষমতা, শাসন কর্তৃত্ব, আইন ও বিধান এবং বিচারের মালিক। আল্লাহর এ মহাকর্তৃত্ব ক্ষমতা সম্পর্কে আল্লাহ নিজেই কুরআন শরীফের অন্যান্য আয়াতগুলিতে আরও বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন।

যেমন- কুরআন শরীফে আল্লাহ বলেন, “ইন্নাল্লাহা আলা কুল্লা শাইয়িন ক্বাদির” অর্থাৎ “অবশ্যই আল্লাহ সার্বভৌম (সবকিছুর উপর) ক্ষমতার মালিক”। (সূরা বাক্বারাঃ ২০ এবং কুরআন শরীফের আরো অনেক আয়াত)। অথচ আমরা রাজনৈতিক নেতাদের কথায় “জনগনই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক” বলে আল্লাহর এই সার্বভৌম ক্ষমতাকে অস্বীকার করে কুফরী ও শিরকী করে চলছি। “জনগনই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক” এভাবে যদি আমরা বলি তা হলে আরবীতে কি দাড়ায়? “ইন্নাল ইনসানা আলা কুল্লা শাইয়িন ক্বাদির” যা কুরআন শরীফের ঐ আয়াতটির বিপরীত। (নাউযুবিল্লাহ!) যারা “জনগনই সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক” বলেন তারা কি তবে কুরআন শরীফের ঐ আয়াত সংশোধন করতে চান? ভেবে দেখুন। আল্লাহর বদলে অন্য কাউকে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক বানালে আল্লাহর সার্বভৌমত্যকে অস্বীকার করা হয় যার নাম “কুফরী”, আর আল্লাহকে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মেনে নিয়ে অন্য কাউকে সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক বানালে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার সাথে তাকে ভাগীদার বা অংশীদার করা হয় যার নাম “শেরেকী”। আরবী “কুফর” শব্দ থেকে “কুফরী” যার অর্থ “অস্বীকার করা” এবং “শিরক” শব্দ থেকে “শেরেকী” যার অর্থ “অংশীদার” বা “ভাগীদার” বানানো। এভাবে কেউ কুফরী ও শিরকী করলে সে আদৌ মুসলমান থাকতে পারে না, যদিও সে নিজেকে মুসলমান বলে দাবী করে এবং কলেমা মুখস্ত পড়তে পারে।

চলবে ইনশাআল্লাহ >>> পরবর্তি পর্ব-২

বিষয়: বিবিধ

১৮৮১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

188223
০৭ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:৫১
সজল আহমেদ লিখেছেন : চলতেই থাকুক।
০৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:৫০
139707
ইঞ্জিঃ আবুল হোসেন রহমতুল্লাহ লিখেছেন : পরবর্তি পর্ব-২ ও ৩ দেখুন।
চলবে ইনশাআল্লাহ >>>

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File