প্রেম যেন এমনই হয় ৪৫
লিখেছেন লিখেছেন প্রগতিশীল ২৯ এপ্রিল, ২০১৫, ০৩:২৬:৩৯ দুপুর
লিটন সাহেবের রিডিং রুমটা যেন নিস্তব্ধ। শুধু রিদিতার কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। রিদিতা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছিল। লিটন সাহেব তাকে কাঁদার জন্য ছেড়ে দিয়ে চুপচাপ বসে ছিলেন। এই সময় রিদিতার কাঁধে একটা হাত এসে পড়লো।
আপু আর কেঁদনাতো এটা স্রেফ একটা অ্যাকসিডেন্ট। বললো সঞ্চিতা। লিটন সাহেব অবাক হয়ে তাকিয়ে বললেন, তুমি আবার কখন এলে মামনি?
বাবা আপু আসার কিছু সময় পরেই আমি এসেছিলাম। রুমটা অন্ধকার কেবল আপনার কম্পিউটারের আলো আছে কিছুটা তাই বুঝতে পারেননি। তবে দুঃখিত আমি। ভাবলাম আপনাদের কথা শেষ হলে কথা বলবো। কিন্তু কথা শুনতে গিয়ে সব কথাই শুনে ফেললাম অনিচ্ছাকৃতভাবে।
তুমি দুঃখিত বললে আমি মহা দুঃখিত হই বউমা পেছন থেকে বললেন সানজিদা। আমিও এসেছিলাম তবে তুমি ছিলে এটা বুঝিনি, বাপ-মেয়ের নাটক দেখছিলাম। ওরা আমাকে এর কিছুই জানায়নি।
লিটন সাহেব হো হো করে হেসে বললেন, তুমিতো রতনের বিষয়টা আমাকে বিস্তারিত জানিয়েছিলে তাইনা?
এমন সময় রতন পেছন থেকে বলে উঠলো, মানে মা আমার বিষয়টা বাবাকেও বলেনি।
এবার সবাই ফিরে তাকিয়ে দেখলো রতনও পেছনে।
রতন বললো, ভাবলাম সঞ্চিতা রিদিতার কাছে গেছে তাই আমি আজ এলাম বাবার সাথে একটু একা কথা বলতে। এসে দেখি বাবা আপুর সাথে কথা বলছে, এরপরেই লাউড স্পিকারে কথা। তাই এদিকে বসেছিলাম।
সব মিলে বিষয়টা দাঁড়ালো প্রথমে রিদিতা তারপরে সঞ্চিতা এসে ডানদিকের সোফায় বসেছিল। এরপর আসেন সানজিদা তিনিও বা দিকের ছোট্ট বসার জায়গাটিতে বসেছিলেন। আর রতন এসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই বাবা-বোনের কথা শুনছিল। পুরো রুম অন্ধকার আলো কেবল লিটন সাহেবের টেবিলে ছিল। তবে সবাই রিদিতার ফোনালাপ আড়ি পেতে শুনছিল! তাই কেউ কাউকে খেয়াল করেনি।
এমন সময় রুনু এসে লাইট জ্বালিয়ে দিল। সবার অবস্থা পরিষ্কার হল। ট্রেতে সে সুন্দরকরে মুড়ি-চানাচুর মেখে এনেছে।
লিটন সাহেব সানজিদাসহ সবাই অবাক এখানে কয়জন লোক আছে তারা নিজেরাই তা জানতোনা আর রুনু আড্ডার উত্তম উপকরণ নিয়ে এসেছে।
সানজিদা বললেন, রুনু তোকে কে ঝাল মুড়ি নিয়ে আসতে বললো?
রুনু বললো, দেখলাম সবাই এ রুমে তাই বানিয়ে নিয়ে এলাম। মা তোমরা খাও আমি চাও নিয়ে আসি।
লিটন সাহেবসহ সবাই হেসে উঠলো। কেউ দেখেনি বোঝেনি বুঝেছে রুনু হাসতে হাসতে বললেন তিনি।
লজ্জিত রিদিতাও হেসে উঠলো। সে যেন একটু আগে কাঁদছিল তাই ভুলে গেল।
এখন যেন লিটন সাহেবের রিডিং রুমটা একটা আড্ডার আখড়ায় পরিণত হল। সবাই কোন দুঃখ বা স্মৃতিচারণমূলক প্রসঙ্গ ছেড়ে গালগপ্পো আর আড্ডাবাজিতে মেতে উঠলো।
শুধু মুড়ি খাওয়ার মৃদু শব্দ এরপর চা এলে হালকা সো সো আওয়াজ। ঘণ্টাব্যাপী চললো আড্ডা।
সবার আগে হাই তুললো সঞ্চিতা। এরপর সে ঘুম পেয়েছে বলে চলে গেল। তার সাথে রতনও।
রিদিতাও বললো, আমিও উঠি।
রুমে কেবল থাকলেন লিটন আর সানজিদা।
তাদের মধ্যকার বিষয়টা আপাতত না জানলেও চলবে।
চলবে...
বিষয়: সাহিত্য
১৪৮৫ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জানিনা আজই ভাল করে প্রবেশ করে কোন কমেন্টের জবাব দিতে পারব কি না?
মন্তব্য করতে লগইন করুন